![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষ।
___ লজ্জিত আমরা।
.
সম্প্রতি একটা সত্য ঘটনা উল্লেখ করছি।
মেয়েটার নাম আয়েশা আক্তার। বয়স ৮বছর। ক্লাস ওয়ানে পড়ে। প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ২২ বছরের এক নরপশু তাকে বিরক্ত করে। জোর করে সাইকেলে উঠায়,বনে নিয়ে যেতে চায়। আয়েশা তার বাবা মাকে জানায়। তার বাবা ছেলেটির বাবার কাছে বিচার দেয় কিন্তু কোনো লাভ হয় না। বাধ্য হয়ে কিছু ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের কাছে বিচার দেয় এতেও কোনো লাভ হয় না। পুলিশের কাছে রিপোর্ট করে তাতেও অগ্রাহ্য হয়।
.
আইন, সমাজ কেউই আয়েশাকে সাহায্য করল না। আচ্ছা আয়েশার সাথে ঘটতে থাকা এই ঘটনাটির পরিসমাপ্তি কোথায় হবে জানেন? আয়েশার ধর্ষণে। ঐ নরপশুটা সুযোগ বুঝে আয়েশাকে ধর্ষণ করবেই। কিন্তু আয়েশার বাবা তা হতে দিল না। তিনি আয়েশাকে নিয়ে ট্রেনের নিচে পড়ে আত্মঘাতী করেছেন। এছাড়া কোনো উপায় ছিল? আপনি হয়তো বলবেন এলাকা ছেড়ে দেয়া। কিন্তু ভাই এমন পশু তো সারাদেশেই ছড়িয়ে আছে। তাছাড়া বসতভিটা ছেড়ে অন্য কোথাও বসবাস শুরু করা এত সহজ না। তবুও করা যায় কিন্তু নরপশুরা তো চারদিকে ছড়িয়ে আছে। একদিন না একদিন আয়েশা সেই নরপশুটার লোভ লালসার শিকার হত। তাই আয়েশার বাবা এই পথ অবলম্বন করল। আমার মতে এটা একটা হত্যা। তাদেরকে কাছে মৃত্যু ব্যতীত অন্য কোনো পথ খোলা রাখেনি। আপনার বোন কিংবা মেয়েকে যদি সন্ত্রাসী ধরে বলে নিজের মাথায় গুলি কর নয়তো তোর বোন / মেয়েকে ধর্ষণ করব। তখন আপনি কি করবেন? ঠিক এমনই একটা পরিস্থিতির শিকার হয়েছে আয়েশার বাবা।
.
কতটা নিরীহ হলে একজন বাবা এই পথ অবলম্বন করতে পারে তা আমরা চিন্তাও করতে পারব না। আইন, সমাজ কেউই তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। এমনিতেও যদি আয়েশা ধর্ষণের শিকার হত তবে ধর্ষণের পর ঐটুকু বাচা মেয়ের মৃত্যু ৯০% নির্ধারিত। তারপর ঐটুকু মেয়ের ঐ দশা দেখলে যেকোনো বাবা মা-ই স্টোক করে কিংবা শোকাহত হয়ে মারা যেতে পারে। মৃত্যুটা অবধারিত ছিল। তাই আয়েশার বাবা মেয়েকে নিয়ে এই পথ বেছে নিয়েছিলেন। সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আল্লাহই ভাল জানেন।
.
৮ বছরের একটা মেয়েকে দেখলে প্রথমেই মুখ থেকে বেরিয়ে আসে মাশাল্লাহ কত সুন্দর, কি কিউট মেয়ে ………… এসব। কিন্তু বর্তমানে এই ৮বছর+/- মেয়েরাও ধর্ষণ, ব্যভিচারের শিকার হচ্ছে। কারণ কিছু ছেলেদের মাঝে পশুত্ব ভাবটাই বেশি। এরা মানবতা ভুলে গিয়ে পশুত্বের মাঝে ডুব দিয়েছে।
.
৮ বছরের মেয়ে; তাকে যদি ছেলেদের কাপড় পড়িয়ে আপনার সামনে দাঁড় করানো হয় তবে আপনি একটু হলেও কনফিউজড হবেন যে এটা ছেলে না মেয়ে? যাকে দেখলে মনের মধ্যে পবিত্র ভাব জেগে উঠার কথা তার সাথে ব্যভিচার হচ্ছে ভাবতেই অবাক লাগে। গা শিউরে উঠে।
.
আজ পর্যন্ত একটা ধর্ষণের সুষ্ঠু বিচার হয়নি। তাইতো দিনদিন এই জঘন্য কাজ বেড়েই চলছে। এই পশুদের কাছে বাচ্চা, যুবতী, বৃদ্ধা কেউই নিরাপদ না। তনু খাদিজা থেকে শুরু করে এরা পূজা, আয়েশার মত নিষ্পাপ শিশুদেরকেও ছাড়ছে না। ঘর থেকে বের হলে সম্মান নিয়ে ফিরতে পারব কিনা তা নিয়েই আজ সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়ভার কি সংসার, সমাজের নয়?
.
ধর্ষণ, ইভটিজিং নিয়ে যতবারই কিছু বলেছি প্রত্যেকবারই সবাই কাপড় ও পর্দার কথা বলেছে। ৮বছরের মেয়েটা পর্দা করলেও কি না করলেও কি? ছোট এক টুকরো জামা পায়জামাই তার জন্য যথেষ্ঠ। কিন্তু সেই মেয়েটা কি রক্ষা পেয়েছে পশুদের হাত থেকে?
.
আজ আয়েশার সাথে যা হয়েছে তারচেয়েও জঘন্য কাজ হয়েছে কিছু মাস আগে পূজার সাথে যা আমি বর্ণনা করতেও দ্বিধাবোধ করছি। এতটাই জঘন্য ও নোংরা ভাবে সেই পিচ্চি মেয়েটাকে ধর্ষণ করেছিল নরপশুরা যা বলতেও দ্বিধাবোধ হচ্ছে। কিন্তু সেই ঘটনাটির বিচার হয়নি। যদি একটা ধর্ষককে বিশাল ঘোষণা দিয়ে সবার সামনে গাছে ঝুলিয়ে ফাঁসি দেয়া হত তবে হয়তো এই কলংকের দাগ মুছতো। কিন্তু আমাদের প্রসাশন তা করছে না। কেন করছে না? তা আমার জানা নেই। তবে এটা জানি যে সবকিছু বিচার একদিন হবেই। হাশরের ময়দানে। মানুষ ন্যায়বিচার না করলেও আল্লাহ ন্যায়বিচার অবশ্যই করবেন। আফসোস শুধু এখানেই যে মানুষ তার দায়িত্বটা পালন করল না যার ফলে এসব জঘন্য কাজ বাড়তেই থাকবে।
.
যতদিন না তনু, রিশা, পূজা, আয়েশাদের সাথে হওয়া অন্যায়ের সুষ্ঠু বিচার হবে না ততদিন আমরা তাদের কাছে দায়বদ্ধ থাকব।
.
লিখাঃ Nishi Chowdhuri (রাত্রির আম্মু)
©somewhere in net ltd.