![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১২.
আজ নাজনীনের বিয়ে ছেলে মাগুরা সদর হাসপাতালের
ডাক্তার, সম্পর্কে নাজনীনের মামা এতে অবশ্য
হ্মতি নেয় সম্পর্ক টা বহুদূরের|
অনেক যাচাই বাছায়ের পর রোজি ফুফু এই পাত্র তার
জন্য যোগার করেছেন| বিয়েটা প্রায় ঘরোয়া ভাবেই
হচ্ছে ছেলে পহ্মথেকে ১৬জন আর নাজনীনদের কিছু
নিকট আত্বীয়কে দাওয়াত করা হয়েছে|
নাজনীনের চাচতো মামী সাহিদা খাতুনের সাথে দেখ
করতে এসে বললেন "আপা এতো সুন্দর সোনার
মতো মেয়েটাকে একটা বুড়োর
সাথে বিয়ে দিচ্ছেন,ছেলে ডাক্তার
হয়েছে তো কি হয়েছে নাজ এর যা চেহারা ওর জন্য
আরো কতো ভালোছেলে পাওয়াযেত আমাদের
আগে বললে আমরা কি আর পাত্র দেখেদিতাম না?
আপনারা কি আমাদের পর?"
তার এ কথায় স্বাভাবিক ভাবেই সাহিদা খাতুন
বিচলিত হলেন, তিনি ছেলে দেখেননি বিয়ের
আগে ছেলের
মা খালারা এসে ছিলো নাজকে দাখতে তারাই তার
সাথে কথা বলেছেন|
রোজি বলেছে পরিবার ভালো কিন্তু ভদ্র মহিলার
কথা সাহেদা খাতুনের ভালো লাগেনি তিনি যেন কেমন
চোখ মুখ কুঁচকে সব কিছু দেখছিলেন
ছেলেকে নিয়ে তার বেশ গর্ব ও আছে বলে মনে হয়েছে
"কতো মেয়ে যে জাহিদের বউ হওয়ার জন্য লাইন
দিয়ে আছে তা কি আর বলবো, কণা না ফনা নামে এক
মেয়েতো বাবা মা কে নিয়ে বাড়িতে এসেই হাজির
কতজন কত কিছু দিতে চাইলো...আমার ও সবে লোভ
নেই , আমার ছেলে যোগ্য ছেলে| আত্বীয়ের
ভেতরে মেয়ে পড়ে থাকতে বাইরে যেতে মন
চাইলো না তাই এই সম্বন্ধতে রাজি হলাম আর কি"
-ভাবি আমাকে ডেকেছো?
-হ্যা বোস
-না এখন বসতে পারবো না, কি বলার বলে ফেল
বাড়ি ভর্তি লোক আমি এখন বসে থাকলে চলবে?
-বর যাত্রী এসে গেছে?
-হ্যা! ওমা তোমাকে আধাঘন্টা আগেই
না বলে গেলাম?!
শাহিদা খাতুন রোজিকে একটু ভয় ই পান তার
সাথে কথায় পেরে দেওয়া তার পহ্মে সম্ভব নয় তবু
তিনি কথা টা না বলে পারলেন না
-শুনলাম জামায়ের বয়স নাকি একটু বেশি?
-এটা তোমাকে কে বললো?
-না শুনলাম
-কেও তো আর জামায়ের বয়স ৮০
বলে বলে মাইকিং করছে না যে তুমি এ ঘর
থেকে শুনতে পাবে, কে বলেছে আগে বল?
শাহিদা খাতুন কিছু বললেন
না তিনি ঝগড়া বাধাতে চান না
-ভাবী শোন,কিছু লোক আছে অন্যের
ভালো দেখতে পারে না তাদের গা জ্বলে|তোমার
মেয়ের ডাক্তার জামাই দেখে এটা হওয়াই স্বাভাবিক,
ছেলে ডাক্তার বংশ ভালো আমাদের পরিচিতও আর
ডাক্তারী পড়া কতো কঠিন তুমি জান?
পড়তে পড়তে চুল সব পড়ে যায় নয়তো পেকে যায়,
মতিন ডাক্তারের দেখনি মাথায় কতো বড় টাক আর
এ ছেলের তো চুল একটু কম বয়স ও বেশি না ৩৭
৩৮ হবে সব ঠিক ই আছে
তার এমন যুগান্তকারী ব্যাখ্যা এবং বাস্তব
জলজ্যান্ত উদাহরনের সামনে আর কিছু
বলা চলে না|
রোজিনা পারভিন ফিরে যাচ্ছিলেন মাঝ পথে আবার
ফিরে এলেন
-ও আর তুমি এই
ময়লা কাথা টা গায়ে দিয়ে রেখেছো কেন,একটু
পরে মেয়ে জামায় সালাম
করতে আসবে তারা দেখবে তুমি ঘাটের
মরা হয়ে পড়ে আছো| আমি আলমারি থেকে চাদর বার
করে দিচ্ছি...
সাহিদা খাতুন বির বির করে বললেন "আমিতো ঘাটের
মরায়"
রোজিনা ব্যস্ত ভাবে চলে গেলেন তিনি কথাটা শুনেও
শুনলেন না
১৩.
নাহিদ অনেক দিন পর এই রাস্তায় এলো গত কিছু
দিন তার বড় ধরনের ধকল সামলাতে হয়েছে|
নাজনীনের বিয়ের কিছু দিন পর ই সাহিদা খাতুনের
অবস্থা খারাপ হয় ২২দিন হাসপাতালে অধিকাংশ
সময় অচেতন হয়েছিলেন, লাইফ সার্পোটে রাখার পর
গত বৃহঃপতিবার ডাক্তার তাকে মৃত
বলে ঘোষনা করেন| বলতে গেলে নিরব মৃত্যু কাজের
মেয়ে রানু ছাড়া শব্দ করে কাঁদার কেও ছিলো না,
নাজনীনকে ফোনে খবর দেয়া হয়েছিলো জাহিদ
ঢাকা গেছে বলে তার শাশুড়ি তাকে আসতে দেয়নি|
তিতলিদের বাসার সামনের গেট টা আজ বন্ধ সচর
আচর খোলা থাকে নাহিদের দরজায় শব্দ
করতে ইচ্ছে করছে না অনিচ্ছা সত্যেই সে আঘাত
করলো
"এই কে কোন হালাই রে..." বজলু মিয়ার কন্ঠস্বর
শোনা গেল
সে বিরক্ত হয়েই গেটের কাছে এলো বাইরে নাহিদ
কে দেখে ভাব দেখালো তাকে দেখে সে খুব খুশি হয়েছে|
-আরে ভাই জান যে, কতো দিন দেখিনা কন
তো,আছিলেন কই?
-ভালো আছো বজলু?
-জি ভালো,আপনাগোর দোয়ায় আল্লাহ রাখছে, তই
বাড়িতে তো কেও নাই হগ্গোলে মিলা ঢাকা গেছে বড়
আপা বিদেশ থেকে আসবে তারে আনতে|ছোট আপার
বিয়া তো...
(এই কথায় নাহিদের ভেতর তেমন কোন পরিবর্তন
দেখা গেল না)
-ও তাই
-জি, আপনি কাল পরশু আসেন
নাহিদ রাস্তায় হাটছে তার মাথাটা তার কাছে প্রচন্ড
ভারী মনে হচ্ছে, যদি ওটা টেনে ছিড়ে ফেলেদিয়া যেত
মন্দ হতো না|
রাস্তার ধারের ১টা মুদি দোকান
থেকে সে ১টা সিগারেট নিয়ে ধরালো, সিগারেট
সে খায় না তবে ছোট বেলায় ১বার চুরি করে আর
কলেজের বন্ধুদের অনুরোধে ১বার দুইএকটা টান
দিয়েছিলো যার স্মৃতি সুখকর নয়,
সে হিসাবে এটা তার তৃতীয় বা প্রথম সিগারেট যেটাই
বলাহোক কোনটায় ভুল হবে না|
নাহিদ সিগারেটে টান দিলো... এইতো সে এখন মুখ
ভর্তি করে ধোয়া ছাড়ছে, তাকে দেখে মনেই
হচ্ছে না সে একজন সদ্য ধূমপায়ী
সে রাস্তায় হাটছে তার হাতে ১টি জ্বলন্ত সিগারেট|
THE END
০১ লা মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:০৫
এন ইসলাম রনি বলেছেন: ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য,
আসলে হুমায়ুন আহমেদ আমার সবথেকে প্রিয় লেখক দের একজন, ইনফ্যাক্ট তাঁর বই পেলে অন্য পড়তাম না সুতরাং প্রভাব তো আছেই আর সমসাময়িক চিন্তা ধারা ই তো মিল থাকবে ই
শরত্ বা রবীন্দ্র আমলে কিছু লিখলে লেখা গুলির ধরন কিন্তু অমন ই হত শুধুমাত্র চিন্তা ধারার মিলের কারনে
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৫
নাজাহ্ বলেছেন: একটু হুমায়ুন আহমেদ টাইপ হয়েছে । কিন্তু ভাল ।