![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুহিত আর কথা বাড়ালো না বিরক্তি নিয়ে সে বাথরুমে চলে এলো,
এতো সুন্দর ১টা মেয়ে সম্পর্কে এমন অশ্লীল কথা শোনা যায় না
যদিও কবিরের কথা ঠিক হতেও পারে,
সে এখানে তার অনেক আগের থেকেই আছে সবার সম্পর্কে তার ভালো জানা |
গত এপ্রিলে মুহিত একটা অসস্থিকর পরিস্থিতিতে পড়েছিলো সারাদিন সে লাইব্রেরীতেই থাকে চাকরির বিঙ্গপ্তি,পত্রিকা,বই পত্রের সাথেই সময় পার করে, সেদিন জ্বর জ্বর লাগছিলো বলে বারটার আগেই মেসে ফিরে এসে দেখে তার রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ, এই সময় মেস প্রায় পুরো খালি থাকে,
সে দরজাতে ২বার ধাক্কা দিলো কোন সাড়া নেই তখন কবির ই
তাকে টেনে নিয়ে নিজের রুমে গিয়েছিলো,
-"আরে করেন কি এই সময় কেও
দরজা ধাক্কায়"
তার গলার স্বর চাপা
-"কেন কি হয়েছে,ও ঘরে কে?"
-"যাদের থাকার কথা তারাই
আছে,আপনি দেখি কিছুই বোঝেন না!
আরে ভাই প্লে হচ্ছে প্লে যারে বলে কামলীলা"
মুহিত সেদিন মূর্তির মতো কবিরের ঘরে বসে ছিল কতহ্মণ
সে বলতে পারবেনা পরে জামিলের
সাথে দেখা হয়েছে, সে কিছু
বলেনি জামিল ও না,
সে যথারিতী হাসিখুশি যেন কিছুই হয় নি |
জামিল প্রচন্ড ফূর্তিবাজ টাইপের
ছেলে সব সময় হেসে হেসে কথা বলে তাকে মুহিদের বেশ ভালোয় লাগে সবারতো আর সবদিক
ভালো হয় না|
মুহিত দাঁত ব্রাশ করতে করতে জামিলের চিন্তাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললো
২.
মেস থেকে বেরনোর সময় ই টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়ছিলো গত কাল
আকাশে মেঘের ছিটেফোটা ও ছিলো না আজ ঠিক উল্টো গলি পার হয়ে বড় রাস্তায় আসতে আসতে মুহিদ প্রায় পুরো ভিজে গেল
একটা সিএনজি বা খালি রিকশা কিছুই দেখা যাচ্ছে না সব ই যাত্রী ভর্তি,
ঘড়িতে ৯টা ৪৮..
না আর দেড়ি করা যায় না সিরিয়াল পার হয়ে গেলে ওরা ভাইভাতে আর নাও ডাকতে পারে |
মুহিত মাথায় ১টা রুমাল
দিয়ে হাটতে শুরু করলো আর ঝর ঝরিয়ে বড় বড় ফোটায়
বৃষ্টিটা নামলো তখন ই|
এদিকে রাস্তার ধারে কোন সেড নেই যে সেখানে দাড়াবে, রাস্তায়
পানি জমতে শুরু করেছে ওয়াসার পাইপ লাইন কি BTRC এর লাইনের জন্য রাস্তার এ দিক টা খোড়া,
আলগা মাটি পানি পেয়ে কাঁদায়
রাস্তাটা ভরে দিচ্ছে|
একটা মাইক্রোবাস দ্রুত মুহিদের পাশ দিয়ে চলে গেল এতে যা হবার তাই হলো একেবারে কাদা পানিতে গোসল, এই অবস্থায় আর চাকরির
ইন্টারভিও দিতে যাওয়া যায় না
এটা ভাবতেই মুহিদের একটা আনন্দের ভাব হলো যেন একটা দুশ্চিন্তার মেঘ কেটে গেছে, এখন বৃষ্টিটা আর অসহ্য
লাগছেনা.. তার সারা দিন
বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছা করছে |
শেষ অক্টোবারের বৃষ্টি,ভিজলে ১টা কঠিন অসুখ বাধিয়ে ফেলা অসম্ভব নয় |
রাস্তায় কিছু টোকই কে কাঁদায় ফুটবল খেলতে দেখে মুহিতের অনেক পুরোনো কথা মনে পরে গেল,
নানি বাড়ির পাড়ার ক্লাবের
মাঠে ফুটবল খেলা, সে আর আরিফ ভাই ছাতা মাথায় দাড়িয়ে আছে| তার স্পঞ্জের লাল
সেন্ডেলটা ছাপিয়ে মাঠের
জমে ওঠা পানি তার পায়ের
পাতা ডুবিয়ে দিয়েছে খেলায় টান টান উত্তেজনা D ব্লগ আর F ব্লগের নক আউট খেলা দুই পহ্মের খেলোয়ারদের দৌড়া দৌড়িতে মাঠের অবস্থা সোচনীয়
কাদা গোলা পাকের মতো অবস্থা | তুমুল বৃষ্টির মধ্যে খেলা চলছে, কেও কাও কে ছাড় দেবার নয়, খেলোয়ার দের দেখে মনে হচ্ছে কাদা মেখে কিছু ভূত ছোটা ছুটি করছে মুহিদের ছোট মামা খেলছে D ব্লগের হয়ে, যেন ছোট
মামা নয় মুহিত ই খেলছে সে অন্যদের মত ই উত্তেজীত| খেলার ঠিক শেষ মুহূর্তে জাহিদ
মামা কোনা কোনি সর্টে একটা দর্শনীয় গোল দিলেন, সমর্থক রা বৃষ্টি কাঁদার কথা ভুলে ছুটে গেল গোল দাতার কাছে....
মুহিত নিজের মনেই হাসলো,কতো দিন খোঁজ নেওয়া হয় না, ছোট মামা মিলুখালা আরিফ ভাই জাহিদ মামা কেমন
আছে ওরা ? নিজের অজান্তেই
১টা দীর্ঘঃশ্বাস বেড়িয়ে এলো |
বৃষ্টির ফোটা গুলো এখন হীমশিতল ছুরির ফলার মতো বিধছে, ঝড়ো বাতাসের এক
এক টা ঝাপটা আসছে ঢেউ এর মতো|
বঙ্গোপসাগরে কোন নিম্নচাপ
মনে হয়,বছরের শেষ দিকে বড় সড় ঘূর্ণিঝড় স্বাভাবিক ব্যাপার|
কি করে যে উপকূলের লোকগুলো এতো বড় সাগরের রুদ্র মূর্তির সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকে এটাই বিস্ময়
বেলা সাড়ে ১১টার মতো হবে কিন্তু রাস্তায় লোকজন কমতে কমতে এখন প্রায় জনশূণ্য, টোকাই ছেলে গুলোকেও এখন আর
দেখা যাচ্ছে না, মুহিতের সব কিছু কেন যেন ঘোলাটে লাগছে বড় কোন জ্বরের লহ্মণ তার আবার ঠান্ডার ধাত
বৃষ্টিতে এভাবে ভেজা ঠিক হয়নি
মুহিত মেসের দিকে পা বাড়ালো কিন্তু পা যেন ৫টনি ট্রাকের
সাথে বাধা সেটাকে নাড়ানো যাচ্ছে না|
৩.
কে যেন হেসে হেসে ছড়া কাটছে
কে নানী? হ্যা নানী ই তো!
নানা মনে হয় চায়ের জন্য এসেছেন,
নানী সব সময় ই উদ্ভট সব ছড়া কাটেন
নানা এলে এর মাত্রা আরো বেড়ে যায় |
মশিয়ার সাহেব খুব
ভোরে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরেন ঝড় বৃষ্টি কুয়াশা যাই হোক কোন কিছুতেই এর ব্যতয় ঘটে না,
তিনি হেটে হেটে চলে যান সেই
খাজুরায় সাবেদ মিয়ার দোকানের ১কাপ চা ১টা পুরি তার রুটিন, অবসর প্রাপ্ত অন্য বৃদ্ধদের ও আগমন ঘটে সেখানে জমে ওঠে আড্ডা,
তারা এখানে আড্ডা দেবেন প্রায়
১১টা পর্যন্ত কিন্তু তিনি চলে আসবেন সাড়ে৭ টার ভেতর বাড়ির নাস্তা আর মগ
ভর্তি করে গরম চা খেয়ে ব্যস্ত
ভাবে চলে যাবেন আবার সেখানে |
দেশ ভাগের সময় তিনি একাই
চলে এসেছিলেন ২৪
পরগনা থেকে পূর্ববাংলায় তার ছোট ভাই ইন্ডিয়াতেই আছেন
এখনো চিঠি পত্রে যোগাযোগ
আছে আত্বিয় স্বজন ও ওখান
থেকে মাঝে মাঝে আসে, কিন্তু তিনি আর যান নি |
প্রথমে ঢাকাতে কিছু দিন
চাকরি করেছেন পরে যশোরে বাড়ি কিনে স্থায়ী হন, তার বাবা হাজী শেখ মহিউদ্দিন সাহেব
ছিলেন ১জন ইমাম তিনি দেশ
ত্যাগী ছেলের বিয়েদেন নিজের ভায়ের মেয়ে আছিয়ার সাথে তার বয়স তখন ২২
আর আছিয়ার ১২কি ১৩ চরম
দূরন্ত,পাখি আর মাছ শিকার
করে বেড়ানোই তার নেশা | তার
সে দূরন্তপনা স্বভাব টা ১টা ভিন্ন
পরিস্থিতে এসে মিয়িয়ে গেল ভিন্ন
দেশ ভিন্ন মানুষ
জন্মথেকে চেনা পরিবেশ ছেড়ে আসা এই
যুবক আর কিশোরীর
মাঝে ১টা ভালোবাসার সম্পর্ক
গড়ে ওঠা অস্বাভিক ছিলোনা,
এখানে তারাই একে অন্যের আপন বিকল্প কেও নেই |
জীবনের ১ম দিকের সে ভালোবাসার সম্পর্কটা এখনো আছে সময়ের
সাথে সাথে বিবর্ণ হয়ে যায় নি |
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৩৫
আসাদুজ্জামান আসাদ বলেছেন: চলছে চলুক। ভাল লাগলো। তবে আপনার উপন্যাস কবিতার মতো লাইন হলো কেন?