![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশ স্বাধীন হলো মশিয়ার সাহেব তখনো সুস্থ নন পাঁজরের বুলেট অপসারন করা গেলেও বা পায়ের হাটুর টা তখনো রয়েগেছে ডাক্তারা পা টা কেটে ফেলতে চেয়েছিলো তিনি দেন নি এই কয়েক মাসে লম্বা করে টেনে রেখে সোজা পাইপের মতো হয়ে গেছে পা টা,তিনি প্রচন্ড দূর্বল এই অবস্থায় তিনি আছিয়া আর সন্তানদের খুঁজে বার করলেন, পাকমিলিটারীর হামলায় তারা ঐ গ্রাম থেকে আরো ভিতরের দিকে চলে গিয়েছিলো |
এর ই মাঝে তাদের ৪র্থ সন্তান বিলুর জন্ম হয়েছে,যুদ্ধের বিভীষিকা তাকে স্পর্শ করেনি তাকে মায়ের কোলে নিশ্চন্তে ঘুমাতে দেখে মশিয়ার সাহেব সস্থির নিঃশ্বাস ফেললেন|
যে গ্রাহস্থের কাছে তিনি স্ত্রী সন্তানদের রেখেগিয়ে ছিলেন তিনি মানুষ হিসাবে ছিলেন ১ম স্তরের কিংবা তখন হয়তো মানুষ এখন কার মতো দায় এড়িয়ে যেত না অন্যের প্রতি ছিলো দয়া মায়া, গ্রামের মানুষ শহরের প্রাণ
ভয়ে তাড়িত মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে,
নিজে পাতলা চাদর গায়ে জড়িয়ে অন্যকে কঠিন শীতে লেপ তুলে দিয়েছে এ ঋণ শোধ হবার নয়| এইসব মানুষ রা প্রতিদান আশাও করেন না|
প্রথমে ঘর বাড়ির অবস্থা দেখতে তিনি একাই ফিরে এলেন,শূণ্য বাড়ি দরজার সব তালা ভাঙ্গা ঘরে ১টা সুঁচ ও পড়ে নেই| এর প্রায় ২সপ্তাহ পর তিনি স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে এলেন গ্রাম থেকে কিন্তু এর ই মাঝে বাড়িতে নতুন পরিবার উঠে গেছে তারা রিতিমত সংসার বাটি পেতে ফেলেছে তাও কিনা তার প্রতিবেশী জিল্লু সাহেবের ছেলে|
জিল্লু সাহেব,তার বড় তিন ছেলে সবাই নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা বলে পরিচয় দিয়ে হাতে অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে,এদেশের সব কিছুতেই তাদের নাকি অধিকার,তবে তারা কোন রনাঙ্গণে যুদ্ধ করেছে কেউ সেটা জানে না|
মশিয়ার সাহেব জিল্লুর সাহেবের সাথে দেখা করলেন,
-"আরে ভাই সাহেব যে,বেঁচে আছেন তাহলে"
-"মরে গেলেই ভালো হতো"
-"ছি ছি আমি কি তা বলেছি,সব কই গেলি,ভাই সাহেব কে লেবুর সরবত দে..বসেন বসেন"
কিন্তু আসল কথা যখন মশিয়ার সাহেব তুললেন তখন তিনি উদাসীন হয়ে গেলেন এক সময় বিরক্ত হয়ে তেজের সাথে বললেন, "আরে ভাই জোয়ান তিন
ছেলে,ছেলেবউ,পোলাপান কি আমি পুসবো না কি,সব তাড়িয়ে দিয়েছি| বাড়ি খালি পাইছে যেয়ে উঠছে,আমি কি আপনার বাড়ি দখল করেছি আর শুধু ওরা নাকি যেয়ে দেখেন সাজ্জাদ মাস্টার মোড়ের বিহারী টার বাড়ি টা দখল করে উঠে পড়েছে কতো বড় তিন তলা বাড়িটা ইস্"
-ভাই আমিতো বিহারী নয়
-বিহারী না তা আমি কি করবো,এখন আপনি যান তো যা পারেন করেন গিয়ে,পারলে ওদের ওঠান
দেশে তখন অরাজক অবস্থা সবাই অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, মুজিব সরকার অস্ত্র জমা নিচ্ছে কিন্তু কয় জন ই বা দিচ্ছে কিছু দিন আগের দাঙ্গাবাজ বকাটে ছেলেরা সব অস্ত্র
উচিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে জমা দেয়ার নাম ও নিচ্ছে না | "বন্দুকের নলের আগায় হ্মমতা" মাও সেতুং এর এ কথা টা পুরো পুরি কার্যকর|
হুমায়ূন সাহেবের ছেলে কায়সারে সাথে দেখা হয়েগেল মশিয়ার সাহেবের,তাকে দেখলে চেনা যায় না ৯মাসের ১টা যুদ্ধ তার বয়স বাড়িয়ে দিয়েছে ২০বছর
-কেমন আছো কায়সার?
-ভালো
-যুদ্ধ থেকে ফিরেছো কবে?
-গত সপ্তাহে
মশিয়ার সাহেবের খোড়া পা দেথে সে কিছু জিঙ্গাস করলো না, জিঙ্গাস করার ও কিছু নেই সবাই এক ই বিভিষীকার শিকার
-তোমার আস্ত্র কোথায় দেখছি না যে?
-যুদ্ধতো শেষ এখন অস্ত্র দিয়ে কি হবে
-মিলন,নান্টু দের দেখলাম অস্ত্র
নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাই বললাম..ওরাও যুদ্ধে গিয়েছিলো?
কায়সার উত্তর দিলো না ছোট্টকরে একটা নিঃশ্বাস ফেললো
যুদ্ধ শেষ তার পর ও মানুষ মরছে| রাজাকার আলবদর শ্রেণী গা ঢাকা দিয়েছে তবে এরা কারা?
যে ২দিন আগেও ১ধমকে হাত পা কাঁপিয়ে এমন ভাব করতো যেন এই বুঝি তার দু উরু দিয়ে উষ্ণ স্রোত বয়ে যাবে অথচ তার ই হুংকারে এখন সবাই তথস্থ|
যে যুব সমাজ বিভিন্ন অন্যায়ের
বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়ে ছিলো নীতি আদর্শ নিয়ে,উত্তেজনাকর শ্লোগান আর হাতে ধরা ব্যানার ফেস্টুন সর্বোচ্চ অবস্থায় ইটের টুকরোই
ছিলো শেষ অস্ত্র, সে যুগের সূর্য অস্ত গেছে|
সসোস্ত্র বিপদ গামী যুগের সূচনা মনে হয় তখন,
স্বাধীনতার সাথে এটাও উপরি পাওয়া গেছে এক ই মুদ্রার এ পিঠ ও পিঠ, একপাশে শাপলা অন্য
পাশে হিংস্র বাঘ|
যার হাতে উদ্ধত মারনাস্ত্র তাকে কেও ঘাটায় না |
মশিয়ার সাহেব আইনের আশ্রয় নিলেন,কেসে জিতলেন ও কিন্তু বাড়ির দখল পেলেন না, জীবনের
হুমকি এলো| আহত সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে এক সময় পাকিস্থানী দের বসবাসের জন্য নির্মিত পরিত্যক্ত কলনিতে ৯৯বছরের লিজে একটা বাড়ি পেলেন এখানেই তার পরের
২মেয়ে ১ছেলের জন্ম অনেক উত্থান পতনের পর মোটামুটি স্থায়ী সুখী একটি পরিবার|
"মুহিত উঠ, উঠ না..এই..."
ছোট খালা ডাকছে, মুহিত চোখ মেলে তাকালো
না ছোট খালা নয় আজাদ সাহেব |
-কি হয়েছে স্বপ্ন দেখছিলেন নাকি ঘুমের মধ্যে বিড় বিড় করছেন কেন? আরে একি অবস্থা চোখ
এতো লাল!
আজাদ সাহেব মুহিতের কপালে হাত
দিলেন,জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে |
তিনি হন্ত দন্ত হয়ে ঘরের বাইরে চলে গেলেন,জামিল ছিলো না হয়তো অন্য কাওকে ডাকতে বা বালতি করে পানি আনতে গেলেন,
মুহিত আবার ঘোরের মধ্যে তলিয়ে গেল |
(to be continued)
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৯
সোলেমানের বাপ বলেছেন: কিরে রনি কি অবস্থা? মাঠে আজকে গেছিলি? আমি ঠান্ডার কারনে কয়েকদিন আসতে পারি নাই। কালকে আসমু, দেখা করিস।
তুই এইটা কি লেখলি বুঝি নাই।