নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পুরো নাম মুহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম রনি, জন্ম- যশোর, পৈত্রিক নিবাস- ঝিনাইদহ। পড়ালেখা করছি বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ। ঠিকানা- https://www.facebook.com/nasirul.rony

এন ইসলাম রনি

এন ইসলাম রনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প : চাঁদের আলোয় কার ছায়া (part - 2)

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯

২.

দোকানে ইফতি বসে আছে সে একা নয় তাকে ঘিরে আছে তার তিন জন ভক্ত , তার গায়ে কটকটে হলুদ পাঞ্জাবী, পাঞ্জাবীর কাপড় টা তার রাতে কেনা ঠিক হয়নি রং টা হলুদ না হয়ে কেমন একটু গেরুয়া গেরুয়া হয়ে গেছে |

কিছু দিন হল তার হিমু হওয়া বাতিকে ধরেছে ইতিমধ্যে তার ভক্ত ও জুটে গেছে, এজন্য অবশ্য

তাকে কিছুটা কলা কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছে |

তার কথা একা একা হিমু হয়ে লাভ নাই, সে যে হিমু এটাতো জানাতে হবে পাবলিককে |

ইফতি হিমুর প্রতিটা বই তসবি গুনার মত গুনে গুনে একশত বার

পড়ে ফেলেছে এখানে কিছু লাইন সবুজ কালিতে সে দাগিয়ে রেখেছে, এখন প্রতিদিন সকালে উঠে ই হিমুর কোন না কোন বই এর এই বিশেষ অংশগুলো সে মোনযোগ দিয়ে পড়ে বিশেষ করে হিমুর বাবার কথামালা বই টা| কার সাথে কোন কথায় কি ভাবে আচরন করতে হবে এগুলো সে বেশ ভালো করেই আয়ত্ব করেছে বলে তার ধারনা, এখন শুধু প্রয়োগ করা | দাঁত বার করে ভালোআছেন ভাইয়া এই কথা টাই বোধ হয় সে বেশি আত্মস্থ করতে পেরেছে কারনে অকারনে সে এটাই যাকে তাকে বলে ঘাবড়ে দেবার চেষ্টা করছে |

হঠাত্‍ করে এমন কথায় অনেকেই অবাক হচ্ছে, এক কথায় সে তার প্রতিভায় মুগ্ধ তার নিজে কেই নিজেরে কেজি দুই নোবেল দিতে ইচ্ছে করছে, হূমায়ূন স্যার বেঁচে থাকলে এই হাসি দিয়ে সে তাকে ও ভরকে দিত বলে তার ধারনা, তবে হিমুর সাথে তার দৃশ্যত কিছু পার্থক্য রয়েছে যেমন তার কাধেঁ এক খানা শান্তি নিকেতনী ব্যাগ সব সময় থাকে, তার পা ও খালি না, হিমুর পাঞ্জাবীতে কোন পকেট থাকার কথা নয় অথচ তার টাতে রয়েছে | এতে অবশ্য তাকে দোষ দেওয়া যায় না, দরজি কে সে বুঝিয়েই বার বার বলেছিলো যাতে পকেট না থাকে কিন্তু তৈরীর পর বাসায় এনে দেখা গেছে তাতে দু'টি সাইড পকেট ই না দু'টা বুক পকেট ও আছে, ভাগ্য ভালো পকেটবাজ দরজি দয়া করে ক্যাঙ্গারুর মত পেটের কাছে কোন পকেট জুড়ে দেয়নি| সে এখন ভক্তকূল কে তালিম দিচ্ছে কিভাবে পিরিচে চা ঢেলে খেতে হয়

এটা হিমুর কোন বইতে আছে সে ই জানে, নিশ্চয় আছে হিমু যখন

স্বয়ং নিজে করে দেখাচ্ছে এটা না থেকে পারে না আর না থাকলেও হ্মতি নেই বুঝতে হবে হিমুর স্রষ্টা এটা লিখতে ভুলে গিয়ে ছিলেন|



শুভ্র কে দেখে ইফতি ভালো আছেন বলে দাঁত বার করে অমায়িক হাসি দিলো অথচ কিছুদিন আগে সে শুভ্রকে তুমি করে বলতো, ব্যাপারটা পুরোটাই হিমুর বই থেকে ধার করা |

শুভ্র উত্তরে তাকে কিছু বললো না, এমন ভাঁড়ামির উত্তর দেওয়ার কোন মানে হয় না

তার এখন আর করিম মিয়ার

দোকানে চা খেতে ইচ্ছে করছে না, ইফতি যে এখানে বসে আছে দলবল নিয়ে এটা আগে খেয়াল করা উচিত ছিলো হলুদ রং দূর থেকে দেখা যায় কিন্তু সে হুট করে দোকানের সেডের তলে ঢুকে পড়েছে এখন আর চট করে চলে যাওয়া যায় না |

এদিকে তার নিরবতাকে হিমুকে অপমান করার সামীল ভেবে এক সাকরেদ শুভ্রের চার দিকে ঘুরে ঘুরে গা শুকতে লাগলো এটা দেখে বাকি সবার চোখ চকচক করছে কিছু একটা মজার ঘটনার অপেহ্মায় তারা উত্সুক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে |

শুভ্র বললো, কি খোঁজেন ?

-গন্ধ

-কিসের গন্ধ

-টাট্টিখানার গন্ধ (এটা বলার

সাথে সাথে হাসির রোল

উঠলো ইফতি না হাসলেও হাসি হাসি মুখকরে তার দিকে তাকিয়ে আছে শুভ্র কিছু একটা বলতে গিয়েও বললো না বা বলার সুযোগ পেল না, ঠিক তখন ই এক রিকসাওয়ালা তার পাঁচ টনি ওজনের মহিলা যাত্রীকে নিয়ে রাস্তার পাশের ড্রেনে উল্টে পড়লো

মহিলা চিন চিনে গলায় ঠিত্কার করছে হেল্প হেল্প



৩.

নীলুর স্বাদের কাঁঠাল অবশেষে এসেগেছে ঢাকায়, এই দূর্লভ বস্তু খানা যিনি এনেছেন তার নাম মজিদ মোল্লা গ্রামের সবাই

তাকে ডাকে চাপা মজিদ

সে এখন টগরদের বাসার নিচতলার সোফায় পা তুলে বসে আছে, মাথার উপর ফুল স্পিডে ফ্যান চলছে কিন্তু তারপর ও সে হাতের গামছা দিয়ে বাতাস করার

চেষ্টা করছে| নীলু এখনো তার স্বাদের কাঁঠাল আগমনের খবর পাই নি সে এখন হিন্দি সিরিয়াল "কাহানি ঘর ঘর কি" এর ২১১৪ নাম্বার এপিসোর্ডে বুথ হয়ে আছে |



আজমল সাহেব বসার ঘরে ঢুকলেন, মজিদ তাকে দেখেই

সোফা থেকে লাফ দিয়ে উঠে দাড়িয়ে মাথার টুপি ঠিক আছে কিনা দেখে নিয়েই প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়লো তার পায়ের উপর

-আরে আরে থাক থাক ভালো ছিলে কি যেন নাম ?

-মোহাম্মদ মজিদ মিয়া, পিতা মৃত

স্বগীয় মোহাম্মদ মনোয়ার মোল্লা, তিনি আদর করে আমারে ডাকতেন মনু মিয়া

-ও আচ্ছা আচ্ছা.., ঢাকায়

বাসা খুঁজে পেতে কষ্ট হয়নি তো মনু মিয়া ?

-কি যে বলেন জনাব কষ্ট হবে কেন সব ই আপনাদের দোয়া গ্রামের থেকে প্রথমে ৩মাইল ভ্যানে ঠাকুর বাজার আসছি তার পর সেখান থেকে নসিমনে দরগা কাঠি সেখান থেকে বাসে....

-ঠিক আছে বুঝেছি তুমি ঠিক

মত ই এসেছো, কিন্তু এসেছো কেন?

-জি জবান কাঁঠাল

সে তারাতারি দৌড়ে সোফার পেছন থেকে একটা মাঝারি সাইজের কাঠাল মাথার উপর তুলে আজমল সাহেব কে দেখালো, জনাব একলা মানুষ সব সামাল দিতে পারি নাই দুটা কাঁঠাল এনেছিলাম গাছের দুজোড়া ঝুনা নারিকেল ও কিন্তু ইস্টিমারের

ডেকে রেখে পানাহারে গিয়েছিলাম

এসে দেখি নারিকেল একজোড়া নাই,চাঁদপুরের কাছে এসে প্রাকৃতিক কাজে গিয়েছিলাম এসে দেখি আর এক জোড়া নাই! সদরঘাটে পৌঁছানোর আগে তন্দ্রার মত এসেছিলো পরে দেখি কিছু নাই

-তাহলে এই কাঁঠাল টা পেলে কি করে, পকেটে লুকিয়ে রেখেছিলে ?

-কি যে বলেন জনাব, এটা সব সময় কোলের উপর রেখে ছিলাম জান দেব তো কাঁঠাল দেব না আপনি স্বাদ করে খেতে ইচ্ছে করেছেন বলে কথা, খালি হাতে এত দূর কি করে আসি

-আমার জন্য নই আমার ভাসতি নীলুর জন্য আনতে বলা হয়েছে

-ও ভুল হয়েগেছে জনাব,গোসতাকি মাফহয়

একটা জায়নামাজ পেলে বড় উপকার হতো নফল নামাজ মেনে ছিলাম

-কোন বিশেষ উদ্দশ্যে কি?

-জি আপনার আমানত যাতে সহি সালামতে পৌঁছাই দিতে পারি এর জন্য একহাজার রাকাত নামাজ মেনেছিলাম আর কি



আজমল সাহেব এই লোকটার মিথ্যা বলার ধরন দেখে বিরক্ত এবং বিস্মিত হলেন| একটা ধমক দেওয়া দরকার,ব্যাটা এতো চাপাবাজি শিখেছে কোথা থেকে !

কিন্তু তিনি ধমক দিলেন না, গ্রাম থেকে সাঁতরে এসেছে যখন মাস

খানেকের আগে যাবে না, ধমক পরেও দেওয়া যাবে |



(to be continued)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.