নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পুরো নাম মুহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম রনি, জন্ম- যশোর, পৈত্রিক নিবাস- ঝিনাইদহ। পড়ালেখা করছি বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ। ঠিকানা- https://www.facebook.com/nasirul.rony

এন ইসলাম রনি

এন ইসলাম রনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

অ-কবিতার স্তুপ থেকে-৩

২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৪

১।
ভালবেসে ক্রীতদাস হয়েছি
হয়েছি আঙ্গাবহ নতজানু প্রজা,
ভালবেসে হাত পায়ে বেড়ি বেঁধে বসে থাকি-
শিকল এঁটে তোমার দেখানো ঘরে
লোকে যাকে জেলখানা বলে;
ভালবেসে সম্পূর্ণ সমর্পন এ সৌভাগ্য কয় জনের থাকে,
এ কথা শুনে হাসে, লোকে মুখ টিপে হাসে!


২।
এখন কাকে সে চুম্বন করে
কাকে জড়িয়ে ঘুমোতে যায়
কাকে নিয়ে তার স্বপ্নেরা বেড়ে উঠে ডাল পালা মেলে
আমি জানি না,
কে কাকে যে কখন চুম্বন করে আমরা কেউ জানি না;
আমি যাকে চুম্বন করি, যাকে চুম্বন করেছিলাম, যারা চুম্বন যোগ্য ছিল
যার চোখে মুখে এঁকে দিয়েছিলাম ওষ্ঠের সোহাগ
তারা সব চলে গেছে লালাসিক্ত ওষ্ঠে
ছেদন দন্তে ক্ষতলাল হতে,
যেমন জলপরীরা জল ছেড়ে উঠে গেছে বাথটাবে
বুনো অরণ্য ফেলে বনদেবী ড্রইং রুমের বাঁধানো প্রোটেটে;
পৃথিবীর সরোবরে এখন পদ্ম ফোঁটে না
ফোঁটে বাগান বিলাস ছাওয়া বাড়ির বিলাসী জলাশয়ে,
এই ভাল বালিশে মুখ গুঁজে ওয়ারে একেঁ দিই একটা গাঢ় চুম্বন বিনা প্রতিদানে।



৩।
কি পোড়ে কাগুজে বসনে, মন না সময়?
লুকনো জিনিস পোড়াতে কি হয়,
পুড়লে ছাই উড়ে বাতাসে
পড়শীরা জানে,
যত ঝারি কালি এঁটে যায়
সীলমোহরের মত চার হাত পায়!


৪।
ভেঙে যাচ্ছে তীর,
ভাঙতে ভাঙতে পেড়িয়ে যাচ্ছে নদী লেপাপোছা উঠোনের রোদ লাগা ফসলের স্মৃতি,
ভেঙে দাওয়ার খুঁটি পড়ে যাচ্ছে চালা
ভেঙে যাচ্ছে কাঁথা বালিশের উষ্ণ আবডাল
ভাঙছে এ ঘর ও ঘর হেসেল পুঁই এর মাচা,
ভাঙছে রাত দিন সমস্ত সংসার;
একশো বছর ভেঙে দিতে একবেলা ও লাগে না
তবু ভাঙছে ধীরে, আয়েশী বাঘের মত মৃত শিকার চিবিয়ে নিচ্ছে পুরোটা রক্তের স্বাদ...
ভাঙছে, রাতে বালিশে মাথা রেখে শুনি চৌকির তলে জলের হিংস্র হাসি,
দরজায় হায়েনার আঁচর কাটছে নদীর ক্ষুধাত থাবা....
ভাঙছে এ ভাবে,
মাঝে মাঝে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে ভেঙে যেতে দিতে হয়,
মানুষ কি আর সব ভাঙন ঠেকাতে পারে?
একদিন চর জাগে অতল পানির তলে
একদিন ডাঙ্গা ফেলে জলের ভেতর ই মানুষের ঘর হয়।


৫।
সব সমুদ্র খাদ ভরে আছে মানুষের পাপে
সব নদীতে মিশেছে মানুষের ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসা সহস্র নর্দমা
সব কুমারী অরণ্য মানুষের অবৈধ সঙ্গমস্থল
সব পর্বত মানুষের পদানত
সব তীর্থ বানিজ্যিক প্রভুদের কাছে ইজারা বন্দোবস্ত,
তবু মহালয়া ভোরে ঢাক বাজিয়ে ডেকে আনি নির্বাসিত ঈশ্বরকূল-
প্রতিপক্ষ লাগে বলে,
অসুরের রাজ্যে দূর্গার দশ দিন-
সে শুধু এক উৎসবের প্রয়োজনে।


৬।
জলে যাক তোমার বাগান আর ফোঁটাবো না ফুল
মালি রা তো সারা জীবন গোলাপের ভাঁজে জ্যোত্স্না করেছে আবাদ
যা নখাগ্রে ছিঁড়ে নিয়েছে বনিক শ্রেণী
বোঁটা থেকে নিঙড়ে নিয়েছে মধু
মিথ্যাচারীর গলায় পরিয়েছে বিদ্ধ করে সূঁচে
যাদু পয়সায় তুলে নিয়েছে কামুক পুরুষ নষ্টামির আগে
এতোসবের পরও কিভাবে পবিত্র থাকে সে?
কিভাবে নিকাশ ঘরে সুদ কষা প্রেম হয় স্বর্গীয়?
জলে যাক তোমার বাগান,
মুখে যা ই বলো পয়সার আঁচে সেঁকা দোকানের বাসি ফুলেও পৃথিবীর সকলে গর্বিত।


৭।
ভালোবাসতে কি লাগে, একখানা মন নাকি একটা শরীর?
শরীর হলেই কি চলে নাকি আরো কিছু চাই,
এক জোড়া শাখা তে কি পোষায়?
এক পাটি তে কি বারোমাস কাঁটে,
মাটির কাছাকাছি থেকে গুটিকয় আবেগ সম্বলে?
পাখি হলে ভাল ছিলো সুখ ধরে রাখা যেতো চঞ্চুর যৌথ বুননে
উদার আকাশে সব টুকু রেখে বুড়োআঙ্গুল দেখাতাম জাগতিক বিশ্বকে,
মানুষ তাই শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সুখের তালাস,
উজাড় করে নলখাগড়ার বন বুনেছি যে শীতল পাটি শ্রমে ও ঘামে
তাতে প্রায় ই শীতলতা নামে মৃত্যু থেকেও গাঢ়..
ভালোবাসতে কি লাগে- এখনো শিখিনি শুধু মিলিয়েছি শরীরে শরীর..
আসলে কি ভালোবাসা হয় মানুষে মানুষে?
ভালোবাসতে কি লাগে, একখানা মন, নাকি এক সমুদ্র সুখের উপকরণ?


৮।
মানুষ ডুবছে পাপ অনাচারে, ডুবছে অসত্‍ এ,
মানুষ ডুবতে দেখে আরো ডুবিয়ে দিতে আসে
মানুষ যে হাতে যত্নে প্রতিমা গড়ে
সে প্রতিমা ই ডোবায় জলে।


৯।
কিছু মানুষ কখনো সুখ পায় না
সুখের চারপাশে ঘুরে ফিরে যায় উপগ্রহের মতো,
গন্তব্য জেনেও পৌঁছাতে পারে না
ফেলতে পারে নোঙর
হাতের মুঠোয় ভালোবাসার মোয়া পেয়েও
কখনো কামড় বসাতে পারে না
শুধু চেয়ে চেয়ে দেখে
এক সময় মুঠো খুলে দেখে ধূলো মাটি;
কিছু মানুষ কখনো সুখ পায় না
শূণ্যতায় তাদের পরিসমাপ্তি।


১০।
আরো একটা দিন চলে গেছে দেখলেই
অদ্ভুত সুন্দর একটা যন্ত্রণা দেখি
বুকের ভেতর পাক খেতে থাকে,
রাত শেষে দিনের ব্যস্ততায় আর
গত রাতের কথা মনে থাকে না।
আরো একটা দিন চলে গেছে দেখলেই
বুঝি অসম্ভব ছিল না বাঁচা,
যতটা ভাবা হয়েছিল;
আকাশে মেঘ জমে এলে, বৃষ্টির রাত গুলো বড় দীর্ঘ হয়ে উঠে
কিছুতেই ঘুম আসে না
তবু রাত শেষে শহুরে কাকের ডাকেই ঘুম ভাঙ্গে।
এভাবে প্রতিটা দিনের শেষে
নিথর স্তব্ধতায়
বুকের ভেতর তীব্র ব্যথা রা জেগে উঠে
সেই ব্যথা কে জড়িয়ে পাশ ফিরে শুয়ে পড়ি
দেখি অসম্ভব ছিল না বাঁচা, যতটা ভাবা হয়ে ছিল।


১১।
ভালবাসি মেঘহীন আকাশ
তারপর ও চাই থাকুক এক টুকরো মেঘের ছায়া দীর্ঘ দুপুরে,
অঝর আষাঢ়-শ্রাবণ নয়
ক্ষণিকের বৃষ্টি ভিজাক কিছুটা;
ভালবাসি একাএকা একা হতে-
তবে বেশিক্ষণ নয়, এ সময় দীর্ঘ হলে খুব বেশি অবাঞ্চিত মনে হয় নিজেকে,
কেউ আমার সাথে আষটে পিষটে লেপটে থাকুক তা আমি কখনো ই চাইনি
মাঝে মাঝে মানুষের সঙ্গ আমার অসহ্য মনে হয়
তারপর ও চাই কেউ এক জন থাকুক
খোঁজনিক বছরে দু এক বার
কিংবা ভুল করেই কোন চিঠি আসুক
ফ্লোর ভুলে কেউ দুপুরের ডোরবেল বাজিয়ে যাক।


১২।
অনুভূতির শব্দ গুলো কে খামে ভরে
পাঠিয়ে যদি দেওয়া যেত কারো ঠিকানায়
খাম খুলতেই ছড়িয়ে পড়তো তারা মেঝেতে
কিছু টা মেঘ ডেকে নিয়ে আসতো, কিছুটা রৌদ্দুর,
কিছুটা অভিমান আলনার কোণে যেয়ে লুকতো,
খামের ভেতর থেকেযেত কিছু শব্দ কারো আঙুল ছোঁবার অপেক্ষায়..
আমার কোন বন্ধু তো নেই,
আমার কোন তুমি নেই
আমি লিখতে পারি যে ঠিকানায়- ভাল নেই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.