![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
***কখনো ভেবনা তুমি নিঃসঙ্গ ।কেননা,তুমার আত্বার অন্তরালে সর্বক্ষণ বিরাজরত আল্লাহ।সুতরাং,তুমি কোন বিষয়ে ভীত বা দুঃখীত হইওনা।বরং,সর্ববিষয়ে তুমি সন্তুষ্ট থেকে তুমার আত্বার অন্তড়ালে প্রভূকে সন্তুষ্ট কর।আর ইহায় তুমার প্রাণের মুক্তির পথ।
আর কেউ মানুক বা না মানুক।আমি মানী,পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মনের অধিকারী মা।পৃথিবীর সমস্ত সাগরের পানি যদি কালি করা হয় আর পৃথিবীর সমস্ত বৃক্ষের শাখা যদি কলম করা হয়।তবু মায়ের মনের ভালবাসা জাররা পরিমান গুনাবলি লিখেও শেষ করা যাবে না।মায়ের মনের ভালবাসার উদাহরন স্বরুপ আমি আমার মায়ের কথাগুলোই প্রথম বলছি।আমাদের অভাব অনটনের সংসারে বাবা সারাদিন হারভাঙ্গা পরিশ্রম করে যা রোজগার করতেন,তাতে আমাদের আটসদস্য বিশিষ্ট পরিবারটি কখনো খেয়ে,কখনো না খেয়ে জীবন অতিবাহীত হত।এই জন্য আমরা যখন রাত্রীতে খাবারে বসতাম,সবাই একত্রে বসতাম।কারন, কারোর যেন উপোস না থাকতে হয়।কিন্তু তারপরও মাঝে,মাঝেই মা,উপোস থাকতেন।
বাবা অবশ্য খাবারের সময় খেয়াল রাখতেন পাত্রে ভাত আছে কিনা।মা,তা বুঝে আমাদের বলতেন,পাত্রে ভাত আছে আমরা যেন পেটভরে খাই।
আমরা পেটভরে ঠিকই খাইতাম।কিন্তু মা অবশেষে না খেয়ে থাকতেন।
এভাবে মা আমার অনেক উপোস থাকতেন।আবার,যেমন সংসারে অভাব অনটনের ধরুন জীবনগুলো দুর্বিষহ হয়ে অনেকে পাপ পথে গমণ করেন।
আর এই জন্য মা আমাদের সব সময় উপদেশ দিতেন,যেন আমরা কোন অসৎ উপায় অবলম্বন না করি।যেন আমাদের সংসারে পাপের পয়সা না আসে।এখনোও আসেনি,আশা করি কখনোই আসবেনা।মনে পড়ল কিশুর বেলার কথা।কিশুর বেলায় যখন আমি কারোর সাথে জগরা করে মায়ের সম্মুখে দাড়িয়ে কাঁন্না কনতাম।তখন মা জগড়ার কথাশুনে রেগে আরো আমার উপড় প্রহার করতেন।মায়ের সে প্রহারের ভয়ে আর কারোর সাথে পরে জীবনে জগড়া হয়নি।উপদেশ স্বরুপ আমার মা সব সময় আমাদের বলতেন।যেন,আমরা কারোর সাথে জগড়া না করি,কাউকে দুঃখ না দেই,কারোর ক্ষতি না করি,কোন প্রাণকে যেন হেয় মনে না করি,প্রত্যেক জীবকে যেন ভালবাসী।আর বাবা বলতেন,জীবের জন্য দুঃখ সৃস্টির মধ্যদিয়ে আল্লাহর জন্য দুঃখ সৃষ্টি করা হয়,জীবের দুঃখে আল্লাহ ব্যাথিত হন।আর মা শুধু আমাদের উপদেশই দিতেন না,তা তিঁনিও পালন করতেন।আবার আমাদের অভাবী সংসারের মধ্যেও মাকে দেখেছি তার খাবার থেকে খাবার বাচিয়ে বিড়াল,কুকুরকে খাওয়াতে।ফকির,মিসকীনকে খাওয়াতে।আমার বিশ্বাস,নবী রাসুল,পীর,অলি,গাওস,কুতুব ও মুন্সি আর মাওলানারা কেউ যদি আল্লাহর বেহেস্তে গমণ নাও করে আমার মা,কুকুর আর বিড়ালের দোয়ায় আল্লাহর বেহেস্তে গমণ করবেন।কারন,তিঁনি জীবকে ভালবাসার মধ্যদিয়ে আল্লাহর জন্য স্বর্গ সৃষ্টি করেছেন।আর নিশ্চয়. যে মানুষটি আল্লাহর জন্য স্বর্গ সৃষ্টি করেন তাঁর গুনাবলি লিখে যদি জমিন ও আসমানের মধ্যবর্তী ভরাট করা হয়,তবু তার মনের বিন্দুমাত্র গুনাবলি লিখে শেষ করা যাবে না।আর আমার মায়ের জীবের প্রতি এই গভীর প্রেম থাকার অবশ্যএকটা কারনও ছিল।আর সে কারনটা হল আমার নানাকে আমি বলতে দেখেছি আমার মাকে।তুমি কারোর জন্য দুঃখ সৃষ্টি করনা,কখনোই তুমার সন্তান কোন দুঃখে পতিত হবে না।আমার মা নানার কথা অক্ষরে,অক্ষরে পালন করছেন।ভুলেও মা কোন জীবকে দুঃখ দেন না শুধু আমাদের কল্যাণের জন্য।সন্তানের কল্যাণের জন্য মায়ের এই প্রেম কি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মনের অধিকারী নন?।এখন আমি বলছি একটি মুরগী ও একটি পশু মায়ের কথা।আমাদের সংসারটিতে অভাব ছিল বলে আমার মা মুরগী পুষতেন।এক সময় ডিম থেকে সে মুরগী বাচ্চা লাভ করল।একদিন আমি দেখতে পাইলাম আমাদের উঠোনে সে মুরগী তার বাচ্চাগুলো নিয়ে খেলা করছে।আবার কখনো কখনো সে মুরগী তার বাচ্চার মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে।তখন হঠাৎ কোথা থেক যেন একটি চীলপাখি এসে মুরগীর বাচ্চাকে ধাওয়া মাড়ল,কিন্তু ওল্টো ধাওয়া দিয়ে তাড়ালেন মুরগী সেই চীল পাখিটাকে।বাচ্চার প্রতি মায়ের এই ভালবাসা জগতের শ্রেষ্ঠ মনের স্হান কি দাবী করে না?।অপরটি হচ্ছে,আমাদের একটি পোষা গাভীছিল ও তার একটি লালটুকটুকে ছেলে বাচ্চা ছিল।তখন গাভীটি গোড়ায় ঘাশ খাচ্ছিল।ছেলেটি তার দুধের জন্য কাঁন্না করছে শুনে গাভীটি বাধা রসিটা ছিড়ে এসে তার ছেলের মুখে দুধ তুলে
দিলেন।সন্তানের প্রতি মায়ের এই ভালবাসা কি জগতের শ্রেষ্ঠ মন নন?।
ষোল বছরের গোফ ওঠা ছেলে যুদ্ধে গিয়াছিল।অসমসাহসিকতায় সে বিপক্ষের একটি সাঁজোয়া ট্যান্ক ধ্বংস করায় তার মিলিটারি বস তাকে এক দুর্লভ পুরস্কার দিল।দু,দিনের ছুটি।সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটি ছুটল বাড়ীতে,
মায়ের কাছে।কিন্তু বাড়ী অনেক দুরের পথ।রেল গাড়ীতে যেতে যেতে নানা অনভিপ্রেত ঘটনায় জড়িয়ে দেরি হয়ে গেল তার।যখন গাঁয়ের বাড়ীতে গিয়ে পৌছল,তখন আর হাতে একদম সময় নেই।অথচ মা তখন ফসলের খেতে কাজ করতে গেছে অনেক দুরে।তবু লোকমুখে খবর পেয়ে মা ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়াতে থাকে।যখন এসে পৌছায়,তখন ছেলে রওনা হওয়ার জন্য পা বাড়িয়েছে।মাতা-পুত্রের সে একভাষাহীন মিলনদৃশ্য।চোখের জলে কথা ভেস যায়।শেষ অবধি ছেলের গালে হাত ভূলিয়ে দু,টি কথা বলতে পেরেছিল:ডু ইউ সেভ নাউ?এন্ড স্মোক টু?ছেলে চলে গেল।
সামনের আদিগন্ত গমের খেত দুলছে শীতের হাওয়ায়।মা দাড়িয়ে থাকে দরজায়,দিগন্তের দিকে চেয়ে।কোথায় কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে,মাতা বুঝতে চায়না।মায়ের চিন্তা এসে জড়ো হয় তার ছেলের মুখখানায়। এই কাহিনীটি একটি রুশ সিনেমার শেষের দৃশ্য।যে দেখেছেন এই সিনামাটি তারই বুকভেসেছে চোখের জলে।সন্তানের প্রতি মায়ের এই প্রেম কি জগতের শ্রেষ্ঠ মনের অধিকার দাবী করে না?।রাধারানী দেবি বলেছেন-মা মা-ই।মায়ের সাথে পৃথিবীর আর কারোর তুলনা চলে না।বস্তুতঃপ্রত্যেকের শ্রেষ্ঠ স্বর্গের বোনিয়াদ হচ্ছে প্রত্যকের মা-বাবা।পরিশেষে পাঠক বৃন্দু, মা-বাবার মন সন্তুষ্ট করে আল্লাহর শ্রেষ্ঠ স্বর্গের দ্বার নীজের জন্য খুলোন।আর নিশ্চয় আল্লাহ মা-বাবার সন্তুষ্ট ব্যাতীত কারোর স্বর্গের দ্বার খুলেন না।
©somewhere in net ltd.