নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

।হই আমি বীর অথবা হই আমি ধীর,আমি শুধু বাংলাদেশের নয়,আমি সমগ্র পৃথিরীর ।।হই আমি বীর অথবা হই আমি ধীর,আমি শুধু বাংলাদেশের নয়,আমি সমগ্র পৃথিরীর ।

মো: নিজাম গাজী

আমি ঐ সৃষ্টিকর্তারই সৃষ্টি,আমি তারই বান্দা, আমি শুধু বাংলাদেশের নয় আমি সমগ্র পৃথিবীর বাসিন্দা। গাজী পরিবারে আমি জন্মগ্রহন করেছি বলে আমি শুধু গাজী পরিবারের নয়, আমার জন্ম এই পৃথিবীর সর্বময়। শুধুমাত্র সোনাখালী গ্রামে আমার জন্ম নয়, আমার জন্ম পৃথিবীর সর্বময়। এই গ্রাম এই দেশের নয় আমি শুধুমাত্র, আমি এই সারা দুনিয়ারই ছাত্র। শুধুমাত্র একটি মহল্লায় আমার আগমন নয়, আমার আগমন বিশ্বময়। হই আমি ধীর হই আমি মহাবীর, আমি শুধু বাংলাদেশের নয় আমি সমগ্র পৃথিবীর।

মো: নিজাম গাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘুষের উপর ঘুষ [নাটিকা]

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৩

গ্রামের অতী হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে মারিয়া গতবছর অনার্স শেষ করলো ।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে রিটেনে
টিকেছে কিন্তু সামনে তার ভাইবা । আর এটি নিয়েই তার ভয় যদি চাকরি না হয় ।
সকালবেলা পথ দিয়ে মারিয়া যাচ্ছে সামনে দেখা হলো দালাল আফজালের সাথে ।
দালাল:- মারিয়া তুমি নাকি রিটেনে টিকেছো কিন্তু ঘুষ না দিলেতো ভাইভায়
টিকবেনা । তোমার চাকরি হবেনা ।
মারিয়া:- হ্যা ভাইয়া আমারতো সেটা নিয়েই চিন্তা ।
দালাল:- চিন্তার কিছু নাই আমাকে পাঁচ লাখ টাকা দিলে আমি ভাইভায় তোমাকে
টিকিয়ে দিতে পারবো। তোমার চাকরি হয়ে যাবে। তুমিতো জানো যে আমি বিগত দিনে
কত মানুষকে চাকরি দিয়েছি ।
মারিয়া:-হ্যা ভাইয়া জানিতো কিন্তু এত টাকা কোথায় পাবো?
দালাল:-কিযে বলো তোমাদেরতো বাহিরে কিছু জমি আছে। তোমার বাবাকে বলো ঐটা
বিক্রী করে টাকার ব্যবস্থা করতে।
মারিয়া:- ভালো কথা বলেছেন ভাইয়া। আমি একটু চিন্তা করে দেখি কি করা যায়।
দালাল:- আচ্ছা ঠীকাছে।
[উভয়ের প্রস্থান]
কিছুদিন পরে মারিয়ার বাবা জমি বিক্রি করে ও ধার কর্য করে দালালকে পাঁচলাখ
টাকা দিয়ে দিলো ।
[রাতে দালাল ও দালালের স্ত্রী বিছানায় শুয়ে কথা বলতেছে]
স্ত্রী:- তুমিযে এই টাকাগুলো নিলে যদি মেয়েটার চাকরি না হয় তাহলে কি করবে?
দালাল:- শোনো প্রাইমারি স্বচ্ছ ,এখানে ঘুষ দিয়ে চাকরি নেওয়া যায়না ।
কিন্তু আমি এবছর মোট ২০ টি ছেলেমেয়ের নিকট থেকে ঘুষ নিয়েছি । এই ২০ জনার
মধ্য থেকে ২ জনার এমনিতেই চাকরি হবে । আর ১৮ জনার টাকা ফেরত দিয়ে দেবো ।
আমার এখানে ২ জনার দশ লাখ টাকা থেকে যাবে । যাদের চাকরি হবে তারা নিজেরাই
জানবেনা যে তাদের যোগ্যতায় তাদের চাকরি হয়েছে । তারা আমাকে সমিহ করবে ।
সবাই জানবে যে আমি চাকরি দিতে পারি । তাই আগামীতে লোকে আরো আমাকে বেশি
ঘুষ দিবে । বুঝলা?
স্ত্রী:- ওহ তোমার পেটের মধ্যে এত শয়তানি বুদ্ধি । কিন্তু এভাবে কি দালালি করা ঠীক?
দালাল:- ঠীক না তয় কি করবো বলো । আমি আইএ পাশ করে চাকরির জন্য কত ঘুরছি ।
ঘুষ দিতে পারিনি তাই আমার কোথাও চাকরি হয়নি । তাইতো আমি ঘৃনায় এই ঘৃন্য
দালালি পেশা বেছে নিয়েছি ।
স্ত্রী:- হ্যা আমার ভাই ওতো ঘুষ দিতে পারেনি তাই তার কোথাও চাকরি হলোনা ।
অবশেষে আমার বিএ পাশ ভাইটি এই ক্ষোভে,কষ্টে আত্মহত্যা করলো (কেঁদে কেঁদে
বললো) ।
[কথা বলতে বলতে উভয়ে ঘুমিয়ে পরলো]
অবশেষে কিছুদিন পর রেজাল্ট দিলো । মারিয়াসহ আরো দুজনার চাকরি হয়ে গেলো ।
মারিয়া খুব খুঁশি । মারিয়া স্কুলে নতুন জয়েন করলো । মাস দুই যেতে না
যেতেই তার মধ্য ঘুষ খাওয়ার প্রবনতা চলে আসে । কারন সেযে চাকরিটা নিয়েছে
ঘুষ দিয়ে । একদিন চতুর্থ শ্রেনীতে মারিয়া ক্লাস নিচ্ছে ।
মারিয়া:- এই বাচ্ছারা তোমরা শোনো আগামীকাল তোমরা সবাই একশ করে টাকা নিয়ে আসবা ।
শিক্ষার্থীরা:- আচ্ছা ঠীকাছে আপামনি ।
এভাবে মারিয়া সবার নিকট হতে একশ করে টাকা নিয়ে নিলো । তার ঘুষের প্রতি
অনেক লোভ হয়ে গেলো ।
[দুইদিন পর আবার চতুর্থ শ্রেনীতে]
মারিয়া:- বাচ্চারা স্কুলে অনেক টাকা দরকার । তাই তোমরা সবাই আগামীকাল
আবার একশ করে টাকা নিয়ে আসবা ।
শিক্ষার্থীরা:- ঠীকাছে আপামনি ।
মারিয়া এরকম করে বাচ্চাদের ফাকি দিয়ে হাজার হাজার টাকা ঘুষ খাচ্ছে ।
[আবার তিনদিন পর চতুর্থ শ্রেনীতে]
মারিয়া:- বাচ্চারা তোমাদের পরীক্ষা টরিক্ষা মিলিয়ে অনেক টাকা লাগবে । তাই
আগামীকাল তোমরা দুইশ করে টাকা নিয়ে আসবা ।
মিম(শিক্ষার্থী):- আপামনি আমরা ঠীকমতো খাইতে পারিনা । আমরা প্রতিদিন
এতোটাকা কই পাবো । আমি টাকা দিতে পারবো না ।
মারিয়া:-কি বললি তুই টাকা তোর ঘাড়ে দিবে(এই বলে মিমকে বেত্রাঘাত করলো মারিয়া) ।
[মিম কান্না করতে করতে বাড়ি চলে গেলো]
বিষয়টি মিমের বাড়ি জেনে গেলো । মিমের বড় ভাই নিলয় পরের দিন স্কুলে গেলো ।
[স্কুলে মিমের ভাই নিলয়ের আগমন]
নিলয়:- ম্যাডাম আপনি কালকে মিমকে মারছেন কেনো?
মারিয়া:- আপনার বোন একটা বেয়াদব । ও পরীক্ষার ফিস দিতে চাচ্ছেনা তাই ।
নিলয়:- তাই বলে একটা ছোটবাচ্চাকে আপনি মারবেন? আর পরীক্ষার ফিস চতুর্থ
শ্রেনীতে এত কেনো? আর আপনি দুইদিন পরপর ওদের নিকট হতে এত কিসের একশ,দুইশ,তিনশ করে টাকা নিচ্ছেন?
মারিয়া:- শোনেন নিলয় সাহেব স্কুলের বিভিন্ন খরচা পাতি পরীক্ষার ফীস,সেমিনার ফীস,খেলাধূলার ফীস ইত্যাদির দরকার ।
নিলয়:- কিন্তু ম্যডাম এটিতো একটি সরকারি স্কুল । সরকারি স্কুলেতো আর এত
টাকা লাগার কথানা ।
মারিয়া:- এতকিছু জানার আপনার দরকার নেই । এটা আমাদের স্কুলের ব্যাপার ।
আপনি চলে যান । আমি এখন ক্লাসে যাবো । (রেগে গিয়ে) ।
নিলয়:- আপনি আমার শিশু বোনকে ঘুষের কারনে মারছেন তাই আমি থানায় আপনার
বিরুদ্ধে মামলা করবো ।
মারিয়া:- যান আপনি যাই পারেন তাই করেন ।
[নিলয়ের প্রস্থান]
মামলার কথা শুনে মারিয়া কিছুটা চিন্তিত হয়ে গেলো । তাই সে ফোন করে এলাকার
বড়নেতাকে স্কুলে ডাকলেন ।
[স্কুলে নেতার আগমন]
নেতা:- কি খবর ম্যডাম?
মারিয়া:- ভাই একটা ঝামেলায় পরে গেছি সবকিছু বুঝিয়ে বললেন নেতাকে ।
নেতা:- বুঝতে পারছি আমি বিষয়টা । কিন্তু শোনেন আমি যে এই ইউনিয়নের নেতা
হয়েছি তা এমনিতে না,আমার অনেক টাকা ঘুষ দিয়ে নেতা হতে হয়েছে । তাই আমি
মালপানি ছাড়া কোনো কাজ করিনা ।
মারিয়া:- আচ্ছা বুঝতে পারছি এই নিন আপনার মালপানি ।
নেতা:- শোনেন আপনার একটা কাজ করতে হবে । আপনার বলতে হবে যে আপনাকে নিলয়
শ্লীলতাহানী করছে । আর এটা বলে নিলয়কে পুলিশ দিয়ে ধরাতে হবে ।
[এদিকে থানায় নিলয়ের আগমন]
নিলয়:- স্যার আসসালামুআলাইকুম ।
ওসি:- ওয়ালাইকুম আসসালাম । কিসের জন্য আসছেন?
নিলয়:- স্যার এই এই ঘটনা । এখন ঐ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আপনার মামলা নিতে
হবে ।(নিলয় ওসি সাহেবকে সব বুঝিয়ে বললেন) ।
ওসি:- ঠিকাছে আমি বুঝলাম । কিন্তু আমাকে দশ হাজার টাকা না দিলে আমি মামলা
নিতে পারবোনা ।
নিলয়:- স্যার ঘুষ কেনো লাগবে?
[এরমধ্যে ঐ নেতা ওসি সাহেবকে ফোন দিলেন]
ওসি:- কি খবর বাহাদূর ভাই(নেতা)?
নেতা:- ওসি সাহেব আমাদের এলাকার এক বখাটে ছেলে নিলয় প্রাইমারি স্কুলের এক
ম্যাডামকে শ্লীলতাহানী করছে । তাই ঐ ছেলেটিকে আপনাকে গ্রেপতার করতে হবে ।
ওসি:- শোনেন বাহাদূর ভাই ঐ ছেলে নিলয় ঐ ম্যাডামের বিরুদ্ধে মামলা করতে থানায়
আসছে । আমি সত্যতা জেনে গেছি । ছেলেটি বর্তমানেও আমার সামনে বসা । আমি
মালপানি ছাড়া কোন কাজ করতে পারবো না । আমার এই চাকরিটা নিতে বারো লাখ
টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে ।
নেতা:- আচ্ছা ওসি সাব আপনাকে মালপানি যা লাগে তাই দেবো । আপনি ওকে গ্রেপতার করুন ।
ওসি:- আচ্ছা ঠীকাছে আপনি মালপানিটা আজকেই পাঠিয়ে দিন । আমি ওর নামে মজবুত
করে মামলা তৈরি করতেছি ।
ওসি মামলা তৈরি করে ছেলেটিকে গ্রেপতার করে হাজতে নিয়ে যায় । হাজতে নিয়ে
ওসি ছেলেটিকে পিঠায় আর বলে তুই ৫০ হাজার টাকা আমাকে দিলে আমি তোকে ছেড়ে
দিবো । কিন্তু গরীব নিলয় কোত্থেকে দিবে এত টাকা । তাই সে হাজতে বন্দি ।
এর মধ্যে প্রথম আলোর এক সাংবাদিক আসল ঘটনা সব জেনে যায় । এবং সে ঐ
শিক্ষিকা নেতা ও ওসির বিরুদ্ধে পত্রিকায় একটি রিপোর্ট করে । এই রিপোর্টটি
লোকাল এমপির নজর কাড়ে ।
[থানায় এমপির আগমন]
এমপি:-ওসি আপনি ঐ শিক্ষিকা ও ঐ নেতা বাহাদূরকে ডাকেন । আর ঐ অসহায় ছেলে
নিলয়কে ছেড়ে দিন ।
[থানায় শিক্ষিকা ও এলাকার নেতার আগমন]
ওসি নিলয়কে ছেড়ে দিলেন ।
এমপি:- ওসি আপনি ওনাদের দুজনকে গ্রেপতার করুন ।
ওসি:- জ্বী স্যার এখনই গ্রেপতার করছি ।(এই বলে দুইজনকে গ্রেপতার করলো) ।
এমপি:- ঠীকাছে । আর ওসি সাব আপনাকে বান্দরবন ট্রান্সফার করা হলো ।
আগামীকাল এই থানায় নতুন ওসি আসবে ।
এভাবে ঘুষের উপর ঘুষ চলতে থাকলেও সাংবাদিক ও সৎ এমপির হস্তক্ষেপে ঘুষ
নির্মূল হয়ে যায় । নিলয়সহ সমাজের মানুষ আলোর মুখ দেখতে পায় । শুধুমাত্র
একটি এলাকার একটি অংশ ঘুষমুক্ত হলে চলবেনা বরং সারা দেশই ঘুষমুক্ত হওয়া
আবশ্যক ।
[সমাপ্ত]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪২

মোহাম্মদ শামছুদ্দীন বলেছেন: আসলে ঘুষ একটা চেইন সিষ্টেমে পড়ে গেছে। শুধু পুলিস বাহীনিকে ঘুষ মুক্ত করতে পারলে আমার বিশ্বাস সমাজ থেকে ঘুষ নিমূর্ল করা যাবে ।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩০

মো: নিজাম গাজী বলেছেন: right bolesen he lekhok.dhonnobad..

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.