![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঐ সৃষ্টিকর্তারই সৃষ্টি,আমি তারই বান্দা, আমি শুধু বাংলাদেশের নয় আমি সমগ্র পৃথিবীর বাসিন্দা। গাজী পরিবারে আমি জন্মগ্রহন করেছি বলে আমি শুধু গাজী পরিবারের নয়, আমার জন্ম এই পৃথিবীর সর্বময়। শুধুমাত্র সোনাখালী গ্রামে আমার জন্ম নয়, আমার জন্ম পৃথিবীর সর্বময়। এই গ্রাম এই দেশের নয় আমি শুধুমাত্র, আমি এই সারা দুনিয়ারই ছাত্র। শুধুমাত্র একটি মহল্লায় আমার আগমন নয়, আমার আগমন বিশ্বময়। হই আমি ধীর হই আমি মহাবীর, আমি শুধু বাংলাদেশের নয় আমি সমগ্র পৃথিবীর।
রমজান মিয়া খুব গরিব লোক । দিনমজৃরের কাজ করে সে । অনেক কষ্ট করে সংসার চালায় সে ।তার একটি মাত্র কন্না,নাম তার তমা । তমা ৭ম শ্রেনীতে পড়ে । তমার বয়স মাত্র তেরো বছর । তমার লেখাপড়ার খরচ রমজান মিয়া খুব কষ্ট করে চালায় । তমা প্রতিদিন স্কুলে যায় ।একদিন স্কুলে যাওয়ার পথে তার সাথে দেখা হয় এক মাঝবয়স্ক লোক হায়দার আলীর সাথে । হায়দার আলীর বয়স ৪৪ বছর । সে দীর্ঘ ১০ বছর বিদেশে কাটিয়েছে ।
(তমাকে হায়দার আলী দেখে তমার সামনে এসে দাড়ায়) ।
তমাঃ- আঙ্কেল একটু সাইড দিন আমি স্কুলে যাবো ।
[তমার চেহারা দেখে হায়দার আলী পাগল হয়ে গেছে]
হায়দার আলীঃ- তোমার বাড়ি কোথায়,তোমার নাম কি?
তমাঃ- আমার বাড়ি নিজামপুর গ্রামে । আমার নাম তমা ।
হায়দার আলীঃ-ওহ তোমার আব্বার নাম কি?
তমাঃ-আঙ্কেল আমার আব্বার নাম রমজান শেখ ।
হায়দার আলীঃ- ওহ আমিতো তোমার আব্বাকে চিনি । আর তুমি আমাকে বারবার আঙ্কেল বলে ডাকছো কেনো তমা?
তমাঃ- আপনি তো আমার বাবার বয়সি । এখন পথ ছাড়ুন আমি স্কুলে যাবো ।
(হায়দার আলী পথ ছেড়ে দিল,তমা স্কুলে চলে গেলো)
[উভয়ের প্রস্থান]
(হায়দার আলি বিদেশে থেকে অনেক টাকা পয়সার মালিক হয়েছে । এখন তার অনেক টাকার গরম । সে এখন বিয়ে করবে) ।
[একদিন বাজারে রমজান মিয়ার সাথে দেখা হয় হায়দার আলীর]
হায়দার আলীঃ-চাচা কেমন আছেন?
রমজান মিয়াঃ- এই তুই আমারে চাচা কইয়া ডাহো ক্যান? তুই তো আমার বন্ধু ছিলি ।
হায়দার আলীঃ- দেখেন চাচা ঐ বন্ধুত্বের সম্পর্ক এখন শেষ । এখন অন্য সম্পর্ক নিয়ে ভাবতে হবে ।
রমজান মিয়াঃ- হ্যর আবার মাইনি কি?(রেগে গিয়ে)
হায়দার আলীঃ- আপনার মেয়ে তমাকে আমার সাথে বিবাহ দিবেন ।আপনার মেয়েটা খুব সুন্দর । টাকা পয়সা,জায়গা জমি যা লাগে তা দিয়ে আমি আপনাকে সহযোগিতা করবো ।
রমজান মিয়াঃ- তুই এট্টা বেদব ।
[হায়দার আলী তখন রমজান মিয়ার পকেটে প্রায় ২০ হাজার টাকা গুজে দেয় । টাকা পেয়ে দারিদ্র রমজান মিয়া রাজি হয়ে গেল]
রমজান মিয়াঃ- ঠিকাছে মুই বাড়িতে এট্টু কতা বার্তা কইয়া দেহি কি হরা যায় ।
হায়দার আলীঃ-আচ্ছা চাচা ।
[উভয়ের প্রস্থান]
[রমজান মিয়া বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী জায়দাকে সব খুলে বলে ।]
জায়দাঃ-অতো বড় বেডার লগে মুই মোর মাইয়ারে বিয়া দিমুনা ।
রমজান মিয়াঃ- দ্যহো বউ মোগো তো কিচ্ছু নাই । হায়দারের লগে মাইয়াডরে বিয়া দেলে মোরা ধনী অইয়া যামু । আর পুরুষ মানসের আবার বয়সে ঠ্যহে নাহি ।
জায়দাঃ- আইচ্ছা মুই রাজি ।তমারে সব বুঝাইয়া কইতাছি ।
জায়দাঃ- তমা আর কয়ডাদিন পর হায়দার আলীর লগে তোর বিয়া ।
তমাঃ-তুমি কি কও মা এই বয়সে আমি বিয়া করুম না ।
জায়দাঃ- তোর কইলে আর অইলে? তোর বিয়া করতেই অইবে ।
[জায়দার প্রস্থান]
(একদিন ক্লাসে তমা খুব মন খারাপ করে বসে আছে)
ম্যাডামঃ- এই তমা তোমার কি হয়েছে মন খারাপ করে বসে আছো কেনো?
তমাঃ- ম্যাডাম আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে ।
ম্যডামঃ- কি বলো এই বয়সে বিয়ে?কে বিবাহ ঠিক করছে?
তমাঃ- ম্যাডাম আমার বাবা মা বিবাহ ঠিক করছে ।
ম্যাডামঃ- কার সাথে বিবাহ ঠিক করছে?
তমাঃ- ম্যাডাম তা আমি জানিনা । তবে শুনছি ছেলের নাকি অনেক বয়স ।
ম্যাডামঃ- আচ্ছা তমা চিন্তা করোনা আমি কাল তোমাদের বাড়িতে যাবো তোমার মাবাবার সাথে কথা বলতে ।
তমাঃ- ঠিকাছে ম্যাডাম ।
[তমাদের বাড়িতে স্কুলের ম্যাডামের আগমন]
ম্যাডামঃ- রমজান ভাই আর আপা আপনারা এই বয়সে তমার বিবাহ ঠিক করছেন কেনো?
রমজান মিয়াঃ- হ্যতে আমহের কি? মোর মাইয়ারে আর মুই পড়ামুনা । পড়াইয়া পড়াইয়া আমহেগো নাহান মাষ্টের বানামুনা । আমহে বিয়ার আর কি বুঝবেন? আমহের বয়স ৩০ ছারাইয়া গ্যছে হ্যারপর ও বিয়া হরেন নায় । এহন আমহে যাইতে পারেন ।
জায়দা(তমার মা)ঃ- হু আমহে এহন যান ।
[ম্যাডাম খুব কষ্ট পেয়ে ও অপমানিত হয়ে চলে গেলেন]
(ম্যাডাম পথ দিয়ে যাচ্ছে আর এই তমার বিয়ের ব্যপারে চিন্তা করতেছে । হঠাৎ করে ম্যাডামের সাথে পথে এক এনজিওর কর্মির সাথে দেখা হলো) ।
ম্যাডামঃ-আস সালামুআলাইকুম । কেমন আছেন?
এনজিও কর্মিঃ- জ্বি ম্যাডাম ভালো । তা আপনার মন খারাপ কেনো? কি হয়েছে?
ম্যাডামঃ- এনজিও কর্মিকে সব খুলে বললেন ।
এনজিও কর্মিঃ- এটিতো ম্যাডাম একটি বাল্য বিবাহ । এটিকে রোধ করতে হবে ।
ম্যাডামঃ- বাল্য বিবাহ রোধ করবে কে?,এখানে তো ওর মাবাবা বিয়ে দিচ্ছেন এখানে কিছু করার নাই?
এনজিও কর্মিঃ- শোনেন ম্যাডাম এটি বাল্য বিাবাহ ।১৮ বছরের আগে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া আইনত দন্ডনিয় অপরাধ । বাংলাদেশ সরকারের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন অনুসারে এটি একটি সাষ্তিযোগ্য অপরাধ । কেননা ১৮ বছরের আগে মেয়েদের বিয়ে দিলে মেয়েদের অনেক শারিরিক ক্ষতি হয় ।
ম্যাডামঃ- ওহ আচ্ছা এটি তো আসলেই দন্ডনীয় অপরাধ ।
এনজিও কর্মিঃ- চলুন ম্যাডাম আমি আর আপনি মিলে থানায় যাই ।
[থানায় এনজিও কর্মি ও ম্যাডামের আগমন]
(দুজনে থানার অফিসারকে সব খুলে বললেন) ।
অফিসারঃ-তারা বিয়ে দিচ্ছে এটা তাদের ব্যাপার । এখানে আপনারা নাক গলাচ্ছেন কেনো?(অফিসার একটু গড়িমসি করে চাবিয়ে চাবিয়ে কথা বলছে)
এনজিও কর্মিঃ- না স্যার দেখেন এই বিয়ে আপনার ঠেকাতে হবে ।
অফিসারঃ- আপনাদের কি খেয়ে দেয়ে কাজ নাই?আছেন তো একটা এনজিও খুলে বসে । যান আপনি গিয়ে আপনার কাজ করুন । যান ।
ম্যাডামঃ- দ্যখেন স্যার এটি বাল্য বিবাহ,তাই এটি আপনার রোধ করতে হবে ।
অফিসারঃ- আপনি তো একজন শিক্ষিকা আপনি গিয়ে শিক্ষকতা করুন । এখানে অহেতুক নাক গলাইয়েন না ।
[এরপর ওনারা দুজন থানা থেকে নিরাশ হয়ে এলাকার মেম্বরের কাছে সব ঘটনা খুলে বললেন]
মেম্বরঃ- না এটাতো বাল্য বিবাহ । এটি আইনত দন্ডনীয় অপরাধ ।এটা মেনে নেওয়া যায়না । এ ব্যাপারে আমাদেরকে কাউন্সিল ও করান হয়েছে ।
এনজিও কর্মিঃ- ধন্যবাদ । ভাই আপনি একটা ব্যবস্থা করুন ।
মেম্বরঃ- ব্যবস্থা তো অবশ্যই করবো । আমি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলবো,দরকার হলে উপরস্থ মহলেও কথা বলবো । মেয়ের বিবাহ কবে?
ম্যাডামঃ- এই মাসের ১২ তারিখ শুক্রবার ।
মেম্বরঃ- আচ্ছা আমি দেখবে আনে । এই বিয়ে প্রতিহত করতে হবে । আপনারা কোনো চিন্তা কইরেন না । এখন আপনারা যান ।
[উভয়ের প্রস্থান]
(এদিকে তমার খুব মন মরা অবস্থা । তমা কষ্ট সহ্য করতে না পেরে ওর পোশের বাড়ির ভাবির কাছে গেলো ।)
তমাঃ- ভাবি আমি এই বয়সে বিয়ে করবো না । তুমি একটু মাবাবাকে বুঝাও ।
ভাবিঃ- দ্যাখ তমা তোর মাবাবাকে বুঝিয়ে কেনো লাভ নেই । মেয়ে হয়ে জন্মাইছিস যখন বিয়ে তো করতেই হব,তাই তুই বিয়েতে রাজি হয়ে যা ।
(তমা ওর ভাবির কথা শুনে মনমরা হয়ে বাধ্য হয়ে বিয়েতে রাজি হয়ে গেলো)
[এদিকে ১২ তারিখ শুক্রবার বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হলো । তমা মন মরা হয়ে লাল শাড়ি পরে সেজে গুজে বিয়ের পিড়িতে বসলো । বরযাত্রী ও কাজী চলে আসলো]
রমজান মিয়াঃ- কাজি ভাই বিয়া পড়ান।
কাজীঃ- না এ বিয়ে আমি পড়াতে পারবো না । মেয়ের বয়স কম এখানে আইনত অনেক বাধা আছে ।
রমজান মিয়াঃ- দ্যহেন কাজি সাব আমরা ওর মাবাবা আমরা রাজি থাকলে বিয়া পড়াইতে আমহের সমস্যা কী?
কাজীঃ- দেখেন রমজান সাব বাল্য বিবাহ আইনত নিষেধ । এটি দন্ডনীয় অপরাধ । আমি এ বিয়ে পড়াইতে পারবো না ।
[তখন বর হায়দার আলী কাজির হাতের মধ্যে পাঁচ হাজার টাকা গুজে দিয়ে বললো লেখেন লেখেন আরো দিবোনে বয়সটা বাড়ইয়া লেখেন । তখন কাজী খুঁশি হয়ে বিয়ে পড়াইতে সম্মত হলেন ।]
[তখন বিয়ে বাড়িতে এলাকার চেয়ারম্যান,মেম্বর ও এনজিও কর্মি,ম্যাডাম ও তিনজন পুলিশের আগমন]
চেয়ারম্যানঃ- stop এই বিয়ে বন্ধ করুন ।
[তখন কাজী পুলিশ দেখে ওরে মা বলে দিলো ভোদৌড় । পুলিশ কাজীকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসলো ।]
চেয়ারম্যানঃ- আপনি এই বয়সে আপনার মেয়ের সমতুল্য একটি মেয়েকে বিবাহ করছেন কেনো?
বরঃ- আমার সাথে বিবাহ দিচ্ছে । এটাতো আমার কোনো অন্যায় না ।
চেয়ারম্যানঃ- এইটাই একটি মস্তবড় অন্যায় । বাল্য বিবাহ দন্ডনীয় অপরাধ । আপনি এই বিয়ে করলে বাংলাদেশ সরকারের বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন অনুযায়ী আপনাকে শাষ্তি ভোগ করতে হবে । ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেওয়া সম্পূর্ন অনৈতিক ও মস্তবড় অপরাধ । তাই আপনি এই বিয়ে থেকে সরে দাড়ান ।
বরঃ- আচ্ছা ঠিকাছে আমি এ বিয়ে করবো না । আমি আমার ভুল বুঝতে পারছি ।
[একথা শুনে তমা খুব খুঁশি]
মেম্বরঃ-আপনারা কেনো আপনাদের এই তেরো বছরের মেয়েকে বিবাহ দিচ্ছেন? আপনারা জানেন কী যে এটি বাল্য বিবাহ? সাধারনত মেয়েদের আঠারো বছরের আগে বিয়ে দিলে তাদের অনেক শরিরিক সমস্যা হয়,অনেক যৌন রোগ হয় । এবং সন্তান জন্ম নেওয়ার সময় অধিকাংশ মা মারা ও যায় । আপনারা কি চান আপনার মেয়ের এভাবে বিয়ে হয়ে অকাল মৃত্যু হোক?
তমার মাবাবাঃ- না মোরা এডা চাইনা । মোগো মাফ করবেন স্যার । মোগো মাইয়ারে আঠারো বছরের আগে বিয়া দিমুনা ।
চেয়ারম্যানঃ- আচ্ছা আপনারা যখন ভুল বুঝতে পারছেন তাহলে আপনাদের পুলিশে দিলাম না । আসুন আমরা সবাই মিলে একটা স্লোগান ধরি ।
দূর হোক টাকাপয়সার মোহ,
বন্ধ হোক বাল্য বিবাহ ।
আঠারো বছরের আগে বিয়ে নয়,
বালিকা কখনও বধূ নয় ।
[সমাপ্ত]
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫০
মো: নিজাম গাজী বলেছেন: ata akta natika.. donnobnad he lekhok.
২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
বিষয়টা ভালো।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫১
মো: নিজাম গাজী বলেছেন: donnobnad he lekhok.
৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২২
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বিষয়টা ভাল।
তবে গল্প? গল্প হিসেবে ফোর্থ ক্লাস
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫২
মো: নিজাম গাজী বলেছেন: donnobnad he lekhok.
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৪৬
বিজন রয় বলেছেন: এটা কি গল্প না নাটক?