নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যভাষী সমালোচক

এস নবীন (সম্রাট)

লেখালেখির অভ্যাস শৈশব থেকেই। কবিতা ও ছোট গল্প লিখতে ভালবাসি।নিজের মতামতের উপর আস্থা থাকলেও অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা জানাতে পিছুপা হইনা ।

এস নবীন (সম্রাট) › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৌলিক অধিকার কি নিরাপদ?

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৪

রাষ্ট্রের অনুগত নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ববোধ থাকা আবশ্যক। রাষ্ট্রের নেতা, সংবিধান, আইন যেমন মানতে বাধ্য আমরা। তেমনি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকেই বাংলাদেশ পেয়েছে সংবিধান। যা দিয়েছে আমাদের অধিকারের নিশ্চয়তা।
তবে যখন দেখি, সংবিধান কর্তৃক প্রদেয় অধিকার হরহামেশা হরণ হচেছ, তখন আমরা শেষ আশ্রয়াস্থল হিসেবে কোথায় যাবো?
কোথায় গেলে পাবো সাংবিধানিক মোলিক অধিকারের নিশ্চয়তা?

সংবিধানের ২৬ থেকে ৪৭ অনুচ্ছেদে যে সব মৌলিক অধিকারের কথা বলা হয়েছে। তা কেন পদে পদে আজ হুমকির সম্মুখিন? অনুচ্ছেদ ২৭-এ আইনের দৃষ্টিতে সমতার কথা উ্ল্লেখ থাকলেও তা আজ অনেক ক্ষেত্রেই একহস্তে নিয়ন্ত্রিত।

যাই হোক মূল কথা হলো- সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪১এ ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে ঠিক এভাবে-"আইন, জনশৃংখলা ও নৈতিকতা সাপেক্ষে-
ক) প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে;
খ) প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় ও উপ-সম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার রহিয়াছে।
গ) কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে যোগদানকারী কোন ব্যক্তির নিজস্ব ধর্ম-সংক্রান্ত না হইলে তাহাকে কোন ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণে কিংবা কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উপাসনায় অংশগ্রহণ বা যোগদান করিতে হইবে না।"
এখন কথা হলো, সংবিধান আমাদের ধর্ম পালনের স্বকীয় অধিকার দিয়েছে। তাহলে প্রশ্ন থাকে, আমরা কেন অন্যের ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করি?
সনাতন ধর্মে যদি গো-মাংস খাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকে তবে তা সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই মানতে পারেন। অন্যদের উপর কেন সে বাধ্য-বাধকতা আরোপ করতে হবে? হ্যা হতে পারে যে গো-মাংস খেলে বা গো-হত্যার মাধ্যমে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। তবে এটা ভাবা উচিত নয় কি, যে আপনার ধর্মানুভূতি রক্ষা করতে গিয়ে অনেকের "জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকাররক্ষণ" টি ভুলুন্ঠিত হচ্ছে। আর "জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকাররক্ষণ" বাংলাদেশের সাংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে নিশ্চিত করা হয়েছে। আমার মনে হয়, গো-মাংস খাওয়া বা অন্য কোন প্রাণীর মাংস খাওয়া বা না খাওয়া এটা ব্যক্তির উপর নির্ভর করে। মুসলিম মানেই গরুর মাংস ভোজি তা যেমন ঠিক নয়, তেমনি সনাতন ধর্মাবলম্বী মানেই যে গরুর মাংসের আশেপাশে যান না এমনটিও নয়। ভারতে অনেক সম্ভ্রান্ত সনাতন ধর্মাবলম্বী আছেন যারা গরুর মাংস খান। এমনকি ঘটা করে গরুর মাংসের পার্টি দিয়েও তারা বিশ্বকে জানিয়েছেন, মানুষের জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতা সবার আগে।
ইসলাম ধর্মে মদ খাওয়া হারাম, তবুও অনেক মুসলিম মদ পান করে। সম্প্রতি একটি জরিপে এটাও উঠে এসেছে যে, সব থেকে বেশী মদ পান করে ১০০% মুসলমানের দেশ সৌদি আরবের অধিবাসীরা। মদ খাওয়া ঠেকাতে অনেক আইনও আছে সেসব দেশে তবুও মানুষের মানবীয় স্বাধীনতাকে আটকে রাখা যায়নি।
তেমনি, একজনের গরুর মাংসের প্রেমকে আপনি চোখ রাঙানী বা হাকডাক দিয়ে বন্ধ করতে পারবেন না, পারেন না, পারা উচিত নয়। এটা একজন মানুষের নিতান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। মদ্যপায়ী, শুকরের মাংস ভোজী সবাইকে খাওয়াচ্ছেন, পরাচ্ছেন আল্লাহ তায়ালা । তিনি উদার, অথবা তাদেরকে তিনি অবকাশ দিয়েছেন। অথবা যদি ভগবান ধরি, তাহলে তিনি, কোটি কোটি গরুর মাংস ভোজিকে বহাল তবিয়তে দুনিয়াতে বাচিয়ে রেখেছেন। স্রষ্ঠা আসলেই মহান, উদার, দয়ালু। আর আমরা ব্যাঙ, কুয়োর ব্যাঙ। অপরকে সহ্য করার যোগ্যতা বা ক্ষমতার লেশ মাত্র আমাদের নেই।

আলোচনার কারণ- সম্প্রতি নিউইয়র্কে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে গরু জবাই ও গরুর মাংস খাওয়ার উপর আইনি নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনা করেছেন। আমি মনেকরি, তাদের এ চাওয়ার নূন্যতম কোন সাংবিধানিক বা মানবিক যৌক্তিকতা নেই। আর যদি কখনো কোন ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে সে যৌক্তিকতা আবির্ভূত হয়। তবে প্রশ্ন রইবে, "মৌলিক অধিকার কি নিরাপদ"?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১১

অনন্ত৪২ বলেছেন: তারা সব কিছু চাপিয়ে দিতে অভ্যস্ত কিন্তু আমাদের এখানে তা মানতে আমরা বাধ্য নই। তারা চিল্লান দিক আর আমরা আমাদের মতো শান্তিতে বাচতে থাকি :-)

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৯

এস নবীন (সম্রাট) বলেছেন: হুমমম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.