নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যে কোনো ভূমিকায় সমানে লড়ে যাই, আপনি যেমন চান আমি ঠিক তাই।

নান্দনিক নন্দিনী

লেখালেখি হচ্ছে প্রেমে পড়ার মতন একটা ব্যাপার, কোনো ধরনের কর্তৃত্ব জাহির করা নয়।

নান্দনিক নন্দিনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাক্ষী ছিলো শিরস্ত্রান (বুক রিভিউ-০১)

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৬



কোনো এক অজানা কারনে তাজউদ্দিন আহমদ আমার ভীষন প্রিয় একজন মানুষ। শুধু প্রিয় নন, তিনি আমার কাছে “পিতাসম প্রিয়”। এদেশের মুক্তিযুদ্ধের যে কোনো বইতে তার উপস্থিতি অনিবার্য ভাবে রয়েছে। কিন্তু আমি চাইছিলাম এমন একটা বই যেটা লেখা হয়েছে কেবল তাজউদ্দিন আহমদকে নিয়ে। কেননা আমি তো ব্যক্তি তাজউদ্দিন কে জানতে চাই। হ্যাঁ, পেয়েও গেলাম। গতবছর শুদ্ধস্বর থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাজউদ্দিন আহমদকে নিয়ে লেখা সুহান রিজওয়ান এর বই “সাক্ষী ছিলো শিরস্ত্রান”। সুহান লেখক হিসেবে বেশ দক্ষতার সাথে উপন্যাসটিকে প্রাণবন্ত করেছেন ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্যের মোড়কে। সুহানের সাড়ে তিন বছরের পরিশ্রমের ফসল এই বইটি, তার নাম লিখে দিয়েছে ইতিহাসে বাংলা সাহিত্যের পাতায়।

আমার কাছে তাজউদ্দিন এমন একজন যিনি আমাকে বড় করেছেন, বিকশিত করেছেন। অবিচল, পরিশ্রমী, সৎ, নিষ্ঠাবান, ধৈর্য্যশীল এই মানুষটার কথা আমি কোথা থেকে শুরু করবো বুঝতে পারছি না। তাকে যত পড়েছি তত কেঁদেছি। একজন মানুষ এতখানি নির্মোহ হতে পারে! কীভাবে সম্ভব। সাহসী, সাবলীল, বুদ্ধিদীপ্ত এই মানুষটা কোনো ভাবেই পলিটিশিয়ান ছিলেন না, ছিলেন একজন স্টেটসম্যান।

বঙ্গবন্ধু’র নির্দেশে ২৫ মার্চ আমীর-উল-ইসলামের সাথে ঘর ছাড়েন তাজউদ্দিন।সাথে নেন একটা ছোট্ট ব্যগে কয়েকটি কাপড় আর নিজের ব্যবহ্রত পিস্তলটা। ২৭ বছর ধরে যে বঙ্গবন্ধুর সাথে তিনি রাজনীতির পথ হাটছেন, তাঁর নির্দেশ অমান্য করা তাজউদ্দিনের পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি পেছনে রেখে গেলেন, তার স্ত্রী জোহরা তাজউদ্দিন এবং তিন মেয়ে ও এক ছেলে কে। যাবার সময় শুধু বলে গেলেন, “ আমি আসি লিলি। তোমরা লুকিয়ে পড়ো কোথাও”। কিছু সময় পরে নেমে এলো বাঙ্গালী জাতি’র সেই ভয়ংকর কালরাত। যেটা নিয়ে ‘নিউ ইয়ার্ক টাইমস’ হেডলাইন করেছিল, “রক্তই যদি কোনো জাতির স্বাধীনতার অর্জনের দাম বলে বিবেচিত হয়, তবে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই অনেক বেশি দাম দিয়েছে”। বন্দি হলেন শেখ মুজিবর রহমান। ৩০মার্চ সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডের কাছে, জীবননগর, টঙ্গি খালে অপেক্ষা করছেন তাজউদ্দিন, ভারতে প্রবেশের অনুমতির।

“লিলি (জোহরা তাজউদ্দিন), আমি চলে গেলাম।যাবার মুহূর্তে কিছু বলে আসতে পারি নাই, মাফ করে দিয়ো। পরিবার নিয়ে তুমি সাড়ে সাত কোটি মানুষের মাঝে মিশে যেয়ো। কবে দেখা হবে জানি না…… মুক্তির পর”। অসম্ভব আশাবাদী এই মানুষটার জন্ম ১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে। তাঁর পিতা মৌলভী মোঃ ইয়াসিন খান এবনহ মাতা মেহেরুন নেসা খান।৪ ভাই, ৬ বোনের মাঝে ৪র্থ তাজউদ্দীন আহমদের পড়াশোনা শুরু বাবার কাছে আরবি শিক্ষার মাধ্যমে। এই সময়ে ১ম শ্রেণীতে ভর্তি হন বাড়ির দুই কিলোমিটার দূরের ভূলেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে৷ ১ম ও ২য় শ্রেণীতে ১ম স্থান অর্জন করেন৷ ৪র্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন বাড়ি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের কাপাসিয়া মাইনর ইংলিশ স্কুলে। এরপর পড়েছেন কালিগঞ্জ সেন্ট নিকোলাস ইনস্টিটিউশন, ঢাকার মুসলিম বয়েজ হাই স্কুল ও সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুলে৷ তিনি ম্যাট্রিক (১৯৪৪) ও ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ থেকে অবিভক্ত বাংলার সম্মিলিত মেধাতালিকায় যথাক্রমে দ্বাদশ ও চতুর্থ স্থান (ঢাকা বোর্ড ) লাভ করেন। ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বি.এ (সম্মান) ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে কারাগারে থাকা অবস্থায় এল.এল.বি. ডিগ্রীর জন্য পরীক্ষা দেন এবং পাস করেন। তাঁর স্ত্রী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন। তাঁদের ৪ সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে শারমিন আহমদ রিপি ; মেজো মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি বিশিষ্ট লেখিকা ও এবং কনিষ্ঠা মেয়ে মাহজাবিন আহমদ মিমি। পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ।

সৈয়দা জোহরার প্রথম বিয়েটার পরিসমাপ্তি ছিল অনাকাংক্ষিত। পরে তার বান্ধবী অনু এবনহ তার স্বামী ইসলাম সাহেবের মধ্যস্ততায় তাজউদ্দিন আহমেদ এর সাথ জোহরার বিয়ে হয়। তিনি জোহরা কে বিয়ে করতে চান। জোহরা অবাক হয়েছিলেন, প্রশ্ন রেখেছিলেন সাথে সাথেই। কেন? নিজে ব্যাচেলর হবার পরও একদা বিয়ে হওয়া কাউকে কেন পেতে চাইছেন তিনি? তাজ উদ্দিন কি জোহরা কে মহত্ত্ব দেখাতে চাইছেন, করুনা করছেন? চশমার আড়াল থেকে তাজউদ্দিন একটা কেমন দৃষ্টি দিয়েছিলেন জোহরার দিকে। সেই দৃষ্টি, যা বুঝিয়ে দিয়েছিল জোহরার আশংকা অর্থহীন, প্রশ্নটাও অপ্রয়োজনীয়। জোহরা বলেছিলেন, ‘সোনার গয়না লাগবে না আমার। আমার পছন্দ বেলি ফুল।বেলি ফুল দিয়েই বিয়ে হোক আমার’। তাজউদ্দিন হাসতে হাসতে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘আচ্ছা, তাই সই!’ একরাশ বেলিফুল তাই সেদিন হয়ে উঠেছিল জোহরা আর তাজউদ্দিনের সঙ্গী।

আমীর-উল-ইসলামের প্রস্তাবেই মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পক্ষে মত দেন তাজউদ্দিন আহমদ। রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবর রহমান, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপরি সৈয়দ নজরুল ইসলাম।“কাপাসিয়ার ছোট্ট যে ছেলেটা গজারিবনের মাঝে দিয়ে হেঁটে যেত স্কুলে, মুজিব নগরের আম্রকানন দিয়ে ছুটতে থাকা জিপগাড়িতে বসে সে এই মুহূর্তে ভাবে, পথের শুরু হলো মাত্র, যেতে হবে আরও বহু দূর। যে ছেলেটি এতদিন ভুলেশ্বর প্রাইমারি স্কুলের ক্লাস ওয়ান থেকে টু’তে ওঠার সময় ফার্স্ট প্রাইজ দেড় পয়সার কালির দোয়াত আর সাড়ে আট পয়সার কলমকেই ভেবে রেখেছে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি অনুভব করেন, স্বাধীনতা অর্জনের সাথে আর কোনো প্রাপ্তি-ই তুলনীয় নয়”। ভুট্টো’র “লিসেন। আই ডোন্ট গিভ আ ড্যাম অ্যাবাউট শেখ মুজিব,’ রক্তলাল চোখে চিবিয়ে চিবিয়ে বলেছলেন ভুট্টো। ‘ ইমোশনাল অ্যাপ্রোচে তাকে দমিয়ে ফেলা যায়। বাট… দ্যাট লিটিল ম্যান বিহাইন্ড হিম, দ্যাট লিটল নটোরিয়াস ম্যান, ফাইল হাতের ঐ তাজউদ্দিন, তাকে আটকানো বড় শক্ত। দিস গাই ইজ ভেরি থরো। দিস তাজউদ্দিন, আই টেল ইউ, উইল বিকাম ইউর মেইন প্রবলেম!” বলবেই বা না কেন, যুক্তির লড়াইয়ে এই ভুট্টোকে হার মানিয়েছে যে মানুষ তিনি তো তাজউদ্দিন।

বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী মন্ত্রীসভার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দিনের দুইশত ছেষট্টিদিনের যে পথ চলা তা মোটেও মসৃ্ন ছিলো না। প্রতিটি পদক্ষেপে তাকে কান্ডারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়েছিল। ভুট্টো যাকে আখ্যা দিয়েছিলেন ‘শেখের যোগ্য লেফটেন্যান্ট’ বলে, সেই ‘কথা কম কাজ বেশি’ মানুষটি হৃদয়ে আর মস্তিষ্কে ঝড় নিয়ে উঠে দাঁড়ালেন শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত ‘৭০’এর নির্বাচনে জয়ী জনপ্রতিনিধিদের” সভায়। ছাত্র নেতাদের রোষের মুখেই মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বললেন “ স্বাধীন বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। পরাধীন বাংলায় বঙ্গবন্ধু ফিরে আসবে না। আমরা যদি ভুল করে থাকি তবে দেশ স্বাধীন হলে আপনারা আমাদের বিচার করবেন এবং আপনাদের রায় আমরা মাথা পেতে নেব”।

যুদ্ধ তখন বেশ সংগঠিত। ২০ আগস্ট, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে করাচির মসরুর বিমানঘাঁটির রানোয়ে থেকে ‘টি বার্ড” বিমান টি হাইজ্যাক করেন সেফটি অফিসার মতিউর রহমান। কন্ট্রোল রুমের সাথে বেতার সংযোগ সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে প্রথম এবং শেষবারের মতো কন্ট্রোল টাওয়ার শুনতে পেয়েছিলেন এক বিরক্ত স্বরের প্রত্যুত্তর, “রিমেম্বার মাই নেইম ক্লিয়ারলি, বাস্টার্ডস, ডোন্ট আস্ক মি অ্যাগেইন! দিস ইজ মতিউর রহমান।… অ্যান্ড আই অ্যাম গোয়িং হোম!”

জিয়াউর রহমান এর জেড ফোর্স গঠন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানী অভিযোগ করে বসলেন। পরিস্থিতি সামলাতে তখন তাজউদ্দিন কে খালেদ মোশররফের কে ফোর্স এবং শফিউল্লাহের এস ফোর্স গঠন করতে বলে দিলেন। খালেদ মোশাররফ ছিলেন গেরিলা ওয়ার এর পরিকল্পনা কারী। তার অধিনে মেজর হায়দার গেরিলা ওয়ার প্রশিক্ষন দিতেন। গড়ে উঠলো মুজিব বাহিনী, কাদের সিদ্দীকী বাহিনী। চিন্তিত হয়ে পড়লেন তাজউদ্দিন আহমদ। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াতে ফাক থেকে গেলে তো উদ্ভুত পরিস্থিতির সুবিধা নিবে পাকিস্থানী বাহিনী। সাথে সারাক্ষনই ছিল জেনারেল ওসমানীর পদত্যাগের হুমকি।

২৫ মার্চের ঠিক পাঁচ মাস পরে, গেরিলা অপারেশন সফল ভাবে শেষ করে বাসায় আসে রুমি। যে কিনা উচ্চ শিক্ষার্থে আমেরিকা যাবার বদলে যুদ্ধে চলে গিয়েছিল। বাসায় ফিরে নিজের রুমে শুয়ে রুমি ট্ম জোনসের “গ্রিন গ্রিন গ্রাস”টা বাজায়। মায়ের সাথে কথোপকথনের এক পর্যায়ে কেমন অদ্ভুদ বেদনার এক হাসি দিয়ে বলে, “মা বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন বলে একটা কথা আছে, জানো না? আমি জীবনের পুরোটা তোমাদের মতো দেখিনি সত্যি। কিন্তু মা, জীবনের যত মাধুর্য, যত তিক্ততা, সবকিছুরই আমি স্বাদ পেয়েছি। চলে যেতে হলে আমি কোনো আক্ষেপ নিয়ে যাব না”। সত্যি রুমি কোনো আক্ষেপ নিয়ে গেল না। ঘন্টা দুয়েক পরই একদল মিলিটারি এসে ধরে নিয়ে যায় রুমী আর তার বাবা শরীফ ইমামকে। শরীফ ইমাম ফিরে এসেছেন পরে, রুমী আর কখনো ফেরেনি জাহানারা ইমামের কাছে।

মোশতাক পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পেয়ে কাজের কাজ যেটা করেছিলেন তা হলো আমেরিকার সাথে যোগশাযোগ। তিনি প্রতি মুহূর্তে তৎপর ছিলেন দুই পাকিস্থানকে আবারও এক বৃত্তে বাঁধতে। বাধা হয়ে দাড়ালেন তাজউদ্দিন। আমরা কেবল স্বাধীনতা অর্জনের পথে হাটবো অন্য কোনো পথে নয়। এই দৃঢ় মানসিকতার জন্য তাকে মারার জন্য তার থিয়েটার রোডের কার্যালয়ে লোক পাঠান এক প্রভাবশালী ছাত্র নেতা। যে ছাত্র নেতা শুরু থেকেই তার প্রধানমন্ত্রীত্ব মেনে নিতে চাননি। চাহিদা অনু্যায়ী অর্থ সরকারো কোষাগার থেকে না পেয়ে যিনি তাজউদ্দিন কে ইমপোষ্টার, প্রতারক বলে গালি পর্যন্ত দিতে কুণ্ঠাবোধ করেননি। তাতে সমান্যটুকুও ভেঙ্গে পড়েন নি তাজউদ্দিন। শুধু বলেছিলেন, এই ঘটনা যেন আর কেউ না জানে। তবে মুক্তিযুদ্ধের ঐক্যে ভাঙ্গন ধরতে পারে। মানুষ কে বিশ্বাস করতে তাজউদ্দিনের বড় ভালো লাগে।

সারাদিন অফিসের ফাইলে ব্যস্ত মানুষ টা যুদ্ধের নয় মাস স্ত্রী সন্তানের কোনো সুখ সুবিধার খোঁজ নেন নি। ডিআইটি রোডের এক সরকারী বাসাতে তার পরিবার কেবল থেকেছে। তাজউদ্দিন খুব স্পষ্ট করে তার স্ত্রী কে জানি দিয়েছিলেন “আমরা মন্ত্রীসভার সদস্যরা শপথ নিয়েছি, দেশ স্বাধীন না করে আমরা কেউ পরিবারের সাথে মিলিত হবো না”। নিজের একমাত্র সাদা শার্টটা তিনি রাতে নিজ হাতে ধুয়ে শুকিয়ে পরের দিন সেটা পরে মিটিং করেছেন দিনের পর দিন। খরচ বাচাতে নিজ হাতে অফিসের পাশের ছোট্ট থাকের রুমে রান্নার ব্যবস্থা করেছিলেন।

ঈদের দিন তাজউদ্দিন ছুটে গেলেন মুক্তাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে। মুক্তিযোদ্ধারা তাকে অজানা ফুলের সাথে লতা জুড়ে বরন করে নেন। তাজউদ্দিন বলেন, মালা তো আমি নিইনা! আমার জন্য মালা কেন? মালা তো পড়বেন বঙ্গবন্ধু! আমাকে বরন করার তো কিছু নাই। তবে আজকের এই মালা আমি নিলাম। এই মালস নেবার পর মরে গেলেও আমার আক্ষেপ থাকবে না। আমি জানব, মুক্ত বাংলার মাটিতে জন্মানো একটি ফুলের মালা একদিন আমার গলায় ছিল…। তিনি যখন-ই কোনো ক্যাম্পে যেতেন মুক্তিযোদ্ধারা আরো বেশি অনুপ্রাণিত হতেন। তিনি প্রোটোকলের তোয়াক্কা না করের সবার সাথে হাত মেলাতেন। বুকে জরিয়ে নিতেন। তার জন্য বিশেষ খাবার রেখে চুপিসারে উঠে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মাটিতে টিনের থালায় খাবার নিয়ে বসে যেতেন। নিজের প্লেটের খাবার তুলে দিতেন পরম মমতায়।

এরপর শুরু হলো আকাশ যুদ্ধ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্বীকৃ্তি দিলেন বাংলাদেশকে। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলো। আকাশ বানী কলকাতা কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তাজউদ্দিন বললেন, মুজিব নগর সরকার দেশ স্বাধীন করে নাই। বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশে ফিরে এলেন বঙ্গবন্ধু। নতুন সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রীত্ব নিলেন। তাজউদ্দিন কে করলেন অর্থ মন্ত্রী। খুব আক্ষেপ নিয়ে একদিন বললেন , মানুষ পায় সোনার খনি, তেলের খনি আর আমি পাইছি চোরের খনি। দেখ জুড়ে বিশৃংখলা আর অবরাজকতা।গঠন করা হলো রক্ষী বাহিনী। কিছু সুবিধাবাদী মানুষের হাতে চলে গেল পাকিস্তানী বাহিনীর ফেলে যাওয়া অস্ত্র। লতিফ সিদ্দীকী দখল করে নিলেন কাদের সিদ্দীকীর বাড়ী। চারপাশ নিয়ন্ত্রনে বঙ্গবন্ধুকে বেশ বেগ পেতে হলো। বন্যা-খরা দুর্ভিক্ষ কি না হলো। পাকিস্থান বৈদেশিক রিজার্ভের এক পাই পয়সাও দিলো না। একটা মেরুদন্ড ভাঙ্গা জাতির কান্ডারি তখন দিশেহারা। অর্থমন্ত্রী সাহায্যের জন্যে ছুটেছেন দেশ থেকে দেশে।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ম্যাকনামারা এলেন বাংলাদেশ সফরে, জানতে চাইলেন “অর্থনৈতিক পূনর্বাসনে কী কী সাহায্য দরকার বাংলাদেশের?” তাজউদ্দিন গভীর স্বরে জবাব দিলেন “আমাদের যা দরকার তা আপনি দিতে পারবেন কি না, এই নিয়ে সন্দেহ আছে, মিস্টার ম্যাকনামারা”। গলার স্বর হিমাংকে নামিয়ে বলেন, “ আমাদের প্রথম চাহিদা হচ্ছে গরুর দড়ি আর গরু।কৃ্ষিভিত্তিক দেশ আমাদের তাই সবার আগে দরকার গরু আর সেই গরুগুলো বেঁধে রাখার জন্য দরকার শক্তপোক্ত দড়ি”।

২৬ অক্টোবর ১৯৭৪ তাজউদ্দিন কে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তোফা দিতে নির্দেশ দেন শেখ মুজিবুর রহমান। বিনা বাক্য ব্যয়ে তাজউদ্দিন ইস্তোফা দেন। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনি দেশ এবং শেখ মুজিবের মধ্যে কাকে বেশি ভালো বাসেন? তাজউদ্দিন কোনো কালক্ষেপন না করেই বলে ছিলেন বঙ্গবন্ধু কে বেশি ভালো বাসি।

১৫ আগষ্টে জাতি দেখলো ইতিহাসের নৃ্সংশতম হত্যা কান্ড। গৃহবন্দী হলেন তাজউদ্দিন। খুব আক্ষেপ নিয়ে বললেন, বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার আগে জেনেও যেতে পারলেন না, কে তার বন্ধু আর কে শত্রু। কয়েকদিন পরে তাকে সহ চার নেতাকে নেয়া হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। ক্ষমতায় বসেন মোশতাক। তাজউদ্দিনের চির শত্রু মোশতাক। ৩ নভেম্বর ভোরে লেফটেনেন্ট কর্নেল ফারুকের নির্দেশে, নব নিযুক্ত রাস্ট্রপতি মোশতাকের ইতিবাচক সহযোগীতায় ক্যাপ্টেন রিসালদার মোসলেম উদ্দিন সহ চার অস্ত্রধারী নতুন জেলখানার ১ নং কক্ষে ৫০-৬০ টি গুলিতে ইতিহাসের একটা গর্বিত অধ্যায় কে মুছে দেন লাল কালিতে। বড় অদ্ভুত লাগে এই মানুষ গুলোর জন্য যারা স্বাধীনতা এনেছিল তারাই স্বাধীনতার বলি হলে নিজ দেশে। স্বাধীন দেশে!

চার নেতার দেহ গুলো মেঝে তে পড়ে রইলো সরকারী নির্দেশের অপেক্ষায়।“গভীর রাতে রক্তমাখা ঘড়ি, জামা, জুতো আর গুলিতে ছিদ্র হয়ে যাওয়া টিফিন ক্যারিয়ার নিয়ে ফিরে আসেলেন মানুষটি। নিজ পরিবারের কাছে। তিনি একদিন তার স্ত্রী কে বলেছিলেন, আমরা একটা দেশের জন্মের ইতিহাস লিখছি। ইতিহাস এমন ভাবে লিখতে হবে সেখানে যেন কেন লেখককে খুঁজে না পান। সেই লেখক কি আসলেই হারিয়েছেন। আপনার আমার স্মৃতি থেকে, ভালোবাসা থেকে, শ্রদ্ধা থেকে, চেতনা থেকে………… শেষের একবছর তাজউদ্দিন একটা লাল মলাটের কালো বর্ডারের ডাইরী লিখেছিলেন। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে তিনি সেতা লিখে শেষও করেছিলেন। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য সেই ডাইর একব্যক্তি মানুষের কারসাজিতে আর আলোর মুখ দেখেনি।

বইটি আমি বেশ সময় নিয়ে পড়েছি। যত পড়েছি; জেনেছি আর কেঁদেছি। খুব ইচ্ছে করে বলে দেই, “তাজউদ্দিন আহমদ, আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি। না থেকেও আপনি পুরোটা জুড়েই রয়ে গেলেন”।

সুহান রিজওয়ানের লেখা “সাক্ষী ছিল শিরস্ত্রাণ” বইটির প্রকাশ শুদ্ধস্বর। মূল্য- ৬০০/টাকা ।


মন্তব্য ৫৯ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (৫৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৯

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
সচলায়তনের মাধ্যমে সুহান রিজওয়ানকে চিনি। বইটা নজরে এসেছিল। সংগ্রহ করবো করবো করে ভুলেই গিয়েছিলুম। আপনার পোস্ট পড়ে আবার ইচ্ছাটা জাগলো।

ধন্যবাদ আপনাকে। আমাদের হাজার বছরের রাজনীতিতে/ইতিহাসে ‘তাজউদ্দিন আহমদ’ রা খুব কমই এসেছেন।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৬

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: অবশ্য সময় করে বইটা পড়ে দেখবেন। সুহান মানুষ হিসেবে যেমন অসাধারণ, লেখক হিসেবেও সে তার যোগ্যতার পরিচয় রেখেছে।
ভালো থাকবেন :)
হ্যাপি রিডিং

২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বইটির পর্যালোচনা অাগে অন্য কোথাও পড়েছিলাম । যাহোক, তাজউদ্দীন অাহমেদ এর দূরদর্শিতা ও নেতৃত্বের কথা জানলে সত্যিই অবাক হতে হয় । বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তিনি মুক্তিযুদ্ধের কান্ডারি ছিলেন । কী প্রতিকূল পরিবেশেই না তিনি মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন । অথচ এই মহান ব্যক্তিকে বঙ্গবন্ধু দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন কুচক্রীদের প্ররোচনায় ।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫১

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: রূপক বিধৌত সাধু , এই বই টা পড়ে অনেক কিছু সম্পর্কে-ই আমার পূর্ব ধারনা পরিবর্তিত হয়েছে। অনেক কিছু জেনেছি। আরো অনেক কিছু জানার আগ্রহ জন্মেছে।
সময় করে বইটা পড়ে ফেলুন, ভালো লাগবে (নিশ্চয়তা দিচ্ছি)
হ্যাপি রিডিং :)

৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ২৫ মার্চে তো রুমিকে তুলে নিয়ে যায়নি! যাই হোক, ঐ জায়গাটা আমার বোঝার ভুল হতে পারে| কিন্তু ২৫ মার্চে নিয়ে যায়নি এটা কনফার্ম|
চমৎকার রিভিউ| তাঁকে সম্মান করি ভেতর থেকে| এতদিন শুধু তাঁর রাজনীতি নিয়ে পড়েছি| ব্যক্তি তাজউদ্দিনকে চেনা হয়নি, হয়নি জানা| বই সংগ্রহ করে পড়তে চেষ্টা করবো

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫৫

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: আরণ্যক রাখাল, আবার একবার কি লেখাটা পড়বেন।
বই টা পড়া না থাকলে অবশ্য-ই সময় বের করে পড়ে ফেলবেন। অসাধারণ বই!
হ্যাপি রিডিং :)

৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


গল্প শুনে গল্প লিখেছেন

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫৭

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: চাঁদগাজী, আপনি তো মনে হচ্ছে সম্মুখ যুদ্ধে ছিলেন। বাস্তবটা এবার আপনার লেখা থেকে পড়তে ইচ্ছে করছে। আশা করি হতাশ করবেন না :)

৫| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


"বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ম্যাকনামারা এলেন বাংলাদেশ সফরে, জানতে চাইলেন “অর্থনৈতিক পূনর্বাসনে কী কী সাহায্য দরকার বাংলাদেশের?” তাজউদ্দিন গভীর স্বরে জবাব দিলেন “আমাদের যা দরকার তা আপনি দিতে পারবেন কি না, এই নিয়ে সন্দেহ আছে, মিস্টার ম্যাকনামারা”। গলার স্বর হিমাংকে নামিয়ে বলেন, “ আমাদের প্রথম চাহিদা হচ্ছে গরুর দড়ি আর গরু।কৃ্ষিভিত্তিক দেশ আমাদের তাই সবার আগে দরকার গরু আর সেই গরুগুলো বেঁধে রাখার জন্য দরকার শক্তপোক্ত দড়ি”। "

-সাড়ে সাত কোটী লোকের পড়ালেখা, চাকুরী ও বাসস্হানের জন্য টাকার দরকার ছিলো; বিশ্ব ব্যাংক ব্যতিত কম সুদের টাকার কোন উৎস ছিলো না; উনি সেই সুযোগ না নেয়াতে ফেলানীকে বিয়ের টাকা যোগাড় করতে ভারতে যেতে হয়েছিল, কয়েক লাখ বাংগালী আজও উটের রাখাল, লাখ লাখ বাচ্ছা ঘরের চাকরাণী; কিন্তু উনার ছেলেমেয়রা ঠিকই পড়ালেখা করেছে।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:১৫

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: বৈদেশিক সাহায্যের উপর তাজউদ্দিন আহমদের আস্তা খুব উচু ছিলো না কোনো কালেই। এই অর্থমন্ত্রীর দৃঢ় ধারনা, তেমন সাহায্য দেশে নিয়ে আসে শোষন আর পরনির্ভরতা।ঋণের শর্ত একসময় ভারী হয়ে এঁটে বসে দেশের ভেতরের রাজনীতির মাঝেও।

ম্যাকনামার সাথে বৈঠকের পর নুরুল ইসলাম তাজউদ্দিন কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘এমন কেন করলেন?'

তাজউদ্দিন বেশ উত্তেজিত ভাবেই বলেছিলেন, ‘কেন করলাম বুঝেন না? এই লোক্টা তো আমেরিকার ডিফেন্স সেক্রেটারি ছিল! আমাদের মুক্তিযুদ্ধ কে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল ওরা। সেভেন্থ ফ্লিট পাঠিয়ে আমাদের স্যাবোটাজ করতে চেয়েছে!”
তাজউদ্দিন মিশে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি স্রোতের সাথে, কাজেই মার্কিন্ সরকারের ভূমিকার জন্য তিনি যদি ম্যাকনামারার প্রতি বিরূপ ভাব পুষে রাখেন, সেই জন্য তাকে দোষারোপ করা কতটা যুক্তিসংগত?

৬| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩৯

অগ্নিঝরা আগন্তুক বলেছেন: Gazi brother, apne hoyto new york thaken, tai boila desher proti somman tuku bisorjon na diye blogging korar cheshta korun.bivinno blog e apnar comment gulo dekhlam, segulor besirvag obantor, oprashongik, boddho unmader prolap chara kichu noy.nijer desh k somman dite sikhun

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:২০

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ :) :)

৭| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:

": চাঁদগাজী, আপনি তো মনে হচ্ছে সম্মুখ যুদ্ধে ছিলেন। বাস্তবটা এবার আপনার লেখা থেকে পড়তে ইচ্ছে করছে। আশা করি হতাশ করবেন না "

-আমি যা লিখব, সেটা অন্য রকম হবে; আপনি যা তুলে ধরেছেন, সেটাকে এনালাইসিস করুন: যুদ্ধের পর, জাতির ৮০% মানুষের কিছু ছিলো না; তখন দরকার ছিলো বড় টাকার, পড়ালেখা, চাকুরী ও পুড়ে যাওয়া বাসস্হান গুলোর জন্য; বাংলাদেশকে ৭২/৭৩ সালে ৩ বিলিয়ন লার ঋণ দেয়ার ক্ষমতা কারো ছিল? বিশ্ব ব্যাংক দিতে চেয়েছিল; তাজুদ্দিন সাহেব নেননি; এটাকে আপনি কিভাবে এনালাইসিস করবেন?

উনার সরকারে ছিল, অস্হায়ী সরকারের লোকজন, সামান্য প্রশাসনিক লোকজন ও ১ লাখ ২০ হাজার ভলনটিয়ার মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী; যুদ্ধের পর, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝ থেকে চাষীর ছেলেরা, দিন মুজুরেরা, ছাত্ররা কিভাবে সরকার থেকে বাদ পড়লেন, সেটা এমালাইসিস করুন।

যুদ্ধে যেই ২২ হাজার মুক্তিযোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের সাথে দেখা করে, শান্তনা দেয়ার দায়িত্ব কার ছিলো?


১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৩০

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: """-আমি যা লিখব, সেটা অন্য রকম হবে:""" এই সব মাখন মাখানো কথা বাদ দিয়ে কিছু করে দেখিয়ে তারপর অন্যের সমালোচনা করবেন। সমালোচনা করা সহজ, ঐটা সবাই পারে।
ভিক্ষার থালাটা নিজ থেকে এগিয়ে ধরে নাই বলে, তাজউদ্দিন তাজউদ্দিনই। তিনি সেটাই করতেন যেটা তিনি বুঝতেন। কারো মতো বেশি বোঝার ভাব ধরতেন না।
ম্যাকনামারা খুব ইম্পেসড হয়েছিলেন, এদেশে অর্থনীতি নিয়ে তাজউদ্দিনের পরিকল্পনা শুনে। তিনি এটাও বলেছিলেন, “বিশেষজ্ঞ অর্থমন্ত্রী না হয়েও মিস্টার তাজউদ্দিনের যে চিন্তাধারা আর সেই চিন্তার যেরকম স্মার্ট উপস্থাপন; উনি নিশ্চয়ই বাংলাদেশের জন্য খুব ভালো অর্থমন্ত্রী হবেন”।

৮| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৩৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমেরিকা পাকিস্তানের সাথে ছিল বিধায় ভারত ও রাশিয়া আমাদের সাথে ছিল; ম্যাকনেমারা ছিল আমেরিকান সরকারের পলিসি মেকার; যুদ্ধ শেষ, পলসির শেষ।

অর্থনীতিবিদ হিসেবে তাজুদ্দিন সাহেব ভয়ংকর ভুল করেছেন; উনার যুগে সরকারে চোর ছিলো না; ঋণ নিলে চুরি কম হতো, টাকা কাজে লাগতো; মানুষকে পড়াতে পারতেন, চাকুরী সৃস্টি করতে পারতেন, লাখ লাখ পুড়ে যাওয়া বাড়ীর জন্য সামানয় ক্ষতিপুরণ দিতে পারতেন।

বিশ্ব ব্যাংক যে শর্তগুলো দেয়, আপনি আজকে ফাড়ী কেনার জন্য যদি ঋণ নেন, সোনালী ব্যাংক একই শর্ত দিবে; বাকীগুলো রূপ কাহিনী।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৩৯

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: আপনার সাথে কথা বলাই পন্ডশ্রম।
যান “তাল গাছটা আপনার”।

৯| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৪২

চাঁদগাজী বলেছেন:


তাজুদ্দিন সাহেব যুদ্ধরত জাতির জন্য যতটুকু করেছেন, সেজন্য হাজারো ধন্যবাদ; তবে, উনার ভুলগুলোকে ভুল হিসেবে বুঝার দরকার আছে।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৫৮

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: অকৃতজ্ঞতাকে আপনি শৈল্পিক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন ।
আপনার জন্য স্বাধীনতার চেয়ে আনুসাঙ্গিক বিষয়াদি গুলোকে বেশি বড় মনে হচ্ছে। তখন আপনার মতো লোক অর্থমন্ত্রী হলে তো চোখ বন্ধ করে দেশ বেঁচে দিতো।
একটা কথা মাথায় রাইখেন, মোশতাক যেদিন ক্ষমতায় বসে, বঙ্গব্ধুতখকে যেদিন হত্যা করা হয় সেদিন কিন্তু মার্কিন দূতাবাসের ব্যস্ততা বেড়ে গিয়েছিল।

১০| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৫০

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি তো তালগাছে মাথায় বসে আছেন।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২৮

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: যারা এই ধরনের মানসিকতার মানুষ, তাদের সাথে কথা বলতেও আমার রুচিতে বাঁধে।

১১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৪০

সায়ান তানভি বলেছেন: তাজউদ্দীনের কোন নেতিবাচক দিক বা সমালোচনা বোধহয় নেই বইটাতে, এটা আমাদের লেখকদের বড় ব্যর্থতা, অবশ্য জাতিগত বৈশিষ্ট্যও, আমরা কাউকে স্তুতি স্তাবকে আকাশে তুলি কাউকে গালি কুৎসার মাধ্যমে নর্দমায় নামাই, প্রকৃত মানুষটা তাই আড়ালেই থাকে, অথচ মানুষের চরিত্র এমন নয়।আর রিভিউ পড়ে আমার যেটা মনে হলো লেখক নির্মোহ নন ইতিহাস সম্পর্কে অথবা চেতনাগত সীমাবদ্ধতা বা জনপ্রিয় বা নিরাপদ ধারনা যেটা একটা রাজনৈতিক দল আর আর তার বংশবদ দালাল বুদ্ধিজীবীরা প্রচার করে আসছে লেখক সেটাইকেই ফলো করেছেন।। আমি এই চেতনাপন্থী ইতিহাসের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দিগ্ধ। এখানে গোয়েবলসীয় প্রচারনা বা গল্পই বেশি। এই উপন্যাস কেবল পুনরাবৃত্তি, কোন অনুসন্ধান বা আবিস্কার বোধহয় নেই এতে। আর একটা ব্যাপার বাংলাদেশে কোন লেখকের উল্লেখযোগ্য কর্ম হিসেবে মু্ক্তিযুদ্ধ বা ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাসকেই ধরা হয় , তা যে মানেরই হোক , কেন? বিশ্ব সাহিত্যে তো এমন দেখি না । অদ্ভুত চেতনা ভারাক্রান্ত জাতি আমরা ।অথচ এই চেতনা বাস্তব জীবনে লালন করলে সিঙ্গাপুর না হোক শ্রীলংকা হতে পারতাম আমরা ।দূঃখিত কোন প্রশংসা নয় বরং রুঢ় সমালোচনাই হলো ।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪৫

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: কোনো বই যদি থাকে যেখানে তাজউদ্দিন আহমদ সম্পর্কে নির্মোহ ভাবে লেখা হয়েছে, আমাকে একটু জানাবেন প্লিজ।
সমালোচনা হতেই পারে তবে সেটা গঠনমূলক হওয়াটা জরুরী। ধন্যবাদ

১২| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৪

tareqbaiya বলেছেন: johora taj oddin.. village amar village. ajagora. chandpur. monse bare.. johora medom bairer rasta akono kada maka rasta. kobe je paka hove alla malom.

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪৬

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ !!

১৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫২

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৯

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: হ্যাপি রিডিং :) :)

১৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৮

আলোরিকা বলেছেন: :(

চমৎকার রিভিউ ! অবশ্যই পড়ব । অনেক শুভ কামনা :)

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১০

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: হ্যাপি রিডিং :) :)

১৫| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৩

অগ্নি সারথি বলেছেন: বইটি পড়েছি। রিভিউ চমৎকার হয়েছে। তাজউদ্দিন আহমদ আমার ও ভীষন প্রিয় একজন মানুষ।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৫

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: এই মানুষটাকে নিয়ে যতই বলি, কেবলি মনে হয় “আরো কিছু বলার ছিলো, বাকি রয়ে গেলো”
ধন্যবাদ :) :)

১৬| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৭

জাহিদ হাসান মিঠু বলেছেন: লেখকের সাথে সহমত।

সমালোচনা হতেই পারে তবে সেটা গঠনমূলক হওয়াটা জরুরী।

ধন্যবাদ।

 

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৭

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ!! ধন্যবাদ !!!!!!!!!!!!!!!!!

১৭| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: কয়েকদিন আগে শাহাদুজ্জামানের ক্রাচের কর্নেল পড়লাম। ওটা পড়ার পর থেকে তাজউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছে জেগেছিলো। আপনার ব্লগে পেয়ে গেলাম। ক্রাচের কর্নেলে বিবৃত তাজউদ্দিনের সাথে এই বইটির অনেক মিল পেলাম। সুতরাং ইতিহাস সঠিকভাবেই বর্ণিত হয়েছে বলে মনে করি। আজকেই অর্ডার দেবো রকমারিতে। অনেক ধন্যবাদ পোস্টটির জন্যে।

আপনি কি ক্রাচের কর্নেল পড়েছেন? পড়া না থাকলে অবশ্যই পড়ে নেবেন। মাস্ট রিড।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৬

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ভাইয়া, "ক্রাচের কর্নেল" পড়েছি আরো দু’বছর আগে। এটা আমারও প্রিয় একটা বই। শাহাদুজ্জামান স্যার বেশ শক্তিমান লেখক। স্যারের অন্য বই গুলোও বেশ ভালো।
আপনি আরিয়ানা ফালাচি’র “ইন্টারভিউ উইথ হিস্ট্রি” বইটা পড়তে পারেন। আমার অনেক প্রিয় আরেকটা বই।
হ্যাপি রিডিং :)

১৮| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০৪

অপু তানভীর বলেছেন: এরকম ইতিহাস সম্পর্কৃত বেশ কিছু আমার পড়া যদিও তার বেশির ভাগই মানুষের কাছ থেকে ধার করে । বইটার রিভিউ পড়ে পড়তে ইচ্ছে করছে কিন্তু দাম দেখে কিছুটা দমে গেলাম ।

ইয়ে মানে বইটা ধার দেওয়া যাবে কদিনের জন্য ! :)

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৯

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: মেলা থেকে কিনলে ৪০০ টাকা পড়বে। ধার চাইলেও দিতে পারি :) :)

১৯| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৩

অপু তানভীর বলেছেন: ধারই দেন :D B-))

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৭

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ঠিক আছে ।
হ্যাপি রিডিং :)

২০| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৬

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: আপনার বুক রিভিউ ভাল লেগেছে। এ পর্যন্ত যা পড়েছি তাতে করে নির্দ্বিধায় বলা যায় প্রয়াত তাজউদ্দীন আহমদ এর যোগ্যতা, সততা, নৈতিকতার মানদণ্ডে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে শীর্ষস্থান দেওয়া যায় উনাকে। মুজিব নগর সরকারের প্রধান হিসাবে জেনারেল ওসমানীর নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী, শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে মুজিব বাহিনী, কাদের সিদ্দিকির নেতৃত্বে কাদেরিয়া বাহিনী সহ কমিউনিস্ট পার্টির অনেক অংশের মধ্যে সমতা বিধান করে মুক্তি যুদ্ধকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন তা ঐ সময়কার অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষে সম্ভব হত কি না তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। মানুষ মাত্রই ভুল করে। জানাব তাজউদ্দীন আহমদও ও ভুল ত্রুটির ঊর্ধ্বে না।

এটা প্রমাণিত সত্য যে মুক্তি যুদ্ধের সময় আমেরিকা উপ মহাদেশে তার সবচেয়ে বড় বন্ধু পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষা করতে চেয়েছেন। তবে একই সাথে এটাও জানাব তাজউদ্দীন আহমদের অগোচরে ছিল না যে ভারতে আশ্রয় নেওয়া ৭০ লাখ শরণার্থীর জন্য যে ত্রাণ তবিল এসেছিল তার সবচেয়ে বড় ডোনার ছিল আমেরিকা। ঐ ত্রাণও আমেরিকার সরকারই দিয়েছিল। মুক্তি যুদ্ধের পরে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্য জাতিসংঘের নেতৃত্বে যে তহবিল গঠিত হয়েছিল তাতে সবচেয়ে বড় অংশীদার ছিল আমেরিকা।

ব্যাক্তি তাজউদ্দীন আহমদের আবেগ, অনুরাগ থাকতেই পারে আমি তা সম্মান করি; কিন্তু দেশ পরিচালনা করার সময় আবেগ ও অনুরাগকে স্থান দিতে নাই। ব্যক্তি হিসাবে আপনার জীবনের মটো থাকতে পারে "death is preferable to dishonor"। তাই বলে আপনি দেশের অবশিষ্ট জনগণকে বাধ্য করতে পারেন না আপনার আদর্শ মেনে নিতে।







২১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:২৪

ডি মুন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

পড়ে মনটা ভিজে উঠল তাজউদ্দিন আহমদের জন্যে। কত মানুষের কত শত ত্যাগের বিনিময়ের অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা।
বইটা পড়ার ইচ্ছা রইল।

এমন পোস্টের জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১১

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: :) :) :)
দেরি না করে পড়া শুরু করে দেন, ৪৩৪ পাতার এক সুবিশাল বই। আশা করি অনেক ভালো লাগবে :)
হ্যাপি রিডিং

২২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৬:০৭

রুদ্র জাহেদ বলেছেন:
অসাধারন রিভিউ।তাজউদ্দীন আহমদ আমারও ভীষণ প্রিয় মানুষ।আমাদের ইতিহাস খুব কলুষিত সেই তখন থেকে মহামানবদের প্রকৃত মর্যাদা আমরা ক্ষণ্ণ করে আসছি।রিভিউতে জানা অজানা অনেক কিছুই পড়লাম।দুঃখের বিষয় এই বই সম্পর্কর পূর্বে জানতামই না,আপনার রিভিউ পড়তে এসে মাত্র জানলাম।বইটা অবশ্যই পড়ব

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৪

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: দেরি না করে পড়া শুরু করে দেন, ৪৩৪ পাতার এক সুবিশাল বই। আশা করি অনেক ভালো লাগবে :)
হ্যাপি রিডিং !!!!

২৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:৩৮

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: “রক্তই যদি কোনো জাতির স্বাধীনতার অর্জনের দাম বলে বিবেচিত হয়, তবে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই অনেক বেশি দাম দিয়েছে”

ভুল বলেছিল। আমরা এখনো রক্ত দিচ্ছি।
রিভিউ ভালো লেগেছে আপু। ভালো থাকবেন।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২২

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: “যুদ্ধ তো শেষ হয়নি, যুদ্ধ তো কখনো শেষ হয়না………………”
ধন্যবাদ :)
বইটা পড়ে জানিও কেমন লাগলো :)

২৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: শাহাদুজ্জামানের "ক্রাচের কর্ণেল" পড়তে গিয়ে তাজউদ্দীন আহমেদ এর কিছু কিছু প্রসঙ্গ এসেছে। ভালো লেগেছে। বইটা পড়ার ইচ্ছে রইলো। যুদ্ধে বা তার পরবর্তী সময়ে কার কি অবদান তার সঠিক ইতিহাস আমাদের সবারই জানা দরকার।
আপনার রিভিউ ভালো লেগেছে।
শুভকামনা রইলো

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৬

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ!! ধন্যবাদ!!!!!!!!!

২৫| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩২

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: তাজউদ্দীন সাহেব একজন খাটি আত্নসচেতন বাংলাদেশী ছিলেন। তিনি তাবৎ দুনিয়াকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন বাঙালী জাতি মাথা নোওয়াবার নয়। বুক রিভিউ খুবই ভাল লেগেছে।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৭

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রমরের ডানা, অনেক অনেক ধন্যবাদ !!!!!!!!!!

২৬| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৫:৪৭

বটপাকুড় বলেছেন: আপনার রিভিউ লেখার হাত চমৎকার। বইটা প্রকাশ হবার সময় থেকেই জানতাম, কারণ সচলায়তনে এই বিষয়ে পোস্ট ছিল। আমাদের দেশে কিছু মানুষ যে কোন কিছুর বিনিময়ে আত্মসন্মান বিকিয়ে দেন নি। তাজউদ্দিন ছিলেন সেরকম এক জন। আমাদের সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহাবুদ্দিন আহম্মদে কিন্তু অনেক সৎ মানুষ ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর তার নামে কি পরিমাণ কাঁদা ছেটালো।

৭১ এর পরের সময় শেখ মুজিবের সব চেয়ে বড় ভুল ছিল, প্রশাসনে দক্ষতার দিকে নজর না দিয়ে নিজের লকজনকে ইচ্ছে মত ক্ষমতা দেয়া। একটা জিনিস সব সময় মাথায় রাখতে হয়। ভালো নেতা হলেই যে দক্ষ প্রশাসক হবেন, এটা কিন্তু কোন ধ্রুব সত্য নয়। যেমন প্রতিটি ভাল খেলোয়াড় কিন্তু ভাল কোচ হতে পারে না । তাজউদ্দিন সম্পর্কে মুজিবের কান ভারী করেন তার নিজের কিছু আত্মীয় স্বজন আর আওয়ামী লীগের সুবিধাবাদী কিছু নেতা। কারণ যুদ্ধের সময় মুক্তি বাহিনীর পাশাপাশি মুজিব বাহিনী গঠন করা নিয়ে তাজউদ্দিন এর সাথে বেশ কিছু লোকের টানাপড়েন শুরু হয়। আর খন্দকার মোস্তাক তো ছিলেনই। যুদ্ধের এই ঘটনা গুলো নিয়ে আপনি সাবেক এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকারের লেখা বই পড়ে জানতে পারবেন।

অফটপিকঃ আপনার কাছে কি এই বই টার পিডিএফ ভার্সন আছে ?

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫২

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ !!!!!!!!!!
"অফটপিকঃ আপনার কাছে কি এই বই টার পিডিএফ ভার্সন আছে ? "
উত্তর- না ভাই, আমার কাছে নাই। তাছাড়া আমি প্রিন্টেড বই পড়ি। তাই PDF এর খোঁজ-খবর রাখি না :)
ভালো থাকবেন :)

২৭| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৭

বটপাকুড় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, আপনার প্রতি মন্তব্যের জন্য, সমস্যা হল দেশের বাইরে থেকে দেশি প্রিন্টেড বই যোগাড় করা, দেখি গুগল প্লে থেকে ডাউনলোড করতে হবে :)

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৪৩

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: বটপাকুড়, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের(আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস) মাধ্যমে এক আপু অস্ট্রেলিয়াতে বেশ কিছু বই নিয়েছেন। চাইলে আপনিও পেতে পারেন। দেখেন সে ব্যবস্থা করা যায় কিনা। বইয়ের PDF ভার্সন পড়লে লেখকের শ্রমের মূল্যমান দেয়া হয়না। প্রকাশনা ব্যবসাও লাটে উঠবে। নতুন লেখকরা, লেখালিখি কে পেশা হিসেবে নিতে পারছেনা। তাই পাঠকদের আরো বেশি দায়িত্বশীলতা প্রয়োজন।
হ্যাপি রিডিং…………

২৮| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:১০

বটপাকুড় বলেছেন: চিন্তা করবেন না , গুগুল প্লে থেকে নগদ ডলার খরচ করে ডাউন লোড করেছি :) । আগে ছিল না, তাই খুজছিলাম। দেখলাম এবার এই বই আই বুক, গুগুল প্লে তে দেয়া আছে ।গুগুল প্লে থেকে কিনে ডাউনলোড করেছি। আর দাম লেখক দেশের দামের সমান রেখেছেন ।

প্রকাশনা ব্যবসা লাটে উঠবে ভিন্ন কারণে, এক শুধু বাংলা ভাষা ভাষী দের জন্য লিখে আর কত দিন দেশের গণ্ডির মধ্যে বিকিকিনি হবে, আন্তজাতিক ভাবে চিন্তা না করতে পারলে েই রেসে টিকে থাকা দায়। দেশের লেখকরা নিজেদের লেখার মান উন্নত না করতে পারলে কোন সম্ভাবনা দেখি না । আর না হলে তো আমাদের আনিসুল হক আছেন, নিজের ঢোল যে এত পেটাতে পারেন... বিস্ময়কর...ওদিকে কোন লেখার মান নুন্যতম মানে যায় না। আপনি অন্য যেকোন দেশের পেপার ব্যাক পড়ে দেখেন, কত খানি মনোযোগ দিয়ে তারা লেখেন।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২৫

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: বই পত্তরের আজকাল যা দাম, ছুঁলেই হাতে ফোস্কা!” তারপরও এই বই কেনাটাই আমার একমাত্র শখ। আমি প্রায়শ লেখকদের কথা ভাবি। দেখেন এখন পর্যন্ত সব কিছু ছেড়েছুড়ে কেউ লেখক হতে চাইলেই সব্বাই হতাশ হয়। ভাবখানা এমন, যেন লেখক হওয়া একটা খেলনাপাতি বিষয়। অথচ প্রত্যেকটা চরিত্র জন্মের যে বেদনা লেখক বুকে বয়ে বেড়ান সেটা কোনো ভাবেই মাতৃ্ত্বের চেয়ে কম কিছু নয়।

আমি তো সব সময় বলি, "বই কিনুন, বই পড়ুন এবং প্রিয়জন কে বই উপহার দিন" ।
এদেশের লেখকদেরও লেখার মান ভালো হবে, ইনশাআল্লাহ। আমি আশাবাদী :) :)
হ্যাপি রিডিং !!!!!

২৯| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৬

বটপাকুড় বলেছেন: সব লেখক প্রথমে অন্য পেশা রেখে তারপর লেখা শুরু করেছেন, পরে বইয়ের কাটতি বেড়ে গেলে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। কাজেই সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে লেখক হতে চাওয়াটা মনে হয় একটু ঝোঁকের মাথায় সিধান্ত নেয়া হয়ে যেতে পারে। আপনার লেখার হাত তো বেশ...। শুরু করুন, আপনার লেখা শাহবাগ এর আজিজ থেকে কিনে আপনার অটোগ্রাফ (সম্ভব হলে) নিয়ে পড়বো :) লেগে পরুন :)

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০৪

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: হা হা হা,
বলছেন তবে, লেখালিখি শুরু করে দিবো...........
ধন্যবাদ!!!

৩০| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৬

স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
শাহাদুজ্জামানের "ক্রাচের কর্নেল" পড়েছি সেই কবে, দারুণ লেগেছিলো!
এই বইটার কথা জেনেছি সেদিন ব্লগ থেকেই। পড়ার ইচ্ছে রাখি।

আপনার রিভিউ চমৎকার লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০২

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ
বইটা এবার ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বই মেলাতে পেয়ে যাবেন।
হ্যাপি রিডিং !!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.