নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি হচ্ছে প্রেমে পড়ার মতন একটা ব্যাপার, কোনো ধরনের কর্তৃত্ব জাহির করা নয়।
জীবন প্রবাহে এমন একটা সময় আসে যখন ফিরে যাবার কোনো পথ থাকে না, কারণ ফিরে যাওয়ার মতো দম থাকে না। তখন কেবল একটা কাজই করার থাকে; নির্বিকারভাবে সামনের অজানার পানে এগিয়ে যাওয়া... আর মনে মনে প্রার্থনা করা যেন বের হবার একটি পথ ওখানে থাকে। যে পথটা কুহুর কাছে পৌঁছে দেবে। জনাকীর্ণ লোকারণ্যেও অতিপরিচিত অনুভূতিটা জেঁকে বসে। পৃথিবী যখন রাতের ঘুমে ডুবে যায়, বহুবছর যত্ন করে বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখা কুহু’র চিন্তার বৃত্তের ফাঁদে আটকে যাই।
কুহ; নিরবতা যার কাছে প্রার্থনার সমান। যে অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি গভীর চিন্তা করতে পারে, এমনকি আবেগের বেলায়ও অনেক বেশি তীব্রতা ও পরিপক্কতা দেখিয়ে থাকে। মস্তিষ্ক এবং হৃদয়ের চিরন্তন যুদ্ধে বেদনাকে লুকানোর শিল্পটা রপ্ত না করে বরং সেটা ধারন করার গৌরবটাকে চর্চা করে। আমি এমন কম মানুষকে চিনি যারা কুহু’র সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হতে পারবে। আজকাল কুহুকে দেখে প্রায়শ মনে হয়, নির্বিকার হওয়াটা দোষের নয় বরং এটাই সবথেকে গভীর অনুভুতি।
সম্পর্কের দায়িত্ব এড়িয়ে গ্রিক দেবতা মেন্দাসিয়াম-এর পথ অনুসরণ করেছিলাম। মেন্দাসিয়াম ছিলেন মিথ্যাচার, ছলচাতুরী আর বানোয়াট কাজকর্মে বিশেষভাবে পারদর্শী। ভেবেছিলাম ইচ্ছে করলেই দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতাকে হিসেব করে অবহেলা করা যাবে। স্লেট থেকে সবকিছু পরিষ্কার করে মুছে ফেলার মতো। একজন হোপলেস রোমান্টিক মানুষ হওয়ার কারণে নিরপেক্ষ থাকার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিলাম। অথচ দান্তে অলিঘিয়েরি সেই বহুল আলোচিল ভাবনাটাই শেষমেশ সত্যি- ‘নরকের সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গাটি তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে যারা ভালো আর মন্দের সংঘাতের সময় নিজেদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখে’।
ভালোবাসা আসলে একটা খাদ; অনেক গভীর খাদ। জীবন স্রোতে অল্প কয়েকটি, খুবই অল্প কয়েকটি সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় টিকে যায় কিংবা বেঁচে থাকে। বাকিসব পরষ্পরের দৃষ্টির আড়ালে চলে গিয়ে সারাজীবনের মতো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তারপর অন্ধকার নেমে আসে তারাহীন রাতের মতো… সুখ নিয়ে বারট্রান্ড রাসেলের একটা আস্ত বই আছে। সুখ কি বুঝতে বইটা পড়তে গিয়ে প্রতিটি ছত্রে নিশ্চিত আরো বেশি কনফিউজ হয়েছি। আইয়ুব বাচ্চুর জনপ্রিয় গানের একটা লাইন আছে ‘আসলে কেউ সুখি নয়’। কথাটা ভুল। আসলে একজন মানুষ সবাইকে সুখি করতে পারে না।
ভাগ্য, নির্দয় আর দুর্বোধ্য এক রক্ষিতা। আকাংক্ষা আর বিচ্ছিন্নতার উদ্ভট সংমিশ্রণে মাঝে মাঝে মধ্যরাতের চাঁদকে হত্যা করাতে ইচ্ছে করে আমার। দিনে দিনে ইচ্ছাটা আরো প্রবলতর হচ্ছে। যদিও মিথলজি মতে, শুধু মানুষই নয়, এমনকি দেবতারাও স্ববিরোধী। তবু নিজের মন থেকে পালাতে পেরেছে কে কবে?
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১৫
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: বানান করে লেখা পড়লে এর চেয়ে ভালোভাবে অনুধাবন সম্ভব নয়
২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:২৯
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আপনি গ্রীক দেবতা মিন্দাসিয়ামের মত হতে গিয়ে পারেননি কারণ প্রিজজনের প্রতি ভালোবাসা আছে। আর সে ভালোবাসা নিখাদ আপুনি।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৪৪
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: নেওয়াজ আলি ভাই, গনক টিয়াপাখি সুলভ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৪০
সোহানী বলেছেন: কঠিন ভাবনা কঠিন কথার মোড়কে....। ভালোলাগলো।
ভালোবাসা/সম্পর্ক/দায়িত্ব/আকাংখা বা বিচ্ছিন্নতা সবকিছুই যে একই সূত্রে গাঁথা। কিন্তু হিসাব একেক জনের কাছে একেক রকম। যার যার আঙ্গিকে চিন্তা করে।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৪৭
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: অতীতকে যেতে দিতেই হয়, কোনো না কোনো দিন...
৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩৩
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: কোন বিষয়ে একই সময়ে দুটি সত্য নেই,সেটা আমার থেকে আপনি ভালই জানেন।তবু আমরা অনেক রকম সত্য খুঁজে বেড়াই যে যার প্রয়োজন মতো।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫১
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: নিচের বাক্যটি সর্বৈব্য সত্য,
উপরের বাক্যটি ডাহা মিথ্যা।
এই স্টেটমেন্টের ব্যাখ্যা করে নিন।
৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ২:০৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: নান্দনিক নন্দিনী,
একটা বিক্ষিপ্ত মনের লেখা।
মান্না দে'র গাওয়া একটা গান আছে -
"সবাই তো সুখী হতে চায়
কেউ সুখী হয় , কেউ হয়না..."
জীবনটা এই সুরেই বাঁধা। আপনার শিরোনামের ছবিতে লেখার মতোই বলতে হয় - যা কিছুই ঘটুক জীবন বয়েই চলে । কোনও ঘাটেই নোঙর ফেলে বসে থাকেনা.......
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫৩
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ঘড়ার জলে তৃষ্ণা মেটে, সাতার কাটা যায় না ('শেষের কবিতা' থেকে)
৬| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:১৬
কালো যাদুকর বলেছেন: কখনো কখনো ফিরতে নেই,
পেছনে তাকাতে নেই।
নির্বিকার চিত্তেই পরিত্রান |
ভালবাসা একটি খাদ,
অথবা বলা যায় ভালবাসা একটি বৃত্ত ,
যার থেকে মানুষের মুক্তি নেই।
মন থেকে কেউ পালাতে পারে না
তবে ধোকা দিতে পারে কেউ কেউ ৷
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫৮
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: একটা সুন্দর গান আছে ' প্রীত রাখো না রাখো তোমহার-ই মার্জি, বাদনাম তো হোই গ্যায়ি উমার ভারকি'।
৭| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা।
একজন মানুষ কখনো সবাইকে খুশি/সুখি করতে পারে না
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫৯
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ ছবি আপা।
৮| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:০১
রামিসা রোজা বলেছেন:
লেখাটি পড়ে বড় একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে হলো ,
নিজেকে নিজে ভালোরাখি ভালোবাসি ।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০১
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: Life is a Journey এবং এই ভ্রমনটাকে আনন্দদায়ক/ আরামদায়ক করার দায়িত্ব যার যার নিজের।
৯| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০১
পদ্মপুকুর বলেছেন: নিজের কাছ থেকে পালানোর কোনো পথ নেই, তাই নরকের সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গাটির বরাদ্দ নিশ্চিত জেনেও ভালো-মন্দের সংঘাতের সময় নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে চাই সচারচর। লেখাটি পড়ে আমারও রামিসা রোজার মত দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো, তবে তা অন্য ভাবনায়।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০৯
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: দ্রুত, সহজ, চাতুর্যপূর্ণ আর নিরাপদ এক পরিকল্পনা করে নিরপেক্ষ থাকা!
ম্যাথু ক্যালির লেখা 'দি রিদম অফ লাইফ' বইটা পড়ে দেখতে পারেন।
১০| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৫০
পদ্মপুকুর বলেছেন: পড়ার লিস্টি কেবলি লম্বা হতে থাকে, বিপরীতে আপিস-সংসার দাতমুখ খিঁচিয়ে পড়ার সময়গুলো দখলে নিতে থাকে...
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৪
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: পদ্ম পুকুর, আপনার প্রিয় ১০টা বইয়ের নাম জানতে চাই।
শুভ কামনা করছি যেন আপনার ব্যস্ততা এবং কমে পড়ার সময় বের করতে পারেন।
১১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: বানান করে লেখা পড়লে এর চেয়ে ভালোভাবে অনুধাবন সম্ভব নয়
ঠিক বলেছেন ম্যাডাম।
অতি উচ্চ স্তরের লেখা আমার মাথায় ঢুকে না।
ব্লগের লেখা বানান করেই পড়তে ভালো লাগে। বানান করে পড়লে ভাষার চর্চা অব্যহত রাখা যায়।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৫
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: নিজের সীমাবদ্ধতাগুলো বোঝার জন্য নিজেকে গুরুত্ব দিন, ভালো থাকুন।
১২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৫৯
রানার ব্লগ বলেছেন: যার যেই রকম অভিজ্ঞতা সেই রকম তার প্রকাশ।
পৃথিবীর কোন কিছুই মানুষ কে সুখি করতে পারে না যদি সে নিজে না সুখি হতে চায়। ভালোবাসুন। যখন এককে আর অনুভূতি পাচ্ছেন না তখন ছড়িয়ে দিন। জীবন তো একটাই উপভোগ করুন। বৃথা সময় নষ্ট হিসেব মিলিয়ে। রবীন্দ্রনাথের একতা গান আপনাকে ডেডিকেট করি।
চক্ষে আমার তৃষ্ণা
ওগো তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে
চক্ষে আমার তৃষ্ণা
আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখী দিন।।
সন্তাপে প্রাণ যায় যে পুড়ে
চক্ষে আমার তৃষ্ণা।
ঝড় উঠেছে তপ্ত হাওয়ায় হাওয়ায়
মনকে সুদূর শূন্যে ধাওয়ায়
অবগুন্ঠন যায় যে উড়ে
চক্ষে আমার তৃষ্ণা।
যে ফুল কানন করত আলো
কালো হয়ে সে শুকালো।।
ঝরনারে কে দিল বাধা–
নিষ্ঠুর পাষাণে বাঁধা
দু:খের শিখরচূড়ে
চক্ষে আমার তৃষ্ণা
ওগো তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে
চক্ষে আমার তৃষ্ণা।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৯
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ রানা ভাই। গানটা সুন্দর।
আপনার জন্য রিটার্ন গিফট! প্রিয়া মালিক এর '‘Broken but Beautiful’ কবিতাটি।
ইউটিউবে সার্চ দিলে পেয়ে যাবেন।
ভালো থাকবেন।
১৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: নিজের সীমাবদ্ধতাগুলো বোঝার জন্য নিজেকে গুরুত্ব দিন, ভালো থাকুন।
ভালো কথা বলেছেন। আমি চেষ্টা করবো।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:০৯
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ, ভালো ভাবে চেষ্টা করুন।
১৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১০
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সূর্য্য পুর্বদিকে উঠে এটি একটি সত্য ঘটনা কিন্তু সূর্যউঠার বর্ননা হজারে লোকের কাছে হাজারো রকমের।
দুটি সত্য একসাথে থাকলে প্রতিটির আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট থাকবে।ভাবের কথা এক হাজারটা একসাথে থাকতে পারে কিন্তু বৈজ্ঞানিক সত্য পারে না।হয় ভাল নাহয় খারাপ।আবার ভাল খারাপে রুপান্তরীত হয়,খারাপ ভালোতে।
আমি একটু বেশি সংক্ষেপে বলি।
২৬ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:০৭
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: সংক্ষেপে বলেছেন ঠিকই, তবে বক্তব্য স্পষ্ট নয়।
১৫| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:১৩
মেঘ বালোক বলেছেন: খুবই গুছিয়ে লিখেন আপনি। আমি এই ব্লগে আসি শুধু আপনার লেখা পড়তে। বেশ কয়েক বছর ধরে পড়ছি আপনার লেখা। কিছুদিন আগে আপনি পোস্ট গুলা হাইড করেছিলেন। লেখাগুলো না দেখে খারাপ লেগেছিল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ পোস্ট গুলা আবার উন্মুক্ত করার জন্য। একটা প্রশ্ন ছিলোঃ আপনি কিছু চিঠি পোস্ট দিতেন আগে এবং কিছুদিন পরেই সেগুলো হাইড করেদেন কেনো?
২৬ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩৭
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ মেঘ বালোক।
কিছু পোস্ট এমনিতেই হাইড করেছি, খুব উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ নেই।
১৬| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫৯
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
দারুণ! কবিতার মতো।
২৬ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০৩
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ মইনুল ভাই।
১৭| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:০০
পদ্মপুকুর বলেছেন: গত দুদিন ধরে আপনার লিস্টি নিয়ে ভাবলাম। আফটার অল আপনি শিক্ষক মানুষ, তালিকাটা উচ্চমার্গীয় হওয়া দরকার কিন্তু ভেবে ভেবে উচ্চমার্গীয় তালিকা করতে পারলাম না। আসলে আমার মনে হয়- পড়ার ক্ষেত্রে কোনো তালিকাই থাকা উচিৎ নয়। তাই জীবনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পারিপার্শ্বিকতায় যে বইগুলো আমার মনে দাগ কেটেছে, মনে আছে, সেগুলোর কথাই বলি।
প্রথমেই আমি বলবো হুমায়ূনের 'বহুব্রীহি'র কথা। এই বইটাতে হুমায়ূন সেন্স অব হিউমারকে এমন একটা যায়গায় রেখেছেন, যার চেয়ে একসুতো বাড়লে সেটা গোপালভাড়ের স্থুলতায় পরিণত হয় আবার এর একসুতো কমলে সেখানে আর উইট থাকে না। হুমায়ূনের বেশিরভাগ বইয়েই এই ব্যাপারটা দেখা গেলেও বহুব্রীহি তার চরমতম উৎকর্ষতা। আমার মন খারাপ লাগলে এখনও এই বইটা নিয়ে বসি।
শীর্ষেন্দুর 'যাও পাখি'তে সোমেনের বাবার সাথে আমার নিজের বাবার প্রায় শতভাগ সাজুয্য রয়েছে। এই বইয়ে ভদ্রলোকের বর্ণনার সাথে আমি আত্মীয়তা বোধ করি। এর পাশাপাশি সোমেন এবং স্বল্প পরিসরে রিখিয়ার উপস্থিতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।
বুদ্ধদেবের 'মাধুকরী' পড়তে গিয়ে আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম লেখকের আনুষাঙ্গিক জ্ঞানের ফিরিস্তি দেখে। ঢাউস এই বইয়ে তিনি যেভাবে বিভিন্ন ধর্মীয়গ্রন্থের পাশাপাশি অন্যান্য জায়গা থেকে যে উদ্ধৃতি দিয়েছেন তা চোখ কপালে তোলাম মত।
বাণীবসু নামে এক লেখকের 'একুশে পা' পড়েছিলাম। তাঁর আর কোনো বই আমি পড়িনি। একুশে পা'তে মিঠু নামের প্রতিবাদী ঋজু এক তরুণী আছে যে আমার মনে রেখাপাত করে গিয়েছে।
কৃষণ চন্দর এর 'আমি গাধা বলছি' বইটাও আমার স্মরণীয় একটা বই। বেসিক্যালি এই বইটা যে বয়সে আমি পড়েছি, তখন এটা আমার পড়ার কথা নয়। আমার বইপড়ার নেশা ধরানোর জন্য যে দায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া আমার বড় ভাই এক রোজার ছুটিতে বইটা এনেছিলেন নিজে পড়তে, ফাকতালে আমিও পড়ে নিয়েছি, এই বইটা আমার খুব মনে থাকে, ও ওই সময়ে আমি যাযাবরের 'দৃষ্টিপাত'ও পড়েছিলাম এবং মুগ্ধ হয়েছিলাম।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ সময়ের প্রেক্ষাপটে লেখা এরিক মারিয়া রেমার্ক এর 'অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট' পড়ে আমি দীর্ঘদিন ঘোরলাগা অবস্থায় ছিলাম। এখানে একটা বর্ণনা আছে এমন- যুদ্ধ শেষে দুজন সৈনিক নিজ শহরে ফেরত আসে, যারা মূলত স্কুলের কমবয়সী ছাত্র ছিলো। তাদের প্রাক্তন স্কুলে তাদের একটা সংবর্ধনার আয়োজন করা হয় এবং নিজের স্কুলসাথীদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে বলা হয়। কিন্তু তারা দুজনই কিছুই বলতে পারে না, কারণ গত অল্প কদিনে তারা জীবনের কদর্য-কঠিন দিকগুলো দেখে জীবনের বোধ সম্পর্কে বয়সের তুলনায় এতটাই প্রাজ্ঞ হয়ে গিয়েছে যে তাদের সহপাঠীদের জন্য আসলে কিছুই বলার নেই এখন আর.... অদ্ভুত বর্ণনা।
এরিখ কেস্টনারের 'এমিলের গোয়েন্দা দল' পড়ে পাড়ায় পাড়ায় গোয়েন্দা দল গঠন করেনি, এবং ছোটখাটো সমস্যা সমাধানে বের হয়ে পড়েনি, আমাদের কৈশোরে এরকম ঘটনা কমই ছিলো। এমিলের সেই ট্রেন যাত্রা এবং তার কাজিনের পনিটেইলে তখন মজেছিলাম বেশ।
প্রফেসর আবদুর রাজ্জাককে নিয়ে আহমদ ছফার লেখা 'যদ্যাপি আমার গুরু' পড়তে আমার ভালো লাগে। হয়তো প্রফেসর আবদুর রাজ্জাকের মত জ্ঞানী কিন্তু নিরহংকারী, প্রভাববিস্তারকারী কিন্তু সাদাসিধা- এরকম হওয়ার একটা মনোবাসনা গোপনে গোপনে সবারই থাকে বলেই হয়তো তার প্রতি প্রেমের কারণে এই বইয়েরও প্রেমে পড়েছি।
সুনীলের একটা বই আছে 'সেই সময়'। সতের-আঠারো শতকের বাংলা সাহিত্যের মেন্টরদেরকে উপজীব্য করে আনুপূর্বিক 'সেই সময়' তে রচনার যে মুন্সীয়ানা দেখিয়েছেন, তাতে এই বইগুলো এক বৈঠকেই পড়ে ফেলেছিলাম বলে মনে পড়ে।
শহিদুল্লাহ কায়সারের 'সংসপ্তক' আমার একটা বিশেষ যায়গা দখল করে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়পর্বের প্রথম দিকে শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরিতে এই বইটা হঠাৎ একদিন পাই। ওইদিন যেটুকু পড়লাম, পড়ে নেশা ধরে গেলো। বইটা কেনার মত পয়সা তখন হাতে ছিলো না আবার পাবলিক লাইব্রেরির নিয়ম অনুযায়ী টেবিলে বইটা রেখে গেলে আগামীকাল এসে যে খুঁজে পাবো তার কোনো নিশ্চয়তা নেই, অগত্যা, খুঁজে খুঁজে এক চিপায় বইটা লুকিয়ে রেখে গেলাম। পরদিন এসে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এবং তারও পরদিন একইভাবে এসে পড়ে বইটা শেষ করেছিলাম।
ক্লাস এইটে থাকতে কন্টিনেন্টাল কুরিয়ারের ডেলিভারি বয় এসে আমোকে একটা বই দিয়ে গেলো, তখন আমি যশোরের ঝিকরগাছায়, বড় ভাইয়ার বন্ধু কাওসার ভাই বইটা পাঠিয়েছিলেন, ওটা 'দীপু নাম্বার টু' ছিলো.... ওই বইয়ের মুগ্ধতা এখনও কাটেনি আমার।
দেখেন তো দশটা হলো কিনা... এ ধরনের আরও বলতে পারি। ও হ্যা, ভালো কথা, বিখ্যাত বই হিসেবে যেগুলোকে সাধারণত উল্লেখ করা হয়, যেগুলো ভালো মনে করতে না পারলে পাঠক হিসেবে জাতে ওঠা যায় না, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ ধরনের বেশিরভাগ বই পড়েই আমি আরাম পাইনি।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:০৫
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: মোট ১১টা বইয়ের কথা লিখেছেন। 'এমিলের গোয়েন্দা দল' বাদে বাকিগুলো পড়েছি।
২০২১ সালটা থ্রিলার পড়ার জন্য বরাদ্দ করেছি। এখন পড়ছি দ্য সাইলেন্স অব দি ল্যাম্বস। টমাস হ্যারিসের লেখা।
১৮| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ ভোর ৫:৩৩
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: কিছু অপূর্নতা রয়েকি গেলো- না বলা ভাবনা জুড়ে।
লিখায় ভাললাগা, আর লিখীয়ের জন্য শুভ কামনা।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৩০
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ কবিতা কথ্য।
ভাবনার ভাবানুবাদ যখন, তখন থাকুক কিছু কথা বাকি!
১৯| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:১২
পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনি সবগুলো পড়বেন, এতে আর অবাক হওয়ার কি আছে? তবে বাণী বসুর বইটা পড়েছেন শুনে একটু বিস্মিত হয়েছি। আমি ভেবেছিলাম উনি হয়তো বিশেষ পরিচিত লেখক নন। ও, আরেকটা বইয়ের কথা লিখতে চেয়েছিলাম- মেজর (অব.) কামরুল হাসান ভুইয়ার 'জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা'। এই বইটা আমার মনে দাগ কেটে আছে। এই লেখক বছর দুয়েক আগে ওপাড়ে পাড়ি দিয়েছেন। আমার একটা লেখা ছিলো তাঁকে নিয়ে, যদি পড়েন তো এখানে যেতে পারেন।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৪২
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: বাণী বসুর 'মৈত্রেয় জাতক' আমার বিশেষ প্রিয় বই। জন্মদিনে উপহার পেয়েছিলাম।
আমি অন্তত তিনজনকে এই বই পড়তে উৎসাহী (বাধ্য) করেছি। আমার বিখ্যাত ডায়ালগ 'যারা মৈত্রেয় জাতক' পড়েনি; আমি কেন যে তাদের সাথে কথা বলছি!!
'জনযুদ্ধের গনযোদ্ধা' বইটাও পড়া হয়নি। তালিকাভুক্ত করে নিলাম।
২০| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৭
পদ্মপুকুর বলেছেন: তাহলে আমার সাথে পরবর্তীতে কথোপকথন চালানোর উপযোগী করতে ওই বইটা গিফট করে পড়তে বাধ্য করেন...
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০১
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: শুভশ্য শীঘ্রম!
ঠিকানা দেন। [email protected] এটা আমার ইমেইল আইডি।
অনেক আনন্দিত হবো।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: ভুসভুসে আবেগময় একটি লেখা।
পোষ্টে ভালোবাসা নিয়ে যা বলেছেন, সেটা মানলাম না। ভালোবাসা খাদ নয়। ভালোবাসা একটি প্রয়োজন।