নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যে কোনো ভূমিকায় সমানে লড়ে যাই, আপনি যেমন চান আমি ঠিক তাই।

নান্দনিক নন্দিনী

লেখালেখি হচ্ছে প্রেমে পড়ার মতন একটা ব্যাপার, কোনো ধরনের কর্তৃত্ব জাহির করা নয়।

নান্দনিক নন্দিনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘এই দূরত্ব, এই আকাংক্ষা, এই আঘাত, এই উৎকণ্ঠা’…

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩১

অমিতাভের সাথে সেদিন আচমকা দেখা হয়ে গেলো। কয়েক মুহুর্তের দৃষ্টি বিনিময়। আমাকে দেখেই বরফের মতো জমে গেলো অমি। অমিতাভকে আমি ‘অমি’ বলে ডাকতাম। হৃদয়ের শুকনো পাতার নিচে লুকিয়া রাখা নাম! অমিতাভের সাথে দেখা হওয়াটা আসলে কোনো ঘটনা নয়, নাগরিক জীবনে ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনাগুলোর একটি। অমির কাছ থেকে একটা এসএমএস এলো; ‘অনেকদিন বাদে তোমাকে দেখে ভালো লাগছে। বদলাও নি একদম’। মুঠোফোন বার্তাটা মোটে ১৭বার পড়লাম। এতো কেবল দুটো বাক্য নয়, এটা অনুমতি প্রার্থনা! মিনিট পাঁচেক বাদে ফিরতি বার্তায় লি্খে পাঠালাম ‘চশমাটা তোমাকে মানিয়েছে’। কেন লিখলাম? কিছু মানুষকে অবজ্ঞা করা যায়, অপমান করা যায় না। ঝিঝিপোকা যেমন লাল চোখের মাছিকে ডেকে আনে নিজের মৃত্যুর জন্য। ঠিক সেই কাজটাই করে ফেলেছিলাম সেদিন।

অমি আমার দিকে স্থিরদৃষ্টিতে চেয়ে রইলো। যেন খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে গেছে এমনভাবে। বাইরের সব কোলাহল থেমে গেলো, মনের মধ্যে নেমে এলো নতুন এক নীরবতা। চিরন্তন আড়াল এক গোপন দরজা! চোখাচোখি হতেই চোখ সরিয়ে নিলো অমি। সম্ভবত অমি চোখে চোখ রাখতে চাইছে না। আমিও ইচ্ছে করেই ওর দিকে তাকালাম না আর। পরিস্থিতি বলে দিচ্ছে, আমি যদি না তাকায়, তবে তার জন্য সহজ থাকাটা সহজ হবে। অথচ এটা তো কোনো সম্মুখ সমর নয়! কে জানতো, উড়ে যাওয়া সময়ের ভেতর দিয়ে দেখা হওয়াটা একসময় বদলে যাবে। আগের মতো আর অনুভূতি তৈরি হবে না।

কিছু একটা ভেবে দ্বিধাগ্রস্থ অমিতাভ আমার টেবিলের দিকে এগিয়ে আসলো। তাকিয়ে বললো, ‘কেমন আছো’। কথাটা বলার সময় তার কন্ঠটা খুব আড়ষ্ট বলে মনে হলো। হৃদয়কাড়া হাসি দিয়ে জানতে চাইলাম, তুমি? ‘ভালো’। অমি’র ‘ভালো’ শব্দটা- নিসর্গের মাঝে আর্তনাদ হিসেবে কানে বাজলো। এটা হলো অমি’র বলা সত্যিকারের কোনো মিথ্যে। অমি’র মুখটা একেবারে অভিব্যক্তিহীন হয়ে উঠেছিল, অনেকটা মৃত মানুষের মতো। দুর্বলতা ঢাকতে সেলফোনের স্ক্রিনে নিজেকে দেখে নিলো। দুজনের মধ্যে কথাবার্তা যেন অপেক্ষাকৃত নিরাপদ বিষয়ে স্থানান্তর হয় সেই চেষ্টায় আমরা কথা খুঁজতে লাগলাম। মাঝে মধ্যে নিরবতাও একধরনের ঠাট্টা হয়ে ওঠে। অথচ একসময় অফুরন্ত গল্প ছিলো আমাদের! আবেগের সাথে লড়লাম আমি। নারীর চিরন্তন অনুভুতি বিজয়ী হ'লো অপর সব আবেগের সঙ্গে লড়াইয়ে। বুঝতে পারলাম প্রশ্নের পর প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে মনে ; কিন্তু একে একে সেগুলোকে গিলে ফেলছি। সহজ প্রশ্ন, কি করছো এখন? তেমন বিশেষ কিছু না। তুমি? আমি সেই ৫-৯টার রুটিনে আছি। তো সবকিছু ঠিকঠাক চলছে? হ্যাঁ একদম ঠিকঠাক। 'আসি' অমি এমন ভাবে বললো, যেনো কথাটা সে বলতে চায়নি।

অমিতাভ সম্পর্ক থেকে পালানো একজন মানুষ। আমি তার অন্তর্মুখি স্বভাব আর অসাধারণ ধীর-স্থিরতাকে আমি ঈর্ষা করি। ঈশ্বর অমিতাভকে এক জোড়া সুন্দর চোখ দিয়েছেন। চোখজোড়া সব পড়তে পারে। বর্তমানের অমিতাভের চোখের পেছনে গ্রহণযোগ্য বুদ্ধিমত্তা নয় বরং পরিসমাপ্তিহীন রাতের অন্ধকার। জীবনে কিছুই শেখেনি সে: কেবল ক্লান্ত হওয়া ছাড়া।

সুখের জন্য আমরা যতই ব্যাকুল হইনা কেন, যতই চোখ বন্ধ করে রাখি না কেন... লোভের জন্য একবার আত্মা বিক্রি করে দিলে তা প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে, তবে আকাংক্ষাকে কখনো মেটাতে পারেনা। মানুষের মনের গভীরে সমস্ত না পাওয়াগুলো ভাইরাসের মতোই বসবাস করে। কিছু অনুভূতি অভুতপূর্ব। তারপরও ভালোবাসা বদলে দিতে পারে স্রোতের দিক; বয়ে আনতে পারে সমাপ্তি। ভালোবাসা কখনো অনুভব করতে না পারলে সেটা হারানোর বেদনাও অনুভব করা যায় না। প্রকৃতিতে কোনো অনুকম্পা নেই; আমরা নিজেরা অনুকম্পা সৃষ্টি করি, নিজেদের সন্তুষ্টির জন্য।

লেখার শিরোনাম ঋণঃ ব্লগার হাবিব রহমানন'র কবিতার লাইন থেকে।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৪৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: নান্দনিক নন্দিনী,





‘অনেকদিন বাদে তোমাকে দেখে ভালো লাগলো। বদলাও নি একদম’ - ভালোবাসায় পূর্ণ এই লাইনটি দেখেই নিজের লেখা একটি কবিতা কথন মনে পড়লো - কতোদিন পরে !

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৫৯

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: লিংকটাতে যেতে পারছি না তো,
কবিতা কথনটা তাহলে কিভাবে পড়ি!

২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:০৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: নান্দনিক নন্দিনী,




কি হলো বুঝলুম না ! আবার দিচ্ছি , দেখুন তো -

কতোদিন পরে !

কতোদিন পরে !

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১৬

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: পেরেছি- পেরেছি!
আপনার কবিতা কথন- আর এই গদ্য কথন এত কাছাকাছি!!! (সারপ্রাইজড)

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



কি জানি এগুলো কি অনুধাবন, নাকি প্রকৃতির নিয়ম।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:২১

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: চাঁদগাজী ভাই,
আগেই বলে রাখি আমি কিন্তু বাংলা বিভাগ থেকে ডিগ্রীপ্রাপ্ত নই :)

যারা একই শহরের ভিন্ন গলিতে বাস করে দেখা তো তাদের হবেই।
এটা অনুধাবন কিংবা প্রকৃতির নিয়ম নয়; এটা বাস্তবতা।

৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১৪

সোহানী বলেছেন: উথাল পাতাল প্রেমের গদ্য কাব্যে +++

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:২২

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: আপনার জন্য 'ভালোবাসা'

৫| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৩:০৪

কলাবাগান১ বলেছেন: "লাল চোখের মাছিকে ঝিঝিপোকা যেমন ডেকে আনে নিজের মৃত্যুর জন্য। " এটা কোথায় পেলেন???

অপোজিট টা পেলাম: ফিমেল মেইল কে ডেকে আনে তাকে (পুরুষ) খাওয়ার জন্য
"Firefly femme fatales lure unsuspecting males of other species to their deaths."

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৮

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: একটা বইয়ে পেয়েছি, কলাবাগান১।

৬| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ভোর ৪:৩১

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: আপনার সাথে মিলিয়ে বাচ্চু ভাই ও বলেছিলেন-
তুমি আমি একই শহরে,
তবুও একাকী ভিন্ন গ্রহে।

একই শহরই হোক, আর ভিন্ন শহরই হোক, বিচ্ছেদের অনুভুতি কখনোই সুখের না।
একটা সময় হয়তো, অনুভুতি গুলো তাদের জৌলুস হারায় কিন্তু কখনোই তা মিলিয়ে যায়না। ব্যাক্তি বিশেষে এই সময়ের ফ্রেমের তারতম্য পরিলক্ষিত হয়, আর রেখে যায় অজানা এক অনুভুতি; অনেক টা - বাহির বলে দুরে থাকুক, ভিতর বলে- আসুক না 'র মতো।

ভালো থাকুন নিরন্তর।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৪৮

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া অনেকগুলো গানই আমার প্রিয়।
তবে সবচেয়ে প্রিয় লাইন হলো,
'এসে যদি ফিরে যায় আমায় না পেয়ে'

৭| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ভোর ৬:০৪

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আমি আর অমি তে হোঁচট খেয়েছি ।
একে অপরকে ভুলে গেলে দেখা হয়ে যায়,ভুলে নাগেলে কখনো দেখা হয় না।
অনুভূতিগুলো প্রকাশিত হয়েছে খুবই সুন্দর ভাবে।এটাও এক ধরনের কবিতাই।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৫০

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: মানুষ ভুলে যায় না, ভুলে থাকে...

৮| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:১১

রাজীব নুর বলেছেন: চোখে সমস্যা আজকাল বানান করে পড়তে বড্ড অসুবিধা।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৩

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: রাজীব ভাই,
আপনি যেহেতু আমাকে বোন বলে সম্বোধন করেন তাই আপনাকে একটা সদুপদেশ দিই।
অতিসত্ত্বর চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। চোখের ব্যাপারে হেলাফেলা ঠিক না।
চিন্তা করা এবং সেটা প্রকাশের ব্যাপারেও সুবিবেচক হবেন।

৯| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৩৩

মেহেদি_হাসান. বলেছেন: ভালোবাসা কখনো অনুভব করতে না পারলে সেটা হারানোর বেদনাও অনুভব করা যায় না।
অসাধারণ অনেক ভালো লেগেছে।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৪

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ মেহেদি_হাসান।

১০| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:১০

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন:
আপা বড়ই মিষ্টতা পেলাম পড়ে...

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৩২

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ!

১১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৪৫

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: 'ভালোবাসা'
......................................................
কখোনই মরে যায় না,
অহংকার আর স্বার্থপরতা তাকে অপমানিত করে ।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৫৬

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন:

১২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:০০

রাজীব নুর বলেছেন: আমার দাদা ৩৫ বছর বয়সে হঠাত অন্ধ হয়ে যান। বাকি চল্লিশ বছর তিনি আর চোখে দেখতে পান নি। দেশ বিদেশে বহু ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কোনো লাভ হয় নি। আমার আব্বার চশমা পড়তে হয়েছে। ছোট ভাই, বড় ভাই চশমা পড়ে। মা চশমা পড়ে।

আমার মনে হয়, একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবো- আমি আর চোখে দেখতে পারছি না।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:১২

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: চিকিৎসকের শরনাপন্ন হবেন আশা রাখি।

১৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:২৪

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: উত্তরটা ফাঁকা পেলাম
.....................................................
কিন্ত ভালবাসা মানুষের হৃদয়কে পরিপূর্ণ করে ।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩৭

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: উত্তরটা ফাঁকা নয় বরং সেখানে ইমোজি দেয়া হয়েছে।
অহংকার, স্বার্থপরতা, অপমান... অনেক ট্রিকি ওয়ার্ড।

বাই দ্য ওয়ে, আপনার শেষ বাক্যটি বেশ ভালো।
ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.