নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সাদা-মাটা কিন্তু হুট করে রেগে যায়।

নরকের কীট

স্বপ্ন দেখি সুন্দর একটি পৃথিবী, যেখানে থাকবে না মানুষের মধ্যে হানাহানি। অনুভব করি বৈষম্যহীন পৃথিবীর যেথায় এক চাঁদে হয় জগত আলো। মনে প্রাণে বিশ্বাস করি আমি এই আলয়ের ক্ষণস্থায়ী অতিথী মাত্র এবং এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীর বুকে ছোট্ট একটি পদক্ষেপ রেখে যেতে চায়

নরকের কীট › বিস্তারিত পোস্টঃ

অর্থনীতির মারপ্যাঁচ

১১ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:১৮

আজ সকালে বাইকে করে যশোর গিয়েছিলাম একটি কাজে। বিনোদিয়া পার্কের সামনের একটা টং দোকান থেকে মিনারেল ওয়াটার কিনে দেখি সেটার লোগোতে 'সেনা' চিহ্ন লেখা। দোকানিকে জিজ্ঞেস করতেই বললো সেনাবাহিনীরা পানির নতুন এই প্রোডাক্টটি বাজারে লঞ্চ করেছে। বাজারে অন্যান্য দেশি-বিদেশী কোম্পানি কতৃক অপপ্রচার থাকায় এখনো সেরকম সুবিধা করে উঠতে পারেনাই।
মাঝেমধ্যে অবশ্য পত্রিকায় সেনাবাহিনীর এরকম ব্যবসার বিপক্ষে অবশ্য দু এক লাইন কড়চা দেখতে পাই। আমার ক্ষুদ্র মাথায় এগুলোর সমর্থনে কিংবা বিপক্ষে তেমন যুক্তি অবশ্য এটে উঠতে পারেনা।

আমি অর্থনীতির তেমন কিছুই বুঝিনা। তবে নবীশ একজন ছাত্র হিসেবে এতটুকু বুঝি একটি রাষ্ট্রযন্ত্রের আয়ের অন্যতম সোর্স হলো 'কর' যেটাকে ইংরেজীতে Tax বলে। তবে দুঃখের কথা এই যে, আমাদের দেশ ট্যাক্স বাবদ ইনকামের ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের তুলনায় একদম তলানিতে পড়ে আছে। পৃথিবীর বাঘা বাঘা ধনী দেশের জনগণের উপর যেখানে ১৫%-৪০% থেকে আয়কর ধার্য্য করা হয় সেখানে এদেশের জনগণের কথা তুললে নাকে রুমাল দিয়ে পালিয়ে যেতে হয়। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সুখের কথা হলো গত দু বছরে কিছু প্রমিজিং ট্যাক্স কর্মকর্তাদের নীতিমালার আলোকে এ অবস্থার কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। তবুও ট্যাক্স প্রদানকারীদের বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত চাকুরীজীবিরা যাদেরকে খুব সহজেই আইডেন্টিফাই করে ফেলা যায়। বড় বড় রাঘববোয়ালদের অধিকাংশই এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে পড়ে আছে।

এছাড়াও সরকার তার নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম একটি চালিকা হলো সরকার পরিচালিত ব্যবসাক্ষেত্র। এতে সাধারণত ৩ টি লাভ হয় :
১. অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি
২. সরকারি আয় বৃদ্ধি। ফলে জনগণের কল্যাণ বৃদ্ধি
৩. বিদেশে মুনাফা পাচার রোধ
বহু উন্নত দেশে সরকার আলাদা ক্ষেত্র করে বিনিয়োগ করছে। সেখানকার পণ্য দিয়ে নিজ দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করে GDP এর পেট মোটা বানাচ্ছে। এরকম পণ্যের লিস্ট করে সেসব খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া এমন কঠিন কিছু নয়।

যাইহোক কথা বলছিলাম মিনারেল ওয়াটার নিয়ে। আমাদের দেশে দেশীয় কোম্পানির পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিদেশী কোম্পানি তাদের প্রস্তুতকৃত মিনারেল ওয়াটার বাজারে চালাচ্ছে। এখন নতুন সমাজ, অর্থ উপার্জনের কনসেপ্টগুলোও নতুন হওয়া দরকার্। একটু অর্থনীতির তাত্ত্বিক জ্ঞানের মধ্যে চলে যায় :
Economists assume that there are a number of different buyers and sellers in the marketplace. This means that we have competition in the market, which allows price to change in response to changes in supply and demand. Furthermore, for almost every product there are substitutes, so if one product becomes too expensive, a buyer can choose a cheaper substitute instead. In a market with many buyers and sellers, both the consumer and the supplier have equal ability to influence price.

হ্যা , ঠিক এই কারণেই সরকার অন্যান্য প্রতিযোগীদের সাথে বাজারে নেমে তার মোটিভ বুঝে সর্বনিম্ন মূল্যে সর্বোচ্চ ইউটিলিটি দিয়ে মার্কেট লিডার হবে। আর সংগত কারণেই সরকারের উপর জনগণের ফেইথ থাকবে। আর এটাকেই ব্যবসায়ীক মূলধন হিসেবে পুজি করে সরকার তার সোর্স অফ ইনকাম বাড়াবে।

সেদিন জাপানের অর্থনীতি পড়ছিলাম। তাদের দেশে ধনীদের উপর ৪০%-৪৫% পর্যন্তও ট্যাক্স আরোপ করা হয়ে থাকে। তাদের সরকারের বহু বিনিয়োগ আছে তাদের দেশের বৃহদাকার শিল্পের উপর্। আমাদের দেশের সরকার না হয় আপাতত রকেট , বিমান বানাতে পারবেনা কিন্তু সামান্য "মিনারেল ওয়াটার" ও কি পিউরিফাই করে বাজারজাতকরণ করতে পারবে না???
আমি যতটুকু অর্থনীতি বুঝি তাতে আমাদের রাষ্টীয় সরকারের অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে 'loss-loss situation' বলে মনে হয়। আমরা সরকার বানানো ব্রীজ , কালভার্ট, রাস্তা, বড় বড় সেতু ইত্যাদি ব্যবহার করি। এগুলোর বানানো ও রক্ষনাবেক্ষনের জন্য অর্থের প্রয়োজন। সেগুলোও জনগণের রেগুলার ডিউটি থেকেই আসে , আরো স্পেসিফিক বললে দেশের মোট জনগণের মাত্র ২৫% ভাগের রেগুলার ডিউটি। বিশাল জনগোষ্ঠী এখনও ধরা ছোয়ার বাইরে।

আমাদের দেশের বড় দুই শহর ঢাকা ও চিটাগাং এ পানির তীব্র সংকট। বেশিরভাগই পানি কিনে খায় , কেউ কেউ গ্যাস পুড়িয়া ওয়াসার পানি সিদ্ধ করে পিউরিফাই করে নেয়। এ সুযোগে কোম্পানিগুলো গ্রাহকের কাছে পানি বিক্রি করে মুনাফা হাতিয়ে নেয়। ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ পানি সঠিকভাবে পিউরিফাই করে বোতল ও ড্রাম সিস্টেমে গ্রাহকদের কাছে পৌছিয়ে দিতে পারে। এতে দেশীয় প্রোডাকশন বাড়ার পাশাপাশি এ খাতে কাজ করা কর্মীদের বেতন তারা নিজেরাই সংগ্রহ করে নিতে পারবে। সরকারেও কোন লস হলোনা , আবার গ্রাহকেরাও সন্তুষ্ট থাকলো। মাঝখান দিয়ে বড় এমাউন্টের প্রফিট রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ঢুকলো।
এতে আমরা "Win-win situation" এ অবস্থান করবো।

আমরা অবহেলার কারনে জুট মিল , সুগার মিল গুলো বন্ধ করেছি , এদেশে প্রচুর সামুদ্রিক মাছ থাকা সত্ত্বেও সেগুলো সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণ করতে পারিনা, সূচ-রাবার-পেন্সিল পর্যন্ত বিদেশ থেকে আমদানি করি , দূর্নীতির কারনে টেলিটক এর মত কোম্পানিও নিস্তেজপ্রায় , বিমান-রেল কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর লসের সম্মুখীন হচ্ছে। অথচ প্যারালালি একই সাইট থেকে দেশি-বিদেশী কোম্পানিগুলো প্রচুর লাভের অংক গুনছে। আমাদের দেশের কর্তাব্যক্তিরা জাগবে কবে? সেবাখাতনির্ভর অর্থনীতির চেয়ে উতপাদন নির্ভর অর্থনীতিকে প্রমোট করবেন কবে? তাদের ঘুম আদৌও ভাঙবে তো ???

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০২১ বিকাল ৪:০১

রাজীব নুর বলেছেন: 'সেনা' শুধু পানি না। তেলও আছে। ইন্সুরেন্স কোম্পানী আছে।

২| ১১ ই মে, ২০২১ বিকাল ৪:২৫

ইনদোজ বলেছেন: আমাদের দেশে ধনীদের উপর গড়পড়তা ৬০% ট্যাক্স আদায় করা হয়। হিসাবটা বলিঃ
- তারা যে কোম্পানির মালিক, সেই কোম্পানির আয়ের উপর ৩৩-৪৩% ট্যাক্স কাটা হয়।
- তারা যাদেরকে যাদেরকে পেমেন্ট দেয়, তাদের কাছ থেকে ১০% টিডিএস কাটে। আসলে ঐ পরিমাণ টাকা বেশি পে করে।
- সেই লাভের টাকা থেকে তাদের পার্সোনাল যে ইনকাম হয়, তা থেকে স্ল্যাব অনুযায়ী ৫%-২৫% পর্যন্ত ট্যাক্স দিতে হয়।
- তাদের পরিসম্পদের উপর আড়াই থেকে ৫% পর্যন্ত সারচার্জ দিতে হয়।

তাহলে? তাদের ট্যাক্স কি কম? ঠিকমত আদায় করতে পারলে তাদের ট্যাক্স দিয়েই সরকারের ধনী হয়ে যাবার কথা।

৩| ১১ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৪

নরকের কীট বলেছেন: জ্বি। জানতাম না। জানানোর জন্য ধন্যবাদ।

৪| ১১ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৬

নরকের কীট বলেছেন: আপনার ইনফরমেশনে সম্ভবত গরমিল আছে। আর এ টপিকটা বাদ দিলেও আমার দেশে ম্যাক্সিমাম ধনী ও শিল্পপতিরা যে ট্যাক্স ফাকি দেয় এবং ঋণখেলাপী সে হিসাব কি রাখেন?

৫| ১১ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩২

এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: সেনাবাহিনী যেকোনো দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসা-বাণিজ্য কখনো সেনাবাহিনীর মূল দায়িত্ব হতে পারে না। এসব ব্যবসায় নিযুক্ত থাকলে মূল দায়িত্ব ব্যাহত হবে, অর্থনৈতক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিরোধ সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা আসবে। এসব বিরোধ মূল প্রতিরক্ষা ও শৃঙ্খলার দায়িত্ব দুর্বল করবে। সরকার সেনাবাহিনী ব্যতীত অন্য অনেক মাধ্যমে এসব ব্যবসায় জড়িত থাকতে পারে, সেটিই অধিকতর ভালো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.