নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কমিউনিস্ট সত্তা, ফাসিস্ত সত্তা, হিন্দু সত্তা, খ্রিস্টিয়ান সত্তা বলে কোনও সত্তার অস্তিত্ব আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না। ধর্মীয় গোঁড়ামির কোনও একটা শাসনে সসাগরা পৃথিবী সর্বকালে শাসিত হবে, এ অবাস্তব কল্পনা। হিন্দু পারেনি, বৌদ্ধ পারেনি, খ্রিস্টিয়ান পারেনি, মুসলমান পারেনি, ফাসিস্ত পারেনি, নাৎসি পারেনি। কমিউনিস্টই বুঝি এর ব্যতিক্রম হবে?
দিনভর নানান লেখা, ছবি, গান(!) দেখলাম বঙ্গবাজার নিয়ে। ট্রেন্ডিং টপিক নিয়ে কথা বার্তা লিখা বন্ধ করে দিলেও নিজের দায়বদ্ধতা থেকে একটু লিখতে মন চাচ্ছে। লিখবোনা লিখবোনা করেও শেষ মুহুর্তে এক ব্যবসায়ীর পোস্ট দেখে আটকাতে পারলাম না।
বঙ্গবাজারের সাথে আমার খুব আবছা স্মৃতি আছে। বাবার সাথে খুব ছোটকালে একবার এসেছিলাম। আমার যতোদূর মনে পরে ফুলবাড়িয়ার দিক দিয়েই এসেছি, রাস্তা একদম ভাঙ্গা / কাঁচা ছিলো। মার্কেট নিয়ে আমার ইম্প্রেশন ছিলো ভেতরে ঢুকলে দম বন্ধ বন্ধ লাগে। জ্যাকেট কিনেছিলাম একটা।
এই মার্কেট এ এর পরে হাজার বার এসেছি। ঘুরেছি। সত্য বলতে গেলে গুলিস্তান আমার খুব প্রিয় একটা জায়গা৷ এই জায়গায় স্বর্ন থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক পন্য, এমনকি টাকাও বিক্রি হয়! আর প্রতিদিন এক বর্গ কিলোমিটারের লেনদেন ৮ তলা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত শপিং কম্পলেক্সে হয় কিনা সন্দিহান।
বঙ্গবাজার খুব প্রমিনেন্ট একটা মার্কেট এক এলাকায়। এক্সপোর্ট গার্মেন্টস এর সবচেয়ে বড় মার্কেট। বোধয় দেশের একক কাপড়ের মার্কেটের মাঝেই সবচেয়ে বড় হবে৷ এই জায়গা থেকে কাপড় সারা দেশে চলে যাচ্ছে। ঢাকা জোন এর সব রেডি মেড গার্মেন্টস এর মালের অন্যতম বড় পাইকারি মার্কেট ছিলো এইখানে। নিজের ছোট একটা প্রতিষ্ঠান ছিলো, তাই এক ঝলক বিজনেস দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম এই কাঠের মার্কেটের ফাঁক দিয়ে৷
বছরে আমরা যেই ৪০, ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করি, যেই টাকার নড়বড়ে খুঁটির উপ্রে দাড়াইয়া আছি এখনো, পুরোটাই রেডিমেড গার্মেন্টস। মূলত করিটা কি আমরা? সূতা আনি, ফেব্রিক আনি, আমরা জাস্ট সেলাই করে ইউরোপ আমেরিকায় পাঠাইয়া দেই।
এক পোষাক বানাইতে যাইয়া কিছু পোষাকে মাপের ভুল হয়, কিছু পোষাকে মেশিনের দাগ লাগে, কিছু বানাই স্যপল, কিছু বানাইতে হয় এক্সট্রা। সেই ৫% এক্সট্রা মালামাল নানান নেতাপোতার হাত ধরে গার্মেন্টস থেকে বের হয়, গোডাউনে জমা হয় বছর ৩-৪, এরপর এই বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে আসে বস্তা বস্তায়। সর্ট করার পর দোকানে ঝুলায়, কিছু যায় দেশের সব প্রান্তে খুচরা দোকানে।
এইযে যেই ৫% জামা আমরা কিনি ন্যাকড়ার দামে, এইটাই আস্তে আস্তে দাড়াইছে বঙ্গবাজার নামে। বিশাল মার্কেট হইসে। আমরা গায়ে কাপড় জড়াইয়া ঘুরতে পারতাছি।
কাপড় জরাইয়া ঘুরতে পারতাছি বললাম, একটু হার্শ শোনাইলেও ব্যপারটা বাস্তব। আমরা কটন বা ফেব্রিক বেশিরভাগ আমদানীই করি৷ এইটার প্রোডাকশন আমাদের খুব কম। মূলত আমরা চাইনা, ইন্ডিয়া, জার্মানী থেকে নানান গার্মেন্টস সামগ্রী আনি৷ দেশে এইগুলা দিয়া বড়ভাইদের নীতিমালা অনুযায়ী জামা কাপড় বানাইয়া পাঠাই। বিনিময়ে এই সেলাই মেশিন চালানো গ্রামের স্বপ্নবাজ মেয়েটারে কিছু টাকা গুইজা দিয়া থামাই রাখি। ন্যায্য টাকা না বুঝাইয়া দিয়া বিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রি বানাইছি৷
সেই ৫% এক্সট্রা ঝুট কাপড় যেইগুলা বড়ভাইদের নির্দেশ থাকে ডেস্ট্রোয় করার, সেইটাকেই ফাঁকি দিয়ে কোনরকমে বের করেই গরীব একটা দেশের মানুষজন বড়লোকী কিছু পোষাক পরতে পারতাম।
সেই মার্কেট চোখের সামনে জ্বলছিলো, জ্বলছে( রাত ১০টার খবরেও দেখলাম ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রিত আগুন, যেটা এখনো জ্বালিয়ে রেখে আলু পোড়া দিয়েছে)
টেক্স না দিয়ে বিজনেস করুক, সরকারি নিয়ম নীতিমালা না মানুক, কমদামে পোষাক সরবরাহ করার ক্ষেত্রে দেশের অন্যতম বড় ভূমিকা ছিলো এই মার্কেটের৷ আমি জানিনা এখনো দেশের মানুষের কতোটুক সামর্থ্য আছে এসির বাতাস খেতে খেতে ৩ হাজার টাকা দিয়ে জিন্স কেনার। সেখানে ২০২৩ সালেও ৩০০ দিয়ে জিন্স বিক্রি করতো বঙ্গবাজারে। এমন একটা মার্কেটে আগুন লাগা, এই ব্যবসায়ীদের মেরে ফেলা বা মরে যাওয়া সত্যিকার অর্থে দেশের স্থানীয় পোষাক বাজারে বিশাল প্রভাব ফেলবে নিস্বন্দেহে। আসছে ইদে সাপ্লাই চেইন প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে এক্সপোর্ট গার্মেন্টসগুলোর। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ইতোমধ্যে এক্সপোর্ট গার্মেন্টসের মার্কেটে একটা ভাটা চলছে তার মাঝে এই আগুন আসলে কোথায় নিয়ে যাবে পোষাক বাজার তা চিন্তার বাইরে এখনো।
০৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:১৭
সাঈদ নওশাদ বলেছেন: পুরো ঢাকা শহরটাই দাড়াইয়া আছে নেশাখোর, বাটপারদের উপরে। কোথায় নাই এরা? সায়েদাবাদ? গাবতলী, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি? কই নাই? আমি এখন পর্যন্ত একবার ছিনতাই এর স্বীকার হইসি, সেটা ধানমন্ডিতেই।
২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৫
নাহল তরকারি বলেছেন: মানুষ এখন আধা পাগল হইয়া গেছে।
২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৮
সাঈদ নওশাদ বলেছেন: সত্য কথা
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:২০
রাজীব নুর বলেছেন: সমস্ত ঢাকার মধ্যে গুলিস্তান একটা জঘন্য জায়গা।
আপনি কি জানেন প্রতিদিন এই এলাকায় কত টাকার মাদক বিক্রি হয়? কত গুলো চুরী আর ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে? কত লোক প্রতারনার স্বীকার হয়?