নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাগ্যক্রমে আমি এই সুন্দর গ্রহের এক বাসিন্দা! তবে মাঝেমধ্যে নিজেকে এলিয়েন মনে হয়। তবে বুদ্ধিমান এলিয়েন না, কোন আজব গ্রহের বোকা এলিয়েন! [email protected]

নূর আলম হিরণ

ভাগ্যক্রমে আমি এই সুন্দর গ্রহের এক বাসিন্দা! তবে মাঝেমধ্যে নিজেকে এলিয়েন মনে হয়। তবে বুদ্ধিমান এলিয়েন না, কোন আজব গ্রহের বোকা এলিয়েন!

নূর আলম হিরণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

৭১\'র ইতিহাস না মেনে এদেশে রাজনীতি করতে হলে একাত্তরের চেয়েও আরেকটি বড় ইভেন্ট ঘটাতে হবে!

২৬ শে জুন, ২০২৫ রাত ১১:৪৬


বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবময় এবং সবচেয়ে বড় ইভেন্টের নাম হচ্ছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধ শুধু একটি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা অর্জনের গল্প নয়, এটি একটি জাতির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম, একটি আত্মপরিচয়ের লড়াই।
৭ই মার্চের বজ্রকন্ঠে উচ্চারিত বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ এবং ২৬শে মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলে। জাতির সমস্ত স্তরের মানুষ অস্ত্র তুলে নেয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই সময়েও একটি রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলাম—এই জাতির স্বপ্ন, ত্যাগ আর মুক্তির পথে দাঁড়িয়েছিলো প্রতিবন্ধক হয়ে। তারা দাঁড়িয়েছিল জাতির শত্রু পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে। এবং সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যার পরও তাদের অবস্থানে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন ঘটেনি।

স্বাধীনতার কিছু বছর পর যখন দেশে পুরোদমে রাজনীতি করার অনুমতি পেল জামাতে ইসলাম, তখনও তারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থান থেকে সরেনি। সময়ের পরিক্রমায় তাদের ভাষা পাল্টেছে, কখনো "প্রেক্ষাপট", কখনো "রাজনৈতিক বাস্তবতা", কখনো "ঐতিহাসিক বিভ্রান্তি" যদি, কিন্তু এইসব শব্দ দিয়ে নিজেদের কালিমাময় অতীতকে ঢাকতে চেয়েছে। কিন্তু সেই অতীত এমন এক ইতিহাস, যেটা রক্তে লেখা। সেটি ঢাকার সাধ্য কারও নেই।

ড. শফিকুর রহমানের ‘ক্ষমা’ এবং তার অস্পষ্টতা
গতকাল জামাতে ইসলামের আমির ড. শফিকুর রহমান এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন,
“১৯৪৭ সাল থেকে আজকের দিন পর্যন্ত আমাদের দ্বারা যত মানুষ কষ্ট পেয়েছে, সবার কাছে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।”

এই বক্তব্য শুনে প্রথমেই যে প্রশ্নটি আসে—তারা আসলে কিসের জন্য ক্ষমা চাইছে?
'৪৭ থেকে আজ'—এই পরিসর একদিকে যেমন অদ্ভুত রকম বড়, তেমনি এর মধ্যে থাকা সবচেয়ে বড় অপরাধ—১৯৭১-এর ভূমিকার প্রসঙ্গটিকে যেন ইচ্ছাকৃতভাবে ধোঁয়াটে করে ফেলা হয়েছে।
এই ধরনের ‘ক্ষমা চাওয়া’ কোনো আন্তরিক অনুশোচনার বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং একটি কৌশলী সরলতার ভান।

কারণ: এখানে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থানের জন্য আলাদা করে দায় স্বীকার করা হয়নি।
শহীদ পরিবার, নির্যাতিত মা-বোন, যুদ্ধাহতদের প্রতি কোনো স্পষ্ট দুঃখপ্রকাশ নেই।
এবং সবচেয়ে বড় কথা, নিজেদের আদর্শিক অবস্থানে কোনো পরিবর্তনের ইঙ্গিতও নেই।

৭১ এর বিপরীতে ২৪-এর রাজনীতি
বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি বড় ঘটনা হিসেবে ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট,। ‘২৪-এর ঘটনাটিকে’ জামাত ইসলাম বারবার সামনে আনার চেষ্টা করেছে। তারা চেয়েছে এই ঘটনার রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে ৭১-কে আড়াল করতে। শুরুতে তারা এটিকে ৭১-এর চেয়েও বড় ইভেন্ট বানাতে চেয়েছিল। সেটা সম্ভব না হওয়ায় তারা দ্বিতীয় অপচেষ্টা নেয় ৭১-এর সঙ্গে তুলনা করার, সেটাও বেশিরভাগ মানুষ মানতে নারাজ!

আসলে ৭১ ছিল আমাদের জাতির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম, আর ২৪ ছিল একটি অপশাসনের বিরুদ্ধে মানুষের সংগ্রাম। একটিকে আরেকটির পাশে দাঁড় করানোর চেষ্টা মানেই ৭১'র জাতির রক্তঋণের প্রতি চূড়ান্ত অবমাননা।

জামাত ইসলামকে ক্ষমা চাইতে হলে সবার আগে সত্যকে স্বীকার করতে হবে, অতীতের ভুলের দায় নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে হবে। কিন্তু তারা সেটা কখনোই করেনি। তারা বরং বারবার ইতিহাসকে বিকৃত করতে চেয়েছে, জাতির স্মৃতিকে ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন করতে চেয়েছে।
ড. শফিকুর রহমানের বক্তব্যে কোনো নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নেই, নেই কোনো স্পষ্ট অনুশোচনার ভাষা। বরং এটি আবারও প্রমাণ করে, জামাত এখনও ইতিহাসের মুখোমুখি হতে ভয় পায়।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এই জাতির হৃদয়, চেতনা ও আত্মপরিচয়ের কেন্দ্রবিন্দু। সেই ঐতিহাসিক সত্যের বিপরীতে দাঁড়িয়ে কেউ যদি ক্ষমা চায়, তাকে সেটি অপরাধের বিশ্লেষণসহ, দায় স্বীকার করে, অনুশোচনায় ভেজা স্পষ্ট ভাষায় বলতে হবে। না হলে তা কেবলই একটা রাজনৈতিক অভিনয়, যার পিছনে সত্য নেই, সাহস নেই, শ্রদ্ধা নেই!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুন, ২০২৫ রাত ১২:০৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করতে গিয়ে অনেককে দেখি মুক্তিযুদ্ধকেই হেয় করে। ’৭১ বাংলাদেশপন্থি সবার। যে ঘটনায় একটা স্বাধীন দেশের জন্ম হয়েছে, নতুন মানচিত্র হয়েছে তার সাথে অন্যকিছুর তুলনা চলে না।

২| ২৭ শে জুন, ২০২৫ রাত ২:৪৩

এইচ এন নার্গিস বলেছেন: সত্যি কথা ন্যায় কথা লেখার জন্য ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.