নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিরায়ত বাংলার প্রাতঃস্মররনীয় কয়েকজন কিংবদন্তি (২য় পর্ব)

২৩ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৪৩


আমাদের স্বাধীনতার পিছনে যেমন হাজার হাজার বলিদান রয়েছে ঠিক তেমনি রয়েছে প্রচুর মানুষের অবদান। কেউ কেউ স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছে সরাসরি আবার কেউ তার লেখার মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘকাল লড়াই করে গেছেন। তারা প্রতেকেই আমাদের অভিভক্ত বাংলার কিংবদন্তি। তারা আমাদের বাংলার গর্ব। তারা আজ আমাদের মধ্যে জীবিত না থাকলে রয়েছে আমাদের প্রত্যেকের মনের অন্তরে। তার সবাই চিরস্মরণীয়।। এরকমই কয়েকজন মহান কিংবদন্তি নিয়ে আমার ২য় পর্ব।
১ম পর্বের লিংক

১। সুভাষ চন্দ্র বসুঃ
নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ছিলেন ভারতের ইতিহাসের সর্বাধিক বিখ্যাত কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব এবং সাহসী মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর দুর্দান্ত অবদান ভারতের ইতিহাসে অবিস্মরণীয়। তিনি ছিলেন ভারতের সত্যিকারের সাহসী বীর যিনি তাঁর মাতৃভূমির জন্য চিরতরে নিজের বাড়ি ত্যাগ করেছিলেন। তিনি সর্বদা হিংসতায় বিশ্বাসী ছিলেন এবং ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সশস্ত্র বিদ্রোহের পথ বেছে নিয়েছিলেন।
তিনি ১৮৯৭ সালে ২৩ শে জানুয়ারি উড়িষ্যায় কটকে হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতা ছিলেন জানকী নাথ বোস এবং মা প্রভাবতী দেবী। একজন ব্রিটিশ শিক্ষক ভারতের ছাত্রদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী সম্পর্কে মন্তব্য করায় নেতাজি সেই শিক্ষককে মারধর করেন, যার জন্য তাকে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তিনি আই.সি.এস. পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন কিন্তু ১৯২১ সালে সুভাষ চন্দ্র ভারতীয় সিভিল সার্ভিস ছেড়ে দেওয়া এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন যোগ দেন।
এরপর তিনি দেশে ফিরে গান্ধিজির কাছে যান দেশের সেবার নিজেকে উৎসর্গ করার প্রস্তাব দেয়। গান্ধিজি তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে তাকে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের কাছে কাজ করতে উপদেশ দেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সঙ্গে কাজ করে প্রভাবিত হয়েছিল এবং পরে কলকাতার মেয়র এবং তৎকালীন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন। পরে তিনি ১৯৩৯ সালে মহাত্মা গান্ধীর সাথে মতামতের পার্থক্যের কারণে দলটি ত্যাগ করেন। কংগ্রেস দল ত্যাগ করার পরে তিনি তার নিজের ফরোয়ার্ড ব্লক পার্টি খুঁজে পান।
তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে অহিংস আন্দোলনটি ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট নয় তাই তিনি দেশে স্বাধীনতা আনতে হিংস আন্দোলন বেছে নিয়েছিলেন। তিনি ভারত থেকে জার্মানি এবং তারপরে জাপানে চলে গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি নিজের ভারতীয় জাতীয় সেনা তৈরি করেছিলেন, যা আজাদ হিন্দ ফৌজ নামেও পরিচিত।
তিনি ব্রিটিশ শাসন থেকে সাহসিকতার সাথে লড়াই করার জন্য ভারতীয় যুদ্ধবন্দী এবং সেসব দেশের ভারতীয় বাসিন্দাদের তার আজাদ হিন্দ ফৌজে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। তিনি তার সেনাবাহিনিদের দিল্লী চলো এবং জয় হিন্দ নামে একটি স্লোগান দিয়েছিলেন। ব্রিটিশদের শাসন থেকে তার মাতৃভূমিকে মুক্ত করার জন্য তিনি “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব” এই মহান কথায় তার সেনাবাহিনীদের অনুপ্রাণিত করেছিলেন। এটা বলা হয় ১৯৪৫ সালে একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন। তিনি কী সত্যিই বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন এই নিয়ে এখনো জল্পনা কল্পনা রয়েছে।

২। অরবিন্দ ঘোষঃ
বাংলার কিংবদন্তি অরবিন্দ ঘোষ ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। পাশাপাশি কবি, পণ্ডিত এবং দার্শনিক। স্বাধীনতার জন্য তিনি তার পুরো জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৭২ সালে কলকাতায়। তিনি এক বিখ্যাত রাজবংশে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কৃষ্ণ ধন ঘোষ ছিলেন একজন সার্জেন। তিনি লন্ডনের সেইন্ট পলস থেকে পড়াশুনো করেন এবং কেমব্রিজে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় জন্য ভর্তি হন। তবে তিনি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাস করলে অশ্বারোহীদের প্রয়োজনীয পরীক্ষায় ব্যর্থ হন এবং তিনি সিভিল সার্ভিসে প্রবেশ করতে পারেননি।
তিনি গ্রিক এবং ল্যাটিন ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। ভারতে ফিরে এসে বরোদার একটি সরকারী বিদ্যালয়ের উপ-অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হয়। পাশাপাশি বাংলা সাহিত্য, দর্শন এবং সংস্কৃত নিয়ে গবেষণা করেন। বঙ্গভঙ্গের পর (১৯০৬ সাল) তিনি চাকরি থেকে পদত্যাগ নেয়।
১৯০৮ সাল থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠেন। রাজনীতির গাইড বলা হত এই কিংবদন্তিকে। তিনি দেশবাসীকে ব্রিটিশ পণ্য- দ্রব্য ত্যাগ করতে সমর্থন করেছিলেন এবং মানুষকে সত্যাগ্রহের সত্যাগ্রহের জন্য তৈরি করেন। তিনি ‘বন্দে মাতরম’ পত্রিকা প্রকাশ করেন।
আলিপুর বোমা মামলাটি জন্য অরবিন্দ ঘোষ এক বছর আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি ছিলেন। বন্দি অবস্থায় তার যোগ ও ধ্যানের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায় এবং শুনানির পরে ধ্যান এবং প্রাণায়াম অনুশীলন করেন। পন্ডিচেরিতে ১৯২৬ সালে শ্রী অরবিন্দ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও শ্রী অরবিন্দ আর্য নামে একটি দার্শনিক মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন।

৩। খুদিরাম বসুঃ
১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা ডিসেম্বর মেদিনীপুর জেলার হাবিবপুর গ্রামে ক্ষুদিরামের জন্ম হয়। পিতা ত্রৈলোক্যনাথ বসু এবং মা লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী। এঁদের দুই পুত্র শৈশবেই মৃত্যুবরণ করেন। তাই তিন কন্যার পর যখন তাঁর জন্ম হয়, তখন পরিবার-পরিজনের কথা শুনে, তিনি এই পুত্রকে তার বড় বোনের কাছে তিন মুঠি খুদের (শস্যের খুদ) বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। খুদের বিনিময়ে ক্রয়কৃত শিশুটির নাম পরবর্তীতে ক্ষুদিরাম রাখা হয়। ১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর পিতা ত্রৈলোক্যনাথ বসু এবং মা লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবীর মৃত্যু হয়। এই সময় থেকে তাঁকে প্রতিপালন করেন তার বড় বোন অপরূপা'র কাছে। গ্রামের বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষার পর তমলুকের 'হ্যামিল্টন' স্কুলে লেখপড়া করেন।
১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে ক্ষুদিরাম ভগ্নীপতি অমৃতের সাথে মেদিনীপুর শহরে চলে আসেন। এই কারণে তমলুক-এর 'হ্যামিল্টন' স্কুল তাঁকে ত্যাগ করতে হয়। ভ্গ্নীপতি তাঁকে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি করে দেন। ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বিপ্লবীদের একটি নবগঠিত দলে যুগান্তরে যোগদান করেন। ১৯০২-০৩ খ্রিষ্টাব্দে যখন বিপ্লবী নেতা শ্রীঅরবিন্দ এবং সিস্টার নিবেদিতা মেদিনীপুর ভ্রমণ করে জনসম্মুখে বক্তব্য রাখেন। তখন তাঁদের এই বক্তব্য শুনে ক্ষুদিরাম বিপ্লবে যোগ দিতে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ঋষি রাজনারায়ণ বসুর (১৮২৬-১৮৯৯) ভাইয়ের ছেলে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সান্নিধ্যলাভ করেন। উল্লেখ্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন তাঁর শিক্ষক।১৯০৩ সাল। ১৪ বছরের ক্ষুদিরাম তখন স্কুলের ছাত্র। তার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু দেশীয় ধুতি পরিধান করে স্কুলে এলো। এমন পোশাক দেখে সবাই বিদ্রুপ শুরু করলো। এই ঘটনা দেখে ক্ষুদিরাম তার মনের এক নতুন দিক উন্মোচন করলেন সবার সামনে। ক্ষুদিরাম সবার উদ্দেশ্যে দেশীয় কাপড়ের প্রয়োজনীয়তা ও বিদেশী পণ্যের ব্যবহার না করার কথা জানালেন। এভাবেই ছোট ক্ষুদিরামের দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটলো।
ক্ষুদিরাম মেদিনীপুরে হেমচন্দ্র নামে এক গুরুর সান্নিধ্যে আসেন। সে তারকাছে একটি রিভলবার চাইলেন এইজন্য যে, এই রিভলবার দিয়ে ব্রিটিশ মারতে হবে, তাদের এই দেশ ত্যাগ করাতে হবে৷ গুরু বুঝতে পারলেন এই ছেলের ভিতর একটা জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি আছে এবং সে একসময় মহাপ্রলয় ঘটিয়ে দিবে। এরপর থেকে শুরু হয় ক্ষুদিরামের বিপ্লবী জীবন৷ ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হলে ক্ষুদিরাম আন্দোলনে যোগ দেন দুই বাংলা একত্র রাখার জন্য। এরপর ক্ষুদিরামের উপর এক বড় দায়িত্ব; অত্যাচারী ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যা করতে হবে ।
ক্ষুদিরাম ও তার সহযোগী প্রফুল্ল চাকি গাড়িতে ব্রিটিশ বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড আছে ভেবে তাকে মারার জন্যে বোমা ছুঁড়েছিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড অন্য একটা গাড়িতে বসেছিলেন। ফলে হামলায় মিসেস কেনেডি ও তার কন্যার মৃত্যু হয়। প্রফুল্ল চাকি গ্রেপ্তারের আগেই আত্মহত্যা করেন। ক্ষুদিরাম গ্রেপ্তার হন। দুজন মহিলাকে হত্যা করার জন্যে তার বিচার হয় এবং চূড়ান্তভাবে তার ফাঁসির আদেশ হয়। ফাঁসি হওয়ার সময় ক্ষুদিরামের বয়স ছিল ১৮ বছর, ৭ মাস এবং ১১ দিন। সংগ্রামী ক্ষুদিরাম ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সর্বকনিষ্ঠ শহীদ।

৪ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ঃ
বাংলার কিংবদন্তি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হুগলী জেলায় এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন মতিলাল চট্টোপাধ্যায় এবং মা ভুবনমোহিনী দেবী। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একদিকে যেমন ছিলেন লেখক তেমনি অন্যদিকে ছিলেন ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার। তিনি পড়াশুনোয় খুব মেধাবী ছিলেন এবং হুগলি ব্রাঞ্চ স্কুলে ভর্তি হন। তবে তার মা মারা যাওয়ার পর তিনি মামা বাড়ি ভাগলপুরে চলে যান এবং সেখানে প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ করেন।
তিনি শৈশব থেকেই লেখালেখি করতেন এবং সাহিত্যের প্রতি শৈশব থেকেই তার গভীর আগ্রহ ছিল। শৈশবে তিনি দুটি গল্প রচা করেছিলেন ‘কাশীনাথ’ ও ‘ব্রহ্মদৈত্য’। তার ছোট গল্প ‘মন্দির’ কুন্তলীন প্রতিযোগিতায় সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার লাভ করে। তিনি কুসংস্কার এবং গোঁড়ামির বিরুদ্ধে লেখালেখি করেন এবং মহিলাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেন তার লেখার মাধ্যমে। দেবদাস, পল্লী সমাজ এবং পরিণীতা অন্যতম।
বৈপ্লবিক আন্দোলন ঘিরে তার গল্প ‘পথের দাবী’। তার রচনা প্রেরণা জাগিয়েছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য। ১৯১৬ সালে প্রকাশিত উপন্যাস শ্রীকান্ত। এই চার অংশের উপন্যাসটি শ্রীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ভ্রমণ এবং তার জীবন ভিত্তি করে লেখা। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন উপন্যাস, সাহিত্য ও গল্পের মাধ্যমে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। ৯৩৮ সালে ১৬ জানুয়ারি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

৫। প্রীতিলতা ওয়াদেদ্দারঃ
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার একজন বাঙালি ছিলেন, যিনি ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা ও প্রথম বিপ্লবী মহিলা শহিদ ব্যক্তিত্ব। চট্টগ্রামে জন্ম নেয়া এই বাঙালি বিপ্লবী সূর্য সেনের নেতৃত্বে তখনকার ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং জীবন বিসর্জন করেন।
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে প্রীতিলতা পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করেন। এই ক্লাবটিতে একটি সাইনবোর্ড লাগানো ছিলো যাতে লেখা ছিলো “কুকুর এবং ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ”। দেশীয় মানুষদের এভাবেই খাটো করে দেখতো ব্রিটিশরা। এই ক্লাব দখলের সময় প্রীতিলতা ১৫ জনের একটি বিপ্লবী দল পরিচালনা করেন। প্রীতিলতার দল ক্লাবটি আক্রমণ করে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। পরবর্তীতে পুলিশ তাদেরকে আটক করে। পুলিশের হাতে আটক এড়াতে প্রীতিলতা সায়ানাইড নামক বিষাক্ত রাসায়নিক গলাধঃকরণ করে আত্মহত্যা করেন।
তার সাথে একটা চিরকুট লেখা ছিলো, যেখানে লেখা ছিল, “আমরা দেশের মুক্তির জন্য এই সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করিতেছি। অদ্যকার পাহাড়তলী ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ স্বাধীনতা যুদ্ধের একটি অংশ। ব্রিটিশরা জোরপূর্বক আমাদের স্বাধীনতা ছিনাইয়া লইয়াছে। সমস্ত ভারতীয় নারী সমস্ত বিপদ ও বাধাকে চূর্ণ করিয়া এই বিদ্রোহ ও সশস্ত্র মুক্তি আন্দোলনে যোগদান করিবেন এবং তাহার জন্য নিজেকে তৈয়ার করিবেন এই আশা লইয়া আমি আজ আত্নদানে অগ্রসর হইলাম।”

৬। যতীন্দ্রনাথ মুখোপধ্যায়ঃ
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বাঙালি নেতা বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ মুখোপধ্যায়। যিনি বাঘা যতীন নামেই সকলের কাছে সমধিক পরিচিত। ১৯০০ সালে ২০/২১ বছর বয়সে শুধুমাত্র একটি ছোরা দিয়ে ১০ মিনিট লড়াই করে যতীন্দ্রনাথ একটি বাঘ হত্যা করেন। বাঘরে আঘাতে তার শরীরের প্রায় ৩০০ স্থানে ক্ষত হয়। তার অবস্থা আশংকাজনক হলে কলকাতার বিখ্যাত ডাক্তার, সর্বশ্রেষ্ট সার্জন সুরেশপ্রসাদের চিকিৎসার ভার নেন। ডাক্তার সুরেশ প্রসাদ তাঁকে দেখে, তাঁর বীরত্বের কথা শুনে রীতিমতো অবাক হলেন এবং যতীন্দ্রনাথের এই কীর্তিকে সম্মান জানিয়ে তিনি তাঁকে 'বাঘা যতীন' নাম উপাধি দিলেন। বাঘ মারার পর গ্র্রামের সাধারণ মানুষও তাঁকে ভালোবেসে 'বাঘা যতীন' নামে ডাকতে শুরু করেন। পরবর্তীতে এই বাঘা যতীন সমগ্র ভারতবর্ষে 'বিপ্লবী বাঘা যতীন' নমে পরিচিতি লাভ করেন।
বাঘা যতীনের জন্ম ১৮৭৯ সালের ৭ ডিসেম্বর তৎকালীন নদীয়া জেলার কুষ্টিয়া মহাকুমার কয়া গ্রামে, মাতুলালয়ে। জন্মের পর পারিবারিকভাবে তাঁর নাম রাখা হয় যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। বাবা উমেশচন্দ মুখোপাধ্যায়। মা শরৎশশী দেবী। তাঁদের আদিনিবাস ছিল যশোর জেলার ঝিনাইদাহ মহকুমার রিশখালী গ্রামে। বাঘা যতীনের ৫ বছর বয়সে তাঁর বাবা মারা যান। এরপর মা ও বড়বোন বিনোদবালার সাথে তিনি মাতামহের বাড়ি কয়া গ্রামে চলে আসেন। মায়ের আদর-স্নেহে মাতুলালয়েই তিনি বড় হতে থাকেন। এখানেই কেটেছে তাঁর শৈশব-কৈশোর। মা শরৎশশী দেবী ছিলেন স্বভাবকবি বাঘিনী। গ্রামের পাশেই গভীর নদী। তিনি বালক যতীন্দ্রনাথকে স্নান করাতে যেয়ে দূরে ছুঁড়ে ফেলে নিজেই সাঁতরে গিয়ে নিয়ে আসতেন। এভাবে সাঁতার শিখে যতীন্দ্রনাথ একদিন বর্ষার ভরা নদী সাঁতরে পার হবার সাহস ও শক্তি অর্জন করেছিলেন। বাঘিনী মায়ের শিক্ষাতেই গড়ে উঠেছিলেন দেশপ্রেমিক যতীন্দ্রনাথ, বিপ্লবী বাঘা যতীন। যতীনের পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। প্রাথমিক লেখাপড়া শেষে বড় মামা বসন্ত কুমার যতীনকে কৃষ্ণনগরের অ্যাংলো ভার্ণাকুলার হাইস্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। ছোটবেলা থেকে যতীন ছিলেন দুরন্ত স্বভাবের। মা শরৎশশী দেবী ছেলেকে চোখে চোখে রাখতেন। ছোটবেলা থেকেই ছেলেকে আদর্শবান ও স্পষ্টভাষী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য মা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। স্কুলের পড়াশুনা আর খেলাধূলার পাশাপাশি ঘোড়ায় চড়া, শিকার করা, মাছ ধরা, গাছে চড়া, দৌড়-ঝাঁপসহ নানা দুরন্তপনায় মেতে থাকতেন যতীন। পড়াশুনায় ভাল, দুষ্টমিতে সেরা ও স্পষ্টভাষী, এসব গুণের কারণে যতীন তাঁর সহপাঠী ও শিক্ষক মহলে প্রিয় হয়ে উঠেন। পাড়া-মহল্লা ও স্কুলে নাটকে অভিনয়ও করতেন তিনি। ১৮৯৫ সালে এন্ট্রান্স পাস করে তিনি কলকাতা সেন্ট্রাল কলেজে (বর্তমানের ক্ষুদিরাম বোস সেন্ট্রাল কলেজ) ভর্তি হন। কলেজের পাশেই স্বামী বিবেকানন্দ বাস করতেন। বিবেকানন্দের সংস্পর্শে এসে যতীন দেশের স্বাধীনতার জন্য আধ্যাত্মিক বিকাশের কথা ভাবতে শুরু করেন। এসময়ে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। বিবেকানন্দের আহবানে যতীন তাঁর বন্ধুদের দল নিয়ে এই রোগে আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত হন। বিপ্লবী বাঘা যতীন বেঁচে ছিলেন মাত্র ৩৬ বছর। এই ছোট জীবনে তিনি তাঁর জীবন-সংগ্রাম দিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখে গেছেন। বিপ্লবী বাঘা যতীনের হলদিঘাট বুড়ি বালামের তীরের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচনা করেছিলেনঃ
“বাঙালির রণ দেখে যা তোরা
রাজপুত, শিখ, মারাঠী জাত
বালাশোর, বুড়ি বালামের তীর
নবভারতের হলদিঘাট।”
যতীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরে পুলিশ কমিশনার টেগার্ট তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করে বলেছিলেন "I have met the bravest Indian. I have the greatest regard for him but I had to do my duty."
মানুষের স্বাধীনতা, অধিকার ও শোষণমুক্তির আন্দোলন যতদিন চলবে ততদিন বাঘা যতীন বেঁচে থাকবেন মানুষের মাঝে। বেঁচে থাকবেন যুগ-যুগান্তরের ইতিহাসে। মানুষের চেতনায় ও কর্মে।

৭। কনকলতা বরুয়াঃ
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বাঙালি নারী নকলতা বরুয়ার কথা অনেকে জানলেও তার নাম খুব একটা আলোচিত হয় না। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় এই নারী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন। তিনিই ভারতের প্রথম নারী শহিদ। বিভিন্ন ব্রিটিশ অফিসে ভারতের জাতীয় পতাকা তোলার উদ্দেশ্যে কনকলতা একটি ছোট দল নিয়ে রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু সেটাই ছিল তার শেষযাত্রা। ব্রিটিশ পুলিশের গুলির নিশানা হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন তিনি।

৮। বীণা দাসঃ
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে বুলেটের ভয় দমিয়ে রাখতে পারেনি সেই সময়ের সাহসী নারী বীণা দাসকে। বীণা দাস কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঙলার তৎকালীন গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। স্ট্যানলি বেঁচে গেলেও ধরা পড়েন বীণা। তার ৯ বছর কারাদণ্ড হয়। এই বীণাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সীমান্তে যশোর রোডে গড়ে ওঠা একটি অস্থায়ী হাসপাতালে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সারা কলকাতা ঘুরে ওষুধ সংগ্রহ করেছেন। তারপর সেই ওষুধ তিনি পৌঁছে দিতেন যশোর সীমান্তের নেতাজী ফিল্ড হাসপাতালে। সেবা করতেন মুক্তিযোদ্ধাদের।

৯। সরোজিনী নাইডুঃ
সরোজিনী নাইডু নামটি শুনলে দক্ষিণ ভারতীয় বলে মনে হতে পারে। বিয়ের আগে তিনি ছিলেন সরোজিনী চট্টোপাধ্যায়। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে প্রথম সারিতে ছিলেন তিনি। তার নেতৃত্বেই গড়ে ওঠে ‘উইমেন্স ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’। তিনিই প্রথম কংগ্রেসের বার্ষিক সভার সভাপতিত্ব করেন। ভারত স্বাধীনতা লাভের পর তিনি আগ্রার গভর্নর নিযুক্ত হন। ১৯৪৯ সালের ২ মার্চ ই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এই মহীয়সী নারী। তার মৃত্যুর পর যুগ যুগ ধরে এই অতি অসামান্য বিদুষী নারী সমগ্র মহিলাজাতির পথপ্রদর্শিকা হিসেবে সম্মানিত হযে আসছেন।

১০। অরুণা আসফ আলিঃ
অরুণা আসফ আলি গান্ধীজীর নেতৃত্বে লবণ সত্যাগ্রহে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন কংগ্রেসের প্রথম সারির নেত্রী এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনের অন্যতম মুখ। ১৯৩২ সালে তিহার জেলে বন্দি থাকাকালে তিনি জেলের ভেতরেই বন্দিদের সঠিক চিকিৎসার দাবি করে অনশন শুরু করেন। ব্রিটিশ সরকার বাধ্য হয় তার দাবি মেনে নিতে।

১। সিস্টার নিবেদিতাঃ
সিস্টার নিবেদিতা কথা আমরা সবাই জানি। এই কিংবদন্তি ছিলেন একজন আইরিশ সমাজকর্মী, শিক্ষক এবং স্বামী বিবেকানন্দের শিষ্য। তিনি শিখেছিলেন মানুষের সেবা করাই মানে ঈশ্বরের সেবা। এই কথাটা তার মনে এমনভাবে গেঁথে ছিল যে তিনি নিজের দেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসেন মানুষের সেবা করার জন্য। মানুষের জন্য নিজের জীবন ত্যাগের কারণে তিনি ভারতের একজন শ্রদ্ধাশীল মানুষ। তিনি মানুষের সেবার পাশাপাশি স্বাধীনতার আন্দোলনের সমর্থন করেছেন এবং রেখে গেছেন নারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
২৮ অক্টোবর ১৮৬৭ সাল, য়ারল্যান্ডে ডানগ্যানন শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতা একজন ধর্মযাজক। মা মারা যাওয়ার পর সিস্টার নিবেদিতা তার দাদামশাইয়ের কাছে মানুষ হয়েছেন। তিনি লন্ডন চার্চ বোর্ডিং স্কুল এবং হ্যালিফ্যাক্স কলেজে পদার্থবিজ্ঞান, শিল্প, সংগীত এবং সাহিত্যে নিয়ে পড়াশুনো করেছেন।
তার বয়স যখন ১৭ বছর তখন থেকে তিনি শিক্ষকতার পেশা গ্রহণ করেছিলেন। প্রাইভেট স্কুলের ছোট শিশুদের পড়াতেন। পড়ানোর পাশাপাশি তিনি একজন লেখিকা ছিলেন। অনেক পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে লিখতেন। আস্তে আস্তে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে।
১৮৫৫ সালে লন্ডনে থাকাকালীন তার পরিচয় হয় স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে। এবং বিবেকানন্দের নীতিগুলি তার মনের অন্তরে বিবেকানন্দের প্রতি শ্রদ্ধা জাগিয়ে তোলে এবং সেদিন থেকে তিনি বিবেকানন্দকেই নিজের গুরু বলে মানেন। গৌতম বুদ্ধ এবং বিবেকানন্দের নীতি তার জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে।
তিনি স্বামী বিবেকানন্দের তত্ত্বাবধানে ‘ব্রহ্মচর্য’ ব্রত দীক্ষা গ্রহণ করেন ১৮৯৮ সালে। তিনি বহু জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং সেখানকার সংস্কৃতি বোঝার চেষ্টা করেছেন। কলকাতায় ভয়াবহ প্লেগ চলাকালীন তিনি ভালো সেবা প্রদান করেন। সেবার পাশাপাশি তিনি নারী শিক্ষার উন্নতির জন্য উত্তর কলকাতায় বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। তিনি স্বাধীনতার আন্দোলনে সরাসরি অংশ না নিলেও তার লেখার মধ্যে দিয়ে জাতীয় আন্দোলনে অংশ নেন।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া

সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম :-& ফেসবুক-১ :-& ফেসবুক-২
[email protected]

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০২

রাজীব নুর বলেছেন: এই নারী গুলো মহীয়সী।
জনাব তাঁরা কেউই বিবাহ করেন নাই বলেই কি মহীয়সী হতে পেরেছেন?

২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

বিয়ে না করলেই মহীয়সী এমন ধারনা আযৈক্তিক!!
বেগম রোকেয়া, কবি সুফিয়া কামাল তাঁরা সবাই
বিবাহিত ছিলেন।

২| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ভালো তালিকা তৈরি হচ্ছে।

২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৫১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে অসংখ্য ধন্যসাদ দাদা
কিংবদন্তিদের সাথে থাকার জন্য।

৩| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:২১

কামাল১৮ বলেছেন: কবি আবু জাফর ওবয়দুল্লার একটি কাব্য গ্রন্থের নাম এবং গ্রন্থের প্রথম কবিতা।কবিতাটি খুবই সুন্দর। কবির কন্ঠেই শুনেছি বাংলা একাডেমির কোন এক অনুষ্ঠানে।
লেখা দেখে কেউ ভাবতেই পারবে না এই লেখক একজন ঘোর ইসলাম পন্থি,ভাববে লেখক একজন ধর্মনিরপক্ষ লোক।মানুষকে সে মানুষ মনে করে।সে এই সমস্ত লোকদের অন্তরে ধারন করে।

২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৫৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ইসলাম পন্থি হলে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী গুণীজনের নাম
মুথে নেওয়া যাবেনা এমন কথা কি ইসলাম বলেছে?
ধর্মে-বর্ণে বৈচিত্র্য থাকলেও সৃষ্টিগতভাবে সব মানুষই এক।
সবাইকে মহান আল্লাহ আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) থেকে সৃষ্টি করেছেন।
হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান যে ধর্মের অনুসারী হোক না কেন,
মানুষ হিসেবে সবাই সম্মানিত। এজন্য ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সাঃ)
একজন ইহুদির লাশের প্রতিও সম্মান প্রদর্শন করেছেন। পবিত্র কোরআনে
আল্লাহ তায়ালা এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘আর আমি অবশ্যই আদম সন্তানকে সম্মানিত করেছি।’ (সুরা ইসরা : ৭০)।

৪| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১৯

ঊণকৌটী বলেছেন: মন কেড়ে নেওয়া সিরিজ, তথ্য বহুল পোস্ট তবে একটা অনুরোধ রইলো স্বাধীনতার এই যুদ্ধে অনেক অনামি যোদ্ধা আছেন তাদেরকে কথা নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন বিশেষ করে আজাদ হিন্দ ফৌজ এর নেতাজী বাদে তার সহযোগী দের কর্মের ইতিহাস এই প্রজন্মের কাছে আসা উচিৎ, অনেক ধন্যবাদ ভালো থাকবেন

২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ ঊণকৌটী !!
আমি আমার সীমিত জ্ঞানে স্বাধীনতার
পাক ভারত স্বাধীনতা যুদ্ধে যাদের সম্পৃক্ততা
আছে তাদের তুলে ধরবার চেষ্টা করবো।
আশা করি সাথে থাকবেন।

৫| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সুভাষচন্দ্র বসু কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে যান, সময়টা আরেকবার চেক করে নিন। সম্ভাবত 1939 খ্রিস্টাব্দে হবে।
ক্ষুদিরাম বসু হেডলাইনেও এটা রাখাই সমীচীন।
স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সন্তানদের প্রতি রইলো শ্রদ্ধাঞ্জলি।

২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে অসংথ্য ধন্যবাদ দাদা
প্রমাদটি সংশোধন করা হলো।
সাথে থাকার জন্য্ ধন্যবাদ।

৬| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:




আজকের তুলনায়, আমাদের অতীতের লোকজন নিজের সময়ে অনেক দায়িত্ববান ছিলেন।
করোনায় আমাদের কোন দায়িত্ববান মানুষ চোখে পড়েছে?

২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

গাজীসাব কমেন্ট ব্য্যান মুক্তি মোবারক !!
আপনারা গুরু শিষ্য মিলে এবার ব্লগটাকে
উজ্জিবিত করুন।
অতীদের লোকজন দেশ প্রেমিক ছিলেন আর
এখনকার লোকজন দল প্রেমিক।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

৭| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩৫

চাঁদগাজী বলেছেন:




দল প্রেমিকদের মাঝে কেহ করোনা নিয়ে দায়িত্ববোধ দেখায়েছেন?

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:১৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

কেউ যে দেখায়নি তা বলা বোধ হয় ঠিক হবেনা
কেউ অবশ্যই দেখিয়েছেন। আমাদের মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী সব সময় করোনা নিয়ে উদ্বিঘ্ন ! তিনি
প্রয়োজনীয় সব কিছুই কররছেন কেরোনা ণিয়ন্ত্রণের
জন্য।

৮| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৪৩

শেরজা তপন বলেছেন: ++
আজকের মত তুলে রাখলাম- কালকে পড়ব নুরু ভাই।

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:১৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ইনসা্আল্লাহ। আল্লাহ আপনাকে নেক হায়াত
দান করুন। সুস্থ্য্ থাকুন। নিরাপদে থাকুন।

৯| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:২৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: এগারোজনের মধ্যে ছয়জন নারী। তারা বৃটিশ বিরোধী আণ্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন। শরৎচন্দ্র বাংলা সাহিত্যের অপরাজেয় কথাশিল্পী । এসব গুণী ও বীরদের মধ্যে ক্ষুধিরামকে চিনি অনেক ছোট বেলা থেকে। ক্ষুধিরামের ফাসি গানটি থেকেই তার অসামান্য বীরত্বের সঙ্গে পরিচিত হই সেই ছোট বেলায়। সুভাস চন্দ্র বসু আমার অনেক ভালোলাগার একজন নেতা্ । প্রীতিলতা প্রথম মহীলা শাহিদ। তাদের সবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা । সুন্দর শেয়ারে অনেক ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় নূর মোহাম্মদ নূরু ।

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ সেলিম ভাই। নারী কেবল পুরুষের পদধূলি না হয়ে থেকে তাঁর বীরত্বের
পরিচয় দিয়ে সমাজের বা রাষ্ট্রের উন্নতিকল্পে এগিয়ে এসেছে বহুবার। ভারতের স্বাধীনতা
সংগ্রামে এরকম বহু নারী বিপ্লবী আছেন যারা তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন মাতৃভূমির
উদ্দেশ্যে, নিজেদের রক্ত দিয়ে এঁকেছেন স্বাধীনতার স্বপ্ন। ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনে অসেক
নারী প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। যাদের মধ্যে
ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ, মাতঙ্গিনী হাজরা, লাবণ্যপ্রভা দত্ত ও শোভারাণী দত্ত, বীণা দাস ভৌমিক,
অ্যানি বেসান্ত, মাদাম ভিকাজী রোস্তম কামা, হেমপ্রভা মজুমদার. ননীবালা দেবী,দুকড়িবালা দে,
জ্যোতির্ময়ী গঙ্গোপাধ্যায়, অনুরূপা দেবী, মোহিনী দেবী, তরলিকা দেবী, প্রফুল্লনলিনী ব্রহ্ম প্রমুখ
স্মরনীয় নাম।

১০| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:৩৮

কামাল১৮ বলেছেন: আল্লাহ বলছেন তারা সৃষ্টির অধম (৯৮:৬)আর আপনি বলছেন মানুষ হিসাবে সবাই সম্মানিত।
আপনি আল্লাহর থেকে মানবিক কোন সন্দেহ নাই।

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:৩৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনি কি সব সময় এমন ক্যাচালই করে যাবেন !!
থাকুননা আপনি আপনার মত ও পথ নিয়ে ।
আমি আল্লাহর চেয়ে বেশী মানবিক এই
ধৃষ্টতা পূূর্ণ কথার গুনাহ থেকে আল্লাহ
আপনাকে ক্ষমা করুন। আমিন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.