নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিরায়ত বাংলার প্রাতঃস্মররনীয় কয়েকজন কিংবদন্তি (৪র্থ পর্ব)

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৩৬


আমি কিংবদন্তির কথা বলছি – শিরানমের ছবিটির উদ্ধৃতিটি কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৯ই আগস্ট গান্ধির নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দেয়।
ভারতের ইতহাসে প্রতিয়মান হয় স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলিমদের কোনও অবদান নেই । তা যে কোনও শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক পড়লে বোঝা যায় । তার কারণ আমাদের দেশের যে কোনও শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে এই বিষয়ে তেমন আলোচনা নাই বললেই চলে। তাই এই শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বহু লোকই প্রশ্ন তোলে মুসলমানদের এই দেশে থাকা উচিত্‍ নয়, কারণ তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেনি।
সত্য ইতিহাস বলছে স্বাধীনতা যুদ্ধে হিন্দুদের সঙ্গে মুসলিমদের তাজা রক্তে এই ভারত মুক্তি পেয়েছে। জেল খাটা ১ কোটি মুসলমানের আত্ম বলি দান ও ফাঁসি হওয়া ৫ লক্ষ মুসলমানের প্রানের বিনিময়ে আজ ভারত স্বাধীন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন – নেতৃত্ব দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন, নির্বাসিত হয়েছেন – এমন অর্ধশত মুসলিম নেতার নামঃ

১। নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা, ২। শের-ই-মহিশুর টিপু সুলতান, ৩। শাহ্ ওয়ালিউল্লাহ্ মুহাদ্দিস দেহলবী, ৪। মুহাদ্দিস শাহ্ আবদুল আযীয দেহলভী, ৫্ শহীদ সৈয়দ আহমদ, ৬। মাওলানা বেলায়েত আলী সাদিকপুরী, ৭। ৭। বাহাদুর শাহ্ জাফর. ৮। আল্লামা ফজলে হক খয়রাবাদী, ৯। শাহজাদা ফিরোজ শাহ্, ১০। শহীদ মাওলাবী মুহাম্মদ বাকির, ১১্ বেগম হযরত মহল, ১২্ মাওলানা আহমাদুল্লাহ্ শাহ্. ১৩্ । নবাব খান বাহাদুর খান, ১৪্। আযীযান বাঈ, ১৫্। লাবী লিয়াকত আলী ইলাহাবাদী, ১৬। হাজী ইমদাদুল্লাহ্ মুহাজির মক্কী, ১৭। মাওলানা মুহাম্মদ ক্বাসিম নানুতবী, ১৮। মাওলানা রহমাতুল্লাহ্ কিরানভী, ১৯। শায়খুল হিন্দ মাওলানা মাহমূদুল হাসান, ২০। মাওলানা উবাইদুল্লাহ্ সিন্ধী, ২১। মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গোহী, ২২। মাওলানা আনওয়ার শাহ্ কাশ্মিরী, ২৩। মাওলানা বরকাতুল্লাহ্ ভোপালী, ২৪। মাওলানা কিফায়েতুল্লাহ্, ২৫। মাওলানা আহমদ সাঈদ দেহলভী, ২৬। মাওলানা হুসাঈন আহমদ মাদানী. ২৭। মাওলানা মুহাম্মদ আলী জওহর, ২৮। মাওলানা হাসরত মোহানী, ২৯। মাওলানা আরিফ হিসবী, ৩০। মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। ৩১। মাওলানা হাবিবুর রহমান লুধিয়ানভী, ৩২। ডক্টর সাইফুদ্দীন কিচলু, ৩৩। মাসীহুল মুলক হাকীম আজমল খান, ৩৪। মাওলানা মাজহারুল হক, ৩৫। মাওলানা জাফর আলী খান, ৩৬। আল্লামা ইনায়েতুল্লাহ্ খান মাশরিকী, ৩৭। ডক্টর মুখতার আহমদ আনসারী, ৩৮। জেনারেল শাহনাওয়াজ খান, ৩৯। মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মিয়াঁ, ৪০। মাওলানা হিফজুর রহমান স্যোহারভী, ৪১। মাওলানা আবদুল বারী ফিরিঙ্গিমহল্লী, ৪২। খান আবদুল গফফার খান, ৪৩। মুফতী আতীকুর রহমান উসমানী, ৪৪। ডক্টর সৈয়দ মাহমূদ, ৪৫। খান আবদুস সামাদ খান আচাকজাঈ, ৪৬। রফী আহমদ কিদ্ওয়াঈ, ৪৭। ইউসুফ মেহর আলী, ৪৮। শহীদ আসফাকুল্লাহ্ খান, ৪৯। ব্যারিস্টার আসিফ আলী, ৫৯। মাওলানা আতাউল্লাহ্ শাহ্ বোখারীতারা প্রতেকেই আমাদের অভিভক্ত বাংলার কিংবদন্তি। তারা আমাদের বাংলার গর্ব। তাঁরা আজ আমাদের মধ্যে জীবিত না থাকলে রয়েছে আমাদের প্রত্যেকের মনের অন্তরে। তাঁরা সবাই চিরস্মরণীয়।। এরকমই কয়েকজন মহান কিংবদন্তিদের নিয়ে আমার ৪র্থ পর্ব।
১ম পর্বের লিংক
২য় পর্বের লিংক
৩য় পর্বের লিংক


তিতুমীর (১৭৭২-১৮৩১)
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও স্বাধীনতাকামীযোদ্ধা তিতুমীর। তিনি তার গ্রামের অসহায় কৃষকদের সাথে নিয়ে জমিদার এবং ব্রিটিশ নীলকরদের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়ে আন্দোলন শুরু করেন। তিনি এবং তার অনুসারীরা তৎকালীন হিন্দু জমিদারদের অত্যাচারের প্রতিবাদে ধুতির বদলে ‘তাহ্‌বান্দ’ নামে এক ধরনের বস্ত্র পরিধান শুরু করেন। তিতুমীর হিন্দু জমিদারদের মুসলমানের উপর বৈষম্যমূলকভাবে আরোপিত ‘দাঁড়ির খাজনা’ এবং মসজিদের করের তীব্র বিরোধিতা করেন। ধীরে ধীরে তিতুমীর ও তাঁর অনুসারীদের সাথে স্থানীয় জমিদার ও নীলকর সাহেবদের মধ্যে সংঘর্ষ তীব্রতর হতে থাকে। পালোয়ান তিতুমীর তাঁর অনুসারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলেন। তিতুমীরের অনুসারীর সংখ্যা বেড়ে এক সময় ৫,০০০ হয়। সবাই স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম করতে প্রস্তুত হয়। ১৮৩১ সালের ২৩ শে অক্টোবর বারাসাতের নারিকেলবাড়িয়ায় বাঁশের কেল্লা তৈরি করেন। বাঁশ এবং কাদা দিয়ে তারা দ্বি-স্তর বিশিষ্ট এই কেল্লা নির্মাণ করেন। ইতিহাসে যা তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা নামে পরিচিত।
তিতুমীর বর্তমান চব্বিশ পরগনা, নদীয়া এবং ফরিদপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অধিকার নিয়ে সেখানে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্থানীয় জমিদারদের নিজস্ব বাহিনী এবং ব্রিটিশ বাহিনী তিতুমীরের হাতে বেশ কয়েকবার পরাজয় বরণ করে।
বারাসতের নারিকেলবাড়িয়ায় বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন তিতুমীর; Image Courtesy: kalerkantho.com
অবশেষে ১৮৩১ সালের ১৩ নভেম্বর ব্রিটিশ সৈন্যরা তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তিতুমীর স্বাধীনতা ঘোষণা দিলেন, “ভাই সব, একটু পরেই ইংরেজ বাহিনী আমাদের কেল্লা আক্রমণ করবে। লড়াইতে হার-জিত আছেই, এতে আমাদের ভয় পেলে চলবে না। দেশের জন্য শহীদ হওয়ার মর্যদা অনেক। তবে এই লড়াই আমাদের শেষ লড়াই নয়। আমাদের কাছ থেকে প্রেরণা পেয়েই এ দেশের মানুষ একদিন দেশ উদ্ধার করবে। আমরা যে লড়াই শুরু করলাম, এই পথ ধরেই একদিন দেশ স্বাধীন হবে।”
১৪ নভেম্বর কর্নেল হার্ডিং-এর নেতৃত্বে ব্রিটিশ সৈন্যরা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তিতুমীর ও তার অনুসারীদের আক্রমণ করে। তাদের সাধারণ তলোয়ার ও হালকা অস্ত্র নিয়ে তিতুমীর ও তার সৈন্যরা ব্রিটিশ সৈন্যদের আধুনিক অস্ত্রের সামনে দাঁড়াতে পারেন নি। ১৪ নভেম্বর তিতুমীর ও তার চল্লিশ জন সহচর শহীদ হন। বাকিদের বন্দি করা হয় এবং বাঁশের কেল্লা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।


হাজী শরীয়তুল্লাহ
ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে সংঘটিত ফরায়েজি আন্দোলনের নেতা হাজী শরীয়তুল্লাহ। ইতিহাসে যে সকল মনীষী তাদের কর্মতৎপরতা আর সাধনার জন্য পৃথিবীতে বিখ্যাত হয়ে আছেন তাদের মধ্যে হাজী শরীয়াতুল্লাহ অন্যতম। তিনি শুধু একজন ধর্মীয় সংস্কারকই নন, তিনি শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠারও দিশারী। তিনি ছিলেন একাধারে ধর্মীয় সংস্কারক, নীলকর ও সামন্তবাদ বিরোধী এবং ফরায়েজি আন্দোলনের নেতা। আরব দেশের অন্তর্গত নেজদের অধিবাসী মুহম্মদ ইবন আবদুল ওহাব এক সংস্কার আন্দোলনের প্রবর্তন করেন। কুসংস্কার ও অনৈসলামিক রীতিনীতি পরিত্যাগ করে পবিত্র আল-কুরআন ও হাদীসের নির্দেশিত সরল-সঠিক পথে মুসলিম মিল্লাতকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করারই এ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল। তার মৃত্যুর পর নেজদের শেখ মুহম্মদ ইবন সউদ এই আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। মক্কা ও মদিনায় এর প্রচার কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এবং হজ্জের সময় মুসলমানদের নিকট এই সংস্কার বাণীর প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে দুইটি সংস্কার আন্দোলন গড়ে উঠে। উত্তর ভারতে সৈয়দ আহমদ শহীদ তরীকায়ে মুহম্মদিয়া নামক আন্দোলন শুরু করেন। বাংলাদেশে হাজী শরীয়াতুল্লাহ ফরায়েজী আন্দোলন শুরু করেন।কৃষক, তাঁতি তথা শ্রমজীবী মানুষকে যুগ যুগের শোষণ-বঞ্চনা এবং বিদেশী শাসন-শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার জন্য পরিচালিত তার এই আন্দোলন আমাদের জাতীয় ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ১৯৭৭ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তুল্লাহর নামানুসারে বাংলাদেশের শরিয়তপুর নামকরণ করা হয় এবং ১৯৮৪ সালে শরীয়তপুর জেলায় উন্নীত হয়। এছাড়া তার নামে মাদারিপুরের শিবচরে আড়িয়াল খাঁ নদের উপরে নির্মিত সেতুটির নাম করণ করা হয়েছে হাজী শরীয়তউল্লাহ সেতু। আজ ফরায়েজি আন্দোলনের মহানায়ক হাজী শরীয়তুল্লাহর ১৮০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮৪০ সালের আজকের দিনে তিনি ঢাকা জেলায় মৃত্যুবরণ করেন।


মাওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্ধীঃ
যে সব মুসলমান সূর্য সন্তান ভারতের স্বাধীনতার জন্য ত্যাগ, কোরবানি করেছেন এবং জীবনবাজি রেখেছেন, স্বাধিকার সংগ্রামের সে সব বীর সেনানীর মধ্যে মাওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্ধী অন্যতম। দেওবন্দের এই রুহানি সন্তান দেশের আজাদী সংগ্রামের জন্য সুদীর্ঘ ২৫ বছর স্বেচ্ছায় নির্বাসিত জীবনযাপন করেন। শায়খুল হিন্দ তাকে যে দায়িত্ব অর্পন করেছিলেন তা তিনি অত্যন্ত বীরত্ব ও সাহসিকতার সঙ্গে পালন করেছিলেন। যদিও এর পদে পদে ছিল বিপদ, ভয় আর জীবনাশঙ্কা।
মাওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্ধী ১৮৭২ সালের ১০ মার্চে পাঞ্জাবের শিয়ালকোট জেলায় এক শিখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১২ বছর বয়সেই জনৈক মুসলিম সহপাঠীর থেকে ‘তুহফাতুল হিন্দ’ এবং শাহ ঈসমাইল শহীদের ‘তাকবিয়াতুল ঈমান’ পাঠ করে তার অন্তরে ইসলামের প্রতি আগ্রহ তৈরী হয়।
১৬ বছর বয়সে তিনি মা বোন এবং পরিবার পরিজন সবকিছু ছেড়ে ইসলামের জন্য বেড়িয়ে পড়েন। সিন্ধু প্রদেশে এসে এক বুযুর্গের হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত তার দরবারে থেকে আধ্যাত্মিক সাধনা করেন। এরপর তিনি দ্বীনি শিক্ষার জন্য দারুল উলুম দেওবন্দে আসেন এবং শায়খুল হিন্দের কাছে তাফসীর, হাদীস,ফিকাহ্ এবং দর্শনে বূৎপত্তি অর্জন করেন। (বাংলা একাডেমি, মওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্ধীর রোজনামচা)
পড়ালেখা সমাপনীর পর মাওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্ধী লাহোরে ফিরে গিয়ে অধ্যায়ন ও গবেষণায় লিপ্ত হোন। এর মধ্যে তিনি হাদীসের প্রসিদ্ধ ১০-১২টি গ্রন্থ মুখস্থ করেন এবং ইলমে হাদীস ও হানাফি ফিকাহ্ সম্পর্কে দুটি গ্রন্থ রচনা করেন।
১৯০৯ সালে শায়খুল হিন্দ তাকে আবার দেওবন্দে ডেকে পাঠান এবং দেওবন্দের সমাপনী ছাত্রদের দ্বারা ‘জমিয়তুল আনসার’ সংগঠনের দায়িত্ব প্রদান করেন। শাহ্ ওয়ালিউল্লাহর রাজনৈতিক দর্শনের ভিত্তিতে ১৯১৩ সালে দিল্লীর ফতেহপুর মসজিদে ‘নাযযারাতুল মা'আরিফ’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এই সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক শায়খুল হিন্দ ছাড়াও হাকিম আজমল খান এবং নওয়াব ভিকারুল মুলক ছিলেন। এ সময় শায়খুল হিন্দ তাকে দিল্লীর অন্যান্য বিপ্লবী সংগঠক ড. আনসারী এবং তার মাধ্যমে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ও মাওলানা মুহাম্মাদ আলীর সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেন। (মুহাম্মাদ সারওয়ার, মাওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্ধী,লাহোর ১৯৬৪,পৃ.২৯)
প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালীন সময় দেওবন্দে শায়খুল হিন্দের বাসায় বিপ্লবীদের একটি মিটিং হয়। মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত হয় যে,১৯১৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি দিল্লীতে অভ্যুত্থান ঘটানো হবে এবং চুক্তি সাক্ষর করে তুর্কি ও আফগান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য উবায়দুল্লাহ সিন্ধীকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত ইতিহাসে রেশমি রুমাল নামে খ্যাত হয়ে আছে। উবায়দুল্লাহ সিন্ধীকে আফগানিস্তানে গিয়ে একটি সেনাবাহিনী গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ইংরেজ গোয়েন্দারা এসময় মাওলানা মুহাম্মাদ আলী, মাওলানা শওকত আলী এবং মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার এড়িয়ে শায়খুল হিন্দ হেযাযের পথে এবং উবায়দুল্লাহ সিন্ধী কাবুলের পথে দুটি বৃহৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯১৫ সালে হিজরত করেন। (আবুল ফাতাহ মুহা: ইয়াহইয়া, দেওবন্দ আন্দোলন,পৃ.২০১)
মুহাম্মাদ আহমদ আলী, ফাতেহ মুহাম্মাদ এবং আব্দুল্লাহ এই তিনজনকে সঙ্গে নিয়ে উবায়দুল্লাহ সিন্ধী বেলুচিস্তান ও ইয়াগিস্তান হয়ে কাবুল পৌছেন। সেখানে গিয়ে তিনি শায়খুল হিন্দের ছাত্রদের ও স্বাধীনতাকামী ভারতীয়দের একত্র করেন।
আফগান বাদশাহ আমীর হাবিবুল্লাহ তাকে হিন্দুদের সঙ্গে নিয়ে এক প্লাটফর্মে কাজ করার নির্দেশ দেন। ১৯২২ সালে তিনি কংগ্রেসের কাবুল শাখা গঠন করেন এবং এটিই ছিল বহির্বিশ্বে কংগ্রেসের প্রথম শাখা। সিন্ধী ছিলেন এই শাখার প্রথম প্রেসিডেন্ট। তুর্কি-জার্মান মিশনের প্রতিনিধি রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ ও বরকতুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ‘অস্থায়ী ভারত সরকার’ গঠন করেন।
রাজা সাহেব রাষ্ট্রপতি, রবকতুল্লাহ প্রধানমন্ত্রী এবং উবায়দুল্লাহ সিন্ধী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বাচিত হোন। মাওলানা সিন্ধী ‘জুনদুল্লাহ’ নামে একটি সেনাবাহিনীও গঠন করেন। ইরান,জার্মান,রাশিয়া, তুরস্ক প্রভৃতি দেশে এই সরকারের প্রতিনিধি প্রেরণ করেন।
ঐতিহাসিক রেশমি রুমাল ইংরেজ গোয়েন্দাদের হাতে পরলে ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশে আমীর হাবিবুল্লাহ তাকে বন্ধি করেন আর শায়খুল হিন্দকে মক্কার শরীফ সরকার গ্রেফতার করে। আমীর নাসরুল্লাহ খানের আমলে মুক্তি মিললেও আন্তর্জাতিক চাপে তাকে কাবুল ত্যাগ করতে হয়। এরপর তিনি মস্কো হয়ে তুরস্কে গমন করেন। সাত মাস মস্কোতে অবস্থান করে কমিউনিজমের ওপর গবেষণা করেন। এরপর তিনি ইস্তাম্বুল হয়ে মক্কায় পৌঁছান। মস্কো ও ইস্তাম্বুল সফরে তিনি কমিউনিজমের উত্থান এবং কামাল পাশা কর্তৃক ইসলামি খেলাফত ধ্বংস স্বচক্ষে দেখতে পান। মক্কায় দশ বারো বছর অবস্থান করে ইবন সৌদের শাসনামল দেখার সুযোগ হয়। এসময় তিনি শাহ্ ওয়ালিউল্লাহর রচনাবলি গভীরভাবে অধ্যায়ন করেন এবং ‘ইমাম ওয়ালিউল্লাহ কি হিকমত কা ইজমালি তা'আরুফ’, ‘হিজবু ইমাম ওয়ালিউল্লাহ দেহলবি কি ইজমালি তারিখ কা মুকাদ্দিমাহ’ গ্রন্থদ্বয় রচনা করেন।
মক্কায় নির্বাসিত তুর্কি আলেম মূসা জারুল্লাহ্ উবায়দুল্লাহ সিন্ধীর তাফসির সংকলন করে প্রকাশ করেন। আততামহীদ লি আইম্মাতিত তাজদীদ এবং শাহ ওয়ালিউল্লাহ রুকআত বা পত্রাদির একটি ভূমিকা লেখেন। (ই.ফা.বা.,ইসলামী বিশ্বকোষ,খন্ড-৫, পৃ.৬২৩)
মাওলানা সিন্ধী ১৯৩৯ সালে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতির ভাষণে বলেন, ‘শাহ ওয়ালিউল্লাহ তার বৈপ্লবিক রাজনীতিতে জাহের ও বাতেনের রক্ষক ছিলেন আর শায়খুল হিন্দ ছিলেন রাহবার।’ বিশিষ্ট মুফাসসির মাওলানা আহমদ আলী লাহরী ও মাওলানা আব্দুল হাই ফারুকী মাওলানা সিন্ধীর নিকট তাফসীরের ইলম অর্জন করেছেন। ১৯৪৪ সালের ২২ আগষ্ট ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলের এই বীর সেনানী ইন্তিকাল করেন।

সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলভিঃ
সৈয়দ আহমদ বেরলভি রায় বেরিলি, ভারতের একজন মুসলিম সংস্কারক এবং "নবী মুহাম্মদের পথ", নামে একটি তরিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ঊনবিংশ শতকের গোড়ার দিকে বাংলাসহ সমগ্র ভারতবর্ষব্যাপী এক সুসংগঠিত স্বাধীনতা আন্দোলন ভারতীয় মুসলমানদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলভি এ আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন । সৈয়দ আহমদ ১৭৮৬ খৃষ্টাব্দে রায়বেরেলিতে জন্মগ্রহণ করেন। ভীষন সাহসী, সুঠাম দেহ ও প্রবল মানসিক শক্তির অধিকারী ছিলেন । তিনি ইংরেজদের পক্ষ থেকে আহ্বানকৃত সকল লোভ ও পদমর্যাদাকে উপেক্ষা করে আপাতত মানুষকে সচেতন করার মাধ্যমে বৃটিশ বিরোধী জনমত গঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। একই সাথে তিনি সকল প্রকার ধর্মীয় কুসংস্কার ও বেদাত দূর করার লক্ষে স্পষ্ট বক্তব্য ও যুক্তি প্রদানের মাধ্যমে মানুষকে জাগিয়ে তুলে সমাজ সংস্কারের কাজও চালিয়ে যেতে থাকেন। এভাবে তৎকালীন ভারতে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিপ্লবের ভিত নির্মাণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) আল্লাহর রাহে নিবেদিত মহান বুযুর্গ ছিলেন। তিনি সায়্যিদুনা হযরত হুসাইন (রা.)-এর ফয়যপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। ইসলামের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণে যারা প্রাণ দেন তারা দুনিয়া থেকে চলে গেলেও অমর থাকেন। সায়্যিদ আহমদ শহীদ (র.) আজো মানুষের অন্তরে বেঁচে আছেন।মুসলমানদের কাছে তিনি আমিরুল মোমেনীন হিসেবে পরিচিত ছিলেন । সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সিপাহসালার ও সময়ের শ্রেষ্ঠতম বুযুর্গ। তিনি মুসলিম সমাজে যে সকল শিরক, বিদআত ও কুসংস্কার অনুপ্রবেশ করেছিলো সেগুলোর বিরুদ্ধে জিহাদী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। মানুষের ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনকে সুন্দর করার মহান উদ্দেশ্য নিয়ে ‘তরীকায়ে মুহাম্মদিয়া’ নামে একটি তরীকার প্রবর্তন করেছিলেন। এ তরীকার মাধ্যমে তিনি মুসলিম জনসমাজের আত্মা পরিশুদ্ধ করার পাশাপাশি প্রচলিত কুসংস্কার ও অনৈতিক কার্যাবলীর বিরুদ্ধে জিহাদ করেছিলেন। তাঁর আন্দোলন আমাদের অনুপ্রাণিত করে।


মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী যিনি মওলানা ভাসানী নামেও পরিচিত) ছিলেন বিংশতাব্দীর ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম তৃণমূল রাজনীতিবিদ ও গণআন্দোলনের নায়ক, যিনি জীবদ্দশায় ১৯৪৭-এ সৃষ্ট পাকিস্তান ও ১৯৭১-এ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।


হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী
গণতন্ত্রের মানসপুত্র, উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। উপমহাদেশের যে কয়জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে আছেন, তাদের মধ্যে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী অন্যতম। তি্নি ছিলেন একাধারে প্রতিভাবান রাজনৈতিক সংগঠক, আইনজ্ঞ, বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভা ও গণপরিষদের সদস্য, অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রীসহ তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। যুক্তফ্রন্ট গঠনের মূলনেতাদের মধ্যে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী অন্যতম। গণতান্ত্রিক রীতি ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন, তাই সুধী সমাজ কর্তৃক ‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ বলে আখ্যায়িত হন। যদিও তাকে যথাযোগ্য মর্যদা দেওয়া হয়নি। অনেকে তাকে সুবিধাবাদী বলে আখ্যায়িত করেন। তাদের মতে শেরে বাংলার তুলনায় সোহরাওয়ার্দী সাহেবের দেশপ্রেম অনেক কম ছিল। তিনি পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী হয়েও বাংলার জন্য কিছু করেন নি। শুধু তাই নয়, শেরে বাংলাকে নিয়ে অনেক কিংবদন্তী প্রচলিত থাকলেও সোহরাওয়ার্দীকে নিয়ে তেমন কিছু শুনিনি কখনো। বাংলাদেশেরর ইতিহাসে সোহরাওয়ার্দীকে যোগ্য মর্যাদা দেয়া হয় নি মুলত দুটো কারনে। প্রথমতঃ কারন, জাতির জনক শেখ মুজিবর রহমানের গুরু ছিলেন। তাই শেখ মুজিব বিরুধীরা শেখ মুজিব এর বিষোদগার করতে গিয়ে সোহরাওয়ার্দীকেও খাটো করেন। আর দ্বিতীয় কারনঃ তিনি পশ্চিম বাংলার লোক ছিলেন। এই জন্য ভারত বিদ্বেষীরা সোহরাওয়ার্দীর অবদানকেও স্বীকার করতে চায় না। অথচ বাংলার মানুষের অনেক ঋণ সোহরাওয়ার্দীর কাছে। জিন্নাহর ঘোষিত ডাইরেক্ট একশনের ফলে এবং ৪৭ এ দেশভাগের সময় উদ্ভুৎ দাঙ্গায় সোহরাওয়ার্দী নিজের জীবন বিপন্ন করে দাঙ্গা থামানোর চেষ্টা করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত লোকেদের সেবা করতে করতে গিয়ে পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। গণতন্ত্রের মাসনসপুত্র খ্যাত হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। স্বাস্থ্যগত কারণে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অবস্থানকালে ১৯৬৩ সালের আজকের দিনে ৭১ বছর বয়সে তিঁনি মারা যান।
হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী ১৮৯২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বর্তমান পশ্চিম বঙ্গের (ভারত) মেদিনীপুরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম স্যার জাহিদ সেহরাওয়ার্দী। স্যার জাহিদ সোহরাওয়ার্দি কলকাতা হাইকোর্টের একজন খ্যাতনামা বিচারক ছিলেন। হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী ছিলেন বিচারপতি স্যার জাহিদ সেহরাওয়ার্দির কনিষ্ঠ সন্তান। হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দীর পরিবারের সদস্যবর্গ তৎকালীন ভারতবর্ষের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের প্রথা অনুসারে উর্দু ভাষা ব্যবহার করতেন। কিন্তু সোহরাওয়ার্দি নিজ উদ্যোগে বাংলা ভাষা শিখেন এবং বাংলার চর্চা করেন। কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবন শুরু করার পর যোগ দেন সেইন্ট জ্যাভিয়ার্স কলেজে। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে তিনি স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর তিনি তার মায়ের অনুরোধে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে আরবি ভাষা এবং সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯১৩ সালে তিঁনি যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে সম্মান সহ স্নাতক অর্জন করেন।এছাড়া এখানে তিনি আইন বিষয়েও পড়াশোনা করেন এবং বিসিএল ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯১৮ সালে গ্রে'স ইন হতে বার এট ল ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর ১৯২১ সালে কলকাতায় ফিরে এসে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। ১৯২০ সালে তিনি বেগম নেয়াজ ফাতেমা কে বিয়ে করেন। বেগম নেয়াজ ফাতেমা ছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী স্যার আবদুর রহিমের কন্যা।
তার বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯২৪ সালে। প্রথমে তিনি যোগ দেন চিত্তরঞ্জন দাসের স্বরাজ পার্টিতে। এ বছরেই তিনি কলিকাতা পৌরসভার ডেপুটি মেয়ের নির্বাচিত হন। পৌরসভার মেয়র ছিলেন চিত্তরঞ্জন দাস। ‌১৯২৭ সালে স্বরাজ পার্টি থেকে পদত্যাগ করে ১৯৩৬ সালের শুরুর দিতে তিনি ইণ্ডিপেণ্ড্যাণ্ট মুসলিম পার্টি গঠন করেন এবং এবছরের শেষের দিকে এই দলটি বাংলা প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাথে একীভূত হয়। তিনি এই দলের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। এর পরে ১৯৪৩ সালে তিনি খাজা নাজিমুদ্দিনের মন্ত্রী সভায় যোগ দেন। খাজা নাজিমুদ্দিনের মন্ত্রী সভায় তিনি শ্রম, পৌর সরবরাহ মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৬ সালে বাংলার মূখ্যমন্ত্রী হিসেবে পাকিস্তান আন্দোলনে তিনি ব্যাপক সমর্থন প্রদান করেন।পূর্ব বাংলার মূখ্যমন্ত্রী হিসেবে ১৯৪৬ সালে তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের প্রতি তার সমর্থন এবং সহযোগিতা প্রদান করেন। স্বাধীন ভারতবর্ষের ব্যাপারে কেবিনেট মিশন প্ল্যানের বিরুদ্ধে জিন্নাহ ১৯৪৬ সালের আগস্ট ১৬ তারিখে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসের ডাক দেন।বাংলায় সোহরাওয়ার্দির প্ররোচনায় এই দিন সরকারী ছুটি ঘোষণা করা হয়। ১৯৪৭ সালে তিনি বাংলার মূখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যান। উল্লেখ্য যে সোহরাওয়ার্দি ৪৭ এর দেশভাগের সাথে সাথে পাকিস্তানে চলে যাননি। পদত্যাগের পর তিনি সাথে সাথে পাকিস্তান না গিয়ে কলকাতায় থেকে যান। তবে ১৯৪৯ সালে তৎকালীন ভারত সরকার তার উপর ক্রমবর্ধমান করের বোঝা চাপালে তিনি ভারত ত্যাগ করে পাকিস্তান চলে যেতে বাধ্য হন। ১৯৪৭ এর আগস্টে পাকিস্তানের স্বাধীনতার পরে মুসলিম লীগের রক্ষনশীল নেতারা খাজা নাজিমুদ্দিনের নেতৃত্বে শক্তিশালী হয়ে উঠেন এবং খাজা নাজিমুদ্দিন জিন্নাহর পরোক্ষ সমর্থনে মুসলিম লীগের সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হন।খাজা নাজিমুদ্দিন পূর্ববাংলার মূখ্যমন্ত্রী হবার পর বেশ কয়েকবার সোহরাওয়ার্দিকে "ভারতীয় এজেন্ট" এবং "পাকিস্তানের শত্রু" হিসেবে অভিহিত করেন। এর পরে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশেমের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার টিকাটুলীর কেএম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে 'পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ' প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চা এবং অসামপ্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগঠনটির নাম থেকে পরে 'মুসলিম' শব্দটি বাদ দেওয়া হয়।প্রতিষ্ঠালগ্নে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি হন আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সহ-সভাপতি হন আতাউর রহমান খান, শাখাওয়াত হোসেন ও আলী আহমদ। টাঙ্গাইলের শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক এবং শেখ মুজিবুর রহমান, খন্দকার মোশতাক আহমদ ও এ কে রফিকুল হোসেনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
১৯৫৩ সালে তিনি একে ফজলুল হক এবং মাওলানা ভাসানীর সাথে একত্রে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন। ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর কৃষক শ্রমিক পার্টি, পাকিস্তান গণতন্ত্রী দল ও পাকিস্তান খেলাফত পার্টির সঙ্গে মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে। এই যুক্তফ্রন্টের নেতা ছিলেন ১) মওলানা ভাসানী, ২) একে ফজলুল হক ও ৩) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ১৯৫৪ সালের মার্চের আট থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান পরিষদের নির্বাচনে ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি আসন পায়। এরমধ্যে ১৪৩টি পেয়েছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ।১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ 'মুসলিম' শব্দটি বর্জন করে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এরপর মোহাম্মদ আলী বগুড়ার মন্ত্রীসভায় সোহরাওয়ার্দি আইনমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তিনি ডিসেম্বর ২০, ১৯৫৪ হতে আগস্ট , ১৯৫৫ পর্যন্ত এ পদে ছিলেন। আগস্ট ১১ , ১৯৫৫ হতে সেপ্টেম্বর ১, ১৯৫৬ পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান আইনসভায় বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান প্রনয়ণে তার ভূমিকা উলেখযোগ্য। এছাড়া তিনি সেপ্টেম্বর ১২, ১৯৫৬ থেকে অক্টোবার ১১, ১৯৫৭ পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৫৬ সালে চৌধুরি মোহাম্মদ আলির পদত্যাগের পর তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। পররাষ্ট্র বিষয়ে পাকিস্তানের যুক্তরাষ্ট্রপন্থী মনোভাবের ব্যাপারে তাকে অগ্রদূত হিসেবে অভিহিত করা হয়। ১৯৫৬ সালে সংখ্যা-সাম্যের ভিত্তিতে একটি শাসনতন্ত্র গৃহীত হয়। কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ১৩ জন এমএনএ থাকা সত্ত্বেও রিপাকলিকান পার্টির সহযোগিতায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রধানমন্ত্রী হন। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যেকার অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে তিনি পদক্ষেপ নেন। কিন্তু তার এই পদক্ষেপ ব্যাপক রাজনৈতিক বিরোধিতার জন্ম দেয়। পূর্ব পাকিস্তানের মতো পশ্চিম পাকিস্তানেও এক ইউনিট ধারণা প্রচলনের তার চেষ্টা পশ্চিম পাকিস্তানী রাজনীতিবিদদের কারণে নস্যাৎ হয়ে যায়। এরপর ১৯৫৮ সালে ইস্কান্দার মীর্জা পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারী করেন। আগস্ট ,১৯৫৯ হতে ইলেক্টিভ বডি ডিসকুয়ালিফিকেশান অর্ডার অনুসারে তাকে পাকিস্তানের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। পাকিস্তান নিরাপত্তা আইনে রাস্ট্রবিরোধী কাজের অপরাধ দেখিয়ে তাকে ১৯৬২ সালের ৩০ জানুয়ারি তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং করাচি সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ করা হয়।
১৯৬২ সালের ১৯ আগস্ট তিনি মুক্তি পেয়ে অক্টোবরে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের উদ্দেশ্যে ন্যাশনাল ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট (এন ডি এফ) গঠন করেন। এর পর তিনি শারীরিক অসুস্থ্যতায় ভুগতে থাকেন। স্বাস্থ্যগত কারণে ১৯৬৩ সালে দেশের বাইরে যান এবং লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অবস্থানকালে ৫ ডিসেম্বর, ৭১বছর বয়সে তিঁনি মারা যান। তার মৃত্যু অনেকের কাছে এখনো রহস্যাবৃত।


বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানঃ
শেখ মুজিবুর রহমান বা বঙ্গবন্ধু, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে অভিহিত করা হয়।[২] এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[৩] জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত।


কাজী নজরুল ইসলামঃ
কিংবদন্তি কাজী নজরুল ইসলাম বিদ্রোহী কবি নামে দেশজুড়ে খ্যাতি। তিনি বাংলাদেশের একজন জাতীয় কবি। যার বাংলায় রয়েছে প্রচুর অবদান। তিনি বিখ্যাত কবি হলেও ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও দার্শনিক। তার লেখাগুলি সেই সময় স্বাধীনতা জন্য কাজে এসেছিল। ফ্যাসিবাদ এবং যে কোনও ধরণের নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন।
সাল ১৮৯৯, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার বাবা কাজী ফকির আহমদ সেখানকার মসজিদ ইমাম এবং মা জাহেদা খাতুন একজন গৃহবধূ। বাবার মারা যাওয়ার পর মাত্র ১০ বছর বয়সে নেই কিংবদন্তি রিবারের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে স্কুলে শিক্ষকদের সহায়তা করতেন। তাকে প্রথম জীবনে এতো কষ্টের মুখোমুখি হতে হয়েছিল বলে গ্রামবাসীরা তাকে ‘দুখু মিয়া’ বলে ডাকত।
মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনো করে। তারপর তাকে আর্থিক কারণে পড়াশুনো ছেড়ে আসানসোলের বেকারি ও চায়ের দোকানে কাজ করতে হয়েছিল। চায়ের দোকানে কাজ করার সময় তিনি কবিতা এবং ছড়া রচনা করতেন। তার উপর মুগ্ধ হয়ে আসানসোলের দারোগা রফিজউল্লাহ তাকে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করেন। সেখানে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনো করেন এবং বাংলা, সংস্কৃত, আরবি, ফারসি সাহিত্য এবং হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীত অধ্যয়ন করেন।
কর্মরত অবস্থায় সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন “বাউণ্ডুলের আত্মকাহিনী” সওগাত পত্রিকায় প্রকাশ করেন। তার প্রথম কবিতা ‘বাঁধন হারা’। বিদ্রোহী শিরোনাম কবিতা লেখেন যা “বিজলি” ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। এই কবিতা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর লোকের কাছে প্রশংসা পেয়েছিল।
কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে ভালো সম্পর্কে ছিল। ১৯২২ সালে তার রাজনৈতিক কবিতা “আনন্দময়ীর আগমনে” ধূমকেতু পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এর জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কারাগারে থাকাকালীন প্রচুর কবিতা ও গান রচনা করেন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে রাজনৈতিক স্বাধীনতা না নেওয়ার জন্য খিলাফত” আন্দোলন এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সমালোচক হয়েছিলেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য জনগণকে জাগিয়ে তুলেছিলেন এবং ‘শ্রমিক প্রজা স্বরাজ দল’ সংগঠিত করেন। ১৯৬০ সালে তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণে পুরষ্কার পেয়েছিলেন। ‘সিরাজ-উদ-দৌলা’ নামে একটি বায়োপিক নাটকের তার গান এবং রচনা পরিচলনা করা হয়।

সূত্রঃ উইকিপিডিয়া/বাংলাপিডিয়া/বরিশাল পিডিয়া
© নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম :-& ফেসবুক-১ :-& ফেসবুক-২
[email protected]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:



বাঁশের কেল্লা, তাসের ঘর?

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৫১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

চেষ্টা ছিলো যা
অনেকের থাকেনা।

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৮

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলভী সম্পর্কে খুব কম লিখেছেন।

তবু, সংগ্রহে রাখার মতো একটি পোস্ট।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

বাকিটা আপনার জন্য শাইয়্যান ভাই

৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫১

কামাল১৮ বলেছেন: মুসলমানরা চেয়ে ছিলো খিলাফত।ভারতের স্বাধীনতা চাইলে পাকিস্তান সৃষ্টি হতো না।আমরা কেনো মুসলমানদের কাছ থেকে স্বাধীন হলাম?

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

এতদিন পরে এই প্রশ্ন !!
তারা থাকলে ভালো জবাব
দিতে পারতেন!

৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৮:০৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: অনেক তথ্যবহুল একটা লেখা। ব্রিটিশদের বিরোধী আন্দোলনে মুসলমানদের ভুমিকা অনস্বীকার্য। সম্ভবত দেওবন্দ মাদরাসার উৎপত্তি হয় সশস্ত্র আন্দোলনে যখন মুসলমানরা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং দেওবন্দ আন্দোলনের মাধ্যমে যখন অহিংস আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত হয়।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

কিন্তু ভারতের ইতিহাস মুসলমানদের
অবদানকে স্বীকার করতেই চায়না !!

৫| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: ভাসানী সাহেব নাকি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর খবর শুনে খুশি হয়েছিলেন?

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমি তার মনের খবর জানিনা !!

৬| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৪১

হাবিব বলেছেন: ভাসানী আর বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ক নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েন একদিন, যদি সময় পান।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

সময় আর আগ্রহ থাকলে হতে পারে!
তবে বর্তমানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি
স্যারদের তাণ্ডবে !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.