নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.b54.com

আমার অনেক কথা

সৈয়দ নুরূল আলম

আমার সোনার বাংলা আমি তোমাই ভালোবাসি

সৈয়দ নুরূল আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিজয়ের মাস ॥ আরও দুটি কথা

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৫

ডিসেম্বর মাস শুরু হয়েছে। আজ দ্বিতীয় দিন। ডিসেম্বর আমাদের প্রিয় মাস। ঐতিহাসিক ঘটনার মাস। এ মাসে অর্জিত হয় বিজয়। ন’মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একসাগর রক্তের বিনিময়ে এসেছিল বিজয়। এসেছিল মুক্তি। নিরঙ্কুশ হয়েছিল স্বাধীনতা।

আমাদের স্বাধীনতার জন্য ত্রিশ লাখ লোকের প্রাণ উৎসর্গ করতে হয়েছে। ২ লাখ নারীকে দিতে হয়েছে সম্ভ্রম। আর অগণিত মানুষের দুর্ভোগ কষ্ট। ঘরবাড়ি ছাড়া হয়ে বাস করা, আশ্রয় প্রার্থী হয়ে অন্য দেশের ত্রাণশিবিরে Ñ এমন বহু কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকারের ঘটনা রয়েছে এই বিজয়ের পেছনে। পাশাপাশি রয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসম সাহসী যুদ্ধ।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে ঘোষিত হয়েছিল যে স্বাধীনতা তাকে নিরঙ্কুশ করতে, হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীকে বিতাড়িত করতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা হাতে তুলে নিয়েছিল অস্ত্র। জীবন দিয়ে রক্ত ঝরিয়ে, বহু ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে সেই স্বাধীনতাকে নিরঙ্কুশ করা হয়েছে। অর্জিত হয়েছে বিজয়। হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করেছে ১৬ ডিসেম্বর, ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

আমাদের স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা ও অর্জনের পথটি অনেক দীর্ঘ। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দীর্ঘদিনের অনেক আন্দোলন সংগ্রাম এবং রক্তদান ও ত্যাগ স্বীকারের ঘটনা। একদিনে বা হঠাৎ করে কোনকিছু হয়নি। হয়েছে দীর্ঘ দীর্ঘ সংগ্রাম। এই সংগ্রাম ও আন্দোলনের ইতিহাসের দিকে তাকালে যে স্মরণীয় ঘটনা সবার আগে চোখে পড়ে সেটি হচ্ছে ভাষা আন্দোলন। ভাষা হচ্ছে সংস্কৃতির প্রধান বাহন। সংস্কৃতির প্রধান রূপও হচ্ছে এই ভাষা। পাকিস্তানী আমলে ভাষার জন্য আন্দোলন হয়েছিল। সংগ্রাম হয়েছিল। এ দেশের মানুষ বলেছিল, রাষ্ট্রভাষা হোক বাংলা। কিন্তু পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষ সে দাবি মানেনি। এদেশের মানুষ বলেছিল, বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হোক। সেটাও মানেনি পাকিস্তানী কর্তারা। এই ভাষার দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় যে মিছিল হয় তাতে গুলি চালানো হয়। রক্ত ঝরে ভাষার দাবিতে। ঐ দিন প্রাণ হারান অনেকেÑ বরকত, সালাম, রফিক, জব্বারসহ বহু দেশপ্রেমিক।

এই ভাষার দাবি, পরে স্বায়ত্ত শাসনের দাবি,স্বাধিকারের দাবি এমনি একের পর এক দাবিতে আন্দোলন হয়। পরবর্তী সময়ে দাবি ওঠে ছয় দফার। তারপরের ইতিহাস সবার জানা। অতি সংক্ষেপে সেটা হচ্ছেÑ পাকিস্তানীরা কোন ন্যায্য দাবিই মানেনি। শেষ পর্যন্ত ৭ মার্চের ভাষণ। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’Ñ ঘোষিত হলো বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে সোহরাওয়ার্দী ময়দানে।

তারপর মুক্তিযুদ্ধ। এ ইতিহাস সবার জানা। এখানে একটা বিষয় সুস্পষ্ট, আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে রাজনৈতিক অনেক দাবির সঙ্গে ছিল সংস্কৃতির মুক্তির দাবি অর্থাৎ আমাদের স্বাধীনতার সঙ্গে জড়িয়ে আছে সংস্কৃতির জন্য সংগ্রাম, ভাষার জন্য সংগ্রাম। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২১ শে ফেব্রুয়ারি। দেশ স্বাধীন হলে আমাদের রাষ্ট্রভাষা হয় বাংলা। রাজনৈতিক স্বাধীনতা যেমন অর্জিত হয় তেমনি অর্জিত হয় সংস্কৃতির স্বাধীনতা। ডিসেম্বরের এই মাসে আজ স্মরণে আসে অনেক ঘটনা। অনেক ইতিহাস। দেখা যায়, আমাদের মুক্তির পথে এগিয়ে চলার বিরাট প্রেরণা সর্বপ্রথম দিয়েছে ২১ শে ফেব্রুয়ারি।

একুশে ফেব্রুয়ারিকে আমরা কোনদিন ভুলতে পারব না। ভুলতে পারবে না সারা বিশ্বের লোক। তারা জানে এই বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল এই দিনে নিজের মায়ের ভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে। আমরা কোনদিন ভুলব না বরকত, সালাম, রফিক, জব্বারসহ অপরাপর শহীদদের কথা। তাঁরা চিরস্মরণীয়।

এখানে সদ্যবিদায়ী নবেম্বরের দুটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা অপ্রাসঙ্গিক হবে না। আমাদের ২১শে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। একে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার জন্য যে দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রাথমিক কাজ করেছিলেন তাঁদের একজন রফিকুল ইসলাম। অপরজন আব্দুস সালাম। রফিকুল ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। রফিকুল গত মাসের ২০ তারিখে ইন্তেকাল করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি শ্রদ্ধা ও সম্মানের পাত্র ছিলেন। তবে ২১শে ফেব্রুয়ারির ব্যাপারে তাঁরা দু’জন যে ভূমিকা পালন করেছেন তা আমরা কখনও ভুলব না। রফিক থাকতেন কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে। তাঁর সঙ্গে আবদুস সালাম এ ব্যাপারে বিরাট অবদান রেখেছেন। তিনিও জাতির শ্রদ্ধা ও ভালবাসার পাত্র। আমরা তাঁর সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করি।

রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তাঁর সে পুরস্কার প্রাপ্তির এক শ’ বছর পূর্ণ হয়েছে। এ ঘটনাটিও আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এক বিখ্যাত কবি তাঁর কবিতায় এ পুরস্কার প্রাপ্তি সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘বাজিয়ে রবি তোমার বীণে, আনলো মালা জগৎ জিনে...।’ সাহিত্য জগৎ জয় করে রবীন্দ্রনাথ এই মালা এনেছিলেন বাংলাভাষার বীণা বাজিয়ে। তাতে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল পশ্চিমা বিশ্ব। যে বাংলাভাষাকে আমরা প্রাণ দিয়ে ভালবাসি সে বাংলাভাষার কবি রবীন্দ্রনাথ। তিনি বাংলাভাষার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য যে কাজ করে গেছেন তার তুলনা হয় না। তিনি আমাদের এই ভাষায় যে সাহিত্য সৃষ্টি করে গেছেন তা আমাদের জন্য অমূল্য সম্পদ।

রবীন্দ্রনাথের অমর সৃষ্টি ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি...’ আমাদের জাতীয় সঙ্গীত।

তাঁর গান কবিতা আমাদের সংগ্রামে আন্দোলনে প্রেরণা জুগিয়েছে। সাহস জুগিয়েছে।

রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাপ্তির পর বিশ্ব জানল ভাল করে বাংলাভাষার কথা, বাংলা সাহিত্যের কথা।

১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথকে এই পুরস্কার দেয়া হয়। বাংলা সাহিত্যের জন্য এখনও ওটাই একমাত্র নোবেল। রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কার গোটা এশিয়ার মধ্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার। তাঁর আগে এশিয়ায় অন্য কোন ভাষার সাহিত্য নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত হয়নি। কবির নোবেল পুরস্কারের জন্য আমরা গর্বিত। আমরা গর্বিত আমাদের মাতৃভাষা বাংলার জন্য।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৮

ইনজামইফরাদ বলেছেন: Yah we are BAngAli.............
Feel proud for great 52 & 71

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.