নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন এক আশ্চর্য দান, দুর্ঘটনা নয়।

নুরুল মিলন

নুরুল মিলন

নুরুল মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

৮ ফাল্গুন, না ২১শে ফেব্রুয়ারী বিতর্ক

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩০

কাউকে কাউকে বলতে শুনি ৮ ফাল্গুন না হয়ে ২১ ফেব্রুয়ারী কেন, মাতৃভাষা দিবস মাতৃভাষাতেই হোক। তাদের জন্য বলি, একুশে ফেব্রুয়ারীকে শুধু একটি তারিখ ভাবার সংকীর্নতাকে পরিহার করুন। মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করবার নামে দুনিয়ার বাদবাকি ভাষাগুলোকে প্রতিপক্ষ হিসাবে বিবেচনা বন্ধ করুন এইবার। একটি তারিখ, একটি নাম প্রতিষ্ঠিত হবার পেছনে ইতিহাস থাকে, জনসম্পৃক্ততা থাকে, দীর্ঘচর্চা আর আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তিও থাকে। আ্ওয়ামী লীগ নামটির কথাই ধরুন। উর্দুজাত নাম, তাই বলে কি স্বাধিনতা সংগ্রাম বা দেশগঠনে তার ভূমিকাকে কলঙ্কিত করবেন? নিশ্চয় নয়। বিএনপি, সিপিবি,ন্যাপ, ইত্যাদি নামগুলোর ক্ষেত্রেও কথাগুলো খাটে তাদের আঙ্গিক থেকে। নাম দিয়ে নয়, ইতিহাস দিয়ে বিচার করুন। অফিস, আদালত,কম্পিউটার,হরতাল এমন হাজারো শব্দ এখন আমাদের নিজেদেরই। ভাষার দিকে একবার ভালো করে তাকান। তাহলে দেখবেন সে সবাইকে কেমন নিজের করে নিয়েছে। একুশে ফেব্রুয়ারী তাই এখন আর শুধু ইংরেজি কোন তারিখ নয়, এ আমাদের নিজেদেরও তারিখ।

আমরা মানি আর নাই মানি, খ্রিস্টিয় বর্ষপুঞ্জি এখন আমাদের অনেক বেশি চেনা হয়ে গেছে, বাংলা বর্ষপুঞ্জির চেয়েও। উপনিবেশীয় উত্তরাধিকার আর ইংরেজভাষী শাসিত বিশ্বব্যবস্থা এর পিছনে মূল কারন, অন্য কিছু নয়।একসময় এই বর্ষপুঞ্জি আমাদের অনেক অচেনা আর দূরের কোন বিষয় ছিলো। কিন্তু যতই আমরা তাদের থেকে শিখেছি, তাদের ভাষাতে শিখেছি, তাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ হয়েছি, ততই এই বর্ষপুঞ্জি আমাদের অনেক কাছের হয়ে গেছে। একটু একটু করে। কথা উঠতে পারে, এ আমাদের গোলামীর মানসিকতার ফল ভিন্ন অন্য কিছু নয়। এমন করে কেন ভাবব সেটা্ও কথা। আমাদের উদার্যের কথা ভাবুন, পলি জমা মাটির নরম মনকে একবার ভাবুন। আর্য-অনার্য,আরব-তুর্কি, মোগল-পাঠান,ইংরেজ-ফরাসি- সবাইকে আমরা ঠাঁই দিয়েছি আমাদের মানসে। জোর করে জনমানসে এমন করে কেউ থাকতে পারে না,জনতার ভালোবাসা্ও লাগে। অনেকক্ষেত্রে আমরা আমাদের শিকড় ধরে থাকতে পারছি না। কিন্তু, অাপনার ভাষা বলতে বাংলাই আছে। লক্ষ্য করলে দেখবেন, রাজনীতি সংশ্লিস্টতা আছে এমন তারিখগুলো পালন করা হয় ইংরেজিতে, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান আরবিতে, উৎসব আনন্দ সব বাংলা বর্ষপুঞ্জিতে। এটা আত্মতুষ্টি নয়, বাস্তবতা। সবকিছু বাংলা তারিখ মেনে করবেন এমন ভাবা বাতুলতা ভিন্ন কিছু নয়।

মাতৃভাষা দিবস পালন করা মানে মায়ের ভাষা ছাড়া আর কোন ভাষা বলবো না, লিখবো না- এমন মনোভাব মৌলবাদিতা ভিন্ন কিছু নয়।শহীদেরা এজন্য জীবন উৎসর্গ করেন নি।তারা জোরের বিরুদ্ধে ছিলেন, মায়ের ভাষার কথা বলার স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। অন্য ভাষা অচ্ছুত বলেন নি তারা। তারা অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন, রূদ্ধতার জন্য নয়। তারা শ্রেষ্ঠতা নয়, নায্যতা চেয়েছিলেন। মহান আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে আমরা যেন তা স্মরণে রাখি, ভুলে না যাই।

ফুলছড়িঘাট, গাইবান্ধা
২১.০২.১৭

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৬

খাইরুন নাহার বিনতে খলিল বলেছেন: আপনার সাথে সহমত পোষণ করছি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.