নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গেয়ে যাই নতুনের গান...

নাজিম সৌরভ

কোন এক অজানার পথে চলেছি ভেলায় চড়ে । যেদিন ভেলা ছিন্ন হয়ে যাবে, বুকে টেনে নেব স্বচ্ছ সলিল ধারা । যতদিন ভেসে আছি, উপভোগ করে যাবো দুকূলের সৌন্দর্য ।

নাজিম সৌরভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক বিচিত্র গোরস্থানের গল্প

০৩ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:২৪



মাস শেষ হতে না হতেই বাড়িওয়ালা আপনার দরজায় এসে নক করবে । ভাড়াটা দিয়ে দিন, ভাড়া দিতে ভালো লাগুক বা খারাপ লাগুক । ভাড়া দিতে না চাইলে বাসাটাই ছেড়ে দিন ।
আমাদের শহুরে মধ্যবিত্তদের জীবনে এটা খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার । একমাত্র মরে গিয়ে কবরে গেলেই তবে এই বাড়িভাড়া আদায়ের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন ।
মজার বিষয় কি জানেন ? পৃথিবীতে এমন জায়গাও আছে যেখানে কবরে থাকতে হলেও ভাড়া দিতে হয় !
দক্ষিণ আমেরিকার একটি দেশের নাম গুয়েতেমালা । এই দেশের রাজধানী গুয়েতেমালা সিটিতে ‘লা ভারবিনা’ নামে বড় একটি কবরস্থান আছে । লা ভারবিনা কবরস্থানটি আমাদের পরিচিত কবরস্থানের মত নয় । মূলত এটা ইট সিমেন্ট দিয়ে বানানো পাকা দালানের সমষ্টি । দেখলে মনে হবে যেন বহুতল আবাসিক ভবন । ভবনের দেয়ালে লাশের কফিন রাখার মত ফাঁকা জায়গা থাকে । সেখানে কফিন ঢুকিয়ে রেখে বাইরে থেকে প্লাস্টার করে দেয়া হয় ।
এ ধরনের পাকা দালানের কবরস্থানকে বলা হয় ক্রিপ্ট (Crypt) ।
এই লা ভারবিনা নামক কবরস্থানের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, এখানে কবরে থাকতে হলে ভাড়া গুনতে হবে ।
অবশ্য কবরস্থানের কর্তৃপক্ষ এত নির্দয় নয় । তাই দাফন করার পর প্রথম ছয় বছর একদম ফ্রি । এই ছয় বছরে মৃতদের কোনরকম বিরক্ত করা হয় না । তবে ছয় বছর শেষে পরবর্তী প্রতি চার বছরের জন্য অগ্রিম চব্বিশ ডলার জমা দিতে হয় । এই টাকাটা মৃতের পক্ষে তার স্বজনরা জমা দিলেই চলে । কিন্তু যদি কোন মৃত ব্যক্তির পক্ষে টাকা জমা না পড়ে, তখনই কর্তৃপক্ষ কঠোর হয়ে যান ।

এরপর যে কাজটা করা হয় তা সত্যিই ভয়ানক । যেই লাশগুলোর পক্ষে টাকা জমা পড়েনি তাদের কবরটা লাল কালি দিয়ে চিহ্নিত করে রাখা হয় । তারপর কোন একদিন সকালে কবরস্থানের কর্মীরা এসে অনাদায়ী লাশের কবর ভেঙ্গে মৃত পচে গলে কংকাল হয়ে যাওয়া লাশগুলোকে বের করে ফেলেন ।

সব হাড়গোড় কংকাল বস্তায় অথবা পলিব্যগে ঢোকানো হয় । যেসব লাশ পুরো নষ্ট হয়ে যায়নি এবং আলাদাভাবে সনাক্ত করা যায় সেই লাশগুলোকে আলাদা আলাদা পলিব্যাগে ঢোকানো হয় ।
ইতিমধ্যে যদি মৃত লাশটাকে তার কোন আত্মীয় নিয়ে যেতে চায় তাহলে তার হাতেই মৃত ব্যক্তির দেহাবশেষ হস্তান্তর করা হয় ।
নয়ত সবগুলো লাশকে ট্রাক অথবা পিক আপে বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হয় ।

তারপর এসব বেওয়ারিশ লাশগুলো শহরের নির্দিষ্ট ভাগাড়ে নিয়ে ফেলা হয় । সেই ভাগাড়ে সবগুলো লাশের অন্তিম ঠিকানা হয় গণকবর ।

লা ভারবিনা কবরস্থানের যে কবরটি থেকে পুরনো মৃতদেহ বহিষ্কৃত হয় সেই কবরটাকে কিন্তু কর্তৃপক্ষ এমনি এমনি খালি রাখেন না । সেই কবরটিকে আবার ধুয়ে মুছে সেখানে তোলা হয় সদ্য মৃত কোন ব্যক্তিকে ।
এভাবেই চলতে থাকে লা ভারবিনা গোরস্থানের পরজীবন ।
বুঝলেন তো ভাই, বাংলাদেশে জন্ম নিয়ে বেঁচেই গেলেন । আমাদের এই দেশে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে কষ্ট হলেও মরে যাবার পর কবরে শান্তিতেই থাকা যায় । অন্তত লা ভারবিনা গোরস্থানের এসব ভয়ানক পরিস্থিতিতে আপনাকে পড়তে হবে না ।
[এই লেখাটি দৈনিক নয়া দিগন্তের ফিচার পেজ 'অবকাশ'-এ প্রকাশিত হয়েছিল । ]

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:২২

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: নয়া দিগন্ত আমার প্রিয় একটি পত্রিকা। আগে অবকাশ, থেরাপি ট্যাবলেট আকারে বের হতো, এখন বের হয় না। মনে করি সামনে আবারও সে সময় ফিরে আসবে।

০৫ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:২২

নাজিম সৌরভ বলেছেন: আপনিও কি পত্রিকায় লেখালেখি করেন ?

২| ০৫ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৭

কামরুননাহার কলি বলেছেন: ওমাই গড কি ভয়নাক ঘটনা।

০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:১৭

নাজিম সৌরভ বলেছেন: :P

৩| ০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:১৯

রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: ভালো লিখেছেন ।
আমার নতুন গল্প।
"""ট্রিপল ফিল্টার টেস্ট""""
লিংক
(Click This Link)
এক বার ঘুরে আসার বিনীত অনুরোধ রইল।
আপনাদের অনুপ্রেরনাই আমাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে ।

৪| ০৬ ই জুন, ২০১৮ রাত ৩:৩০

ওমেরা বলেছেন: ভাই পেপার কাটিং দিয়ে কিন্ত প্রথম পাতায় আসা যাবে না।

০৬ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:২৩

নাজিম সৌরভ বলেছেন: ভাই, এটা আমার নিজের লেখা । পেপারে এসেছিল, তবে আরেকটু সংক্ষেপে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.