নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওবায়দুল ইসলাম কমল

ওবায়দুল ইসলাম কমল › বিস্তারিত পোস্টঃ

"মুসাফির"

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৫


-
(প্রথম ও দ্বিতীয় পর্ব)
.
হঠাৎ জীবনে এমন কেন হল? আরেক্টু ভাল কিছুও তো হতে পারতো জীবনে! সব কিছু জটলা পাঁকিয়ে দিলাম :(
-"ভাইজান ভাড়াডা দেন"।
বাসের জানালা থেকে মুখ ঘুরিয়ে কন্ডাকটরের দিকে তাকালাম।
ভাড়া দিতে দিতে বললাম," মামা আর কতক্ষন লাগবে"?
-"সময় তো ইক্টু লাগবই মামা।অনেক দূরের পথ তো। দাঁড়াই নাই তো কোনহানেই"।
কন্ডাকটর ঠিকই বলেছেন।অনেক দূরের পথ।আর বাসটা একবারও দাঁড়ায় নি। তারপরো এত সময় লাগছে কেন!
আবার জানলার বাইরে মনযোগ দিলাম। কোন পর্যন্ত আসলাম যেন! বোঝা যাচ্ছে না।
ধুত্তরিকা! কন্ডাক্টর মামাকে জিজ্ঞেস করলেও হত! কিন্তু মামা তো বাসের পেছনে চলে গেছেন!
আসলেই একদম ভুলো মনা হয়ে গেছি আজকাল! আশে পাশের মানুষগুলো ঠিকই বলে,আজ হয়ত সাক্ষাৎ প্রমান মিললো :(
.
বাসটা খুব দ্রুত চলছে। দোকানগুলোর নাম দেখা গেলেও জায়গাটার নাম স্পষ্ট চোখে পড়ছে না।বোঝার উপায় নেই কোথায় এসেছি,আর কদ্দূর!
কানে সাঁই সাঁই করে বাতাস লাগছে,নাকেও। আমার তো আবার সাইনো সাইটিস আছে,ঠান্ডা লেগে গেলে নাক ঝাড়ার মানুষ পাব কই! ওহ! কি যেন চিন্তা করছিলাম! ভুলে গেছি ।আর পারি না নিজেকে নিয়ে :(
নিজের উপরেই যত রাগ!অবশ্য আরেকজনও আছে।আমি যে ভুলোমনা সেটার ২য় প্রমানের কি খুব দরকার ছিল, হে সৃষ্টিকর্তা! এখন আর চিন্তা করতে মস্তিষ্ক সায় দেয় না।
.
জানলাটা লাগিয়ে দিলাম। জানলায় মাথা ঠেকিয়ে বসে রইলাম।এক্টু ঘুমানো প্রয়োজন। বিশ্রামের সবচেয়ে ভাল উপায় নাকি ঘুম।কিন্তু চোখ বন্ধ করতে চাই না,আবার যদি দুঃস্বপ্নগুলো দম বন্ধ করে আনে!
.
আজকাল খাঁটি সবকিছুরই অভাব।ঘুমেরও!এপাশ ওপাশ করে করে ঝিমাচ্ছি।হাত ঘড়িতে সময় রাত পৌনে একটা।বাসে কত ধরনের মানুষই থাকেন!
তবে কন্ডাকটার মামা সব সময়ই কোন না কোন কান্ড ঘটাচ্ছেন।পারেনও তিনি!হঠাৎই একটা ছেলের দিকে চোখ পড়ল।মেসজিং দেখে ফেললাম
অনধিকার স্বত্তেও। চশ্মার ফোঁকর দিয়ে শুধু কিস এর ইমোজি চোখে পড়ল।চুম্বন ছাড়া আর তেমন কিছু লিখছে না।আবারো চুম্বন ইমোজি!বাংলার "চুম্বন-কুমার" নাকি!
নাহ! আরেক্টু দেখলে কঠিন পাপ হয়ে যেতে পারে দেখার টপিক বদলে ফেললাম।বাকি সবাই ঘুমোচ্ছেন।আচমকায়ই শক্ত ব্রেক করল বাসটা! -"কি হল ড্রাইভার সাহেব?"!মনে হল কেউ বাস দাড় করানোর সিগ্নাল দিয়েছে।
তাড়াহুড়ো করে তিন জন উঠে পড়লেন।
.
-"স্যার,আপনেরা যান।আমি গাড়ি নিয়া আসতেছি" ।প্রাইভেট কার এর ড্রাইভারের কথার উত্তর না দিয়ে তারা বাসে উঠে পড়লেন।স্ত্রী আর ছেলেকে সামনে বসালেন কন্ডাক্টর।আর লোকটাকে আমার পাশের সিটে বসতে বললেন।
কিন্তু আমার পাশে তো একজন...আরেহ! আমার পাশের জন কই! মাত্রই তো ছিলেন!
লোকটা কাছে এসে বললেন,"উড ইউ মাইন্ড...?" সিংগেল মেয়ে হলে বলতাম,"নট এট অল!' কিন্তু পরিস্থিতি অনুযায়ী একটূ নড়ে চড়ে বললাম,-"দেখেন তো পেছনে সিট আছে নাকি?"
লোকটা দেখে এসে বললেন," নেই"
-"তো আমাদের বাসে এত রাতে!" বাসটা আমার বাজানের প্রোপার্টি এমন ভাব নিয়ে বলার পরও লোকটা ভদ্রভাবেই উত্তর দিয়ে বললেন,
-"আমাদের গাড়িটা নষ্ট হয়ে গেছে।"
-"ওহ! কই নামবেন?"
-"বাসটা তে রাত পাড় করব,যেখানেই বাস যাক"
-"আপনার নামটা যেন কি?"
-"আমার নাম তাহের,ছেলের নাম পরশ,স্ত্রীর নাম পায়েল"।
.
এক্কেবারে তর সইছে না বসার জন্য! আপুর নাম বলতেই কেন জানি তিনি আমাদের দিকে তাকালেন।হয়ত ভাবছেন এত দেরি হচ্ছে কেন বসতে।
আরেহ!পাক্কা ৩ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম টিকিটের জন্য।এত সহজে বসতে দেই কিভাবে! হুহ! তবে তাহের ভাই কে ভদ্দর বলে মনে হল।বসতে দিলাম। বসার একটু পরেই ঘুমিয়ে পড়লেন।বুঝলাম ক্লান্ত ছিলেন।একই কারনে বসার জন্য তাড়াহুড়ো করছিলেন।
অকারনেই আবার বাংলার "চুম্বন-কুমারের" দিকে তাকালাম।এখনো চুম্বন কুমার কিস ইমোজি দিয়েই যাচ্ছেন। মেয়েটাও!!
ভালই তোহ!চুম্বন কুমার-কুমারী একসাথে। আজকাল প্রেম-টেম দেখলে অসহ্য লাগে একদম! কেন জানি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.