নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কৈশোর থেকে সাহিত্য চর্চা করি। সোশ্যাল একটিভিস্ট হয়ে ওঠা স্বপ্ন ছিল না। প্রত্রিকার সম্পাদনা রবের পক্ষ থেকে অনন্য জিম্মাদারি। পত্রিকা চালাতে গিয়ে স্বৈরাচারের একাধিক মামলায় যুক্ত হওয়াটাও খোদা ইচ্ছে। ধর্মকে যেমন ভালোবাসি, তেমনই ধর্মের নামে অধর্মকে চরম ঘৃণা ক

ওবাইদুল্লাহ ওবাইদ

সত্য ও সুন্দরের পক্ষে কথা বলতে ও শুনতে এ পথচলা। কুসংস্কার ও কুরসম দূর হয়ে সত্যের শুভ সকাল হোক; এমনটাই কামনা করি। ইহকাল পরকালে যা কিছু সত্য তা-ই আমার ধর্ম; আমার বিশ্বাস।

ওবাইদুল্লাহ ওবাইদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বউ তোমার বন্ধু; দাসী নয়

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:৫৬

নৈতিকতার অবক্ষয় সমাজে খুব প্রতিযোগিতার সাথে বেড়ে চলছে। কোন ব্যবস্থাপনা, প্রতিষ্ঠান বা কর্মকাণ্ড আজ আর অবশিষ্ট নেই। এমনকি ধর্মীয় ব্যক্তি হতে ব্যবস্থাপনা বা প্রতিষ্ঠানও এ অনৈতিকতার ব্যাধিতে আক্রান্ত। এ সময়ে "সর্বাঙ্গে ঘা, ঔষধ দেবো কোন জাগায়" প্রবাদটি খুব মনে পড়ছে।
ব্যক্তিসচেতনতা, মানুষত্ব, নৈতিকজ্ঞান ও ধর্মীয় মূল্যবোধ থাকলে এসব থেকে পরিত্রাণ পাওয়া মোটেও কঠিন কিছু নয়।

নারীনির্যাতন মানবসমাজের বহুল প্রচারিত প্রসিদ্ধ মারাত্মক একটি সমস্যা।
কালের চক্ররথে চড়ে এর কায়দা, কৌশল, প্রকারও আজ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। নারী নির্যাতন রোধে সরকার যেমন ব্যর্থ হয়েছে। তেমনিভাবে ব্যর্থ হয়েছে সমাজ, শিক্ষা(?)।
ধর্মের কথা বলতে গেলে অনেকে বলবেন, 'খেলাফত' বা ধর্মীয় শাসন থাকতে হবে। অথচ আমরা সবাই ধর্ম মানি। আবার অনেকে ধর্মের ধারক বাহকও বনে আছি।
তবে কেন আমরা ধর্মীয় বিধান নিজঘরে নিজকর্মে প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হলাম? সেখানে তো রাষ্ট্র বা অন্য কেউ আপনাকে বাধা দিচ্ছে না। স্ত্রী নির্যাতন (নারী নির্যাতন) নিয়ে কিছু বলার ইচ্ছে আজ।
গত কিছুদিন আগে সামহোয়্যার ইন ব্লগে নিজের পরিপার্শ্বিক অভিজ্ঞতা থেকে কিছু লেখে ছিলাম। বলেছিলাম 'নারীরা নারী দ্বারাই বেশি নির্যাতিত' 'নারীরা নিজগৃহেই বেশি নির্যাতিত'। পূর্ণ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণটাও অবশ্য ছিলো।
অমনি কিছু ধর্মান্ধ হুজুগি আমার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়লো। তাদের সবচে মজবুত দাবি, "নারী নির্যাতন হলে তোমাদের এতো হইচই, পুরুষ নির্যাতন হলে নীরব থাকো কেন?"। ভাই নীরবের কী দেখলেন? আজকে একদিনই তো 'কলম' নারীর কথা বলছে। কিছু সময় মাত্র। এতো হিংসে কেন?
আর সমাজে নারীই তো সবচে বেশি নির্যাতিত। আসল কথা হচ্ছে আমরা নিজেরটা ষোল আনা বুঝি।
পরউন্নতি মোটেও সহে না(?)

নারীদের মন অত্যান্ত কোমল। তারা অল্পতে ভীষণ কষ্ট পায়। তারা দুর্বল প্রকৃতির হওয়ায় নারী নির্যাতন আরো শক্তিশালি হয়ে উঠছে ।
আমরা পুরুষেরা ঘরের বাহিরে সময় কাটিয়ে অভ্যস্ত। সে জন্য একটা পুরুষ কোথাও গিয়ে রাত্রিযাপন করতে তেমন কষ্ট হয় না। ঠিক বিপরীত একটি মেয়ের কথা ভাবুন। যে ঘরে ছোট থেকেই সে লালিত। এই কোমলমনা মানুষটি মা বাবা ভাই বোনকে ছেড়ে আরেকটা ঘরে কীভাবে দিন কাটাবে?
বিয়ের সময় চোখ দিয়ে যে অশ্রু প্রবাহিত হয়,
বন্ধু,
তা অল্প দুঃখের নয়!
তবুও একটি মেয়ে ধর্মীয় ও সামাজিক নিয়ম মেনে তার সব ছেড়ে দিয়ে অন্যের ঘরে আসে। একটি নতুন, একেবারে নতুন একটি জাগায় নতুন কিছু মানুষের সাথে পূর্বঅভিজ্ঞতা ছাড়াই জীবনের পথ চলা। সেই নতুন মানুষগুলোর যদি ভালোবাসাও পায়, তবুও তার এ পথ চলা অনেক কঠিন। কারণ আগেই বলেছি। মেয়েটি তার স্বভাবিকতার পুরো বিপরীত চলছে। এবং এ পথে নতুন অভিজ্ঞতা।
কিন্তু একটু ভাবুন তো!
যখন তার পাশের লোকগুলো তার সাথে হিংস্রতার আচরণ করে।
যখন তার সাথে সৌহার্দপূর্ণ আচরণ না করে প্রতিটি মূহুর্তে কৃষ্ণসর্পের মতো দংশন করে।
যখন পুরো ঘরের কাজকাম সব করেও একটু শান্তনার বাণী শুনতে পায় না। বরং 'অলস' 'অকর্মা' এ টাইপ কিছু শব্দে তাকে ভূষিত করা হয়।
যখন শেষ ভরসা স্বামীও অন্যের কানকথায় তার উপর চড়াও হয়।
তখন ঐ কোমলমনা মেয়েটির কী হালত হয়, একটু ভেবেছেন কী???
মেয়েটি তো পুরো এক ঘর মানুষকে আপন করে নিতে চেয়েছে, চাচ্ছে। সেই পুরো একঘর মানুষেরা কেন পারে না এই একটি মেয়েকে আপন করে নিতে??? সে তো তার সব বিসর্জন দিয়েই এখানে এসেছে। ভুল শুদ্ধের মিশেলে মানুষ। যদি তা না হয়, তাহলে তুমি কেন সে ভুল করতে যাচ্ছো?
আসলে হয়েছে কী! আমরা ঐ বউটাকে রোবট মনে করেছি। ঘরের দাসী মনে করেছি।
তাই তার জন্য শান্তনার বাণী থাকে না।
তার প্রশংসা করা মহা পাপ।
তার গুণকীর্তন; অসম্ভব।
বলতে পারবে, কয়জন মেয়ে তার শ্বশুরালয়ে সুখে আছে?
অথচ রাষ্ট্র, সামজ, ধর্ম, মানবসভ্যতা কোনটিই বলে না বউ তোমার ঘরের সব কাজ করবে বা সে তোমার/তোমাদের দাসী।
আবার এদিকে প্রচলিত বহু কুসংস্কার ঘুরেফিরে মেয়েটি সহ তার পুরো পিতৃফ্যামেলিকে বারবার আঘাত হেনে যায়। মৌসুমি কুসংস্কারেও অভাব নেই। যৌতুক অনাদায়, অপূর্ণতা বা চাহিদামত না-হওয়ায় বাড়তি ছাপ তো রয়েছেই। এসব নির্যাতন রোধে নারীকেও কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশে শিক্ষার হার বাড়লেও কমছে না নির্যাতন। শুধু
নির্যাতনের ধরন পাল্টেছে। আবার সমাজ, সামাজিকতা
ও পরিবারের দিকে তাকিয়ে অনেকে মুখ খুলছেন
না। অনেকে আবার আইন সম্পর্কে সঠিক ধারণা না
থাকায় কি করবেন বুঝে উঠতে পারেন না, তাই মুখ
বুজে সব অত্যাচার সহ্য করেন। আবার তারা একটু ভীতু হওয়ায়ও কুলাঙ্গাররা সুযোগটা ভালোভাবে কাজে লাগাচ্ছে।
বন্ধু সে কোন রোবটও নয়; কোন দাসীও নয়। সে তোমার মতোই একজন। তাকে প্রেম দাও। ভালোবাসা দাও। তার মুখে একটু হাসি ফুটাও। দেখবে, সে সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমাকে ভালোবাসবে। তোমাকে সুখে রাখতে চাইবে। দুনিয়াটা তোমার জন্য জান্নাত বানিয়ে দিতে চাইবে।
মনে রাখবে, এদের কষ্ট দিয়ে তোমার সুখের আশা হতাশায় পরিণত হবে। খোদার গায়ে এতো জ্বালা সহ্য হয় না। অনেকে বলে, "আমি তো প্রহার করছি না " ।
মানসিক চাপে রাখাটা কি তুমি খুব আরাম দায়ক ভেবেছো???
এটা তো আরও কষ্টকর বেশি।
প্লিজ, ওদের একটু ভালোবাসা দাও।
বউদের রোবট বা দাসী নয়; বন্ধু ভাবো।

আইনি সচেতনতার যে একটা বিষয় আছে সেটা অবশ্যই প্রত্যেকটি নারীর থাকা প্রয়োজন।
ইনশাআল্লাহ, আগামিবার আলোচনা করবো, কিভাবে একজন নারী তার উপর কৃত নির্যাতন রোধে আইনি সহায়তা পেতে পারেন। সরকারি নীতিমালার উল্লেখ সহ কিভাবে মামলা করবেন, সাধারণ ডাইরি করবেন, অর্থাৎ আইনি সহায়তা পাওয়ার মোটামুটি ধারনা নিয়েই হবে আমার পরের লেখা। আশা করি পাশে থাকবেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.