নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

!

এম এম ওবায়দুর রহমান

ভাল লাগে কবিতা আর গল্প লিখতে। স্বপ্ন দেখি সাহিত্যকে নিয়ে অনেক দুর যাবার। বিশ্বাস করি মানুষকে ভালবাসার চেয়ে বড় কোন ইবাদত নেই। সামনে দাড়িয়ে সমালোচনা করি যা কিছু খারাপ লাগে তার। নিশ্চয় আল্লাহ আমার সাথে আছে সব সময়। সম্প্রতি তুমি এলে বাদল দিনে নামে আমার একটি গল্পের বই প্রকাশিত হয়েছে

এম এম ওবায়দুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন সৎ মানুষের গল্প।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:১১



রহমান সাহেব আমার কলিগ। কোম্পানীর শুরু থেকে তিনি এই প্রতিষ্ঠানে জুনিয়র ষ্টোর অফিসার হিসেবে আছেন। গত ১১বছর তিনি একই পদে আছেন। তার কোন প্রমোশন হয়নী। অদুর ভবিষৎতে যে হবে তার কোন লক্ষন ও দেখছিনা। অবশ্য এ নিয়ে রহমান সাহেব কে কখনো বিচলিত হতে দেখিনী। তিনি প্রতিদিনের রুটিন মতো সকাল ৯টায় অফিস আসেন এবং সবার পরে অফিস থেকে বের হন। নিজের কাজের পর তাকে সহকর্মিদের কাজও অনেক সময় করে দিতে হয়।

তিনি মাথা নিচু করে কাজ করে যান। অন্য কলিগরা যখন গ্যালন ভর্তি তৈল নিয়ে বসদের পিছন পিছন ছুটছেন তখন রহমান সাহেব ওসব না দেখার ভান করে নিরবে তার কাজ করে যান। আমাদের অফিসটা বেসরকারী হলেও এখানে কর্মরত কর্মচারীগন কয়েকটি দলে বিভক্ত। কেউ এমডি কেউ চেয়্যারমান আবার কেউবা ইডি স্যার পন্থি। আওমিলীগ ও বিএনপির মতই এরা একপক্ষ আরেক পক্ষের পেছনে লেগে থাকেন। কিন্তু রহমান সাহেব এসবের মধ্যো নেই। তিনি সৎ মানুষ। শুনতে পাই স্বল্প বেতনের এই চাকরির পয়সায় ৪জন সন্তান নিয়ে তার সংসার চালাতে তার কষ্ট হয়, কিন্তু তারপরও সে এসব দুঃখ কষ্ট নিয়ে ভাবেন না। নিরলস ভাবে কাজ করে যান।

এভাবেই চলছিলো।

দিন কয়েক আগে অফিসে গিয়ে দেখি অন্যান্য কলিগরা রহমান সাহেবকে নিয়ে নানা আলোচনা করছেন। আমি রহমান সাহেবের কাছে গিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানতে চাইলাম। তিনি শূন্যে তাকিয়ে বললেন কৈ কিছু হয়নীতো। তার চোখ দুটো লাল, তাকে খুব বিসন্ন লাগতে ছিল। আমি বললাম দেখুন আপনি আমাদের বহুদিনের সহকর্মি। আমি আপনাকে খুব পছন্দও করি তাই প্রকৃত ঘটনাটা জানতে চাইছি।

রহমান সাহেব একটা সাদা খাম আমার দিকে এগিয়ে দিলেন। খুলে দেখলাম অসত্য তথ্য ও ঊদ্ধতন কর্মকতাদের সাথে অশোভন আচরনের জন্য তাকে বহিস্কার করা হয়েছে।

আমি বিস্মিত হয়ে গেলাম অবাক হয়ে বললাম এও সম্ভব?

রহমান সাহেব দির্ঘ নিশ্বাষ ফেলে বললেন তানিয়া কর্পারেশন আমাদের যে সুতা সাপ্লাই দেয়। অনেক সময় ওজন বাড়ানোর জন্য ওরা ভেজা সুতা দেয়। এবারের সুতার চালানটা অনেক বেশি ভেজা ছিল তাই আমি সুতা রিসিভ করতে চাইনি। তানিয়া কর্পারেশন তখন আমাকে টাকার একটা খাম দেয়। আমি তখন টাকা না নিয়ে চালানটা বাতিল করে দেই। ম্যানেজার কে অবহিত করি কিন্তু তাকে ওরা হয়ত ম্যানেজ করে ফেলছে তাই. .।

আমি চুপ করে নিজের টেবিলে চলে আসি। রহমান সাহেব অফিস রাজনীতির কোন দলের সাথেই জড়িত ছিলনা। তার জন্য তাই কেউ সুপারিশ দুরে থাকুক সত্যটাও বলতে এগিয়ে আসেনি। সত্য বলার সাস্তি স্বরুপ তাই তাকে কোম্পানী থেকে বহিস্কার করা হলো।

অফিস থেকে রহমান সাহেব বিদায় নেবার সময় আমার চোখ ছলছল করছিল। নিজেকে ভারি অথর্ব মনে হচ্ছিল। কিন্ত রহমান সাহেব কে দেখলাম নিবির্কার। এই প্রথম তিনি মাথা উচু করে সবার দিক তাকিয়ে একটু হাসলেন। তার হাসিটা ছিল তরবারির মত, আমার ভেতরটা ছিদ্র হয়ে গেল। তিনি শুধু বললেন সবাই ভাল থাকুন। তিনি অফিস থেকে বের হলেন মাথা উচু করে। তিনি ফুটপাত ধরে হেটে চললেন। আর আমরা মাথা নিচু করে অফিসের বাসের জন্য লাইন দিয়ে দাড়িয়ে রইলাম।







আমার এ লেখাটি দৈনীক আমার দেশে প্রকাশিত।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:২৬

নিয়নের আলো বলেছেন: আমি জানিনা কি বলব আর কি বলা উচিৎ??
আমরা সবাই এতটা স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি কেন??কিছু মানুষকে সব সময়ই ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, আর অন্যরা সবসময় মজা নেয়, কিন্তু কেন??
মাঝে মাঝে নিজেকে এই সমাজের একজন ভাবতে গেন্না হয়,গা গুলিয়ে উঠে....

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৪৫

এম এম ওবায়দুর রহমান বলেছেন: রোবট হয়ে যচ্ছি হয়ত..!

২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৩৪

কিছুক্ষণ বলেছেন: :(
রহমান সাহেবরা আছেন বলেই এখনও কেয়ামত আসে নাই

৩| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৩৭

এস এইচ খান বলেছেন: নষ্ট এ সমাজে কদাচিৎ রহমান সাহেবদের দেখা মেলে আর তারা দু একজন আছেন বলেইতো সত্য মিথ্যার পার্থক্য আজও বুঝতে পারি । আফসুস রহমান সাহেবরাই আজ নির্যতিত, নিগৃহিত আর অত্যাচারিত !!

স্যালুট, রহমান সাহেবকে।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৫২

এম এম ওবায়দুর রহমান বলেছেন: অফিসের বসরা সব সময় পাশে মোসাসাহেব দের দেখতে ভালবাসেন।
কর্মি মেীমাছিরা সব সময় অবহেলিত।

৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৪২

নিয়নের আলো বলেছেন: আমিও স্যালুট জানাই রহমান সাহেব কে।

৫| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৪৪

মেনন আহমেদ বলেছেন: Tar jonno buker vitorta kamon jeno betha korse. Vi unar number ta ki ase apnar kase? Thakle deben plz

৬| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৫০

ইলুসন বলেছেন: স্যালুট দিয়া ভাত খাওয়া যায় না। আফসোস হয় এ জন্য যে, আপনারা কেউ রহমান সাহেবদের জন্য এগিয়ে আসেন না, অথচ এই আপনারাই বাসে কোন ছিচকা চোর পেলে তাকে গনপিটুনি দিয়ে হত্যা করতে পারেন।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৫৬

এম এম ওবায়দুর রহমান বলেছেন: উচিৎ জবাব দিয়েছেন।

৭| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৫১

গেম_প্লানার বলেছেন: সত্যবাদিতা ধরে রাখাটা যে কত কঠিন তা আমিও ভালো ভাবে জানি। আবার এর পাওয়ার যে কত পাওয়ারফুল তাও জানি।(নিজের জীবনের আলোকে)আপনার মাথা নিচু করে লাভ নাই তাতে তার কিছু আসবে-যাবে না। উচিৎ ছিল কিছু একটা করা।

যাক, অন্তত নিজে সৎ থেকে জীবন-যাপন করুন ও তার জন্য চাকরি খুজেঁ দিন।

উনারা কিন্তু করুনার পাত্র নয় এটা সবার মনে রাখা উচিৎ উনারা হলেন আসল মানুষ(কিছু কমেন্টেকে উদ্দ্যেশ্য করে)

৮| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৫৩

গেম_প্লানার বলেছেন: সত্য বলার পরিনাম।-------------পারলে পোষ্টের নামটা পাল্টে দিন, পড়তে ভালো লাগেনি।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১০:৪৬

এম এম ওবায়দুর রহমান বলেছেন: আপনার কথা রাখলাম

৯| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১০:১৩

মোস্তাক খসরু বলেছেন: যা হয়েছে ভালই হয়েছে, এই অসৎ এর দেশ থেকে সৎ মানুষগুলিকে বেছে বেছে বেড় করে দেয়া উচিত। উনি হয়তো আর কিছুদিন ওখানে থাকলে এমনিতেই পচে যেতেন। আমরা কেউ ভাল নই। আপনি মন্দের ভাল মনে মনে মেনে নেননি বলেই তো আমরা ব্যাপারটা জানতে পারলাম। এই খানেই একটু আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। খেয়াল রাখবেন গড্ডালিকা প্রবাহে এ্‌ই আলোটুকু যেন হাড়িয়ে না যায়।

১০| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১:০২

মেনন আহমেদ বলেছেন: ভাই আগে একটা কমেন্ট করেছিলাম কিন্তু মোবাইলে ছিলাম তাই বাংলায় লিখতে পারিনি। আমি রহমান সাহেবের নাম্বার চেয়েছিলাম আপনি জবাব দেননি।ভাই নাম্বারটা থাকলে দেবেন প্লিজ। উনার জন্য যদি কিছু করতে পারি তো নিজেকে ধন্য মনে করবো।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৩:২৪

এম এম ওবায়দুর রহমান বলেছেন: সরী সেটা সম্ভব নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.