নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শেয়ালের গল্প তো সাবাই জানেন। এবার আসি আসল কথায়। মাংস ভাগ বাটোয়ারার সময়ে শেয়াল যেমন আগের জনের মৃত্যু থেকে শিক্ষা নিয়েছিল তেমনি এখন আমাদের শিক্ষক প্রজন্মও শিক্ষিত হয়েছে। ফলে বাঘ মামাকে সমস্ত কিছুই পাতে তুলে দিতে হবে। ঈশপের গল্প আসলেই অনেক রূপক অর্থ বহন করে। আমরা বুঝি আর না বুঝি। প্রত্যেকটি বাচ্চার শৈশবে তার এই বই পড়া উচিত। বুয়েটের ছাত্র রাজনীতি এখন গরম সংবাদ। সবাই লুফে নিয়েছে। যে যার মত করে হৈ হুল্লুর করছে। বিষয়টা হচ্ছে বুয়েটে যদি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয় এর প্রভাব সারা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়বে। ফলে বাংলাদেশে একটা হুলুস্থুল কান্ড রটে যাবে। এবং যদি ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে শুধু ছাত্রলীগেরটাই বন্ধ হবে। অন্যান্য দল যারা করে তাদের যেহেতু মাঠে-ঘাটে বিচরণ নাই তাই তারা আগাছার মত করে ছড়িয়ে পড়বে। এবং ধীরে ধীরে বিষ ফোঁড়ায় পরিণত হবে বর্তমান সরকারের জন্য। বাংলাদেশ ছাত্ররাজনীতি এতটাই জঘন্য অবস্থায় এসেছে যে এখন তারা যে দলই হোক মূল লক্ষ্য হলো ক্ষমতা। শিক্ষা তাদের কোন লক্ষ্যই না। ওই যে শেয়ালের মত শিক্ষাটুকো পাতে তুলে দিয়ে ক্ষমতার পুঁজো।
যেহেতু প্রত্যেকটি ছাত্ররাজনৈতিক দল তাদের কিছু কর্মীর রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে পথচলা অবিচল রেখেছে তাই এত সহজে এই রাজনীতি আপনি বরবাদ করতে পারবেন না। আমার জন্ম ৯৮ তে সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বোঝার বয়স হওয়া পর্যন্ত কিংবা জন্মেরও বহু আগে ছাত্ররাজনীতি তার জৌলুশ এবং ঐতিহ্য হারিয়েছে। বছর দুয়েক আগে কলেজে ঢুকেছি অনুষদের একটা কাজে শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করার জন্য। বের হবার সময় হাত ধরে টান দিয়ে ধরে ব্যানার ধরিয়ে দিয়ে বল্ল ছবিতে থাকতে হবে লোকজন নেই তাই। আপত্তি করাতে শুরুতেই বাবা-মা এর প্রসঙ্গে চলে গেল। পরে ছবে তুলে চলে আসি।
কলেজের যেকোন অনুষ্ঠানে তাদের মামু বাড়ি হিসেবে একটা আবদার থাকে। সে হোক সাধারণ কোন শিক্ষক সভা। যেই ছেলেটি গালিগালাজ করছিল তাকে যদি দুই পাতা বাংলা দেখে পড়তে বলা হয় আমার আত্মবিশ্বাস সে তোতলাবে। কিন্ত সে একজন বিরাট নেতা। কলেজে উচ্চমাধ্যমিক থাকায় এই উঠতি প্রজন্মকে তারা বেশ ভালভাবেই ব্যবহার করছে। ফলে তারা গ্রন্থগার থেকে শুরু করে একদম অধ্যক্ষ পর্যন্ত একটা বিভীষিকাময় পরিবেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। যখন কলেজে ভর্তি হয়েছি ৫০০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে লাইনে দাড়িয়ে যে কোন পরীক্ষার ফরমফিলাপ করতে হত। সবাই এক্ষেত্রে বাধ্য ছিল। এবং প্রতিটা পরীক্ষার সময় প্রায় অযুত পরিমান টাকা তারা এভাবে হস্তগত করত। আমাদের শিক্ষকমন্ডলী নির্বিকার দৃষ্টিতে চেয়ে থাকত। মাঝে মাঝে সাধারণ ছাত্রদের প্রতি বেশ কঠোরতা প্রদর্শন করতো।
এই হলো আমার কলেজ জীবনের ছাত্র রাজনীতি দেখা। এছাড়াও আরো আছে যেগুলো খুবই বিভীষিকাময়। মারামারি, রাহাজানি কি দেখিনি। কিছুদিন আগে সভাপতি আত্মহত্যা করলো। একটা মজার ব্যাপার হলো, কলেজের মাঠে একবার ঘাষ লাগানো হয়েছিল। করোনার বন্ধে সে ঘাষগুলো এতটাই মাথাচাড়া দিয়ে উঠল যে মাঠের সব সৌন্দর্যকে ছাপিয়ে সে সবুজাভ মায়াবী ভুবন তৈরি করল। কলেজ খোলার পরে নবীনের পদচারণায় সপ্তাহ খানেক টিকতে পেরেছিল। বিকেলে মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছি তো এক নেতা এক স্যারকে বলতেছে, “স্যার ঘাস আগেরটাই লাগাইয়েন, তাড়াতাড়ি উঠে যাবেনে, বাজেট দুইটা পাবেন, অভাবে আছি বুঝেনতো” এরপরে দাঁত কেলিয়ে কিছুক্ষণ নিজেকে পরম সুখে নিমজ্জিত করলো।
বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি হচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পঙ্গু করে দেয়ার একটা প্রজেক্ট। এর ফলে আপনি কিছু অন্ধ সমার্থক তৈরি করতে পারবেন যারা আপনাকে জীবন বাজি রেখে সমর্থন দিবে । প্রয়োজনে তারা নীতি নৈতিকতার বিধিবহির্ভূত কাজ করবে। ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতার পালাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে ছাত্ররাজনীতি বর্তমান বাংলাদেশে একটা শক্তিশালী দল হিসেবে কাজ করছে, যারা যেকোন দলের থেকে ক্ষমতাশালী এবং ক্ষমতালোভী। সাধারণ ছাত্ররা হলো তাদের উপার্জনের প্যাকেজ।
ছাত্ররাজনীতি এখন বিলুপ্ত করার সময় এসেছে এবং সেটা প্রথমে হওয়া উচিত পরিবার থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ কেউেই এই দ্বায়িত্ব নেবে না। তো মূল কথা হল, বাঘ এবং শেয়াল এরা মামু ভাগ্নে আর বাকি প্রতিবাদকারী ও নিরীহ প্রানী হলাম আমরা।
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৩
অধীতি বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই।
২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫২
শায়মা বলেছেন: ছাত্রনং অধ্যয়নং তপঃ এর বাইরে আর কিছু আসা উচিৎ নয়।
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৭
অধীতি বলেছেন: কিছু সংস্কৃতিক কার্যক্রম চলতে পারে তবে সেটাও এখন ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:০৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতা এবং বিশ্লেষণ ভালো লেগেছে।
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৭
অধীতি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
৪| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।
আমি আপনার সাথে একমত।
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৭
অধীতি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
৫| ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ২:০২
খায়রুল আহসান বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। পোস্ট থেকে কপি-পেস্ট করা যায় না, গেলে ভালো লাগা বেশ কয়েকটা চমৎকার কথা এখানে উল্লেখ করতাম।
দেশের শিক্ষায়তনের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ, শিক্ষার মান এবং শিক্ষা বিষয়ক নীতিমালা ও পরিকল্পনা এখন এক কথায় বিভীষিকাময়, এ সত্যটা বেশ ভালোভাবেই আপনার লেখায় ফুটে উঠেছে।
৬| ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৯
ঢাকার লোক বলেছেন: আমি আপনার সাথে একমত।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৮:৫২
মাহদী হাসান শিহাব বলেছেন: চমৎকার বলেছেন।