নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে একজন ভীষণ খারাপ মানুষ। তবে ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে দুর্দান্ত অভিনয় করতে পারি বলে কেউ কিছু বুঝতে পারে না। সে হিসাবে আমি একজন তুখোড় অভিনেতাও বটে!!!

অজ্ঞ বালক

ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নগুলো কুড়িয়ে এখানে নিয়ে এসে ছুঁড়ে ফেলা হয়!!!

অজ্ঞ বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাভারত - দ্বিতীয় অংশ: জনক-জননীরা (১)

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৭

"রাজা জন্মেজয়, আপনার বংশে সর্বদাই পিতার কর্মফলের মূল্য সন্তানদের পরিশোধ করতে হয়েছে।"


০৮ - রাজা মহাভীষ আর রাজা শান্তনু

জীবিতকালের অশেষ পুণ্যফলের কারণে রাজা মহাভীষ স্বর্গে প্রবেশের অনুমতি লাভ করেছিলেন। সেখানে তিনি দেবতাদের সঙ্গে একত্রে বসে দেব-সভায় অপ্সরাদের অপূর্ব সুন্দর নাচ দেখতেন, অপ্সরাদের সাথে একই তালে গান গাইত আর বাজনা বাজাতো গন্ধর্বরা। সেখানে যত ইচ্ছা তত সুরা পান করা যায়, এ এমন এক পানীয় যা খেলে সকল ক্লান্তি-অবসাদ দূর হয়ে মন আনন্দ আর ভালোলাগার আবেশে ভরে থাকে। এছাড়াও চাইলেই তিনি স্বর্গের গাছ কল্পতরু, গাভী কামধেনু কিংবা চিন্তামণি নামক অপূর্ব রত্ন ব্যবহার করতে পারতেন। তাদের মধ্যে যেকোনো একটি পেলেই সাধারণ মানুষ আর কিছু চাইতো না। কারণ এই তিনটি বস্তুই মানুষের সকল ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করতে পারে।

একদিন দেবরাজ ইন্দ্রের সভায় অপ্সরা গঙ্গা নিজের নৃত্যকলা প্রদর্শনের জন্য এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। গঙ্গা নিজের নাচ দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করে চলছিলেন, হঠাৎ কোথা থেকে দমকা হাওয়া ভেসে আসলো। আর সেই বাতাসের হামলায় গঙ্গার শাড়ির আচল কাঁধ থেকে খসে পড়লো, ফলে তার বক্ষঃস্থল উন্মুক্ত হয়ে গেলো। দেবতার সবাই গঙ্গার প্রতি সম্মান দেখিয়ে নিজদের দৃষ্টি মেঝের দিকে নামিয়ে ফেললেন। কিন্তু, মহাভীষ গঙ্গার এই সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন। দেব-সভায় উপস্থিত থেকে একজন মানুষের এহেন কামনার প্রদর্শন করাটা দেবরাজ ইন্দ্রের পছন্দ হলো না। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে মহাভীষকে অভিশাপ দিলেন যে তাকে আবারো পৃথিবীতে মানুষ হিসেবে জন্ম নিতে হবে।

গঙ্গা কিন্তু মহাভীষের এই প্রেমময় দৃষ্টি উপভোগ করছিলেন। সেটাও ইন্দ্র লক্ষ্য করেছিলেন। তাই, তিনি গঙ্গাকে নির্দেশ দিলেন যে তাকেও অমরাবতী ত্যাগ করে পৃথিবীতে যেতে হবে, এবং সেখানে রাজা মহাভীষের হৃদয়-ভঙ্গ করলেই কেবলমাত্র তিনি আবারো স্বর্গে ফিরে আসার অনুমতি লাভ করবেন।

রাজা মহাভীষ ইন্দ্রের দেয়া অভিশাপের ফলে চন্দ্রবংশের রাজা পুরুর বংশধর, রাজা প্রতীপের ছেলে শান্তনু হিসেবে জন্মগ্রহণ করলেন।

রাজা প্রতীপের বড় ছেলের নাম ছিল দেবাপি। কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার চর্মরোগ ছিল। আর যেহেতু শাস্ত্রে আছে কোন রকম শারীরিক ত্রুটি থাকলে সেই ব্যক্তি কখনো রাজা হতে পারবে না, কাজেই শান্তনু উপযুক্ত হওয়া মাত্র, রাজা প্রতীপ রাজ্যচালনার ভার তার হাতে বুঝিয়ে দিয়ে, জাগতিক সকল বিষয় থেকে নিজেকে বিমুক্ত করে ফেললেন। অন্যদিকে দেবাপি শান্তনুর অধীনে থাকতে অনিচ্ছুক ছিলেন, তাই তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করে রাজ্য ছেঁড়ে চলে গেলেন।

রাজা প্রতীপ নদীতীরে বসে ধ্যানমগ্ন ছিলেন এমন সময় গঙ্গা এসে তার ডান উরুতে বসলেন। "কন্যা, তুমি আমার ডান উরুতে অধিষ্ঠান করলে। বাম উরুতে বসলে আমি শাস্ত্রমতে বুঝে নিতাম যে তুমি আমার পত্নী হতে চাইছ। কিন্তু, ডান উরুতে বসে তুমি আমাকে বলতে চাইছ যে তুমি আমাকে তোমার পিতা হিসেবে পাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছ। বলো কন্যা, তোমার এই বৃদ্ধ পিতার নিকট কি তোমার চাওয়া?"

"আমি আপনার ছেলে শান্তনুকে আমার স্বামী হিসেবে পেতে চাই, পিতা।"

"তাই হবে।"

কয়েকদিন পর শান্তনু পিতার আশীর্বাদ নিতে সেই নদীতীরে আসলে প্রতীপ তাকে বললেন, "কিছুদিনের মধ্যেই গঙ্গা নামের এক অনিন্দ্য সুন্দরী কন্যা তোমার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসবে। তুমি তাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করবে। এটাকে তোমার পিতার আদেশ বলে মনে করো।"

এর কিছুক্ষণ পরেই শান্তনু নদীতে শুশুকের সাথে এক অপরূপা নারীকে জলকেলি করতে দেখতে পেলেন। শান্তনু তার রূপে মুগ্ধ হয়ে প্রথম দেখাতেই প্রেমে পরে গেলেন। তিনি ঐ নারীকে উদ্দেশ্য করে বললেন, "প্রিয়, তুমি কি আমার স্ত্রী হবে?"

শান্তনু তখনও জানতেন না যে এই মেয়েটিই গঙ্গা। গঙ্গা সম্মতি জানিয়ে বললেন, "রাজা, আমিই গঙ্গা। আপনার পিতার নিকট আমিই আপনাকে স্বামী হওয়ার ইচ্ছা জানিয়েছিলাম। কাজেই, আমি অবশ্যই আপনার স্ত্রী হবো। তবে আমার একটি শর্ত আছে। আপনাকে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে আমার কোন আচরণ নিয়ে আপনি কখনোই কোন প্রশ্ন তুলতে পারবেন না। যেদিন আপনি আমার কোন কাজ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করবেন, সেইদিনই আমাদের বিচ্ছেদ হবে।" পিতাকে করা প্রতিজ্ঞা বশত আর গঙ্গার স্বর্গীয় রূপে তাকে নিজের করে পেতে চাওয়ার ইচ্ছার কারণে, শান্তনু গঙ্গার এই অদ্ভুত শর্তে রাজি হয়ে গেলেন। কাজেই, গঙ্গা শান্তনুকে বিয়ে করে হস্তিনাপুরের রাজপ্রাসাদে রানি হয়ে প্রবেশ করলেন।

বছর খানেক পর, গঙ্গা আর শান্তনুর প্রথম পুত্র সন্তানের জন্ম হলো। কিন্তু, শান্তনু সেটা নিয়ে আনন্দিত হওয়ার কোন সুযোগই পেলেন না। সন্তান জন্ম নেয়া মাত্র গঙ্গা সেই শিশুপুত্রকে পাশের নদীর জলে ডুবিয়ে হত্যা করলেন। গঙ্গার এই নৃশংস কাজ দেখেও, শান্তনুকে চুপ করে সহ্য করতে হল। গঙ্গাকে দেয়া প্রতিজ্ঞার কথা তিনি ভুলে যান নি। আর প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে তিনি গঙ্গাকে হারাতে চান না।

এভাবে দ্বিতীয় পুত্রের জন্ম হলে পরে, গঙ্গা তাকেও একই ভাবে হত্যা করলেন। এবারও শান্তনু বুকে পাথর বেঁধে সহ্য করলেন। একের পর এক শান্তনুর সদ্য জন্ম নেয়া অবুঝ পুত্র সন্তানদের গঙ্গা পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করলেন। শান্তনু পাথরের মূর্তির মতন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলেন কিন্তু একটিবারও গঙ্গাকে কিছু বললেন না।

কিন্তু, অষ্টম ছেলেটিকেও যখন গঙ্গা কোলে করে নদীর দিকে নিয়ে যাচ্ছেন হত্যা করার জন্য, তখন শান্তনুর পক্ষে আর চুপ করে থাকা সম্ভব হলো না। রাজা মিনতি করে বললেন, "তুমি ওদের মা, এটা না জানা থাকলে আমি বিশ্বাসই করতাম না। কোন মা কি এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে? অন্তত, এই ছেলেটাকে তুমি বাঁচিয়ে রাখো। এবারের মতন দয়া করো বাচ্চাটার উপর, আমার উপর।"

গঙ্গার হাঁটা থেমে গেলো। রাজা শান্তনুর দিকে ফিরে তিনি বিষণ্ণ হাসি দিয়ে বললেন, "রাজন, আপনি অবশেষে প্রতিজ্ঞা ভেঙ্গেই ফেললেন। কাজেই সময় হয়েছে, উর্বশী যেভাবে পুরুরবাকে ছেঁড়ে গিয়েছিল, সেভাবে আমিও আপনাকে ছেঁড়ে যাওয়ার। আপনার যেসকল পুত্র সন্তানকে আমি হত্যা করেছি, তারা আসলে সেই আট দেবতা ছিলেন যাদের বসু বলে ডাকা হতো। মহর্ষি বশিষ্ঠর গাভী চুরি করার অপরাধে ঋষিবর তাদের অভিশাপ দেন মানুষ হিসেব এই পৃথিবীতে জন্ম নেয়ার। তাদের অনুরোধে আমি পৃথিবীতে তাদের মা হতে রাজী হই। তারা আমাকে আগেই বলেছিলেন এই দুঃখ-কষ্টে ভরা পৃথিবীতে তাদের অবস্থানকাল যত কম হয় ততই ভালো। আর আমিও তাদের কথা অনুযায়ী জন্মের সাথে সাথেই তাদের হত্যা করতাম। কিন্তু, এই অষ্টম বসুকে আমি আর হত্যা করতে পারলাম না। আপনি আমাকে বাধা দিলেন স্বামী। ও বেঁচে থাকবে, আপনার পুত্র হয়ে। কি অসাধারণ একটা জীবনই না কাটাবে সে, দেবতা আর মানুষেরা তাকে এক নামে চিনবে, দিগ্বিজয়ী বীর, পিতা অন্তঃ প্রাণ পুত্র। কিন্তু, সেই একই জীবনের কি করুণ আখ্যান থাকবে অন্য পাতায় লেখা যা কেউ দেখবে না। পুরুষ হয়েও এই জীবনে কোন নারীর সংসর্গে আসতে পারবে না সে, বিয়ে করবে না কখনো, বসবে না আপনার উত্তরাধিকারী হিসেবে এই রাজ্যের সিংহাসনে। কোনও পরিবার থাকবে না তার, আচরণে একজন ঋষি হয়েও পরিবারের এক অদ্ভুত বন্ধনে আজীবন বন্দী হয়ে থাকবে সে। আর সেই জীবনের সমাপ্তিও কি বিষাদময়, এমন এক পুরুষের হাতে যে একই সাথে নারী-ও।"

"কখনোই এমনটা ঘটবে না। আমি তা হতে দেব না আমার পুত্রের সাথে।" শান্তনু দৃঢ় গলায় বললেন।

"ভাগ্যের লেখা পাল্টানোর ক্ষমতা দেবতাদেরও নেই রাজা। আপনি তো সাধারণ মানুষ বৈ আর কিছু নন। আমি এখন আমার পুত্রকে সাথে করে নিয়ে যাচ্ছি। ত্রিভুবনের শ্রেষ্ঠতম বীর, যিনি একই সাথে যোদ্ধা ও ঋষি, ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় সেই পরশুরাম এই ছেলেকে অস্ত্রবিদ্যা শেখাবেন। সময়ে সে আপনার কাছে ফিরে আসবে স্বামী, আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। এখন তবে আমাকে বিদায় দিন।" এই বলে গঙ্গা, কোলের সন্তানটিকে সাথে করে দেবলোকে ফিরে গেলেন।

এভাবেই রাজা শান্তনুও রাজা পুরুরবার মতন নিজের স্ত্রী, অপ্সরা গঙ্গার সাথে বিচ্ছেদ বিরহে পুড়তে থাকলেন। তার মাথায় ঘুরতে থাকলো গঙ্গার বলা কথাগুলো। আসলেই কি তবে তার পুত্রের জীবন বাঁচিয়ে তিনি এক সুকঠিন জীবন উপহার দিলেন তাকে? ভুল করলেন কি নিজের প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে?

০৯ - ভীষণ প্রতিজ্ঞা

রাজা শান্তনুর ছেলে দেবব্রত বড়ো হয়ে উঠেছিল। দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি যুদ্ধবিদ্যায় তার তুলনা পাওয়া ভার। গঙ্গা তাকে রাজা শান্তনুর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। হস্তিনাপুরের অধিবাসীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল, কবে রাজকুমার দেবব্রত সিংহাসনে বসে তার যোগ্য হাতে রাজ্যশাসন করবেন।

ঐদিকে দেবব্রতর পিতা, রাজা শান্তনু আবারো প্রেমে পড়েছিলেন। সত্যবতী নামের এক রমণী, যার কাজ ছিল গঙ্গা নদীতে খেয়া পারাপার করা, রাজা শান্তনু তারই প্রেমে পড়লেন। তিনি সত্যবতীকে নিজের রানী করতে চাইলেন। কিন্তু, সত্যবতীও গঙ্গার মতন রাজা শান্তনুকে একটি শর্ত দিয়ে বসলেন। তিনি শান্তনুকে বিয়ে করতে রাজী আছেন, তবে রাজাকে কথা দিতে হবে যে সত্যবতীর গর্ভে জন্ম নেয়া সন্তানই হবে রাজা শান্তনুর সিংহাসনের উত্তরাধিকারী। তারাই বসবে হস্তিনাপুরের রাজাসনে। কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব? ততদিনে যে দেবব্রতকে যুবরাজ পদে অভিষিক্ত করা শেষ!

দেবব্রত একসময় রাজা শান্তনুর ইচ্ছা ও তা পূরণের পথে এই শর্তের বাঁধার ব্যাপারে জানতে পারলেন। তিনি সোজা সত্যবতীর কাছে গিয়ে বললেন, "মা, আমি শুনেছি আপনি চান আপনার সন্তানেরাই হস্তিনাপুরের সিংহাসনে অধিষ্ঠান করুক। আমার তাতে কোন আপত্তি নেই। আমার পিতার সুখের জন্য, আমি এই মুহূর্তে সিংহাসনের উপর থেকে আমার সকল দাবী সরিয়ে নিচ্ছি। আপনি নিশ্চিন্ত মনে রাজা শান্তনুকে বিয়ে করুন।"

পিতার জন্য দেবব্রত এত বড়ো ত্যাগ স্বীকার করছেন দেখে সকলেই অবাক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, সত্যবতীর পিতা, জেলেদের রাজা এই কথায় সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। তিনি বললেন, "বড় হয়ে পরবর্তীতে আপনার সন্তানেরা আমার মেয়ের সন্তানদের সাথে সিংহাসনের দাবী নিয়ে যুদ্ধ শুরু করবে, তখন কি হবে রাজপুত্র? এই কথা বুঝতে পেরেও আমি কি করে আমার মেয়েকে রাজা শান্তনুর সাথে বিয়ে দেই, বলুন?"

দেবব্রতও সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। কিন্তু তিনি এবারও কোনরকম দ্বিধা ব্যতিরেকেই বললেন, "ঠিক আছে। আমি তবে প্রতিজ্ঞা করছি যে আমি কখনো বিয়ে করবো না। প্রতিজ্ঞা করছি যে বিয়ে ছাড়াও আমি কখনোই কোন নারীর সাথে রমণে লিপ্ত হবো না। প্রতিজ্ঞা করছি কখনো কোন সন্তান জন্ম নেবে না আমার বীর্য থেকে।"

দেবব্রতর এই ভীষণ প্রতিজ্ঞা শুনে ত্রিভুবনের সকলেই বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেলো। তার এই প্রতিজ্ঞার দৃঢ়তা দেখে মুগ্ধ হয়ে দেবতারা স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নেমে এসে দেবব্রতকে শুভেচ্ছা জানালেন। সেই সাথে তাকে নাম দিলেন, ভীষ্ম - সেই ব্যক্তি যে ভীষণ প্রতিজ্ঞা করছে। যেহেতু ভীষ্মের কোন সন্তানাদি হবে না, কাজেই কখনো ভীষ্ম পুনর্জন্ম নিয়ে এই পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারবেন না। চিরকালের জন্য তিনি মৃত্যুলোকে, আত্মার নদী বৈতরণীর ঐপারে বাস করতে বাধ্য হবেন। এই কঠিন প্রতিজ্ঞার জন্য দেবতারা ভীষ্মকে একটি বর দিলেন। ভীষ্ম যতদিন, যতক্ষণ পর্যন্ত না চাইবেন, ততদিন, ততক্ষণ পর্যন্ত তার মৃত্যু হবে না। ইচ্ছামৃত্যু ব্যতিরেকে ভীষ্ম অমর।

ভীষ্মের এই প্রতিজ্ঞার পর, সত্যবতী আর শান্তনুর বিয়ে হতে কোন বাঁধা রইলো না। আর আবারও, চন্দ্রবংশের যুবরাজ দেবব্রত নিজ পিতা রাজা শান্তনুর ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে ভীষণ এক প্রতিজ্ঞা করলেন। পুরুর মতন এই বংশের আরেক যুবরাজ নিজের পিতার জন্য ইহ-লৌকিক সকল শান্তি, সুখ, ইচ্ছাকে জলাঞ্জলি দিল।

(এখন পর্যন্ত চলছে...)

আগের সকল পর্বের লিংক এইখানেঃ

মহাভারত - পূর্বকথাঃ সর্পযজ্ঞ

মহাভারত - প্রথম অংশ: পূর্বপুরুষগণ (১)

মহাভারত - প্রথম অংশ: পূর্বপুরুষগণ (২)

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০১

রাজীব নুর বলেছেন: আমি মহাভারত এখান থেকে দেখি।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২২

অজ্ঞ বালক বলেছেন: দেখার সময় যখন পাইছেন কষ্ট কইরা পড়ার সময়টাও বাইর কইরা নেন। জিনিস খারাপ না।

২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আরেকটু ছোট লিখলে মহাভারত পড়তে মজা পেতাম।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৩

অজ্ঞ বালক বলেছেন: একটা অংশরে দুই ভাগ কইরা দিতাছি। এর চাইতে ছোট দিলে আমার মনে হয় সেইটারে আর ব্লগ কওয়া যায় না।

৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:০০

বোকা পুরুষ বলেছেন: ভালোই লাগছে, চলুক........

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৩

অজ্ঞ বালক বলেছেন: যাক, একটু উৎসাহ পাইলাম। এখন তো সেইডা দেয়ার লোকও ব্লগে পাওন যায় না।

৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৫৩

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
পড়তে ভালই লাগলো কাহিনী।

হরিসংকর জলদাস এ নিয়ে একটা ধারাবাহিক উপন্যাস লিখছেন।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৬

অজ্ঞ বালক বলেছেন: আমি তো আর জলদাস না। উনার দৃষ্টিভঙ্গিও আলাদা। পড়ছি আমি। কয়েকটা গল্প আর ভাইঙ্গা ভাইঙ্গা কয়েকটা চরিত্র নিয়া উপন্যাস আছে উনার। মহাভারত রিলেটেড বই খুব কমই আমার অপঠিত আছে। যাই হোক, আমি আমার মতন একটা বই লিখতাসি। দুই লাখের মতন শব্দের বই। এর পর আবার রামায়ণ আর ভগবত আছে। তিন বইয়ের সিরিজ। লম্বা প্রজেক্ট।

৫| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:২০

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: প্রজেক্ট সফল হোক। শুভকামনা।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৩৯

অজ্ঞ বালক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। এই প্রজেক্টে জ্ঞান-গম্যির চাইতে ধৈর্যর একটা বড় ভূমিকা আছে। আল্লাহ চাইলে শেষ করবোই এইবার।

৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:০৬

নীল আকাশ বলেছেন: দেরি করে ফেলেছি পড়তে। পরের পর্ব পড়তে যাই। ভীষ্মের কাহিনী আর বড় জানতাম?

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৪৩

অজ্ঞ বালক বলেছেন: চাইলে একেকটা কাহিনী আরো বিশাল বিশাল কইরা লেখা যায়। আমি সংক্ষেপে টু দ্য পয়েন্ট লেখার ট্রাই করতাসি। অনেক কথা কাহিনীর বাইরে আলাদা করে ব্যতিক্রম, বা অন্য চোখে, বা তথ্যসূত্র আকারে দেয়া থাকবে। ইট উইল বি এ জায়ান্ট বুক। ৫০০ পাতারও বেশি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.