নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে একজন ভীষণ খারাপ মানুষ। তবে ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে দুর্দান্ত অভিনয় করতে পারি বলে কেউ কিছু বুঝতে পারে না। সে হিসাবে আমি একজন তুখোড় অভিনেতাও বটে!!!

অজ্ঞ বালক

ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নগুলো কুড়িয়ে এখানে নিয়ে এসে ছুঁড়ে ফেলা হয়!!!

অজ্ঞ বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছবি ব্লগঃ ফ্ল্যাপ-পছন্দ বইয়ের তালিকা ০২

০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:১৫

আজকেই আবার দ্বিতীয় কিস্তি লিখতে বসে গেলাম। আসলে নেই কাজ, তো খই ভাজ। মহাভারতের মতন একটা জাঁদরেল কাজে হাত দিসি কিন্তু এই মাঝপথে আইসা খানিকটা বিরক্তি ঘিরা ধরসে। দিন শেষে এইটা তো মৌলিক কিছু না। মৌলিক, একেবারে নিজের চিন্তা-প্রসূত কিছু লেখা দরকার। যাউজ্ঞা, আসল কথা হইলো, কয়েকদিন আগে একবারেই সব ছবিগুলা তুলছিলাম। প্রায় ২০+ বইয়ের। এর মইধ্যে বেশিরভাগই কলকাতার বই। তার মানে এই না যে দেশি বই পড়ি না। আসলে, একুশে বইমেলার কারনে কলকাতা বইমেলার বইগুলা দেখা হয় নাই। এগুলা সেই মেলারই বই অধিকাংশ। তাই এগুলাই আগে দেখসি, আর লিস্ট করছি। তা দেখা যাক এবারের পাঁচটা বই কি কি।

০৬। বেহুলা বাংলা ও অন্যান্য কবিতা, তানভীর মোকাম্মেল

চিত্রা নদীর পারে, নদীর নাম মধুমতী, লালসালু, লালন। ব্যস, এই নামগুলাই যথেষ্ট তানভীর মোকাম্মেলরে চিনানোর জইন্য। তারপরও কেউ না চিনলে, কিস্যু করার নাই। লেখকের আগে আমি দুই কি তিনটা বই পড়ছি। একটার কথা মনে আছে যেইটাতে লেখক দশ-বারোজন ডিরেক্টরের কাজ নিয়া লেখসিলেন। বেশ দারুন বই ছিলো। বাকি বইগুলাও চলচ্চিত্র-কেন্দ্রিকই ছিলো। সেখানে এই কবিতার বইটা আমার চোখে পড়লো কেন?





কারনটা, ফ্ল্যাপেই লেখা। বেহুলার লোককাহিনীরে কেন্দ্র কইরা নাকি কবিতাগুলা লেখা। এক-দুইটা পইড়া দেখলাম। খারাপ না, বরং বেশ ভালো ও এক্সপেরিমেন্টাল কাজ। সেই সাথে দেশভাগ আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়াও নাকি কবিতা আছে। আমার আবার একটা নিজস্ব ধারণা আছে। সেইটা হইলো, আপনে যদি সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কোন একটা ধারায় তুখোড় পারদর্শী হইয়া থাকেন তাইলে অন্য ধারাতেও আপনার দখল অসাধারণ না হইলেও, এবোভ এভারেজ হইবো। সেই হিসাবে, পর্দায় কবিতা লেখা এই লোকের বইয়ের পাতায় লেখা কবিতাগুলাও পইড়া দেখা দরকার।

০৭। মহাভারতের প্রেমকথা, চৈতালি দত্ত

মহাভারত নিয়া যেহেতু লিখতাসি, কাজেই মহাভারত নিয়া পড়াশোনাও তো করা উচিত। তা আমি করসি। শুধু যে করসি, তা না। সেই পড়াশোনা নিয়া দেশের অন্যতম সেরা মহাভারত বিশেষজ্ঞর সাথে কথা বইলা আগে বুইঝা নিসি যে আমার দৌড় কদ্দুর। তিনি এপ্রুভ করার পরই লেখা ধরছিলাম। তারপরও, এইটা আমার খুবই পছন্দের বিষয়। আর সেই বিষয়ে নতুন কিংবা পুরাতন আগে-না-দেখা বই হাতের কাছে আসলে সেইটা লিস্টে তুলতে আমি বাধ্য।





যাইহোক, ফ্ল্যাপে লেখা কথার সাথে আমি কিছুটা ভিন্নমত রাখি। এর মধ্যে একটা হইলো মহাভারতে কোনো উপকাহিনী নাই। সব কাহিনীই একটা আরেকটার সাথে মাকড়সার জালের মতন যুক্ত। কাজেই এইটা মানা যায় না। আর দুই, মহাভারতে প্রেম আসলে ফাঁপা একটা জিনিস। প্রেমের শ্বাশত রূপ বরং রামায়নে দেখা যায়, মহাভারতে না। তাও, পড়ে দেখা দরকার লেখিকা নতুন কি লিখসেন নিজের ধ্যান-ধারনা থেইকা।

০৮। পরিখানাঃ একটি আত্মজৈবনিক প্রেমবৃত্তান্ত, ওয়াজিদ আলি শাহ (অনুঃ পুষ্পিত মুখোপাধ্যায়)

নিজেরে নিয়া নিজেই বই লিখে নিজের বহুগামিতারে কিভাবে জাস্টিফাই করতে চান লাখনৌ-এর নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ? শুধু এইটা দেখার জন্য বইটা পড়মু। পারস্পেকটিভ - একটা বড় শব্দ। কিন্তু, এইটার আসল মানে আরো গভীর। ঐদিন কই জানি পড়সিলাম, তুমি আত্মরক্ষার্থে হাতে ছুরি তুইলা নেয়ার মানে তোমার সামনের জনের হাতে ছুরি তুলে নেয়ার অজুহাত সৃষ্টি করা। কারণ, সেও তখন আত্মরক্ষা করতে চাইবো। একজনের কাছে যেইটা জীবন বাঁচানোর হাতিয়ার, আরেকজনের কাছে সেইটা মরণঘাতি ভয়ানক অস্ত্র।





সবাই জানে ওয়াজিদ শাহ কি ধরনের লম্পট ব্যক্তি ছিলেন। নিজের ঘরে একাধিক পত্নী, ঘরের বাইরে একাধিক প্রেমিকা। সবার সাথেই তার মহব্বত-ভরা সম্পর্ক। তাকে নিয়ে নাকি তার নিজেদের প্রেমিকা-পত্নীদের মধ্যেই কাড়াকাড়ি। একজন গনোরিয়া রোগীর এতোটাও তাকদ থাকার কথা না। তার উপর এখানে ফ্ল্যাপে আবার লেখা তাদের অনেকে নাকি তার প্রতি বিশ্বস্ত থাকে নাই!!! হোয়াদ্দাফুচকা। যাই হোক, বই না পড়ে আর বিস্মিত হওয়াটা উচিত হবে না। বাকিটা বই পড়ার সময়ের জন্য রেখে দিলাম।

০৯। তোমাকে আমি ছুঁতে পারিনি, সম্মাত্রানন্দ

সম্মাত্রানন্দ, আই লাবিউ। উহুম, আসলে আই লাভ ইওর রাইটিং স্টাইল। 'নাস্তিক পণ্ডিতের ভিটা'-র ঘোর থেইকা তো এখনও বাইর হইতে পারি নাই। আবার আরেকটা বোম্বশেল। গৌতম বুদ্ধরে নিয়া সম্মাত্রানন্দ লিখসেন এই বই। আমার খুবই প্রিয় ব্যক্তিত্ত্ব হইলেন গৌতম বুদ্ধ। তারে নিয়া পড়া প্রথম বই ছিলো হারমান হেসের 'সিদ্ধার্থ' যেটা পড়ার মাঝামাঝি গিয়া বুঝতে পারছিলাম যে বুদ্ধ আর সিদ্ধার্থকে এইখানে ভিন্ন আঙ্গিকে, ভিন্ন চরিত্র হিসাবে দেখাইসেন লেখক। এবং হোয়াট এ বুক দ্যাট ওয়াজ। মার্ভেলাস।





এখানেও লেখক ভিন্ন একটা ইস্যু নিয়া আসছেন। মার আর বুদ্ধ। বৌদ্ধ ধর্মে কিন্তু মার-এর অর্থ ভিন্ন। মার মানে খুব সহজ কইরা বলতে গেলে শয়তান। আপনে মহানির্বাণ লাভ করার পথে যা আপনারে বাধা দেয়, তাই মার। সেই মার আবার হরেক রকম হয়। অনেক আগে পড়সিলাম, ভুল হইলে ক্ষমা চাই। তবে মারগুলা অনেকটা এই রকম যে কিছু নিজের আচরণের ফলে সৃষ্টি, কিছুর সৃষ্টি দুঃখ কষ্ট থেকে, কিছু মার আছে আগের জন্মের সাথে সম্পর্কিত। এমনকি মার নিজেও দেবতা। কিন্তু সে চায় না মানুষ নির্বাণ লাভ কইরা দেবতাদের-সমতুল্য হোক। তো, এই মারের সাথে বুদ্ধের কথাবার্তা নিয়া, অন্য দৃষ্টিভঙ্গিতে লেখা বই। পড়ার আগেই বলতে পারি বইটা দারুণ কিছু হবে।

১০। মালগুড়ি ডেজ, আর কে নারায়ন (ভাষান্তরঃ ঈশানী রায়চৌধুরী)

যখন প্রথম প্রথম ইংরেজি ভাষার বই পড়া শুরু করমু ভাবসিলাম, তখন একটা লিস্ট কইরা পড়া শুরু করসিলাম। তার মধ্যে একটা বই ছিলো "স্বামী এন্ড হিজ ফ্রেন্ডস"। আর কে নারায়নের লেখা এক পিচ্চি ছেলে আর তার ইশকুলের দোস্তদের কাহিনী। পইড়া তো আমার মাথা নষ্ট হওয়ার দশা। ততদিনে আমি "পাগলা দাশু" ছাড়া এই ধরনের আর কোনো বইয়ের খোঁজ জানি না। আর দাশু তো, দাশুই। সেইখানে এই গল্পগুলা আমার মনটাই দখল কইরা নিসিলো। কাজেই লিস্টের বাইরে বের হইয়া আর কে নারায়নের "মালগুড়ি ডেজ" বইটাও পইড়া শেষ করছিলাম। মাস্টারপিস - এক কথায়।






দক্ষিণ ভারতের এক ফিকশনাল শহর মালগুড়ি। সেই মালগুড়ি শহরের বাসিন্দা সব অদ্ভুত চরিত্র, কিংবা সাধারন চরিত্রদেরই অদ্ভুত সুন্দর সব কাহিনী লেইখা গেছেন নারায়ন তার এই ছোটগল্পর সংকলনে। এখনও আমি জানি না, ভারতে ইংরেজিতে সাহিত্যচর্চা করা কেউ আছেন কিনা যিনি আর কে-র চাইতে ভালো লেখেন। সো, বইটা আমার আগেই পড়া। সেইটার অনুবাদ হইতে দেইখা খুবই ভাল্লাগসে। এবং সংগ্রহে রাখতে চাই। আগে অবশ্য পইড়া বুঝতে হবে অনুবাদ কতটা প্রাঞ্জল হইসে। কলকাতার অনুবাদ অবশ্য আমাদের দেশী অনুবাদের চাইতে অনেক জটিল, কষ্টকর লাগে পড়তে; অন্তত আমার কাছে। তাও, প্রিয় বই বইলা কথা।

(চলবে)

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:৩৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনিন্দ্য সুন্দর , ভালো লাগলো।

০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:৩৯

অজ্ঞ বালক বলেছেন: ধইন্যবাদ ভাই। আপনে ব্লগগুলা পড়তাসেন দেইখা ভালো লাগতেসে। ধইন্যবাদ আবারও।

২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:৩৪

ঘুটুরি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। বই সম্পর্কে লেখা অনেকটাই অমূল্য রত্নের সন্ধান দেয়ার মত। প্রিয় তে নিয়ে নিলাম। মহাভারত পড়বার জন্য মন আকুপাকু করে। জলদি লেখা দিন

০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:৪১

অজ্ঞ বালক বলেছেন: অনেক অনেক ধইন্যবাদ। আমার মতন যা-তা লেখকের লেখাও যদি প্রিয়তে নেন, তবে লজ্জাই পাই। মহাভারত আপাতত অফ আছে। আসলে লেখেছি অনেকদূর। কিন্তু, একেবারে শেষ না করে আর পোস্ট দিবো না। মনোযোগ নইড়া যায়। একটু ধৈর্য ধরেন। আর বই বাইর হইলে আপনের জন্য এককপি রাইখা দিমু নে। B-)

৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো।

৪| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৩০

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: একেবারে মৌলিক লেখার পাশাপাশি এই সব লেখারও দরকার আছে তো।

৫| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৩৬

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: গুড।

৬| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ রাত ৮:৫২

শের শায়রী বলেছেন: বই নিয়ে এত ছোট ছোট করে রিভিঊ টাইপ প্রানবন্ত লেখা আপনার মত কেউ লিখতে পারে কিনা জানি না। আমি তো লিখতে বসলে ছোট করে কিছু বর্ননাই দিতে পারি না। যা লিখি তাই বড় হয়ে যায় :(

৭| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:১৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: ১ নম্বর বইটি সম্পর্কে নীচের দিকের আপনার নিজস্ব কথাগুলো চমৎকার লিখেছেন। +
অজ্ঞ বালকের বিজ্ঞ কথাবার্তা খুব ভাল লাগছে। আর শের শায়রী আমার মনের কথাটিই বলে গেছেন।
বুঝতে পারছি, আপনি একজন মহাপড়ুয়া মানুষ।
পোস্টে প্লাস +

৮| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: উপরের মন্তব্যে ১ নম্বর বইটি বলতে ৬ নম্বর বুঝিয়েছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.