নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে একজন ভীষণ খারাপ মানুষ। তবে ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে দুর্দান্ত অভিনয় করতে পারি বলে কেউ কিছু বুঝতে পারে না। সে হিসাবে আমি একজন তুখোড় অভিনেতাও বটে!!!

অজ্ঞ বালক

ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নগুলো কুড়িয়ে এখানে নিয়ে এসে ছুঁড়ে ফেলা হয়!!!

অজ্ঞ বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সে এক বিশাল ইতিহাসঃ ভুতের সাথে মোলাকাত- ০১

২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৩২



সবাই যেইভাবে ভূতের গল্প শেয়ার করা শুরু করছে, আমি ভাবলাম তাইলে একটা চেষ্টা কইরা দেখাই যায়। সমিস্যা হইলো, আমার অভিজ্ঞতাগুলা খুব বেশি পার্সোনাল। এগুলা লিখতে গেলেই নাম চইলা আসবো, জায়গার বা প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তির। আমি আবার এই জিনিসগুলা আড়ালে রাখতেই পছন্দ করি। তাও ভাবলাম, আজকে একটা দিয়াই দেখা যাক।

আমি তখন সদ্য ভার্সিটিতে ভর্তি হইছি। সারাজীবন শহরে থাকা আমার জন্য মফস্বলে, তাও আবার একদম গ্রামের দিকের একটা সদ্য প্রতিষ্ঠিত ভার্সিটিতে গিয়া মানাইয়া নেয়া বেশ কঠিন ছিল। তবে, তখন কচি বয়স, ডোন্ট কেয়ার ভাবে ঘুইরা বেড়াই। দুই-তিন মাসের মধ্যে সব ভুইলা হোস্টেল লাইফে জইমা গেলাম। সারাদিন পড়ি - আরে, গল্পের বই আর কি! রাতে তাস, মুভি, গেম। দিনে বাধ্য হইয়া ক্লাস, আড্ডা আর হোস্টেলের খাবার যা হোস্টেলে থাকা সবাইর কাছে কিংবদন্তির চাইতে কম কিছু না। তা, শীতকাল আইসা পড়লো। সেই সময়, আমাদের হোস্টেলের ডাইনিং-এ শুরু হইলো সমিস্যা। যেই মামা রান্না করতো, দেখা গেলো সে একদিন উধাও, ফোন বন্ধ, তার কোনো খবরই নাই। আরেকজন মামা আসার আগ পর্যন্ত আমরা তখন অকুল পাথারে, উষর মরুতে। সবচেয়ে কাছের খাওনের দোকানটাও, আমাদের হোস্টেল থেইকা কমসে কম দুই মাইল দূরে। যাওয়ার পথটা আবার একটা চিপা রাস্তা, কোনমতে দুইটা মিনিবাস যাইতে পারে পাশাপাশি, কিন্তুক নামে কইলাম হাইওয়ে। সাঁই সাঁই কইরা গাড়ি যায়, এর মধ্যে যেই কুয়াশা তাতে ডান হাত বাম হাতরে দেখতে পারে না; এই অবস্থায় হাঁইটা দোকানে যাওয়াটাও রিস্কি ছিল। কিন্তুক পেটের ঠেলা, বড় ঠেলা। বইয়ের নামটাও মনে আছে, দূরবীন। আগের দিন রাতে ধরছিলাম। শেষ হয় নাই, তাই ক্লাস থেইকা সোজা রুমে আইসা সেই যে বসছিলাম, উঠলাম যখন রাইত বাজে নয়টা। খিদায় পেট তো কাঁনতেসেই, আমিও আরেকটু হইলে কান্নাকাটি শুরু করুম- এই দশা। দোকান যদিও রাত দশটা পর্যন্ত খোলা, কিন্তু খাবারের টানাটানি বিধায় সবাই আগেভাগেই খাইতে চইলা যায়। দুই-তিন তালা ঘুইরাও এমন একজনরে পাওয়া গেলো না, যে না খাইয়া ছিল তখন পর্যন্ত; কয়েকজন দেখা গেলো পাউরুটি-কলারেই জীবনের সঙ্গী করছে, কিন্তু আমার তখন ভাতের হাউস জাগছে। শেষ পর্যন্ত- ধুর্বাল, কি আছে জীবনে- বইলা একাই জ্যাকেট গায়ে বাইর হইয়া গেলাম। মেইনা রাস্তায় উইঠা হাঁইটা যাইতাসি। কঠিন ঠান্ডা, ঠোঁট-মুখ-কান জইম্মা গেসে; আমি আবার কোনোকালেই মাফলার, কানটুপি এইসবের ধারধারিনা। এইখানে আসার আগে তো ব্যাগী গেঞ্জি-হাফপ্যান্ট পরতাম শীতকালে। তো, হাত দুইটা জ্যাকেটের পকেটে ঢুকাইয়া সতর্ক দৃষ্টিতে বাস কিংবা রিক্সার আসা-যাওয়ার খেয়াল রাইখা যাইতাছি। এমন সময় রাস্তার ওইপাশে একটা কুত্তা সামনে থেইকা আচানক উদয় হইয়া আমারে পাস কইরা পিছনদিকে গেলো গা। ভার্সিটিতে বেওয়ারিশ কুত্তার অভাব নাই। পোলাপাইন নিজেরাই তাগোরে খাওয়াইয়া আরও পুষ্ট কইরা তুলতাসে, কাউরে কিছু কওয়ার নাই। অবশ্য কইবোই বা কেডা, আমি নিজেই দিনে বিশ টাকার পাউরুটি-বিস্কুট খাওয়াই কুত্তাগুলারে। মোটামুটি সবগুলার আকিকা করা শেষ, সবাইর ফেভারিটও আছে। আমার যেমন কালা নামের একটা কুত্তা। নামের মতন তার পুরা বডিটাই কালো রঙের, কিন্তু খুব মাই ডিয়ার টাইপ কুত্তা। লেজে পাড়া দিলেও ঘেউ না কইরা কেউ করে এমন। তো, কুত্তাটারে দেইখা আমি ভাবসি, কালা-ই গেসে। কারণ, এই কুত্তাটাও পুরাই কালো রঙের। যতটুকু দেখসি, সেইরকমই মনে হইছে। কিন্তু, কালা হইলে আমারে দেইখা এমনে পাশ কাঁটাইয়া চইলা যাওয়ার ত কথা না, এতটা বেঈমান অন্তত কোনো কুত্তা হইতে পারে না। কাজেই আমি "এই কালা, চু চু" কইরা শিষ বাজাইয়া ডাকলাম কুত্তাটারে পিছন ফিরা।

কুত্তাটা যা করলো সেইটাই ইতিহাস। সে বেশ নরমাল গতিতেই হাঁইটা যাইতেছিলো, হঠাৎ থাইমা গেলো আমার ডাক শুইনা। এরপর নিজের পুরা বডিটারে না ঘুরাইয়া, জাস্ট ঘাড় থেইকা শুরু কইরা মাথাটারে পুরা ১৮০ ডিগ্রী এঙ্গেলে ঘুরাইয়া আমার দিকে তাকাইলো। তার পুরা বডি সামনের দিকে আর মাথাটা খালি পিছনদিকে ঘুইরা আছে। কাহিনীটা বুঝতে আমার সেকেন্ড দশেক লাগলো, এইটা কালা না এবং ভালাও না। আর কিছু বুঝার আগেই দেখলাম, আমি দৌঁড়াইতাসি। মাথা পুরা ব্ল্যাংক হইয়া যাওয়ায়, আমার বডি কন্ট্রোল নিয়া বেস্ট অপশন বাইছা নিসে। এইটা হাইওয়ে, বাস ঢাক্কা দিতে পারে, রিকশা আছে, এত লম্বা পথ আমার মতন আনফিট লোক দৌঁড়াইয়া পারব না বা ভূত দেখলে দৌঁড় দিতে নাই - এইসব কিছু আমার মাথায় নাই তখন। মাথায় শুধু একটাই জিনিস টিং টিং কইরা বাজতাসে- দৌঁড়া ফরেস্ট, দৌঁড়া। দেড় মাইলের মতন দৌঁড় শেষে আমি যখন দোকানে গিয়া পৌঁছাইলাম তখন আমারে দেইখাই দোকানদার রাজীব মামা আর তার ছেলে রয়েল বুঝলো, কাহিনী ঝিরঝির। তারা মাথায় পানি দিয়া, গায়ে ফুঁ দিয়া একশেষ করছিল। এবং সেই সাথে আমারে কইছিল, এই রাস্তায় কখনো যাতে রাতের বেলা একা এমনে না যাই। এইখানে ভার্সিটি হওয়ার আগে বলে এই রাস্তায় বহুত ডাকাতি হইতো, একটা গ্রামই ছিলো ডাকাতদের। গলাকাটা কোনো ব্যাপারই ছিলো না তাদের কাছে। রাস্তায় তাই অনেক সময়, অনেক কিছুই দেখা যায়- যদিও তারা মানুষের ক্ষতি করে খুব কম। এত কিছু, তখন মাথায় ঢুকে নাই, জাস্ট শুইনা গেসিলাম। আমারে সাথে কইরা হোস্টেলে পৌঁছাইয়া দিয়াও গেসিলো মামা। ভূতের সাথে সেইটাই আমার প্রথম মোলাকাত না। কিন্তু, এই সাক্ষাতটা খুব মাথায় ঢুইকা আছে। জিনিসটার ইমপ্যাক্ট অন্য রকম ছিল।

তো, এই হইলো কাহিনী। আশা করি, এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা সহজেই দেয়া যাইবো। কিন্তু, আমি আবার কট্টর ভূত বিশ্বাসী হওয়ায় সেগুলা শুনতে ভাল্লাগে না। এই আধুনিক, ছায়েন্টিফিক, বাস্তব দুনিয়ায় কিছু রহস্য নাহয় থাকুক। কিছু শাকচুন্নী, মামদো আর বেহ্মদত্যিরা থাকুক নিজেদের মতন।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি তো নিজকে ব্লগের ফ্যান্টাসীর 'জনক', নাকি মনক, এই রকম কি একটা বলেছিলেন!

২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৪৯

অজ্ঞ বালক বলেছেন: কি যে বলেন না! এ যে, ছিলো রুমাল, হয়ে গেলো বিড়াল টাইপের কাহিনী। আপনে জিগাইছিলেন, এমন ফ্যান্টাসি বঙ্গদেশে লেখা হয় কি না। আমি কইসিলাম, হয় মনে হয়, তবে না হইলে নিজেরে এই ধরনের ফ্যান্টাসির পিতা কওয়া যাইবো। এই আর কি। আপনে মনে হয় জানেন না, দূরদেশে থাকেন তো। বাংলাদেশে এখন এপিক ফ্যান্টাসিও লেখা হয়।

২| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি একবার বলেছিলেন যে, আপনি গল্পলেখার ওয়ার্কশপ'এর ছাত্র ছিলেন, উহা কি গল্প ছিলো, নাকি আসলেই?

২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৫২

অজ্ঞ বালক বলেছেন: ছাত্র ছিলাম না, অখনো আছি। এই লন লিংক নীচে দিয়া দিলাম। ১৯ সাপ্তাহের কেলাস, স্লোলি করতাসি। একটা ক্লাস এক সপ্তাহ ধইরা বার বার দেখি। তাও যদি গোবরের মধ্যে কিছু ঢুকে। এখন আছি, ১৩ তে। আরও ৬ সপ্তাহ।

নীল গেইম্যানের মাস্টারকেলাশ!

৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:০০

রামিসা রোজা বলেছেন:
বিশ্বাসে মেলায় বস্তু তর্কে বহুদূর তাই আমিও আপনার সাথে একমত। ছায়েন্টিফিক বাস্তব দুনিয়ায় কিছু রহস্য নাহয় থাকুক

২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৫৪

অজ্ঞ বালক বলেছেন: একদম ঠিক কথা কইসেন, একশ কথার এক কথা কইসেন। আরে, এইডা ত আমার কথা! ঠিক কথা কইসি, একশ কথার এক কথা কইসি। পাঠ ও মন্তব্যের জইন্য থাঙ্কু।

৪| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:২২

রাজীব নুর বলেছেন: ভূতের গল্প গুলোতে সব সময় একটা কুকুর থাকে কেন বলেন তো?

২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৫৫

অজ্ঞ বালক বলেছেন: বাঘ থাকলে সেইটা শিকার কাহিনী হইয়া যায়, এইডা একটা কারণ। তিমি মাছ থাকলে সেইটা জলজ-প্রাণীবিদ্যার গবেষণামূলক বই হইয়া যায়, এইটা আরেকটা কারণ।

৫| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৩০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আফনে না চাইলেও রহস্য থাকবোই!

ব্যাখ্যার নামে কত্ত কিছুইতো আসে আবার ভুল বইলা বাদও পইড়া যায়!
আসলে চেষ্টা করে মানুষ নিজেরে প্রবোধ দিতে ;) ব্যখ্যাহীন ১০ ঘটনা ছাড়াও বহু ঘটনা এমনি রয়েছে!
সেখানে না হয় আপ্নেরটা্ও যোগ হইল ;)

ভুত কাহিনী ভালা হইছে :)

+++

২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৫৬

অজ্ঞ বালক বলেছেন: আমি নিজে এমন জিনিস দেখছি, শুনছি; যার ব্যাখ্যা আসলেই নাই। আমি নিজে ভুতে বিশ্বাস করি ও লোকজনরে বিশ্বাস করাইতে আর অবিশ্বাসীর লগে ঘাড় ফুলাইয়া তর্ক করতে পছন্দ করি। পেলাসে থাঙ্কু, আপনে ভালা লুক।

৬| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ভূত দর্শন পর্ব ভালে লিখেছেন।
যদিও আমি ভূতে বিশ্বাস করিনা, কিন্তু ভয় পাই ষোল আনা। তাই রাতে ঐ টাইপের বইও পড়ি না।

৭| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৩

করুণাধারা বলেছেন: ভূতের বিশাল ইতিহাস শোনার জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকলাম।

৮| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৫৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আচ্ছা ভূত মানুষকে ধরে না মানুষ ভূতকে ধরে। ওসি প্রদীপ যদি এখন ভূতকে ধরে তাহলে বিচার টুস ।

৯| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:১০

কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: ভূতের গল্পের চাইতেও মজা হলো গল্প বলার ধরণ না।

কালা না ভালাও না

ভূত দেখলে দৌড়ায়তে নাই

হা হা মজা পেয়েছি আপনার শিশুকালের ভূতের ভয় দেখে।আপনি কট্টর ভূত বিশ্বাসী। আর আমি যাই হই ভূত দেখলে কট করে তার মাথা মটকায় দিতে পারবো।

১০| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১৭

আখেনাটেন বলেছেন: হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা...................কুত্তার মাথা ঘুরানি দ্যাখে এই খিঁচে দৌড়টা ব্যাপক ছিল...... =p~

এখন কি নিজ বাসাতে বিশেষ কাহারো মাথা ঘুরানি দ্যাখে দৌড় দ্যান না............. ;)

মজার কাহিনি........

১১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫২

আমি তুমি আমরা বলেছেন: রাজীব নুর বলেছেন: ভূতের গল্প গুলোতে সব সময় একটা কুকুর থাকে কেন বলেন তো?

লেখক বলেছেন: বাঘ থাকলে সেইটা শিকার কাহিনী হইয়া যায়, এইডা একটা কারণ। তিমি মাছ থাকলে সেইটা জলজ-প্রাণীবিদ্যার গবেষণামূলক বই হইয়া যায়, এইটা আরেকটা কারণ।

আপনার সেন্স অফ হিউমার বেশ ভাল। গল্প এবং সেইসাথে প্রতিমন্তব্যগুলো বেশ ভাল লেগেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.