নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে একজন ভীষণ খারাপ মানুষ। তবে ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে দুর্দান্ত অভিনয় করতে পারি বলে কেউ কিছু বুঝতে পারে না। সে হিসাবে আমি একজন তুখোড় অভিনেতাও বটে!!!

অজ্ঞ বালক

ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নগুলো কুড়িয়ে এখানে নিয়ে এসে ছুঁড়ে ফেলা হয়!!!

অজ্ঞ বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্রীক পুরাণের পাতা থেকেঃ প্রমিথিউস ০২ - কাদামাটির কারিগর

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:১৭

পরিকল্পনারে বাস্তবে রূপ দেয়ার জইন্য তারা দুইজন মিল্যা কাদামাটির খোঁজে কই যে গেসিলো সেইটা নিয়া ইতিহাসে একটু মতভেদ আছে। আদ্যিকালের কথাই আগে বলি, ২০০ শতকের পরিব্রাজক পসানিয়াস বইলা গেসিলেন যে ফোকিসের প্যানোপিয়াস এলাকাই সেই বিশেষ জায়গা। পরবর্তীকালের গবেষকরা বলছিলো, দুই দেবতা ভালো মাটির খোঁজে চইলা আসছিলেন তৎকালীন সবচাইতে উর্বর জমিনে, এসিয়া মাইনরের দুই মহানদী টাইগ্রিস আর ইউফ্রেটিসের মাঝামাঝি এলাকায়। আর একেবারে সাম্প্রতিক মত হইলো, তারা উপযুক্ত এলাকার খোঁজে নীলনদের পাশ দিয়া, বিষুবরেখা অতিক্রম কইরা, আরও বহুদূর গিয়া শেষমেশ থামসিলেন পূর্ব আফ্রিকায়।

যেই মতরেই সত্যি ধইরা নেই না কেন, শেষমেশ তারা সেই উপযুক্ত জায়গা খুঁইজা পাইছিলেন যার জন্য এতদূর যাওয়া প্রমিথিউসের। একটা নদী যার তীরের কাদামাটিতে সেই সব গুণাবলী ছিল যা একজন দক্ষ শিল্পী চায়- সঠিক ঘনত্ব, দৃঢ়তা, টেকসই ভাব আর রঙ।

"এই মাটিটা ভালা আছে, " প্রমিথিউস সন্তুষ্টির সাথে পরখ শেষে জিউসের উদ্দেশ্যে কইলো মাথা নাড়তে নাড়তে। "না না, তুমি এইখানে থাকার কোনো দরকার নাই। আমারে একটু শান্তিতে কাজ করতে দাও। কিন্তু যাওয়ার আগে আমারে তোমার একটু মুখনিঃসৃত লালা দিয়া যাও।"
"মানে!?"
"আরে এই প্রাণীগুলারে যদি জীবন্ত করা লাগে পরে, তাইলে শ্বাস দেওয়ার উপকরণ হিসেবে ওদের মধ্যে তোমার একটা অংশ থাকা লাগবো।"
জিউস প্রমিথিউসের কথার মর্মার্থ বুঝতে পাইরা পাশেই একটা শুকনা গর্ত নিজের স্বর্গীয় লালা দিয়া ভইরা দিলেন।
"আমি মাটি দিয়া মূর্তিগুলা বানাইয়া নদীর তীরে এক সারিতে সাজাইয়া রাখমু যাতে সূর্যের আলোতে সেগুলা ভালোমতন পুইড়া শক্ত-পোক্ত হয়।' প্রমিথিউস জিউসরে বুঝাইলো। "কাজেই তুমি একেবারে বিকালবেলা আইসো। আশা করি ততক্ষণে সব কাজ শেষ হইয়া যাইবো।"

জিউসের পুরা কাজটা সামনে থেইকা দেখতে ইচ্ছা করতেসিলো কিন্তু শিল্পীদের সৃষ্টিশীল কাজ করার নানাবিধ দাবী-দাওয়া সম্পর্কে তার ধারণা বেশ ভালোই ছিল। তাই তিনি প্রমিথিউসরে তার কাজ ভালোমত করার সুযোগ দিলেন। নিজের বন্ধুরে তার শিল্পীস্বত্ত্বার প্রকাশে বাঁধা না দিয়া আকাশপানে উইড়া গেলেন ঈগলের রূপ ধইরা।

প্রমিথিউস ধীরে সুস্থে শুরু করলো নিজের কাজ। প্রথমে মাটি দিয়া প্রায় চার পৌস লম্বা নলাকার একটা আকৃতি বানাইয়া তার উপরে মাথার জন্য লালায় ভিজানো মাটির একটা গোলক বসানো। তারপর দক্ষ হাতে আচঁচড় কাটা, মোচড় দেয়া, জোরে টান দেয়া, মণ্ড বানানো, ডলা দেওয়া, আলগা করা, খোঁটানো - সব শেষে একসময় সেই মাটির দলা দেবতা বা টাইটানদের মতন একটা মূর্তির রূপ নিলো। কাজ যত আগাইতে থাকলো প্রমিথিউস তত মনে মনে খুশি হইয়া উঠতেসিলো। জিউস যখন হেফাসটাসের সাথে প্রমিথিউসের তুলনা দিসিলেন, তিনি বিন্দুমাত্র বাড়াইয়া বলেন নাই। প্রমিথিউসের হাতে আসলেই জাদু আছিলো। সে ছিলো যাকে বলে জাত শিল্পী।

মাটির সাথে বিভিন্ন রঞ্জক দ্রব্য মিশাইয়া সে রংবেরঙ্গের অসংখ্য পুরুষাকৃতির জীবন্তপ্রায় মূর্তি বানাইলো। প্রথমে সে এমন কিছু মূর্তি বানাইলো যার গায়ের রঙ দেবতাদের গায়ের রঙের মতই রোদে পোড়া, বাদামী। এরপর কিছু বানাইলো কালো কুচকুচে রঙের। কিছু বানানো হইলো হাঁতির দাতের মতন সাদাটে, ফ্যাকাশে। এরপর হলদে, তামাটে, লালচে, সবুজাভ, ধূসর, উজ্জ্বল বেগুণি আর গাঢ় নীল।

(চলবে)

আগের পর্ব পইড়া আসতে চাইলেঃ

গ্রীক পুরাণের পাতা থেকেঃ প্রমিথিউস ০১ - জিউসের আবদার

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৫:১৪

সোনাগাজী বলেছেন:




আপনি লিখেছেন: গবেষকেরা বলেছেন যে, দেবতারা মাটির খোঁজে এশিয়া ও আফ্রিকায় ঘুরছিলেন! ইহারা কি আপনার মতো গবেষক?

০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:৩০

অজ্ঞ বালক বলেছেন: স্ক্যাটোলজি কারে কয় জানেন? গু নিয়া গবেষণার একাডেমিক নাম এইটা। তাইলে মিথোলজি নিয়া গবেষণা হইতে পারে না এইটা আপনার মনে হইলো ক্যামনে?!? পড়েন, আরও পড়েন। জানাশোনার পরিধি বাড়বো তাইলে।

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:০১

রাজীব নুর বলেছেন: গ্রীন পুরান কাহিনী জানলাম। এবং বিরক্ত হলাম।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪১

অজ্ঞ বালক বলেছেন: স্বাভাবিক। সবকিছু সবাই খাইতে পারে না, যেমন আমি শুঁটকির গন্ধ পাইলে ঐদিন ডাইনিং টেবিলের ত্রিসীমানায় যাই না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.