নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"আমি নজরুল জুয়েল, খেতে অনেক পছন্দ করি, মাঝে মাঝে টুকটাক লিখতে ভালোবাসি, বর্ষাকাল আমার অনেক পছন্দ, এবং কফির দারুণ ভক্ত...\"

অজানা তীর্থ

আমি যদি আমার সম্পর্কে অবগত হইতাম, তাহলে লিখতাম।

অজানা তীর্থ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ট্রিপল-ফিল্টার পরীক্ষা (The Triple-Filter Test) –নিজে শান্তিতে থাকুন অন্যকে শান্তিতে রাখুন।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১০


কোনো বিষয় নিয়ে আমাদের দেশের মানুষ তার আশপাশের একে অন্যের কাছে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে আজকাল এমন কিছু সংবাদ শেয়ার করে যা মূলত মানুষের আবেগের সাথে সরাসরি জড়িত এবং যার বেশিরভাগ বার্তাগুলো মিথ্যা। এই মিথ্যে সংবাদগুলো এড়িয়ে চলুন যেন সেগুলো আপনার মনের উপর নেতিবাচক প্রভাব না ফেলতে পারে এবং অন্যের জন্য ক্ষতির কারণ না হয়।

উপযক্ত উৎস জানা না থাকলে বা একটি চলমান ঘটনা যার ফলাফল একখনো নিশ্চিত নয়, কখনোই এমন একটি তথ্য বা বার্তা হোক সঠিক হোক সঠিক নয়, আপনি তা অন্যের সাথে শেয়ার করবেন না। কারণ বেশিরভাগ সময় যে খবরগুলো আমরা একে অন্যের সাথে বা সোশ্যাল সাইটগুলিতে শেয়ার এবং অন্যকে ফরোয়ার্ড করি তা বাস্তব নয়।

মিথ্যে সংবাদ যেমন আমাদের সামাজিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে তেমনি আমাদের ব্যাক্তিগত জীবনেও এর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। আপনার আশপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের মিথ্যে গুজবে বা সংবাদের জন্য আপনার প্রিয় মানুষের সাথে সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটেছে বা ঘটার মত উপক্রম হয়েছে।

এটি কেবল অর্থ উপার্জন বা মানুষকে বোকা বানানো, বা একটি বিশেষ মহলের মনোযোগ আকৃষ্ট করার জন্যই করা হয়। অনেক সময় পূর্বের কোনো শত্রুতা থেকে মানুষ এমন করে, অন্যের উপর রাগ বা হিংসা থাকলেও এমন হতে পারে।

১। ক্যানসারে আক্রান্ত হবার পর অভিনেতা অভিনেতা আবদুল কাদেরের মৃত্যুর গুজব উঠেছিল। দুদিন ধরে বিভিন্ন ওয়েব পোর্টাল ও ইউটিউব চ্যানেলে তাঁর মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হয়েছিল। সেসব দেখে অনেক মানুষ ফেসবুকে এই অভিনেতার মৃত্যু নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন, যা তাঁর পরিবারের জন্য ছিল হয়রানিমূলক। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন কাদেরের পরিবারের সদস্যরা। যা নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ প্রথম আলো নিউজে একটি হেড লাইন হয় “মৃত্যুর গুজবে সারা রাত ঘুমাতে পারেনি কাদেরের পরিবার”

২। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রতন রপ্তান আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন ভারতে। পরে সেখান থেকে নিজ গ্রাম পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালীতে ফিরছিলেন। গায়ে জ্বর ও সর্দি–কাশি থাকায় ভোমরা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন থেকে তাঁকে নেওয়া হয় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে। এরই মধ্যে এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে, তাঁর শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। তাঁকে ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলা হবে। রতনের পরিবার ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, ছেলেকে মেরে ফেলা হবে—এ কথা শুনে মুষড়ে পড়েন রতনের মা রেণুকা রপ্তান । এরপর ঐদিন রাত পৌনে ১২টার দিকে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি

৩। একটি মিথ্যে সংবাদ সাধারণ জনগণের মনের সাথে কতটা ইমোশনালি সংযুক্ত ছিল এবং তার মর্মান্তিক পরিণতি কতটা আমাকে ব্যথিত করেছে তা ছিল বাড্ডায় গণপিটুনিতে তাসলিমা হত্যা যা মূলত ছেলেধরা গুজবের উপর ভিত্তি করে ঘটেছিল

কী করবেন?

এইবার একটি গল্প বলি যার নাম হলো ট্রিপল-ফিল্টার পরীক্ষা (The Triple-Filter Test)।

একদিন একজন পরিচিত ব্যক্তি সক্রেটিস সাথে দেখা করে বললেন, "আপনার বন্ধু সম্পর্কে আমি কী শুনেছি তা কি জানেন?" সক্রেটিস বললেন- এক মিনিট অপেক্ষা করুন । এটি একটি ভাল ধারণা হতে পারে, আপনি আমার বন্ধু সম্পর্কে আমার সাথে কথা বলার আগে কিছুক্ষণ সময় নিন, আর যা বলবেন তা ফিল্টার করুন। আমি এটিকে “ট্রিপল-ফিল্টার পরীক্ষা” বলি। প্রথম ফিল্টারটি হলো সত্যতা।

“আপনি যে বিষয়টি আমাকে বলতে যাচ্ছেন তা সত্য কিনা আপনি কি নিশ্চিত হয়েছেন?”
লোকটি বলল "ভালো কথা, না। আসলে আমি এটি সম্পর্কে শুনেছিলাম এবং ..."

সক্রেটিস বললেন, ঠিক আছে। সুতরাং আপনি প্রকৃতপক্ষে এটি সত্যি না মিথ্যা তা জানেন না। এবার আসুন দ্বিতীয় ফিল্টারটি চেষ্টা করা যাক, যা "ভালোর ফিল্টার"।

“আপনি আমার বন্ধু সম্পর্কে ভালো কিছু বলতে যাচ্ছেন?"
"না, তার বিপরীতে ..."

তারপর সক্রেটিস বললেন— সুতরাং, আপনি আমার বন্ধুর সম্পর্কে খারাপ কিছু বলতে চান আমাকে, তবে আপনি নিশ্চিত নন যে এটি সত্য। আপনি এখনও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেন, কারণ একটি ফিল্টার বাকি আছে যা “উপকারী ফিল্টার”।

“আমার বন্ধু সম্পর্কে আপনি আমাকে যা বলতে চান তা আমার জন্য কি ব্যবহারউপযোগী হবে?”
"না সত্যিই না."

সক্রেটিস বললেন "ঠিক আছে, আপনি আমাকে যা বলতে চান তা যদি সত্য না হয়, না ভালো হয়, না এমনকি উপকারী হয় তবে কেন তা আমাকে বলবেন?"

মিথ্যে তথ্যের ভিত্তিতে নিজেকে কখনই নেতিবাচকতায় লিপ্ত হওয়ার অনুমতি দেবেন না, নিজেকে মিথ্যা বোকা বানাবেন না, যৌক্তিক চিন্তাভাবনা করুন এবং আপনি তিন ফিল্টার পরীক্ষা না করা পর্যন্ত কখনও কোনো পদক্ষেপ নিবেন না বা কোনো কিছু অন্যকে ফরোয়ার্ড করবেন না। নিজে শান্তিতে থাকুন অন্যকে শান্তিতে রাখুন।

তথ্য লিঙ্কঃ
১। Click This Link

২। Click This Link

৩। Click This Link

৪। Click This Link

ছবি: গুগল

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন এ মোটিভেশনাল পোস্ট।
সক্রেটিস এর অমর বাণী শিক্ষণীয়। ভাল লেগেছে। + +
আবদুল কাদের এর পরিবারের সদস্যদের জন্য সমবেদনা। হয়তো তারা তার মৃত্যুতে যতটা না কষ্ট পেয়েছেন, (অ)সামাজিক মিডিয়ায় তার মৃত্যু সম্পর্কিত গুজব এর দ্বারা তার চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছেন।
আমার এক বন্ধুপত্নী যখন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সনাক্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ী ফিরে এলেন, তখন তার নিকটতম প্রতিবেশী প্রথম দেখাতেই প্রশ্ন করে বসলেন, 'ভাবী, আপনার ক্যন্সার এখন কোন পর্যায়ে আছে'? যেন টার্মিনাল পর্যায়ে আছে কিনা সেটাই জানতে চাচ্ছেন। হয়তো সেটা না, হয়তো উনি সরল বিশ্বাসেই তা জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এমন প্রশ্ন যে রোগীকে বিমর্ষ, বিষণ্ণ ও বিব্রত করে ফেলতে পারে, তা আমরা অনেক সময়ই খেয়াল রাখি না।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৯

অজানা তীর্থ বলেছেন: পোস্ট ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগেছে। আপনি খুব সুন্দর একটি উদাহরণ দিয়েছেন। এইরকম ঘটনাগুলো খুবই মর্মান্তিক। আপনার জন্য নিরন্তর শুভকামনা।

২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:২৭

কল্পদ্রুম বলেছেন: ভালো পোস্ট। ট্রিপল ফিল্টারের পদ্ধতি বেশ কাজের।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০৪

অজানা তীর্থ বলেছেন: মন্তুব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। হুম সত্যি ট্রিপল ফিল্টারের পদ্ধতি বেশ কাজের। আমরা একটু সময় নিয়ে যদি এই গল্পটির কথা ভেবে যদি কোনো সংবাদকে যা আমরা অন্যকে বলবো তবে অনেক সুন্দর ভাবে আমরা বুঝে নিতে পারবো আমাদের কি সংবাদটি অন্যকে জানানোর উচিত নাকি উচিত না। আপনার জন্য নিরন্তর শুভকামনা।

৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: সক্রেটিসের মতো একজন জ্ঞানী লোক আমার খুব দরকার।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০৪

অজানা তীর্থ বলেছেন: আসলেও দরকার। আপনার জন্য নিরন্তর শুভকামনা।

৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টি আমার জন্য কঠিন হয়ে গেলো।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০৬

অজানা তীর্থ বলেছেন: আচ্ছা তাই নাকি! তা কেন আপনার জন্য কষ্টের হয়ে গেলো দাদা?

৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:০০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই কারণেই পরনিন্দা আর পরচর্চা পরিহার করা উচিত। এই ধরণের আড্ডাও আমাদের পরিহার করা উচিত। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে এগুলি বেশী হচ্ছে।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩৮

অজানা তীর্থ বলেছেন: ঠিক ই বলেছেন পরনিন্দা আর পরচর্চা আমাদের সর্বদা এড়িয়ে চলা উচিৎ। আর সত্যি এখনকার সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে এগুলো আরো বেশি হচ্ছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। নিরন্তর শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.