নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

"বৃষ্টি ভিজাবে তোমাদের অনন্ত মমতায়, আমি রাঙাবো তোমাদের নক্ষত্রের সীমানায়। আমি, তোমাদের সব স্বপ্নের ধূসর প্রতিচ্ছবি।"

দ্বৈত ঋত

"বৃষ্টি ভিজাবে তোমাদের অনন্ত মমতায়, আমি রাঙাবো তোমাদের নক্ষত্রের সীমানায়। আমি, তোমাদের সব স্বপ্নের ধূসর প্রতিচ্ছবি।"

দ্বৈত ঋত › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবি, বালক ও সুকন্যা

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৩১

১~

কবি কহিল, " বালক, তোমার

স্বার্থকতা বা সফলতার থেকে ব্যার্থতা অনেক বেশী।"

কবি কে বলিলাম, "কবি, রাতের অন্ধকারেই ঝিকিমিকি তারার সৌন্দর্য।"

কবি পুনরায় বলিলো, "বালক, তোমার জন্য কবিতা . . . .

As your bright and tiny spark,

Lights the traveler in the dark.

Though I know not what you are,

Twinkle, twinkle, little star.

Twinkle, twinkle, little star.

How I wonder what you are.

Up above the world so high,

Like a diamond in the sky.

Twinkle, twinkle, little star.



২~

কবি কহিল, "বালক, ফেবুর propic এ তোমার আপন ছবির অনুপস্থিতির হেতু কী?"

আনমনা ভাবে কবিকে বহিলাম, "কবি, চেহারা তো মডেলদের মতো নহে।"

কবি পুনরায় কহিল, " তাহলে Model Arif Khan ও Rony Rezaul কি মদেল?"

বেকুব নয়নে চেয়ে থাকিলাম। মদেল কী? জানি না তো।

কবি বলিলো, " মদেলদের জন্য বাণী . .

Model of the people, by the

photographer, for the entertainer.

কবিকে বলিলাম, " তথাস্তু ! "

কবি মুখ পেরিয়ে বলিলো, " মদেলেস্থু ! "



৩~

কবি সুধাইলো, "বালক, বাংলাদেশে কয় প্রকার জাতি আছে বলিতে পারো?"

মাথা চুলকায়ে কবিকে বলিলাম, "কবি, দুই প্রকার জাতি বাংলাদেশে বিদ্যমান। এক হলো জাতি, অন্যটি হলো যাঁতি।"

আধখানা চাঁদ দেখিতে দেখিতে কবি কহিল, " খোলসা করো।"

আমিও চাঁদ দেখিতে দেখিতে বলিলাম, "যাহারা দেশ গড়ে তাহারা জাতি, যাহারা দেশ ভাঙ্গার হেতুতে জড়িত তাহারা যাঁতি।"

কবি উদাস মনে গাহিলো, " আমার আল্লাহ্ ই করবে তোমার বিচার"

আমিও গাহিলাম, " আমার আল্লাহ্ ই করবে যাঁতির বিচার।"



৪~

কবি সুধিলো, "বালক, তুমি অশিক্ষিত দেখিয়াছ?"

কবিকে কহিলাম, " শেষ দেখিয়াছি বিগত বছরে।"

কবি ফের সুধাইলো, "কী বোধ করিয়াছিলে?"

কবিকে উত্তর দিলাম, " বোধ হইয়াছিল, ঢাকা শহর যাইয়া আমার আশা পুরিবে। "

কবি চমকিত নয়নে ফের সুধিলো, " পুরিবে না পুড়িবে?"

উদাস কণ্ঠে উত্তর দিলাম, " তাহা নির্ভর করিবে বিরোধীদলের উপরে।"

কবি অধিকতর উদাস কণ্ঠে গীত ধরিল, " আমায় ভাসাইলি রে আমায় ডুবাইলি রে . . . "

আমিও কবির সাথে গাহিলাম, " গণতন্ত্রের এই দেশে কেনে শান্তি নাই রে . . . "



. . . . .

{পুনশ্চ: "অশিক্ষিত" বাংলাদেশের বিখ্যাত একটি সিনেমা।}





৫~

কবি সুধাইলো, "বালক, মরুভূমি শব্দ দ্বারা তুমি কি বাক্য রচনা করিতে সক্ষম?"

মাথা নাড়ায়ে কবিকে কহিলাম, " কবি, মরুভূমি শব্দ দ্বারা আমি উত্তম বাক্য রচনা করিতে সক্ষম।"

কবি উৎসুক নয়নে ফের সুধাইলো, "তবে অপেক্ষা কেন? বলিয়া ফেলো।"

কবিকে উত্তর দিলাম, " বাংলাদেশের বিগত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মরুভূমি খাতুন, দেশবাসীকে সাহারা রূপ দান করিয়াছিলো।

অথবা

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বর্তমান স্পনসর ভারতীয় মরুভূমি কোম্পানী।"

কবি বলিলো, "উত্তম বলেছো।" বলিয়া কবি গীত ধরিল . . . .

আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দেরে তুই . . . . "



আমি বুঝিলাম, মরুভূমিতে পানি অতীব দরকার।



৬~

কবি সুধাইলো, "বালক, আজ কত তারিখ?"

কবিকে কহিলাম, "কবি, আজ ২৫ই জান।"

কবি বিস্ময় নয়নে ফের সুধাইলো, "কী?"

কবিকে আবারো বলিলাম, " ২৫ই জানু।"

কবি বিস্ফরিত নয়নে পুনরায় সুধাইলো, " জান, জানু : বালক এই সব কি?"

আমি সরল গলায় বলিলাম, " জানুয়ারির সংক্ষিপ্ত রূপ।"

কবি দম ফেলিয়া বলিলো, " ও, আমি তো ভাবিলাম তুমি আমাকে বালিকা মনে করিয়া জান, জানু ডাকা শুরু করিয়াছ।"

আমি বেকুব নয়নে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবিলাম,

সব Whole sale (রহস্যময় চিনি) যেমন ভালো না

সব short form ও তেমন মিষ্টি না।



৭~

কবি সুধাইলো, " বালক, ভালবাসা কারে কয়?"

গলা খাঁকারি দিয়া এক দমে কবিকে বলিলাম, " কবি, যে বাসায় নুন্যতম একখানা শয়ন কক্ষ, খাদ্য গ্রহন কক্ষ, রান্না/পাক প্রস্তুত কক্ষ ও প্রক্ষালন কক্ষ থাকে এবং ঐ বাসা পুষিবার খরচে গৃহকর্তার কোন শারীরিক রোগ ধরা না পড়ে তবে উহাকে আমরা ভালবাসা বলিতে পারি।"

কবি উদাস নয়নে বলিলো, " আমি অনুভূতি ভালবাসার কথা কহিয়াছিলাম।"

আমি চুপ থাকিলাম। কবি আজ উদাস।

কবি "ভালবাসি, ভালবাসি" বলে রবি বাবুর গান ধরিয়াছে।

কবিদের সংসারের কথা চিন্তা না করলেও চলে। আমিতো আর কবি না, আমি বালক। সামান্য কিছু টাঁকা নিয়ে ভালো বাসা খুজে চলছি।

রবি গুরু, ভালো বাসা . . . সে আসলেই যাতনাময়।



৮~

কবি সুধাইলো, "বালক, তুমি কি 50 cent এর নাম শুনিয়াছ?"

আনমনা ভাবে কবিকে কহিলাম, "কবি 50 cent হলো innocent এর বড় ভাই।"

কবি বিস্ময় স্বরে বলিলো, " তাই তো বলি নিরীহ মানুষের জীবনের মূল্য এত কম কেন। যখন তখন প্রহার করছে, হত্যা করছে। innocent মানুষের জীবনের মুল্য আসলেই 50 cent ."

আমি তন্ময় ভাবে বসিয়া ভাবিতে লাগিলাম " অনন্ত রূপ সৃষ্টি করলেন সাঁই, শুনি মানবের তুলনা কিছুই নাই . . . এমন মানব জনম আর কি হবে . . . ? ? ? "



৯~

কবি সুধাইলো, "বালক, কিছু মল রঙের সাংঘাতিক রকমের সাংবাদিকে বলিতে দেখিলাম ও শুনিলাম চিকিৎসক সমাজকে কসাই উপাধিতে ভূষিত করছে। তোমার কী মত?"

কবিকে কহিলাম, "কবি, তাহারা চিকিৎসক সমাজকে যোগ্য সম্মান কলমের কালিতে প্রদান করছে।"

কবি পুনরায় কহিল, "কি রূপ?"

কবিকে কহিলাম, " চিকিৎসক সমাজকে কসাই বলা মাত্রই যাহারা কহিতেছে তাহারা জবাই কৃত পশু যথা গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, হাঁস, মুরগী হয়ে যায়। আর জবাই কৃত পশু মাত্রই কসাইকে কসাই বলিয়া সম্মান দানে সম্মানিত হয়।"

কবি উত্তর শুনিয়া আপন মনে বলিতে লাগিলো, " আবার তোরা মানুষ হ।"

আমিও মাথা দুলাইতে দুলাইতে বলিলাম, " এইবার তোরা গরু - ছাগল থেকে মানুষ হ।"



১০~



কবিকে উদাসী দেখিয়া কবিকে সুধাইলাম, "কবি, উদাস কেন মন?"

কবি উদাস মনে ভারী গলায় বলিলো, " আমার উপস্থিতির মূল্য যার নিকট ছিলো না, অনুপস্থিতির মূল্য সে কেমনে বুঝিবে।"

বেকুব স্বরে কবিকে বলিলাম, "কবি, বুঝিলাম না।"

কবি ততোধিক উদাস স্বরে বলিলো, "কবি র কবিতার বই বের হবে, যুবক তরুণী হাস্য বদনে তা কিনিবে, গুনীজনেরা প্রশংসা করিবে কিন্তু কবিকে না কোন কন্যা স্বপ্রনোদিত হইয়া বিবাহ করিবে না কোন গুনীজন তাহার কন্যাকে কবি র হাতে তুলিয়া দিবে। "

কবিকে সাবধানে সুধাইলাম, "কবি কি বিবাহ করিতে ইচ্ছা প্রকাশ করিতেছেন?"

কবি কহিল, "না বালক তা নহে।"

আমি আরো সাবধানে ফের সুধাইলাম, "তবে?"

কবি বলিলো, "আমার কবিতা আবৃত্তি করিয়া যুবক এখন কন্যার সহিত প্রনয় এ আবদ্ধ। তাহা দেখিয়া আমার মায়া হলো, কন্যা আমি তোমারে আরো কবিতা শুনাইবো। তুমি তো কবিতার প্রেমে প্রেমময়ি হইয়াছো, যুবেকের প্রতি নহে।"

আমার মমতাজ আফার গান মনে পরিলো, " ও বন্ধু যখন বৌ . . .



১১~

কবি সুধাইলো, " বালক, বলো তো আইয়ুব বাচ্চুর( LRB band's legandery Baccu ) পছন্দের মোটর চালিত চার চক্র যান কোন খানা?"

জনাব বাচ্চুর গীত শ্রবণ করিয়া প্রীত অনুভব করি কিন্তু উনার পছন্দের যানের সম্মন্ধে কোনই ধারনা নাই। তাই বেকুব নয়নে কবিকে কহিলাম, "না জানার দরুন বলিতে পারিব না."

কবি উত্‌ফুল্ল কণ্ঠে উত্তর দিলেন, " জনাব বাচ্চু Ferari Brand এর মোটর চালিত যান পছন্দ করিয়া থাকেন।"

আমি বিস্ময় স্বরে সুধাইলাম, "কী করে জানিলেন?"

কবি গীত গাহিয়া উত্তর দিলেন, " ফেরারী এই মনটা আমার . . . "

মনে মনে আমি গাহিলাম, "এখন অনেক রাত, চার দেয়ালের রুমের মধ্যে, করে অনেক আয়োজন, আসছে ঘুম চোখে, তাই শুনছি না কান পেতে, কবির যুক্তি খণ্ডন।"



১২~

কবি সুধাইলো, "বালক, তুমি মেসি বা রোনাল্ডো নাম দুটির সাথে পরিচিত?"

কবিকে কহিলাম, "কবি, আমি এই নাম দুইয়ের সাথে পরিচিত। উনাদের খেলা আমি উপভোগ করিয়া থাকি। উনাদের নামে কেহ কিছু বলিলে আমি উনাদের হয়ে যুক্তি তর্ক কিংবা গালা গালি করিতে ঝাঁপিয়ে পড়ি। "

কবি বলিলো, "বেশ, অতি উত্তম।"

কবি ফের সুধাইলো, " বালক, তুমি ইমতিয়াজ সুলতান জিতু, মোহাম্মাদ জাহিদ হুসাইন, আহমেদ শাকিল, মামুনুল ইসলাম, তৌহিদুল ইসলাম সিদ্দীক, মোহাম্মাদ জাহেদ পারভেজ, আব্দুল বাতেন মজুমদার কমল, মোবারাক হুসাইন, অরূপ কুমার, নাসিরুল ইসলাম, আতিকুর রাহমান মিশু, মামুন মিয়াহ, লিঙ্কন, করিম রেজাউল, বিপ্লব, মোহাম্মাদ মাযহারুল ইসলাম, মোহাম্মাদ মিন্টু শেখ নাম শুনিয়াছ?"

কবিকে উত্তর দিলাম, "না কবি আমি উনাদের নামের সহিত পরিচিত নই। উনারা কারা?"

কবি বিরস বদনে বলিলো, "উনারা বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সদস্য।"

তৃতীয় হাত অজুহাত বের করে বলিলাম, "উনারা ভালো খেলেন না, তাই নাম ডাক না থাকার কারনে চিনি না।"

কবি রাগ স্বরে বলিলো, " মা গরিব, কুৎসিত, অশিক্ষিত হলে কি মা কে মা ডাকিব না?"

আমি কহিলাম, "তা হবে কেন। মা তো সব সময়ে মা।"

কবি কহিল, " ভাই মহামান্য না হলে ভাইয়ের নাম কি জানিব না?"

আমি বুঝিতে পারিলাম কবি কি বলছেন। লজ্জায় মাথা নিচু করিলাম।

রাগত স্বরে কবি কহিলেন, " আমি যদি আমার ভাইয়ের সম্মান দিতে না জানি, অন্যরে ভালবাসা লোক দেখানো কপটতা।"

দূরে কোথাও বেজে চলছে, " সকাতরে ঐ কাঁদিসে সকলে . . . "

আমার মনে হইলো ভাইরে অসম্মান করায় মা কাঁদিতেছে।



১৩~

( কার সাথে মিলিয়া গেলে কবি বা বালক দায়ী নন। )



কবি সুধাইলো, "বালক, বিড় বিড় করে কি বলিতেছ?"

সরলতায় কবিকে কহিলাম, "চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা। মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য "

কবি চমকিত হইয়া ফের সুধাইলো, "বালক, তুমি তো কেশবতি কন্যার প্রেমে পড়িয়াছ "

কবি মুখ টিপি হাসি দিয়া ফের সুধাইলো, "বালক, ঘটনা টা বলো।"

লাজ গলায় বলিলাম, "কবি, কন্যার খোঁপা দেখিয়া বলেছিলাম /আলগা করো গো খোঁপার বাধন,/ কে জানিতো কেশবতির দীঘল চুলে / দিল ওহি মেরা ফাঁস গেয়ি/"

কবি বলিলো, "বালক, তবে অপেক্ষা কেনো? কন্যা কে তোমার মনের জলছবি উৎসর্গ করো।"

কবিকে ভাসমান মেঘের শুভ্রতায় বলিলাম, "কবি, সে যে /দূর দ্বীপ বাসিনী/ "

কবি কাঁধে হাত রাখিয়া সুধাইলো, "তাহলে?"

নীল জোছনা দেখিতে দেখিতে কহিলাম, " দুর হতে আমি তারে সাধিবো, গোপনে বিরহো দোড়ে বাঁধিব।"



১৪~

কবি সুধাইলো, "বালক, তোমার কেশবতী কন্যার খবর কি?"

লজ্জাবত বদনে কহিলাম, " কবি, কন্যা ভালো আছে।"

কবি ফের সুধাইলো, "বালক, কন্যার নাম . . . . "

কহিলাম, "কন্যার নাম সুকন্যা।"

কবি স্মিত হেসে কহিল, " উপহার কি দিলে?"

উত্তর দিলাম, "বাস্তবতা মিশানো কবিতা।"

কবি পুলকিত নয়নে কহিল, "কি রুপ?"

কবিকে কহিলাম, " কন্যা কে কহিয়াছি . .

/ রাজপুত্রের ন্যায় রাজত্ব দিতে পারিব না

বানাইবো হৃদ রানী,

পারিব না দিতে সাঁতার পদ্মা মেঘনা

পারিব হাঁটিতে তোমার সহিত অনন্ত কাল।/ "

কবি কথা শ্রবণ করিয়া নীল সুরে গান ধরিলো,

"You fill up my senses

Like a night in a forest

Like the mountains in springtime

Like a walk in the rain

Like a storm in the desert

Like a sleepy blue ocean

You fill up my senses

Come fill me again

Come let me love you

Let me give my life to you

Let me drown in your laughter

Let me die in your arms

Let me lay down beside you

Let me always be with you

Come let me love you

Come love me again

You fill up my senses

Like a night in a forest

Like the mountains in springtime

Like a walk in the rain

Like a storm in the desert

Like a sleepy blue ocean

You fill up my senses

Come fill me again



কবি রা বড়ই রসিক হয়



১৫~

কবি সুধাইলো, "বালক, তোমার বিদ্যালয়ের স্মৃতি চারণ করো।"

কবিকে কহিলাম, "কবি বিদ্যালয় বড়ই আনন্দ মধুর ছিলো। ২১ দ্বিগুন ছাত্রের মধ্যে আমি ছিলাম শেষ হতে ২১তম। বিদ্যালয়ের শেষ দিনটি পর্যন্ত আমি ঐ ক্রমিক নং ধরিয়া রাখিবার গৌরব অর্জন করেছিলাম।"

কবি ফের সুধাইলো, " তোমার মস্তিস্কের পরিমান ত কম নহে। তবে কেন ২১তম ক্রমিক ধরিয়া রাখিয়া তুমি গর্ব বোধ করিয়াছিলে?"

দৃপ্ত কণ্ঠে কহিলাম, " কবি, মাকে মা শব্দে ডাকার অধিকার পেয়েছি আমি ২১ হতে, কবিতা পড়ে পুলকিত হইয়া অসাধারণ বলার স্পৃহা পেয়েছি ২১ হতে, সুকন্যা আমি তোমায় ভালবাসি বলে মনের অনুভূতি জানানোর সাহস পেয়েছি ২১ হতে, দেশের সার্থকতায় বাংলাদেশ বলে চিৎকার দেয়ার আনন্দ পেয়েছি ২১ হতে, /আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি / বলে দেশ কে আপন করে পেয়েছি ২১ হতে।

কবি একবার হাত কেটেছিল, অনেক রক্ত। কি যে কষ্ট। আর সালাম, জব্বার, রফিক উনারা কথা বার্তা ছাড়াই মাকে ওয়ালদা ( formal way to call mother in urdu ) না ডেকে মা ডাকার জন্য বুকের রক্ত দিয়ে দিলো। আহা কবি উনাদের না জানি কি কষ্ট হয়েছিলো।

আমিতো ৫২ সালের ২১ দেখিনি। ছোট বেলায় মা সব বলেছে। মা শিখিয়েছে গুরুজনদের সম্মান করতে হয়। যাদের জন্য মাকে মা ডাকতে পারি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতায় ২১ নং ক্রমিকে অবস্থান করেছি।"

কবি উত্তর শুনিয়া বলিলো, " বাঁচিয়া থাকুক ২১, বাঁচিয়া থাকুক /চির উন্নত মম শির/"

কথা থামাইয়া কবি বলিল, "

তবে তাই হোক, সুকন্যা কে ভালবাসি বলিবে ২১শে ফেব্রুয়ারী।"

প্রীত গলায় বলিলাম, "অবশ্যই কবি।"

মনে সুর বাজিতেছে, "ভালবাসি, ভালবাসি . . . "



১৬~

কবিকে কালো বস্ত্রে দেখিয়া সুধাইলাম, " কবি, বসন্তের পহেলা ফাগুনে বাসন্তী রং ছাড়িয়া কালো কেন?"

কবি কহিল, "যত দিন না পর্যন্ত শেষ রাজাকারের ফাঁসি না হয় তত দিন কালো বস্ত্র পড়িবার সিদ্ধান্ত লইয়াছি।"

কবিকে আবারো সুধাইলাম, "কিন্তু কবি আজ তো বসন্ত। ফাগুন আগুন হয়ে এসেছে গনজাগরনের মঞ্চে। ফাঁসি হওয়ার পর আজকের ফাগুনের আগুন রঙ্গা বাসন্তী আর পাইবেন না।"

কবি তার কবিত্ব বদনে কহিল, " শেষ রাজাকারের ফাঁসি যদি শীত কালেও হয় ঐ দিন আমার কাছে ফাগুন হয়ে আসিবে। সমগ্র বাংলায় ফাগুন হাওয়া বইবে। পাখিরা গাহিবে, সূর্য হাসিবে, পূর্ণিমার চাঁদ ব্যাধ ভাঙ্গিবে, চাঁদের বুড়ি চরকা কাটিবে। আমি সেই দিন বাসন্তী রঙ্গের বস্ত্র পড়িব আর মেঘ বালিকার হাতে হাত রেখে মায়ের কোলে গীত গাহিব, কবিতা লিখিব।"

কবি চলিয়া গেল জনতার সমুদ্রে।

আর আমার মধ্যে বোধ আসিল, ঐ দিন আমার আর সুকন্যার জন্য হবে " বাদল দিনেরও প্রথম কদম ফুল "

আমি সুকন্যার বিজয়ের ডাক শুনতে থাকি . . .

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.