নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজাকারমুক্ত ব্লগ : ভুলেও ঢুকিস না!!!

অতীত খুড়ি, খুঁজে ফিরি স্বজাতির গুলিবিদ্ধ করোটি

অমি রহমান পিয়াল

বন্ধুত্বে উদার, শত্রুতায় নির্মম : কিছু করার নাই, রাশির দোষ ........................ জামাতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবির সম্পর্কে মহানবীর (দঃ) সতর্কবাণী : শেষ জমানায় কিছু প্রতারক সৃষ্টি হবে। তারা ধর্মের নামে দুনিয়া শিকার করবে। তারা মানুষের নিকট নিজেদের সাধুতা প্রকাশ ও মানুষকে প্রভাবিত করার জন্য ভেড়ার চামড়ার পোষাক পড়বে (মানুষের কল্যাণকারী সাজবে)। তাদের রসনা হবে চিনির চেয়ে মিষ্টি। কিন্তু তাদের হৃদয় হবে নেকড়ের হৃদয়ের মতো হিংস্র। (তিরমিজী)

অমি রহমান পিয়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধে অন্তর্ঘাত পর্ব : খন্দকার মোশতাক আহমদ-২

২১ শে আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৪:০৭

আগের পর্ব



পরের পর্ব



৩.

ভরা মজলিশে মোশতাকের ডায়লগটি ছিলো বেশ নাটকীয় : আমাকে তুমরা সবাই মক্কায় পাঠায়া দাও। আমি সেখানেই মরতে চাই। আমি মারা গেলে আমার লাশ তোমরা বাংলাদেশে পাঠায়া দিও। দাউদকান্দির পীর হযরত খন্দকার কবিরউদ্দিন আহমেদের পূত্রের মুখে এই কথা শুনে সবাই বিভ্রান্ত হয়ে যান। আর তা কাটিয়ে দেন মুশতাকের অনুচররাই। তাদের মারফত জানা যায় নেতৃত্বের সিনিয়রিটি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী না হতে পেরে তিনি ক্ষুব্ধ। শেষ পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় হাতে পাওয়ার নিশ্চয়তা পেয়ে মক্কায় হিজরতের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন মোশতাক। পাশাপাশি পান আইন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বও।



চার বছর পর একই লোক তার অতিপ্রিয় কালো টুপি মাথায় কালো আচকান গায়ে চাপিয়ে শাহবাগের রেডিও বাংলাদেশ থেকে ঘোষনা দেন : প্রিয় দেশবাসী ভাই ও বোনেরা, এক ঐতিহাসিক প্রয়োজনে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের সত্যিকার ও সঠিক আকাঙ্খাকে বাস্তবে রূপদানের পুত দায়িত্ব সামগ্রিক ও সমষ্ঠিগতভাবে সম্পাদনের জন্য পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা ও বাংলাদেশের গণমানুষের দোয়ার উপর ভরসা করে রাষ্ট্রপতি হিসেবে সরকারের দায়িত্ব আমার উপর অর্পিত হয়েছে। ... খুনী সেনা কর্মকর্তা ফারুক-রশীদ-ডালিমদের সূর্য্যসন্তান আখ্যা দিয়ে মোশতাকের বক্তব্য শেষ হয় বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে। জয় বাংলার সঙ্গে যার নাম জপে এর আগের দিন পর্যন্ত মুখে ফেনা তুলেছেন, সেই বঙ্গবন্ধূর বুলেটবেঁধা লাশ তখনও পড়ে আছে ধানমন্ডী ৩২ নাম্বারের সিড়িতে।



দায়িত্ব পেয়েই বর্নচোরা তাবেদারদের নিয়ে গড়া মন্ত্রীসভায় আরো চমকপ্রদ এক আবদার আসে তার তরফে। মাথার টুপিটি খুলে টেবিলে রেখে বলেন : আমাদের জাতীয় পোষাক আছে তবে সেটা অসম্পূর্ণ। আমাদের মাথায় কোনো টুপি নাই। আপনারা যদি অনুমোদন দেন তাহলে এই টুপিটা আমাদের জাতীয় পোষাকের অন্তর্ভুক্ত করতে চাই...। প্রস্তাবটি পাশ হয়েছিলো। কার্যকর হয়নি সম্ভবত। তাহলে সবার মাথায় কালো টুপির মাধ্যমে মোশতাক অমর হয়ে থাকতেন। আর ৮১ দিনের দায়িত্বকাল পুরো হওয়ার শেষ দিকে তাজউদ্দিনের সঙ্গেও হিসেবটা চুকিয়ে নেন। রিসালদার মোসলেমউদ্দিনের নেতৃত্বে ৩রা নভেম্বর যখন জেলগেটে হম্বিতম্বি করছে, আতঙ্কিত জেলার ফোন করেন মুশতাককে- স্যার উনার তো কয়েদিদের খুন করতে চাচ্ছে। রাষ্ট্রপতির আদেশ আসে- ওরা যা করতে চায় করতে দিন। এক সারিতে দাড় করিয়ে চার জাতীয় নেতার মধ্যে তাজউদ্দিনই টানা ব্রাশফায়ারে মরেননি। রক্তের বন্যায় হেঁচকি তুলে একটু পানি চেয়েছিলেন। তার তেষ্টা মেটানো হয়েছিলো হৃদপিন্ডে বেয়নেটের গভীর মোচরে। সে হৃদয়ে বাংলাদেশ ছিলো।



৪.

সে যাত্রায় মোশতাককে বুঝিয়ে শান্ত করা হলো। ১৭ এপ্রিল এক গাড়িতেই নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মুজিব নগর গেলেন। হাসিমুখে ছবি তুললেন। ফিরলেনও। এরপর শুরু হলো তার সত্যিকার রাজনীতি- নোংরামী ও কূটচালে ভরপুর। আগরতলা, জলপাইগুড়ি, ত্রিপুরায় অবস্থানরত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের তাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলার জন্য পুরোশক্তি নিয়োগ করলেন তিনি। সেইসঙ্গে প্রচারণা চলতে থাকলো যে ভারত সরকারের কাছ থেকে সত্যিকার কোনো সাহায্য পাওয়ার আশা বৃথা। আমেরিকাই এই বিশ্বে মা-বাপ, তাদের অনুগ্রহ নিয়ে একটা সমঝোতায় আসাই ভালো। রক্তপাত যা হওয়ার হয়েছে, এখন শেখকে প্রধানমন্ত্রী করে একটা কনফেডারেশন গঠন করাই সবচেয়ে ভালো উপায়। তবে এই ক্ষেত্রে মোশতাক একাই নন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রীসভার বাকিসদস্যরাও (কামরুজ্জামান, মনসুর আলী) নিজেদের দাবি তুলে ধরতে লাগলেন। আর শেখ মনিতো ছিলেনই তার সবটুকু ঘৃণা নিয়ে।



ইতিমধ্যে তাজউদ্দিন তিনটি বড় কাজ করে ফেলেছেন- ভারতের মাটিতে প্রবাসী সরকারের রাজনৈতিক তৎপরতা চালানো, মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং ও অস্ত্র এবং একটি রেডিও স্টেশনের (স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র) মাধ্যমে সম্প্রচারের অনুমতি আদায়। কিন্তু পাশাপাশি খারাপ খবরও কম নেই। নিক্সন প্রশাসন ইন্দিরাকে চাপে রেখেছে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার ব্যাপারে। শেখ মুজিবের বিচারের তোড়জোড় চলছে। পাশপাশি পূর্ব পাকিস্তানে পছন্দের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরিকল্পনাও এগোচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতেই জুলাইয়ের শুরুতে (৫ ও ৬ তারিখ) আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন ডাকা হলো শিলিগুড়িতে।





এ বিষয়ে মঈদুল হাসান লিখেছেন : দেশের অভ্যন্তরে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করার উদ্দেশ্যে গৃহীত ব্যবস্হাদির ফললাভের আগেই নানা কারণে সন্দিহান, বিভক্ত ও বিক্ষুব্ধ প্রতিনিধিদের সম্মুখীন হওয়া তাজউদ্দিন তথা মন্ত্রিসভার জন্য খুব সহজ ছিল না। তার প্রমাণও পাওয়া গেল শিলিগুড়িতে নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং দলীয় নেতৃবৃন্দ সমবেত হওয়ার পর। পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচিত প্রায় তিন শত প্রতিনিধির এই সমাবেশে (অবশিষ্ট ১৫০ জনের মত নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিল পাকিস্তানিদের হেফাজতেই) অভিযোগ ও অপপ্রচারের স্রোতই ছিল অধিক প্রবল। প্রবাসী সরকারের সম্পদ ও সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতাই এদের অনেক অভিযোগের উৎস। আবার সরকারী ব্যবস্হাপনার কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতিও নিঃসন্দেহে ছিল সমালোচনার যোগ্য। কিন্তু এইসব অভাব-অভিযোগ ও ত্রুটি-বিচ্যুতিকে অবলম্বন করে কয়েকটি গ্রুপ উপদলীয় স্বার্থ উদ্ধারের জন্য মন্ত্রিসভার ব্যর্থতা, বিশেষত প্রধানমন্ত্রীর অপসারণের দাবীতে ছিল নিরতিশয় ব্যস্ত।



আওয়ামী লীগের ভিতরে একটি গ্রুপের পক্ষ থেকে তাজউদ্দিনের যোগ্যতা এবং তার ক্ষমতা গ্রহণের বৈধতা নিয়ে নানা বিরুদ্ধ প্রচারণা চলতে থাকে। কর্নেল ওসমানীর বিরুদ্ধেও এই মর্মে প্রচারণা চলতে থাকে যে, মুক্তিযুদ্ধ ব্যবস্হাপনায় তাঁর অক্ষমতার জন্যই মুক্তিসংগ্রাম দিনের পর দিন স্তিমিত হয়ে পড়েছে। ভারত সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা ছিল, মুক্তিযুদ্ধকে সাহায্য করার ব্যাপারে তাদের মৌলিক অনীহার কারণেই খুব নগণ্য পরিমাণ অস্ত্র তাদের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে, কূটনৈতিক স্বীকৃতির প্রশ্ন তারা নানা অজুহাতে এড়িয়ে চলেছেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষ পর্যন্ত তাদের সমর্থন লাভ করবে কিনা, তাও সন্দেহজনক। এই সব প্রচার অভিযানে ভারতের উদ্দেশ্য ও তাজউদ্দিনের যোগ্যতা সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টির ব্যাপারে তৎপর ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী খোন্দকার মোশতাক আহমদ। মন্ত্রিসভার বাইরে মিজান চৌধুরীও প্রকাশ্য অধিবেশনে প্রদত্ত বক্তৃতায় একই সন্দেহ প্রকাশ করে দলীয় সম্পাদকের পদ থেকে তাজউদ্দিনের ইস্তফা দাবী করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের এক নৈরাশ্যজনক চিত্র উপস্হিত করে বলেন এর চাইতে বরং দেশে ফিরে গিয়ে যুদ্ধ অথবা আপোস করা ভালো। কিন্তু এর কোন একটি চিন্তা বাস্তবে কার্যকর করার কোন উপায় তাঁর জানা আছে কিনা এমন কোন আভাস তাঁর বক্তৃতায় ছিল না।




কিন্তু সেখানে অসাধারণ এক বক্তৃতায় পাশার দান উল্টে দেন তাজউদ্দিন। বঙ্গবন্ধু কিংবা স্বাধীনতা কোনটিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে এই বিভ্রান্তিকে এক লহমায় উড়িয়ে দিয়ে বলেন : “আমরা স্বাধীনতা চাই। স্বাধীনতা পেলেই বঙ্গবন্ধুকে আমাদের মাঝে পাব। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যদি খোদা না করুন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু হয় পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে, তাইলে বঙ্গবন্ধু শহীদ হয়েও স্বাধীন বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে অমর ও চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন। তিনি একটি নতুন জাতির জনক হিসেবে ইতিহাসে স্বীকৃত হবেন। ব্যক্তি মুজিব, ব্যক্তি নজরুল, তাজউদ্দীন, কামরুজ্জামান কেউ হয়ত বেঁচে থাকবেন না। একদিন না একদিন আমাদের সকলকেই মরতে হবে। বঙ্গবন্ধুকেও মরতে হবে। আমরা চিরদিন কেও বেঁচে থাকব না।

আল্লাহর পিয়ারা দোস্ত, আমাদের নবী(সঃ) ও চিরদিন বেঁচে থাকেন নি। কিন্তু তিনি তাঁর প্রচারিত ধর্ম ইসলাম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সারা দুনিয়ায় আজ পরম শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। তেমনি, আমরা যদি বাঙ্গালী কে একটি জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠা করতে পারি, আমরা যদি বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক আরেকটি রাষ্ট্রের মানচিত্র স্থাপন করতে পারি, তাইলে সেই স্বাধীন জাতি এবং নতুন রাষ্ট্রের মানচিত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রভাত সূর্যের মত উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন।

আমরা যখন বাংলাদেশ ছেড়ে যার যার পথে ভারত চলে আসি, তখন কিন্তু জানতম না বঙ্গবন্ধু জীবিত আছেন, না শহীদ হয়েছেন। ভারতে এসে দেখা না হওয়া পর্যন্ত আমিও জানতাম না সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী কিংবা হেনা সাহেব(কামরুজ্জামান) জীবিত আছেন কিনা। আমি নিজেও বাঁচতে পারব এ কথাটি একবারও ভাবতে পারি নি। এখানে আসার পর যতক্ষন পর্যন্ত পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ঘোষনা না করেছে যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তাদের কাছে বন্দী আছেন, ততক্ষন পর্যন্ত আমি মনে করতে পারি নি তিনি জীবিত আছেন। পাকিস্তানি জল্লাদ বাহিনীর কামান, বন্দুক,ট্যাঙ্ক, মেশিনগানের গোলাগুলির মধ্যে বঙ্গবন্ধু আর বেঁচে নেই একথা ভেবে এবং সম্ভবত মেনে নিয়েই তো আমরা নিজ নিজ প্রাণ নিয়ে চলে এসেছি।

বঙ্গবন্ধু মুজিবের ছায়া হয়ে তার পাশে আজীবন রাজনীতি করেছি, জেলে থেকেছি। তিনি আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন দেশের জন্য জীবন দিতে। তিনি নিজেও বারবার বাংলার পথে প্রান্তরে বলেছেন, বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য জীবন দিতে তিনি কুন্ঠিত নন। আজ যদি বঙ্গবন্ধু মুজিবের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পাই, তাহলে সেই স্বাধীন বাংলাদেশের মধ্যেই আমরা পাব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কে। আমি নিশ্চিত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কিছুতেই পাকিস্তানিদের কাছে তার নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে আপোষ করবেন না, আত্মসমর্পন করবেন না এবং করতে পারেন না। এটাই আমার প্রথম ও শেষ বিশ্বাস।

বাংলাদেশ যদি আজ এত রক্তের বিনিময়েও স্বাধীন না হয়, তাহলে বাংলাদেশ চিরদিনের জন্য পাকিস্তানি দখলদারদের দাস ও গোলাম হয়ে থাকবে। পূর্ব পাকিস্তানীর মর্যাদাও বাঙ্গালী কোনদিন আর পাকিস্তানীদের কাছে পাবে না। প্রভুভক্ত প্রাণীর মত আমরা যতই আনুগত্যের লেজ নাড়ি না কেন, পাকিস্তানীরা পূর্ব পাকিস্তানীদের আর বিশ্বাস করবে না, বিশ্বাস করার কোন প্রশ্নই উঠে না। আর এই অধিকৃত পূর্ব পাকিস্তানে যদি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পাকিস্তানের প্রেসেডিন্ট হয়েও আসেন, তবু তিনি হবেন পাকিস্তানের গোলামীর জিঞ্জির পরান এক গোলাম মুজিব।

বাংলাদেশের জনগন কোনদিন সেই গোলাম শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলে গ্রহন করবে না, মেনে নিবে না। আমার স্থির বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর পাকিস্তানীদের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। বাঙ্গালী জাতির গলায় গোলামীর জিঞ্জির পরিয়ে দেবার পরিবর্তে তিনি নিজে বরং ফাঁসীর রজ্জু গলায় তুলে নেবেব হাসিমুখে। এটাই আমার বিশ্বাস। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে এটাই আমার ঈমান। এ মূহর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ছাড়া, আমাদের অস্তিত টিকিয়ে রাখার আর কোন বিকল্প নেই। বাঙ্গালীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কে বাঁচিয়ে রাখার জন্য স্বাধীনতা চাই। স্বাধীনতা ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর কোন অস্তিত্ব নেই, আর পরিচয় নেই। স্বাধীন বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। পরাধীন বাংলায় বঙ্গবন্ধু ফিরে আসবেন না। গোলামের পরিচয় নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অধিকৃত পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে আসবেন না কোন দিন। জীবনের বিনিময়ে হলেও আমরা বাংলাদেশকে স্বাধীন করব। পরাধীন দেশের মাটিতে আমার লাশও যাতে ফিরে না যায় সে জন্য জীবিতদের কাছে আর্জি রেখে যাই। আমার শেষকথা, যে কোন কিছুর বিনিময়ে আমরা বাংলার মাটিকে দখলদার মুক্ত করব। বাংলার মুক্ত মাটিতে মুক্ত মানুষ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে আমরা ফিরিয়ে আনব। মুজিব স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশেতে ফিরে আসবেন এবং তাকে আমরা জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে আনব ইনশাল্লাহ। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রাণ রক্ষার জন্য বিশ্ব মানবতার কাছে আমরা আকুল আবেদন জানাচ্ছি”




তাজউদ্দীন আহমেদের এই আবেগময়ী ভাষণের পর জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানে শিলিগুড়ি কনফারেন্স গর্জে উঠেছিল। নিষ্পত্তি হয় একটি বিভ্রান্তিমূলক ও আত্মঘাতী ষড়যন্ত্রের। তবে সেটা ক্ষনিকের জন্য। (চলবে)



সূত্র :

একাত্তরের রণাঙ্গন কিছু অকথিত কথা (নজরুল ইসলাম)

মূলধারা '৭১ (মঈদুল হাসান)

বাম রাজনীতির ৬২ বছর (ফাইজুস সালেহীন)

ক্রাচের কর্ণেল (শাহাদুজ্জামান)

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +২২/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৫:৪০

আবদুর রাজ্জাক শিপন বলেছেন:
পড়ছি ।

২১ শে আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৫:৫৩

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২১ শে আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৫:৫৬

পুতুল বলেছেন: খুব ভাল একটা কাজের জন্য অভিনন্দ বস।

২১ শে আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৬:০৪

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা

৩| ২১ শে আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১০:৪৪

ধূসর মানচিত্র বলেছেন: আপনার এই লেখা পড়লে যা আমরা সাধারণরা জানিনা তা জানতে পারি, অপেক্ষায় রইলাম পরের পর্বের জন্য।

২১ শে আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৪:০৮

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: আচ্ছা

৪| ২১ শে আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১:০৪

দ্বিতীয়নাম বলেছেন: আসলেই সামহোয়ার পোতাইয়া গ্যাছে :||
পুরান পাবলিক হিসাবে অনিবার্য পতনটা ভাললাগতাছে না:(

২১ শে আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৪:১১

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: বুঝছি আপনে ক্যান কইতেছেন। আসলে ওই পাড়ায় লোক আর্গুমেন্টিভ, ভুল জানলে জিগাইয়া ক্লিয়ার হয়

৫| ২১ শে আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৪:২৯

জানজাবিদ বলেছেন: অনেক কিছুই নতুন আমার কাছে। ভাল একটা কাজ করছেন সেজন্য অভিনন্দন।

জাস্ট একটা কথা বলতে চাই সবার চিন্তার খোরাকের জন্য। যে বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দীনের মত বিশ্বস্ত সাথীকে দূরে সরিয়ে দিয়ে মোশতাকের মত পরীক্ষিত বেঈমানকে কাছে টেনে নেন তাঁর কপালে মরণ তো আসবেই। '৭৫ এ না আসলে '৭৬ এ আসতো, একদিন না একদিন আসতোই।

২১ শে আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৪

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: আচ্ছা, এইটার পেছনের গল্পটাও আপনাকে একদিন শোনাবো। যতোটা সিমপ্লিফাই করলেন, অতোটা সরল ছিলো না ব্যাপারটা

৬| ২১ শে আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৫:৩৬

জানজাবিদ বলেছেন: ধন্যবাদ এগেইন!

অপেক্ষায় থাকলাম। ইদানিং আমার ব্লগে বেশী বেশী পোস্টাইতাছেন। এই দিকে আমরা যারা আছি তাগোরে আবার ভুইলা যাইয়েন না। :)

২১ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ৮:২৬

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: এইটা এমন বড় কিছু না আসলে। প্রথাগত ধন্যবাদ ও ভালো হইছে মন্তব্যের বাইরে মাঝেমাঝে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করতে মন চায়। আমার ব্লগে সেই পরিবেশটা আছে

৭| ২১ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ৯:১৫

আকাশ_পাগলা বলেছেন: লেখক বলেছেন: আচ্ছা, এইটার পেছনের গল্পটাও আপনাকে একদিন শোনাবো। যতোটা সিমপ্লিফাই করলেন, অতোটা সরল ছিলো না ব্যাপারট

এই গল্পটা শুনতে অনেক বেশি আগ্রহী।

পোস্টটা থেকে অনেক কিছু জানলাম। কাহিনীর ভিতরে আসলে কত যে কাহিনী থাকে।

২১ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ৯:৩৬

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: আচ্ছা শোনাবো নিশ্চয়ই। তাজউদ্দিনকে নিয়েও একটা সিরিজ লেখার ইচ্ছে আসে। সেখানে নিশ্চয়ই আসবে এসব কথা

৮| ২২ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৪১

গাই অব গিসবর্ন বলেছেন: ষ্টার্টিং খুবই মনপুত: হয়েছে...ত্যানার মস্তবড় ছবিটাও একখানি উপজীব্য! লেখা চলুক...পুস্তকাকারে ছাড়েন ভাই।

২২ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:০২

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: ইচ্ছা আছে, ধন্যবাদ

৯| ২২ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:১৬

হাসান বায়েজীদ বলেছেন: গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়ছি। মহিশুরের মীস সাদিক, পলাশীর মীরজাফর আর খন্দকার মোশতাককে এক রেখায় দাড় করিয়েছে ইতিহাস। এই জারজটার মুখে কেবলই থুথু...

২৩ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ৯:৫৩

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: কেবলই থুথু... সহমত

১০| ২২ শে আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১০:০৯

রোহান বলেছেন: মোশতাকের বাসায় থুতু নিক্ষেপ উৎসব করছে এলাকাবাসী, দেখছিলেন নাকি টিভি রিপোর্ট টা :)

আফসোস জীবিত মোস্তাকের মুখে থুথু ফেলা গেলো না... আশা করি ডালিম, রশীদ এদের মুখে থুথু ফেলার সুযোগ হারিয়ে যাবে না...

চমৎকার লেখা পিয়াল ভাই, পরের পর্বের অপেক্ষায়...

২৩ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ৯:৫৮

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: নারে ভাই দেখা হয় নাই। হয়ে থাকলে দারুণ ঘটনা। শেয়ার করেন প্লিজ।
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা কষ্ট করে পড়ার জন্য

১১| ২৩ শে আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৫:৩০

ফারুক চৌধু্রী বলেছেন: সিরিজটা পড়লাম বস । বাকি পর্বের অপেক্ষায়

২৩ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ৯:৫৯

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: ধন্যবাদ, আসছে

১২| ২৩ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ৯:৫৬

বিষাক্ত মানুষ বলেছেন: ঐপাড়ায় পর্ছি আগে .. চলুক পিয়াল ভাই

২৩ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:০৩

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: আশ্চর্য্যের ব্যাপার হইলো এই পাড়ায় হিট বেশী, ওই পাড়ায় আলোচনা। দুইটাই উপভোগ্য যদিও, কিন্তু আমার কাছে আলোচনাই বেশী প্রাধান্য পায়

১৩| ২৩ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:০৬

হাসান বায়েজীদ বলেছেন: হজ্ব করতে গেলে আবু জাহেলের বাড়িতে (নির্ধারিত) নাকি পিশাব করে মাইনষে(একটা অলিখিত রীতি), ১৫ আগষ্টে মোশতাকের বাড়িতে পিশাবের ব্যবস্থা করলে কেমুনয়?

ডিসক্লেইমার:(১০ নং কমেন্টে রোহানের মন্তব্য দ্বারা অনুপ্রানীত)......;)

২৩ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:২৮

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: হাহাহাহা, আইডিয়া জটিল, তয় ওইখানে তো অন্য মানুষ থাকে

১৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:৩৭

ধূসর মানচিত্র বলেছেন: আমি মোস্তাকের গ্রামের বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে ১৯৯৬ সালের দিকে যাচ্ছিলাম । তখন রিক্সাওয়ালা আঙ্গুল দিয়ে আমাকে দেখিয়ে বললঃ ঐখান মোস্তাকের বাড়ি। আমি বললামঃ আসেন ছেপ(কুমিল্লার আঞ্চিলক ভাষা-থুথুর) মারি। তারপর রিক্সা থামাই দুই জন সজোরে ছেপ ছাড়লাম।

বায়েজিদ ভাইয়ের কমেন্ট পড়ে আমার নিজের ঘটনা মনে পড়ল।

২৪ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:৪৩

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: আপনারে স্যালুট, টুপি খুইল্যা

১৫| ২৬ শে আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১:০০

সুবিদ্ বলেছেন: @ধূসর মানচিত্র.....আমিও স্যালুটা করি আপনাকে......

১৬| ২৬ শে আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১:০৬

রোহান বলেছেন: পিয়াল ভাই এই ১৫ই আগষ্ট মোশতাকের বাড়ি যেখানে সেই এলাকাবাসী গন হারে থুতু উৎসব করেছে। ঐ বাড়িতে নাকি মোশতাকে ছেলে থাকে তবে তারা কারও সাথে মেশে না, একঘরে টাইপ অবস্থা। এটিএন বাংলায় এই নিয়ে একটা রিপোর্ট করেছিলো, ১৫ আগষ্টের নিউজে, ভিডিও খুঁজে পেলাম না :(

তবে হ্যাক থু করে এতো মানুষ যখন বাড়ির নেমপ্লেটে মোশতাক নামের উপরে থুত দিচ্ছিলো তখন বেপক আনন্দ বোধ করেছিলাম :)

২৬ শে আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫২

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: আহারে, এই জিনিসের ফুটেজ নাই! :(

১৭| ২৮ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৪৪

মেঘ বলেছেন: বস্, অশেষ ধন্যবাদ। জানা জিনিস বারবার জানা যায়। ভালো লাগে। আহা তাজ সাহেবের এই বক্তৃতা যতবার পড়ি ততোবার মনে হয় আমি এঁদের উত্তরসূরী।
বস্‌, ভালো থাকবেন।
ছেলেপেলেদের এগুলো জানা অনেক দরকার।
আপনি অনেক বড় একটা কাজ করে চলেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ।

২৮ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:৫৭

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনারেও

১৮| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৫০

এ. এস. এম. রাহাত খান বলেছেন: জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু......................................... অনেক ধন্যবাদ... তাজের এই বক্তব্যটি পড়া ছিল না... গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেছে...

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:০৪

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: চরম একটা বক্তৃতা। ধন্যবাদ পড়ার জন্য

১৯| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:০৬

আমি স্যাম বলেছেন: বলা হয় বাঙালী জাতির অস্তিত্ব হাজার বছরের। সেই হাজার বছরে করা সব পূণ্যের প্রতিদান ছিলেন তাজউদ্দীন। সত্যি যদি স্বর্গ বলে কিছু থাকে তিঁনি যেন তাই পান।

তাজের এই বক্তব্যটি পড়া ছিল না... গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেছে...
আমারও..............

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.