![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি এক ছোট্ট ছেলে সারাজীবন এভাবেই ছোট থাকতে চাই! এখন থেকেই ছোট ছোট স্বপ্ন নিয়ে আমার ছোট্ট বুকটা বেঁধেছিলাম কিন্তু স্বপ্ন দেখলেইযে তা বাস্তব হবে এমনতো কোনো কথা নেই..!!! স্বপ্ন পুরনের সুযোগ আল্লাহতো আমাকে নাও দিতে পারে..!!! হুমম.... আমার জীবনটা এমনই... শুধু স্বপ্নই দেখতে শিখেছি,পুরন করতে নই.! দুনিয়াইতো আর দুঃখি মানুষের অভাব নাই! আমিও হয়তো তাদেরই একজন! এরপরও ভালোই আছি.. .. কারণ কিছু ভালো বন্ধু এখনও আমার পাশে আছে.! ওদের জন্যই সব দুঃখ ভুলে এখনও প্রাণ খুলে হাসতে পারি! স্বপ্ন দেখি সুখী মানুষ হওয়া
তখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি। মনে পড়ে বাবা প্রতিদিন আমাকে ৫ টাকা দিতেন টিফিন খরচ হিসাবে। আর আমি সেই ৫ টাকা পেয়ে কি যে খুশি হতাম, তা লিখে বুঝানো যাবে না। কোন দিন যদি বাবা ভুল করে বাসায় টাকা না রেখে যেতেন তাহলে বাবার দোকানের সামনে মুখটি মলিন করে দাড়িয়ে থাকতাম। বাবা ঘটনা বুঝে আমার টিশার্টের বুক পকেট এ ১০ টাকা দিয়ে মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলতেন, যাও বাবা জরিমানা সহ তোমার টাকা দিলাম, এবার তো স্কুলে যাও। বাবার কথাটি শুনেই ঈদের মতো খুশি হয়ে স্কুলে যেতাম।
আমার কিছু বন্ধুরা ১০০ / ২০০ টাকা নিয়ে স্কুলে আসতো। কিন্তু আমার কাছে বাবার দেওয়া সেই ৫ টাকা ১০০ বা ২০০ টাকার মতোই লাগতো। ছোটবেলা থেকেই অল্পেতেই খুশি হবার অভ্যাস আছে বলেই হয়ত কস্ট টাও কম।
আমার এক বন্ধু ছিলো অনেকটা আমার মতোই। প্রতিদিন আমার বাবার মতো ওর বাবা ৫ টাকা না দিলেও ১০/১৫ টাকা ঠিক ই দিতো। ও আর আমি মিলে প্রতিদিনই টিফিন সময়ে একসাথে সিঙ্গারা খেতাম। মাঝে মাঝে আমার কাছে টাকা না থাকলে ও আর আমি ভাগাভাগি করে খেতাম।
সত্যি বলতে আমার কাছে যখন ৫ টাকা থাকতো তখন মনে হতো আমি অনেক ধনি।
আজ আমার বাবা এ পৃথিবীতে বেঁচে নেই।
আজ আমি অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র। বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তখন আমি সবে ৭ম শ্রেণীতে পড়ি। যেদিন বাবা চলে যায় ওইদিন অনেক বন্ধুদের শার্ট নস্ট করেছি আমার চোখের পানিতে। আমার মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়েছিলো তখন। কী করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ঠিক তখন ই ওই বন্ধু ই আমার ভরষার কাঁধ হয়ে উঠে। প্রতিদিন আমার পরিবারের খোজ নেওয়া, প্রতিদিন জোর করে নামাজে নেওয়া ওর একটা অভ্যাস ছিলো। টাকার দিক থেকে আমি অসচ্ছল ছিলাম না। কিন্তু মানুষিক শান্তি পেতাম না কারো কাছে। ওর কাছেই খুজে পাতাম এক রাশি হাসির ঝুলি।
নিজের থেকেও বেশি মিল পেতাম ওর সাথে। তাই আরো কাছে টেনে নিলাম ওকে। আর দশটা বন্ধুত্বের মতো আমাদের মধ্যে ও জগরা, মারামারি, কথা কাটা-কাটি লেগেই থাকতো। ঠিক টম এন্ড জেরীর মতো। কিন্তু বেলা শেষে কখনো ও সরি বলতো আর কখনো আমি। খুবই ভালোই দিন কাটছিলো আমাদের দিনগুলি।
আজ ১৩ ই অক্টবর। আমার বাবা আজকের দিনে আমাদের ছেরে চলে গিয়েছিলেন। আর কি কাকতালিয় ভাবে আমার প্রিয় ওই বন্ধুটির জন্মদিনটাও আজ। আবার আজ ও আমার পকেট এ করকরে একটা ৫ টাকার নোট। একদিকে পিত্রি শোক অপর দিকে বন্ধুর হাসিমুখ। কি বিচিত্র এই প্রথিবী।
গলপ নয়ন মিয়া।
শখের লেখক ওমর আল হাসান......
©somewhere in net ltd.