নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন মুক্ত মনের অধিকারী মানুষ। কোন কিছু একতরফা চিন্তা না করে উভয় সাইট থেকে চিন্তা করি ।

আমি একজন মুক্ত মনের অধিকারী মানুষ। কোন কিছু একতরফা চিন্তা না করে উভয় সাইট থেকে চিন্তা করি ।

মুক্তমনা ওমর

আমি একজন মুক্ত মনের অধিকারী মানুষ। কোন কিছু একতরফা চিন্তা না করে উভয় সাইট থেকে চিন্তা করি ।

মুক্তমনা ওমর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার প্রথম রক্তদান ও কিছু কথা

০২ রা আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৮

আমরা যারা স্কাউট করি বা করতাম, সবাই কম বেশি রক্তদানের সাথে জড়িত । আমরা সবাই এতই রক্তদান করি যে রক্তদান বিষয়টা আমাদের কাছে তেমন একটা অবাক হওয়ার মত বিষয় নয়। তারপরেও কিছু লেখার বিষয় না পেয়ে আমার জীবনের প্রথম রক্তদান নিয়ে লিখতে বসলাম। জানি এই লেখা পড়ে অনেকে হাঁসবে।


স্কুলে পড়ার সময় দেখতাম বড় ভাইয়া ও আপুরা স্বেচ্ছায় রক্ত দান করছে। কারো রক্তের দরকার হলে অনেকে রক্ত দিতে এগিয়ে আসছে। ক্লাসে স্যারের কাছ থেকে রক্ত দানের বিষয়ে অনেক কিছু জানলাম । বিজ্ঞান বই এ রক্ত নিয়ে একটা অধ্যায়ও আছে এবং যেখানে রক্ত নিয়ে বিস্তারিত তথ্যও আছে। সেখান থেকে জানলাম যে মানুষের রক্ত প্রতি চার মাস পর পর মারা যায় এবং নতুন রক্ত জন্ম নেই। তাই মানুষ চার মাস পর পর রক্ত দিতে পারে। আর রক্ত না দিলেও তার রক্ত চার মাস পর এমনিতেই মারা যায়। তাই রক্ত মারা যাবার আগে যদি তা অন্যকে দান করা হয় তাতে একজন মানুষের জীবন বাঁচে। ফলে রক্ত দানের মাধ্যমেই মানুষের রক্তের সর্বোত্তম ব্যবহার সম্ভব। তাছাড়া রক্ত দানে কিছু উপকারিতাও আছে যা আমরা স্কাউটরা খুব ভাল ভাবে জানি। যারা রক্তদান করে তাদের রক্ত পাঁচটি মারাত্মক রোগ যেমন এইচ.আই.ভি , হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েড ইত্যাদি রক্ত বাহিত রোগের স্ক্যান করা হয়। ফলে রক্ত দাতারা নিশ্চিন্ত হতে পারে যে তার রক্তে এই সকল রোগ নেই। এই সকল রোগ নির্ণয় এর জন্য মেডিকেল টেস্ট করতে গেলেও হাজার খানেক টাকা নষ্ট হত যা রক্ত দানের মাধ্যমে বিনামূল্যে টেস্ট করা সম্ভব হচ্ছে। তাছাড়া যে নিয়মিত রক্তদান করে সে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হলে এবং তার প্রচুর রক্তপাত ঘটলেও সে সহজে মারা যায় না। কারণ তার দেহ চার মাস পর পর রক্ত দানে অভ্যস্ত।


প্রথম যখন রোভার স্কাউট হিসেবে জয়েন করি তখন আমার ওজন জনিত সমস্যা ছিল। আমার উচ্চতা ৫'-৮" হলেও ওজন ছিল ৫০ কেজির কম। সারাদিন বাহিরে বাহিরে থাকার ফলে দুপুরের খাবার কখনও ঠিক মত খাওয়া হত না। ফলে আমি অনেক শুকনা ছিলাম। রক্তদানের ইচ্ছা থাকার পরেও আমি রক্তদানে সক্ষম ছিলাম না। কয়েকবার রক্তদান করতে গিয়েও রক্ত না দিয়ে ফিরে আসি। প্রথম বার রক্ত দিতে যায় আমার এক বন্ধুর বাবার জন্য। উনার অপারেশনের জন্য রক্ত দরকার। আমাকে যখন বলল তখন আমি সাথে সাথে রাজি। প্রথমবার রক্ত দিতে পারব সেই আনন্দই-বা কম কি? রক্ত দিতে গিয়ে দেখি রক্তদাতার অভাব নাই। আমার রক্তের গ্রুপ খুবই কমন (B+) হওয়াই রক্তদাতার অভাব হয়না। রক্ত দেওয়ার জন্যও আমাকে অনেকটা লাইনে দাঁড়াতে হল। ডাক্তার আমার স্বাস্থ্য খারাপ দেখে আমাকে রিজার্ভে রাখলেন। যদি আরও রক্ত দরকার হয় তবে আমাকে ব্যবহার করবে। আমাকে অপারেশন পর্যন্ত হাসপাতালে অপেক্ষা করতে বলা হল। আমার মত আরও দুইজন রক্তদাতাও হাসপাতালে রক্তদানের জন্য অপেক্ষা করছিল। ৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর আমার বন্ধু এসে জানালো আর রক্তের দরকার নেই। আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় করে দিল। জীবনের প্রথমবার রক্ত দিতে গিয়েও ফিরে এলাম।


তারপর অনেকদিন কেটে গেল। একদিন রোভার স্কাউট ডেন (স্কাউট অফিস) থেকে ফোন এলো রক্ত দানের জন্য। তখন আমার কলেজের টেস্ট পরীক্ষা চলছিল। আমি ভয় পাচ্ছিলাম, আমার যা স্বাস্থ্য যদি দুর্বল হয়ে পরি তখন পরীক্ষা দিব কি করে ? তাছাড়া রক্ত দিতে গেলে অনেক সময়ও নষ্ট হয়। পরীক্ষার আগে সময় নষ্ট করার কোন মানে হই না। তাছাড়া স্কাউটিং আমাদেরকে স্রষ্টার পর নিজের সেবার কথা শেখায়। তারপর পরের সেবা। নিজের ক্যারিয়ার গড়তে না পারলে পরের উপকারও করা সম্ভব হবে না। তাই প্রথমে না করলাম। পরে আমাদের রোভার স্কাউট লিডার ফোন করে জানালেন আমাদের কলেজের এক ম্যাডামের স্বামী অসুস্থ, তার অনেক ব্যাগ রক্ত দরকার। তাই স্যার অনুরোধ করলো রক্ত দিয়ে চলে আসতে। শত হোক স্যারের কথা তো আর অমান্য করা যায় না। আমি ম্যাডামকে ফোন করে জানালাম যে আমি রক্ত দিতে রাজি আছি। কিন্তু পরীক্ষা থাকার কারণে আমি আগে আগে রক্ত দিতে চাইলাম। কিন্তু পরীক্ষার কথা শুনে ম্যাডাম আমাকে রিজার্ভে রাখলেন। খুব বেশি রক্তের প্রয়োজন না হলে আমাকে ডাকাবেন না বললেন। আমাকে পরীক্ষার জন্য পড়ালেখা করতে বললেন। পরে উনি আমাকে আর ডাকলেন না।


পরবর্তীতে খাওয়াদাওয়ায় খুব বেশি পরিমাণের অনিয়মের কারণে আমার শারীরিক অবস্থা রক্তদানের জন্য উপযোগী ছিল না । তাই ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও বেশ কিছু বছর রক্তদান করতে পারিনি। এমন কি রোভার ডেনে রক্তদাতাদের তালিকা থেকে আমার নাম প্রত্যাহার করি। ২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে আবার স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেওয়া শুরু করি। তখন স্বাস্থ্য স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে রোভার ডেনের রক্তদাতাদের তালিকায় নিজের নাম আবার লেখায়। অপেক্ষা করতে থাকি রক্তদানের জন্য।


রক্তদান করতে না পারাও আমার জন্য খুবই অপমান জনক মনে হচ্ছিল। শুধু অপেক্ষায় ছিলাম কবে এই অপমান থেকে মুক্তি পাব। অনেক রোভারই "ব্লাড ব্যাংক" নামে একটি কোর্স করেছেন বা বিভিন্ন স্কাউট অনুষ্ঠানে ব্লাড ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। রক্তদানকে উত্সাহিত করার জন্যই এই ধরণের কোর্সের আয়োজন করা হয়। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল এই ধরণের কোর্স তিন চারবার করার। ঢাকা জেলা রোভারের উদ্যোগে দুইবার এবং রেডক্রিসেন্টের উদ্যোগে কয়েকবার এই ধরণের কোর্স করি। ফলে আমি রক্তদানের ব্যাপারে খুবই উত্সাহিত ছিলাম। আমার পরিচিত কেউ রক্তদান না করতে চাইলে, তাকে বোঝাতাম রক্তদানের উপকারিতা। তখন অনেকে বলে বসতো, "রক্তদানে এতই যখন উপকার তা তুমি কয়বার রক্ত দিয়েছ ?" তখন লজ্জায় আমার কিছু বলার থাকতো না। তাই মনে প্রাণে অপেক্ষা করছিলাম কবে রক্ত দিতে পারবো।


রোভার ডেনে রক্তদাতাদের তালিকায় পুনরায় নাম লেখানোর কয়েকদিনের মাথায় রোভারের এক বড়ভাই জানালেন যে ১৫-২০ দিন পর তার ভাগ্নির অপারেশনে রক্ত দরকার। আমি যেন আবার কাউকে রক্ত না দিয়ে ফেলি তাই আগে থেকে জানিয়ে রাখলেন। আমার এই ভেবে ভাল লাগছিল যে রোভারের এক বড় ভাইকে উপকারও করা হবে এবং আমার জীবনের প্রথম রক্ত দেওয়াও হয়ে যাবে। আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম এবং এক সময় ভুলেও গেলাম। দুই মাস পর ঐ বড় ভাইয়ের সাথে দেখা হলে তার ভাগ্নির কথা জিজ্ঞাসা করি। তখন জানতে পারি যে এক মাস আগে তার ভাগ্নির অপারেশন হয়েছিল এবং এখন সুস্থ আছে। ঐ সময় খুব বেশি রক্তের প্রয়োজন না হওয়াই উনার আত্মীয়রাই রক্ত দিয়েছে। আমার রক্তের আর দরকার হয় নাই। আমি আবারও হতাশ হলাম। দেশে B+ রক্তের মানুষ বেশি বলে আমি রক্ত দিতে চাইলেও রক্তদানে সুযোগ কম পাচ্ছিলাম।


পরে চিন্তা করলাম রক্ত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে রক্তদান দান করবো। কিন্তু হাই স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রম আর খোঁজে পাচ্ছিলাম না। ভাগ্য যখন খারাপ থাকে তখন কিছু চাইলেও পাওয়া যায় না। অন্য সময় রক্তদানের জন্য ডাকা ডাকি করে কিন্তু দেওয়া হয় না। আমার এক বন্ধু "বাঁধনের" সাথে জড়িত। তার কাছে জানলাম যে বিভিন্ন উপলক্ষকে কেন্দ্র করে তাঁরা স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে। সামনে আয়োজন করলে আমাকে জানাবে। তাছাড়া আমি চাইলে রেডক্রিসেন্ট বা কোয়ান্টামের হেড অফিসে গিয়ে রক্তদান করে আসতে পারি। সেখানে রক্তদানের কিছু সুবিধাও আছে। তারা রক্তের রিপোর্ট বাসায় পাঠিয়ে দেয়। এ ছাড়াও একটি মেম্বার-শিপ কার্ড দেয়। এই কার্ড দিয়ে প্রয়োজনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রক্ত সংগ্রহ করা যায়। এ ছাড়াও বেশিবার রক্ত-দানকারীদেরকে ডেকে পুরষ্কার প্রদান করা হয় ইত্যাদি।


আমি রেডক্রিসেন্ট বা কোয়ান্টামে যাব যাব করেও আরও কয়েক মাস পার করে দিলাম। ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসের ১৯ তারিখ আমার ২৫ বছর পূর্ণ হয়। (যদিও আমার সার্টিফিকেট অনুসারে বয়স তখন ছিল ২৩ বছর।) জন্মদিনের দিন বিকালে জানতে পারলাম যে আমার এক বন্ধুর মা রক্ত স্বল্পতায় ভুগছে। উনার জন্য রক্তের প্রয়োজন। আমি মনে মনে খুবই খুশি হলাম যে, আমার ২৫ বছর পূর্তিকে রক্তদানের মাধ্যমে স্মরণীয় করে রাখতে পারবো। তাই বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলাম কবে রক্ত লাগবে ? সে জানালো দুইদিন পর। আমি আবারও অপেক্ষা করতে লাগলাম। মনে মনে ভাবতে লাগলাম ২৫ বছর হয়ে গেল, এখনও যদি কোন কারণে রক্ত দিতে না পারি তবে আর মান সম্মান থাকবে না। তাই বন্ধুকে ফোন করে জানিয়ে রাখি যে, আমি ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে যেন রক্ত না নেই। দুইদিন পর ফোন করে জানতে পারি যে ডাক্তার নাকি আরও দুইদিন পর রক্ত নিতে বলেছে। আমি হতাশ হতে থাকি, না জানি এবারও মিস করি কিনা। আরও দুইদিন পর সকালে আমার বন্ধু আমাকে ফোন করে জানায় যে দুপুরে রক্ত লাগবে। আমি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে দুপুরে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে আসি রক্ত দিতে। খাওয়ার পর রক্ত দেওয়া যায় না বলে হালকা নাস্তা করে নেই। তারপর কয়েক গ্লাস পানি খেয়ে নেই। ডাক্তার আমার ওজন ও পেশার মাপার পর রক্ত পরীক্ষা জন্য সিরিঞ্জ দিয়ে সামান্য রক্ত নেই। আমি অপেক্ষা করতে থাকি আমার রক্তে কোন সমস্যা আছে কি না তা জানার জন্য। কিছুটা অস্থিরতাও আমার মধ্যে বিরাজ করছিল। অপেক্ষা বিষয়টা আসলেই খুবই কষ্টকর। তখন সময় যেন কাটতেই চাচ্ছিল না। প্রতিটা মিনিট মনে হচ্ছিল এক একটি ঘণ্টা। আমার মনের অস্থিরতা যেন আমার বন্ধু বোঝতে না পারে সেই জন্য নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করছিলাম। রোগীর বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু করলাম। ১০ মিনিট পর ডাক্তার আমাকে পাশে রক্তদান কক্ষের বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরতে বললেন। আমি বোঝতে পারলাম যে আমার রক্তে কোন সমস্যা নেই। আমি গিয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরলাম। আমার ডান হাতে সমস্যা আছে বলে আমি ডাক্তারকে বাম হাত থেকে রক্ত নিতে অনুরোধ করলাম। তখন সুই এর ভয় মনের মধ্যে কিছুটা কাজ করছিল। মনের জোর বাড়াচ্ছিলাম। অনেকের কাছে শুনেছি সুই এর গুঁতা পিঁপড়ার কামড়ের মত ব্যথা লাগে। জীবনে কত পিঁপড়ার কামড় খেলাম তার কোন হিসাব নাই। আজকে না হয় আরও একবার ব্যথাই পেলাম। এসব চিন্তা করতে করতেই হালকা একটু ব্যথা লাগলো। মনে হল সুই ঢোকানোর আগে কোন কিছু দিয়ে চাপ দিল নাকি ? কিন্তু না; চাপ দেয়নি বরং সুই ঢোকায়ে দিয়েছে। আমি আসলে যতটা ব্যথা পাব চিন্তা করেছিলাম ততটা না পাওয়াই এই সামান্য ব্যথাকে সুই এর ব্যথা বলে মনে হয়নি। ডাক্তার আমার হাত মুঠ করতে ও খোলতে বলল যে রক্ত চাপ বৃদ্ধি পায়। কাজটা খুব মজার মনে হল। অনেকটা গ্রামের চাপ কলের পানি উত্তোলনের মত। যত বেশি জোরে চাপ দেওয়া হয় তত বেশি পানি উঠে। কিছুক্ষণ চাপাচাপির পর রক্তের ব্যাগ ভরে গেল। আমি রক্তের ব্যাগের দিকে তাকালাম। অনেকটা কালচে লাল রঙ। আমি অনেকবার হাত, পা ইত্যাদি কাটার কারণে আমার রক্ত দেখেছি। তখন কিন্তু এতটা লাল মনে হয়নি। ডাক্তার এসে আমার হাত থেকে সুই বের করলেন। একটা তুলাতে কিছু মেডিসিন মিশিয়ে আমার সুই ফোটানোর স্থানে ডলতে বললেন। কিছুক্ষণ ডলার পর একটা ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিলেন। দশ পনের মিনিট শুয়ে থাকতে বললেন। রক্ত দেওয়ার পর আমার কাছে খুবই স্বাভাবিক লাগছিল। আমাদের অনেক সময় বেশি কেটে গেলে রক্ত পাতের পর বেশ ক্লান্ত লাগে। এখন বোঝতে পারছি কেন ক্লান্ত লাগে। আসল ব্যাপার হচ্ছে, যতটা না রক্তপাতের কারণে ক্লান্ত লাগে, তার চেয়ে বেশি লাগে ভয়ে। রক্তকে আমরা ভয় পায়। আর ভয়ে আমরা মানুষিক ভাবে দুর্বল হয়ে পরি বলে ক্লান্ত লাগে। যেহেতু রক্ত দেওয়ার পর আমার কোন সমস্যা হচ্ছে না, তাই আমি অফিসে যাওয়ার জন্য বিছানার থেকে উঠে বসলাম। কিন্তু ডাক্তার নিষেধ করলেন। বললেন রক্ত দেওয়ার পর শরীরকে কিছুটা সময় দিতে হয় স্বাভাবিক হওয়ার জন্য। অনেকটা দুপুরে ভাত খাওয়ার পর বিশ্রামের মত। আমি বিশ মিনিট বিশ্রাম করলাম। তারপর উঠে চলে আসার সময় আমার বন্ধু জানালো তার মার সাথে দেখা করে যেতে। আমি আন্টির সাথে দেখা করতে গেলাম। আন্টি আমাকে কি বলে কৃতজ্ঞতা জানাবেন তার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। আমাদের দেশে অনেক বয়স্ক মানুষের কাছে এখনও রক্তদান একটি বিশাল ব্যাপার। অনেক কাছের মানুষের কাছে রক্ত চাইলেও নানা অজুহাত দেখিয়ে রক্ত দিতে চাই না। তাই উনি আমাকে কি দিবেন তা নিয়ে অস্থির হয়ে পরলেন। আমি কিছুই নেয়নি। আমার কাছে মনে হচ্ছিল উনি রক্ত দানের প্রতিদান দিতে চাচ্ছেন। আমি উপকার করে কখনও প্রতিদান আশা করি না। আর আমার রক্তের মূল্য এত সস্তা নয় যে তার কোন প্রতিদান হতে পারে। তাই আমি আন্টির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে অফিসে চলে আসি। এই ছিল আমার প্রথম রক্তদানের কাহিনী। প্রথম রক্তদান করতে আমাকে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হলেও এক বছরের মধ্যে আরও দুইবার রক্তদানের সুযোগ পাই। এর পরের পোস্টে আমার দ্বিতীয়বার রক্তদানের কাহিনী নিয়ে লিখবো। সবাই নিশ্চয় আমার লেখা পড়ে বিরক্ত হয়েছেন। মনে মনে বলছেন "সামান্য একবার রক্ত দিয়ে এত কথা!" আসলে ব্লগে আমি কিছু একটা লিখব বলে বসলাম। লেখার কিছু পাচ্ছিলাম না বলেই নিজের প্রথম রক্তদানের কাহিনী লিখতে বসলাম। আমি আবার বাংলা বানানে খুবই কাঁচা। ভুল বানানের জন্য ক্ষমা প্রার্থী।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:১৪

মহা সমন্বয় বলেছেন: আহা. এক বছর হয়ে গেল অথচ লাইক কমেন্ট কেউ করেনি!! #:-S
আপনাকে ব্লগে স্বাগতম। !:#P যদিও সময়ের হিসবে আপনিই আমার সিনিয়র ব্লগার :-P
নতুন নতুন লেখা চাই আপনার কাছ থেকে। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.