নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিজ্ঞান, মন, অনুভুতি, কিছু রহস্য আর আমি।

অপ্রকাশিত ৩

অপ্রকাশিত ৩ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পোস্টমর্টেম

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪০

হাসপাতালের মর্গের সামনে বেশ কিছু মানুষ এর ভিড়।কারো চোখে পানি। একটু খেয়াল করলে হয়তো বোঝা যায় পোস্টমর্টেম এর জন্য আনা লাশগুলো এদেরই কারো ভাই বোন বাবা।মর্গের ভেতর সারি দিয়ে রাখা পাঁচটি লাশ।খুন,বিষ খেয়ে আত্নহত্যা,ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা,উঁচু বিল্ডিং থেকে পড়ে যেয়ে মৃত লাশগুলোর চোখের দিকে তাকালে কেমন যেন একটা অনুভূতি হয়।এইতো কয়েকঘন্টা আগেও মানুষ গুলো বেচে ছিল।কে জানত মাত্র ১৫ পেরোনো কিশোরীটিকে কিছু লোলুপ জানোয়ারের হাতে প্রাণ দিতে হবে,হয়তো মেয়েটির ও একটা সুন্দর স্বপ্ন ছিল,স্বপ্ন ছিল হয়তো মনের মানুষ টিকে নিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ এর।আবার ওই পাশেই যে বিষ খেয়ে আত্নহত্যা করা মেয়েটি আছে, সংসারের কত দুঃখ বুকে চেপেই না এই জগত সংসার ছেড়েছে।এখন পড়ে আছে তারা মেডিকেল স্টুডেন্ট দের সামনে।নিথর,নিস্তব্ধ,অপলক।রামু দা প্রথম যখন মেয়েটির মাথায় হাতুড়ি আর ছেনি দিয়ে আঘাত টা করলেন বুঝতে পারলাম পা কেপে উঠেছে আমার।কি সুচারু ভাবে খুলি ভেঙে বের করলেন ব্রেইন।একে একে হার্ট,লাংস,লিভার,ইউটেরাস বের করে কেটে রেখে দিলেন ভেতরেই।এর পর একে একে পাঁচটি লাশের সুরতহাল।স্যারের দিকনির্দেশনা আর বোঝানো।গ্লাভস পড়ে নিজেই ধরে দেখতে থাকলাম মৃত্যুর চিহ্ন আর অরগ্যান গুলো।একের পর এক ছুরির আঘাতে দেহগুলো ছিন্নভিন্ন হচ্ছে আর আমরা শেখার, জানার চেষটায় রত।!!!
আবেগ,খারাপ লাগা,কেমন যেন একটা অনুভূতিকে পাশ কাটিয়ে হয়তো দিনের পর দিন মেডিকেল স্টুডেন্ট, ডাক্তার রা শিখছে,জানছে মানবতার সেবায়,মানুষ এর পাশে থাকার।
চোখের সামনে শত শত মৃত্যুর অভিজ্ঞতা কে পাশ কাটিয়ে, বুকে চাপা একটা ব্যথা জমিয়ে রাতে ফেসবুকে হয়তো স্ট্যাটাস দিচ্ছে "ফিলিং হ্যাপী,একটা সাক্সেসফুল অপারেশন করলাম"
মন খারাপের কারণগুলো তারা দূরেই রাখতে চান।
তারপর ও কারো কাছে তারা কসাই,ব্যবসায়ী।
(হাত থেকে গ্লাভস টা খুলে বাইরে বের হবার সময় স্বজনদের সেই কান্নাভেজা চোখ আবার দেখলাম।গভীর একটা দীর্ঘশ্বাসের সাথে এটাই ভাবলাম আল্লাহ যেন এরকম অপঘাতে মৃত্যু কাউকে না দেন)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.