নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাশের বাড়ির মেয়েটি এবং মেয়েটিকে মুরগির মাংস রান্না শেখানোর গল্প!!

১০ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:০৭

মাংস কি ভাজবো ? নাকি ?

প্রশ্নটা অনীকার দিকে ছুড়ে দিয়ে মনে হয় ওকে একটু বিপদে ফেলে দিলাম । অন্তত ওর মুখের দিকে তাকিয়ে তো তাই মনে হল ।

অনীকা একবার আমার দিকে তাকাল আর একবার সদ্য কাটা মুরগিটার দিকে তাকালো ।

একটু ঠোট কামড়ালো ।

কি বলবে ঠিক ভেবে পাচ্ছে না ! আসলে যে মেয়ে কোন দিন রান্না ঘরে ঢোকে নি সেই মেয়ের কাছে এই প্রশ্ন করাটা বৃথা ।

আমি এখন অনীকাদের রান্না ঘরে অনীকার সাথে মুরগি রান্না করার প্রস্তুতি নিচ্ছি ।

হ্যা এখন এই প্রশ্নটা আসতে পারে যে আমি অনীকাদের রান্নাঘরে কি করছি ?

ভাল প্রশ্ন ।

দুপুরের কিছু আগে হঠাত্‍ আমাদের কলিংবেলটা বেজে উঠল । আমি দরজা খুলে দেখিই অনীকা ! একটু ইতস্তত করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । কিছু বলতে চায় । কিন্তু বলতে খানিকটা ইতস্তত করছে । আমি বললাম

-কিছু বলবা ?

-হুম ।

-বল ।

-আসলে আমার আম্মুর শরীরটা খুব খারাপ ।

-ও ! হাসপাতালে নেওয়া লাগবে ?

-না । মানে আম্মু বিশ্রাম নিচ্ছে । আর আব্বা একটা জরুরী কাজে অফিসে । এখন বুয়া আসে নাই ।

-ও আচ্ছা ! তো তুমি কি চাচ্ছ ?

-আসলে এখন দুপুর হচ্ছে । বাসায় কিছু রান্না নাই । আম্মুকে রেখে বাইরেও যেতে পারছি না ।

-আমি খাবার কিনে এনে দেই ?

অনীকা কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল

-আসলে আমাদের বাসায় সব বাজার করা আছে ফ্রীজে । আমি জানি আপনি খুব ভাল রান্না করেন । আমাকে যদি একটু হেল্প করেন ।

কোন মেয়ে আমার যদি আমার রান্নার প্রশংসা করে তাও আবার অনীকার মত একজন তাহলে তাকে সাহায্য করতেই হয় ।

সেই থেকে আমার অবস্থান অনীকাদের রান্না ঘরে । অবশ্য ঘরে ঢুকেই আগে অনীকার মায়ের সাথে দেখা করেছি । আন্টির শরীর আসলেই খারাপ । বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না । আমাকে ডেকে আনাতে অনীকাকে কিছুক্ষন বকাবকী করলো । আমি আন্টিকে থামিয়ে দিয়ে বললাম

-আন্টি ! এটা কোন ব্যাপার না । আমি ওকে একটু দেখিয়ে দিলেই পারবে । বেশি সময় লাগবে না ।

অনীকার মা বলল

-যে মেয়ে কোন দিন রান্না ঘরে ঢুকে নাই সে কিভাবে পারবে ?

-আচ্ছা আন্টি কোন ব্যাপার না ।



অনীক আমার দিকে তাকিয়ে বলল

-কোন করলে ভাল হয় ? ভাজলে ভাল হবে ?

-মাছ হলে রান্না করা দরকার ছিল । কিন্তু মাংস না ভাজলেও চলে । আমার মনে হয় মাংস না ভাজলেই বরং বেশি ভাল । স্বাদটা বেশি ভাল বোঝা যায় ।

-তাহলে ভাইয়া ভাজার দরকার নাই ।

-দেখো সব কাটাকুটি শেষ । এখন তেল দিলাম কড়াইয়ে ।

অধীকা বলল

-এই না বললেন মাংস ভাজার দরকার নাই । তাহলে আবার ?

আমি হাসলাম ।

-আরে এই তেল মাংশ ভাজার জন্য না । দেখো এই দিলাম আদা আর রসুন । যতক্ষন না এইগুলা ভাজা না হয় ততক্ষন একটু ওয়েট করি ।

অনীকা আমার দিকে তাকিয়ে বলল

-আপনি যে মেয়ের সাথে বিয়ে করবেনহেই মেয়ের তো কপাল খুব ভাল হবে ।

-কেন ?

-এই যে আপনি এতো সুন্দর রান্না করতে পারেন ।

-হুম । বুঝলাম । এই দেখো ভাজা হয়ে গেছে । এবার পিয়াজ দিলাম । সাথে কাঁচা ঝাল । এবার যতক্ষন পর্যন্ত পিয়াজ একটু লাল না হয়ে যাবে ততক্ষন ভাজতে হবে । ঠিক আছে !

-হুম । ঠিক আছে । আচ্ছা বললেন না তো ?

-কি বললাম না ?

-আপনার কোন গার্লফ্রেন্ড নাই ?

আমি একটু হেসে বললাম

-কেন ? এই কথা কেন জানতে চাইছো ?

-না মানে সেই লাকি গার্লের নাম জানতে মন চাচ্ছে ?

-আগে বল তোমার কোন বয়ফ্রেন্ড আছে নাকি ?

-ইস ! আমি আগে প্রশ্ন করেছি ।

-তো কি হয়েছে ? উত্তরও তুমি আগে দাও ।

-ইস !

এই বলে অনীকা আমাকে মুখ ভেঙ্গালো ।

-আহা বলেন না !

-এই তো দেখো পিয়াজ একটু লাল হয়ে গেছে । এখন মাংস দিয়ে দিলাম । এইটা কিন্তু একটু লক্ষ্য করার বিষয় । প্রথমে মাংশটা একটা পিয়াজের সাথে ভেজে নিবা । ঠিক আছে ?

-জি ঠিক আছে । সুমন ভাই । বললেন না ?

-তুমি কেন জানতে চাচ্ছ ?

-এমনি ! এমনি জানতে চাচ্ছি । আর একটা কথা বলি আমার কেউ নাই । আমি চেংরা ছেলেদের পাত্তা দেই না ।

-না দেওয়াই ভাল । শুনো এবার মাংশে একটু পানি দিতে হবে । কিন্তু তার আগে হলুদ মরিচ আর লবন দিতে হবে । এই দেখো । এবার আমাদের কাজ মোটামুটি শেষ । ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম । তাহলে কসানোটা জলদি হবে । আর চুলার জ্বালটাও একটু বাড়িয়ে দিলাম ।

-এখন কি করবেন ?

-কিছু না, অপেক্ষা করতে হবে ।

-চলেন আপনাকে একটা জিনিস দেখাই ।

কি ?

-আহা ! চলেন না !

আমি অনীকার সাথে ওর রুমে গেলাম । অনীকা আমাকে ওর খাটের উপর বসিয়ে জানলার পর্দা গুলো খুলে দিল ।

-কি বলবা বল !

অনীকা একটু মিসকি হেসে বলল

-আপনি দেখতে পাবেন না । যার দেখার সে দেখে নিয়েছে ।

-মানে কি ?

-মানে কিছু না ।

এই বলে অনীকা হাসতে লাগল । আমি কিছুক্ষন পরে আবার রান্না ঘরের দিকে হাটা দিলাম । ততক্ষনে মাংশের সুগন্ধ বের হয়ে গিয়েছে । আমি মাংশ একটু নাড়তে নাড়তে দেখি অনীকা আমার পেছনে চলে এসেছে ।

-জানেন আপনাকে কেন আমার রুমে নিয়ে গেলাম ?

-কেন ?

আমি আবার ঢাকনা ঢেকে দিয়ে রান্না ঘর থেকে বের হয়ে এলাম ।

-আসলে ..

অনীকা আমার পিছন পিছনই আসতেছে ।

-আরে এতো পেচাচ্ছ কেন ? বলে ফেলো ।

-রাগ করবেন না তো ?

-রাগ করবো কেন !

-না বলেন রাগ করবেন না ।

-আচ্ছা রাগ করবো না । এবার বল ।

-আসলে যে জানলাটা দেখলেন না আমি খুলে দিলাম । ঐ বরাবর একটা ফাজিল ছেলে থাকে । আমাকে খুব জ্বালায় ।

-তারপর ?

-আমি ওকে সেদিন বললাম যে আমার বয়ফ্রেন্ড আছে ।

-কিন্তু তুমি তো বললে তোমার বয়ফ্রেন্ড নাই ?

-আরে নাই তো ! আমি ওর হাত থেকে বাঁচার জন্য বলেছি ।

-ও ।

-কিন্তু ঐ পাজি ছোকরা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চায় না যে আমার বিএফ আছে ।

-তারপর ?

-প্রমান চায় ।

আমি কিছুক্ষন চুপ করে রইলাম । আস্তে আস্তে সব কিছুই আমার মাথার আসতে লাগল । আমি বললাম

-আচ্ছা আমি হলাম সেই প্রমান ।

অনীকা একটু হেসে বলল

-জি ।

-কিন্তু এ তো ভুয়া প্রমান ।

-আপনি চাইলে সত্য প্রমান হতে পারে ।

আমি কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলাম অনীকার দিকে । ওর চোখ দুটো একটু একটু হাসছে । দুষ্টামীর হাসি ! আমি কিছু বলতে যাবে তখনই আমার মনে পড়ে গেল যে এতোক্ষনে মাংসের পানি মনে হয় শুকিয়ে গেছে । আরে এখনই তো পানি দিতে হবে । না হলে পুড়ে যাবে ।

আমি আবার রান্না ঘরের দিকে দৌড় দিলাম ।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:৩০

ফার্ুক পারভেজ বলেছেন: এ শুধু গল্পেই সম্ভব অপু তানভীর......
কারন এটা উল্টো মেয়ে রান্না শিখবে ছেলের কাছ থেকে তা আবার প্রপোজাল
its not normal

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৩৫

অপু তানভীর বলেছেন: ভাই কাহিনী কিন্তু মোটামুটি সত্য ! কেবল পাশের বাড়ির মেয়েটা সত্য না । এখানে একটু দুরবর্তী মেয়ে ! এই যা !

২| ১০ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:৩৭

সোহাগ সকাল বলেছেন: /:)

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৩৬

অপু তানভীর বলেছেন: কি হইলো ? /:)

৩| ১০ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:৪৭

মদন বলেছেন: রান্না শেষ হইলে বইলেন,



আরে ধুর, প্রেম কাহিনী না, রান্নাঘরের ঠিকানাডা :)

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৩৭

অপু তানভীর বলেছেন: হুম ! এখনই চলে আসেন মুহাম্মাদ পুরে !

৪| ১০ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:৫৪

প্রুফরিডার বলেছেন: ভাই পাশের বাড়ির মেয়েটিকে মুরগির মাংস রান্না শেখান কোন সমস্যা নাই কিন্তু নিজেই এই ফাকে মুরগা হইয়া যাইয়েন না! ;)

লেখা সুন্দর হয়েছে

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৩৭

অপু তানভীর বলেছেন: কি যে কন ? আমি মুরগি কেন হব ? বড় জোর মোরগ হইতে পারি !!

ধন্যবাদ !

৫| ১১ ই মে, ২০১৩ রাত ১:০৩

একজন আরমান বলেছেন:
ইসস... এই রকম যদি হইতো... /:) /:) /:)

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৩৮

অপু তানভীর বলেছেন: হবে না কেন গো ??
অবশ্যই হবে !

৬| ১১ ই মে, ২০১৩ সকাল ১১:৫২

প্রিন্স হেক্টর বলেছেন: গল্পটা ব্রয়লার মুরগির মতো হৈছে B-))



কয়েকটা ভুল আছে, অনীকা ধেকে অনীক আর অধীক হয়ে গেছে। মাংস বানান বেশ কয়েক জায়গায় ভুল হৈছে।

প্রপোজ পাইয়া মাথা গুলায়া গেছে নাকি? B:-/

১০ এর ভেতর ৬ দিলাম 8-|

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৩৯

অপু তানভীর বলেছেন: ওকে ভুল গুলো ঠিক করে নিতাছি !! :):)

৭| ১২ ই মে, ২০১৩ রাত ৩:১৫

আমি তুমি আমরা বলেছেন: +++

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৪০

অপু তানভীর বলেছেন: :):):)

৮| ১৯ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৪:২০

ডরোথী সুমী বলেছেন: হুম.........এই সুযোগে রান্না করিয়ে নিল।জয় হোক সেই রমণীর...গল্প ভাল হয়েছে।

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৪০

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ !! :)

৯| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১:৩৭

মুহিব্বুল্লাহ সাজিদ বলেছেন: রেসিপিটা ভালোই বিপদে কাজে দিবে :D :D :D

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:২৩

অপু তানভীর বলেছেন: :D :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.