নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

উন্নয়ন ও পাখিতন্ত্র

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৪১



সকালবেলা মর্নিংওয়াকে গিয়েছি বাসার পাশের পার্কে । বাইরে প্রচুর শীত পড়েছে । তাই খুব বেশি সময় হাটাহাটি না করে আবারও বাসার দিকে পা বাড়ালাম। তবে একটা ব্যাপার আমার নজর এল ফেরার পথে । দেখত পেলাম দুইটা বেড়াল কী নিয়ে যেন ঝগড়া করছে । কৌতুহল নিয়ে এগিয়ে যেতেই নজরে এল বেড়াল দুটি একটা পাখির শরীর নিয়ে কামড়াকামড়ি করছে । আমি যত সময়ে গিয়েছি তত সময়ে পাখি মারা গেছে । আমি একটু তাড়া দিতেই পাখি ফেলে দিতে বেড়াল দুটো পালিয়ে গেল । তবে বেশি দুরে গেল না । আমি মরা পাখিটার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে যেই না চলে আসবো তখন আমার কানে চিউচিউ আওয়াজ ভেসে এল । একটু খেয়াল করতেই টের পেলাম আওয়াজটা কোথা থেকে আসতে । পাখির বাসাটাও চোখ পড়লো আমার । বড় গাছ থেকে বাতাসের কারণে হয়তো পাখির বাসাটা মাটিতে পরে গিয়েছে । কাছে যেতে দেখলাম সেখানে তিনটা পাখির বাচ্চা রয়েছে । একেবারে ছোট না আবার এতো বড়ও না যে একা একা বেঁচে থাকতে পারবে । আমি যদি এখন এগুলোকে এখানে রেখে যাই তাহলে এগুলো এখানেই মরে যাবে । যদি বেড়াল গুলো এই তিন বাচ্চাকে নাও খেয়ে ফেলে, না খেতে পেরে বাচ্চা গুলো মারা পড়বে । ঠিক করলাম বাচ্চা গুলোকে আমি বাসায় নিয়ে যাবো ।


আমার বাসায় আগে থেকেই একটা পাখির খাঁচা রয়েছে । পাখির বাসাটা আমি সেই খাঁচার ভেতরেই ঢুকিয়ে দিলাম । তারপর গুগলে সার্চ করে দেখলাম পাখি গুলো জন্য ঠিক কী কী খাবার ব্যবস্থা করা যায় । বেশ কিছুদিন পাখিগুলোর দেখা শুনা করলাম । কয়েকদিন বেশ ভাল করেই কেটে গেল । পাখির গুলোর দেখা শুনা করি । তাদের খাবার দেই । পানি দিই । মাঝে মাঝে গান গেয়ে শোনাই । তারাও কিচির মিচির করে আমাকে গান শোনায় । দিন বেশ ভালই কেটে যাচ্ছিলো । এরই ভেতরে পাখি তিনটা বেশ বড় হয়ে গেল । ডানাতে পাখির পালক বড় আর মজবুত হল আরও । বুঝতে পারলাম যে ওরা এখন বাইরে আকাশে ওড়ার জন্য তৈরি হচ্ছে । তবে আমি ওদের জন্য আরও উন্নত আর ভাল জীবন ভেবে রেখেছি । আমি জানি যদি ওদের আমি আকাশে ছেড়ে দেই তাহলে ওদের জীবনটা কষ্টে কাটবে । নিজেদের কষ্ট করে খেতে হবে । তারপর শীতে গরমে কিংবা ঝড় বৃষ্টিতে পাখি গুলো কষ্ট পাবে । আমি এটা মোটেই হতে দিতে পারি না । আমি ওদের জন্য নিরাপদ বাসস্থান ঠিক করেছি । এমন কি ঘরে এসি পর্যন্ত লাগিয়েছি যাতে একটা নির্দিষ্ট আর আরাম দায়ক তাপমাত্রায় ওরা ওরা বড় হতে পারে । ওদের গরম শীত কিংবা বৃষ্টিতে যেন কোন কষ্ট না হয় সেদিকে আমি খেয়াল রেখেছি । কখনো যেন খাওয়ার কষ্ট না হয় সেটাও নিশ্চিত করেছি । এতো উন্নত জীবন ওরা কোন ভাবেই বাইরে উপভোগ করতে পারতো না । আমি ওদের ভাল চাই সব সময় ।

কিন্তু ইদানীং পাখি গুলো খুব চিৎকার চেঁচামিচি করে । কেবই খাঁচা ছেড়ে বাইরে বের হতে হয় । খাঁচার দেওয়ালে ধাক্কা দিতে থাকে ডানা দিয়ে । আমি অবাক হয়ে তাকাই ওদের দিকে । তিনটা পাখিই এক সাথে এমন করে । মাঝে মাঝে ওদের ডানার ধাক্কায় তো খাঁচা নড়ে ওঠে । এতো উন্নত সুরক্ষা ওরা ভেঙ্গে ফেলতে চায় । ওদের জন্য এতো উন্নয়ন করলাম তবুও ওরা সেটা বুঝতে পারছে না । নিজেদের ভাল ওরা বুঝতে পারছে না । তাই আমি নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ওদের জন্য যা ভাল আমি মনে করি সেটাই করবো । এই যেমন এখন ওদের ডানা আমি অপারেশন করে কেটে ফেলেছি । এখন ওরা আর আগের মত খাঁচার দেওয়ালে ধাক্কা দিতে পারে না । ওদের কষ্ট হয় না । আমি এখন নিজে ওদের সব সময় খাইয়ে দেই । অনেক আদর করি । তবে এখনও ওরা সারা দিন চিৎকার করেই চলেছে । আমি বুঝতে পারি ওরা আমার সাথে থাকতে চাচ্ছে না তবে আমি জানি এটা ওদের ভুল সিদ্ধান্ত। ওরা তো নিজেদের ভাল বুঝে না । আমি ভাল বুঝি । ওদের উন্নত জীবন কেবল আমিই দিতে পারি । এটা আমিই কেবল পারি । তাই এখন থেকে ওদের ঠোঁট দুটো আমি টেপ দিয়ে পেঁচিয়ে রেখেছি । কেবল খাওয়ার সময় হলে খুলে খাইয়ে দিই তারপর আবারও পেঁচিয়ে দিই । এখন ওরা খুব ভাল আছে । নিয়ম করে খাওয়া করে । আরাম করে ঘরে থাকে । কোন আওয়াজ করে না ।

আমি ওদের ভাল চাই । চাই ওরা যেন উন্নত এক জীবন অতিবাহিত করে । সেই কত বিপদ থেকে আমি রক্ষা করেছিলাম । তারপর একটা উন্নত আর সুন্দর জীবন উপহার দিয়েছি । সামনে ঠিক করেছি ওদের জন্য আলাদা একটা টিভি কিনবো । সেখানে সারা দিন ওরা টিভি দেখবে । কতই না ভাল হবে । এতো উন্নত জীবন ওরা কি বাইরে থাকলে পেত কোন দিন ।
আপনারাই বলুন পেত ! নিজের ভাল না বুঝলে আমার তো একটা দায়িত্ব আছে ! আছে না !



pic source

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:৫২

জুল ভার্ন বলেছেন: অপু, তোমার লেখার প্রথম প্যারা বর্তমান কাল, দ্বিতীয় প্যারা অতীত কাল....

আমাদের দেশে একশ্রেণীর পাখি প্রেমিকের উদয় হয়েছে যারা প্রায়শই খাচায় পোষা পাখিদের মুক্ত করে দিয়ে খবরের শিরোনাম হয়, যা নির্বোধের পরিচয়। খাচায় পোষা পাখি কখনো মুক্ত বিহংগ হয়ে বাঁচতে পারে না। খাঁচার পাখিকে খাঁচায় রাখতে হবে। না জেনে প্রকৃতিতে ছেড়ে দিয়ে মৃত্যুর মুখে ফেলা উচিৎ না।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৩৪

অপু তানভীর বলেছেন: খাঁচায় জন্মানোর পাখি বাইরে থাকতে পারে না । আমার অবশ্য খাচায় বন্দী কোন কিছুই ভাল লাগে না ।







২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: চমৎকার মেটাফোরিক্যাল গল্প। এক্কেবারে খাপে খাপ.........আমাদের দেশের অবস্থা!!! ;)

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য ইত্যোকার টপ প্রায়োরিটির বিষয়গুলোর খবর নাই; মেট্রো, টানেল, স্যাটেলাইট, এয়ারপোর্ট নিয়ে পেরেশান আমাদের নেতারা। তেনারাই আসলে জানে, কিসে জনগনের সত্যিকারের উন্নয়ন। জনগন তো গিনিপিগ!!! B:-/

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৩৬

অপু তানভীর বলেছেন: আরে না না না না ! মোটেই এসব ঠিক কথা বলছেন না । আমাদের দেশ হচ্ছে পুরো বিশ্বের রোল মডেল । এই দেশ দেশের জনগন মানুষ যুবক বৃদ্ধ যুবক যুবতী ব্যাংক অফিস আদালতে যা উন্নয়ন হচ্ছে তা বোধ করি আর কোথাও কোন দেশে হচ্ছে না ! :D

৩| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৫০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: পাখিরা যতই চেঁচামেচি করুক না কেন তাদের বুঝতে হবে, আপনি না থাকলে বিকল্প কে?

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৩৭

অপু তানভীর বলেছেন: এটাই পাখি বুঝতে পারছে না । তাদের উন্নয়নে আমার যে কোন বিকল্প নেই এটা ওরা বুঝতে পারছে না । তবে চিন্তা করবেন না আমি ওদের বুঝিয়েই ছাড়বো ।

৪| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০০

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: আরেকখানা স্যাটায়ার !!

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৩৭

অপু তানভীর বলেছেন: সব সময় থাকবে হবে উন্নয়নের পক্ষে !

৫| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩১

আহমেদ জী এস বলেছেন: অপু তানভীর,





মেটাফোর বা স্যাটায়ার যা-ই বলুন, অনবদ্য!

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৩৮

অপু তানভীর বলেছেন: চলে আসুন উন্নয়নের ছত্র ছায়ায় ! তাহলেই সব মধু মধু মনে হবে !

৬| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:২৫

জগতারন বলেছেন:
গল্পটি পড়লাম,
কিছু একটা মন্তব্য করতে হয়;
কিন্তু মন্তব্যটি কিভাবে (!)
বিদেশী একটি বাস্তব ইতিহাস বর্ননা করা যাক।

লিবিয়া দেশটি ছিল অনুন্নত একটি বিড়ান ভূমির দেশ।
সেই দেশোটি শাসন করেছিলেন গাদ্দাফী প্রায় ৫০ বছর।
এবং সেই দেশটী একটি মরুভূমির দেশ থেকে উন্নত ও আধুনীক দেশে পরিনত হয়েছিল।
সেই দেশের মানুষ বিদেশীদের সহযোগীতায় গাদ্দাফী'কে উদখাত করেছিল ২০১০ -২০১১ সালে।
কারন তারা বেশী বুঝেছিল যে গাদ্দাফী'র দেষ শাসন 'পাখী পোষা' শাসন।
এখন গাদ্দাফী'র শাসন ছাড়া সেই দেশটি এক নিকৃষ্টতর প্রানীদের দেশে আবার পরিনত হয়েছে।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৩৯

অপু তানভীর বলেছেন: একদম সঠিক বলেছেন । আমিও তো তাই বলি । পাখি গুলো মোটেই নিজেদের ভাল বুঝতে পারছে না । আমি ছাড়া যে ওদের উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই এই সত্য কথাটা ওরা বুঝতেই পারছে না !

৭| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৩৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: জি নিজের ভালো না বুুঝলে তাকে বুঝানো র দায়িত্ব অন্যকে নিতে হয় । নিজের খেয়ে অন্যের কামলা দেওয়া আর কি।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৫

অপু তানভীর বলেছেন: একদম সঠিক কথা

৮| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৬:৪৬

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: সুন্দর মেটাফোর।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৫

অপু তানভীর বলেছেন: উন্নয়নের পক্ষে থাকুন সব সময় !

৯| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:২৭

কলাবাগান১ বলেছেন: পাখীগুলির জন্য রুমের মাঝে কিছু খাম্বা বসিয়ে দিবেন যাতে ওরা বসতে পারে। খাম্বাতে ভুলেও বিদ্যুত এর কোন কানেকশান দিবেন না
আপনাদের মত লোকদের চিনতে পেরে ভালই হল.....

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৬

অপু তানভীর বলেছেন: কী সর্বনাশ আপনি এখনও চিনতে পারেন নি ! এতো দেরী হল ! বড়ই আফসোসের কথা !

১০| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৫২

রানার ব্লগ বলেছেন: সাবধান থাকবেন কোনদিন না পাখি খাঁচা সহ উড়াল দেয় !!!!

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৫৮

অপু তানভীর বলেছেন: সেই ব্যাপারে সব সময় সাবধান তো থাকতেই হবে । আমি তো জানি যে আমার কোন বিকল্প নেই । তাই আমাকে ব্যবস্থা গ্রহন করতেই হবে !

১১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:০৬

আলাপচারী প্রহর বলেছেন: বহুদিন পর ভাল গল্প পেলাম।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৪৩

অপু তানভীর বলেছেন: উন্নয়নের পথে আসুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.