নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ যে উনিশে জুলাই, ভুলেই গিয়েছিলাম !

১৯ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:০৮



মানুষের মৃত্যু আমাকে খুব বেশি ভাবায় না । কারণ মানুষ মারা যাবেই । আশে পাশে কত মানুষের মৃত্যুর খবর শুনি । আমি কেবল আমার কাছের মানুষের মৃত্যু নিয়ে সব সময় চিন্তিত থেকেছি । কিন্তু যখন হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু সংবাদ শুনলাম তখন মনের ভেতরে এমন ধাক্কা লাগলো সেটা আজও যেন টের পাই । তিনি আমার মনের কতখানি কাছে ছিলেন সেটা আসলে তার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পরেই বুঝেছিলাম ।

সেই সময়ে আমি গ্রামে গিয়েছিলাম । এতো এতো ফেসবুক নেট নির্ভর ছিলাম না । রাতে ঘুমিয়েছি সেই সময়ে আমার স্টুডেন্ট ফোন দিল । ফোন দিয়ে বলল, স্যার হুমায়ূন আহমেদ মারা গেছে !

ঘুম চোখে মনে হল ভুল শুনছি । বললাম, কী বললে?
স্টুডেন্ট বলল, স্যার হুমায়ূন আহমেদ মারা গেছে !
-কোথা থেকে জানলে ?
-খবরে দেখাচ্ছে !

আমি আর কোন কথা বললাম না । সে ফোন রেখে দিল । আমিও ফোন রেখে কিছু সময় চুপ করে শুয়ে রইলাম । তখন ছিল কম দামী জাভা ফোন । সেই ফোন দিয়ে অনেক খুজে টুজে দেখলাম আসলেই সে মারা গেছে ।

আমি বিছানা থেকে উঠে বসলাম । রাতের বেলা সবাই ঘুমিয়ে গেছে । রাস্তার পাশে বাসা হওয়ার কারণে মাঝে মাঝে ট্রাক যাওয়ার শব্দ আসছে । এছাড়া আর কোন শব্দ নেই কোন দিনে । আমি অন্ধকার ঘরে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম । কিন্তু কোন লাভ হল না । আমার আর ঘুম এল না । বুকের ভেতরে কী এক শূন্যতা যে কাজ করছিলো, কী এক বিষণ্ণতা খেলা করছিলো সেটা হয়তো কোন দিন ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না ।

তার লাশ যখন ঢাকায় এল তখন আমি গ্রাম ছেড়ে ঢাকাতে এসেছি । অনেক দিন পরে আমি আবার কারো জানালা পড়লাম । অনেক দিন পরে আমি লাশের সামনে গিয়ে হাজির হলাম । শহীদ মিনারে তার কফিনের সামনে গিয়ে যখন দাড়ালাম তখন মনে হচ্ছিলো এই এই পৃথিবী সব কিছু কেবল শূন্যতার ভরপুর । সত্যি আমি অন্য মানুষের জন্য খুব একটা চিন্তা করি না কখনই । আমার আবেগ অনুভূতি ভালোবাসা কেবল আমার কাছের মানুষ গুলোর জন্য । এই মানুসটার কেবল বই পড়েছি কোন দিন তার কাছে যাই নি, তাকে সামনা সামনি দেখিও নি, ভীড় ঢেলে কোন দিন তার অটোগ্রাফ নেওয়ার ইচ্ছেও আমার হয় নি (তবে হ্যা একদিন ইচ্ছে ছিল তার লেখার ঘরোয়া আড্ডার কথা উল্লেখ আছে সেখানে একদিন যুক্ত হওয়ার) । এই কফিনের সামনে গিয়েছিলাম সেটাই ছিল সব থেকে কাছে যাওয়া । অথচ সেই মানুষটার জন্য আমার মনের ভেতরে তখন কী না তোলপাড় হচ্ছিলো সেটা হয়তো কেউ কোন দিন জানবে না ।

আমি যদি স্কুলে থাকতে হুমায়ূন আহমেদের বই না পড়তাম তাহলে হয়তো আজকের আমি যেমন তেমনটা কোন দিন হতাম না । আমার মন মানসিকতা চিন্তা ভাবনা সব কিছুর আমূল পরিবর্তন এসেছে কেবল তার বই পড়েই । তার বই না পড়লে আজকে আমি নিশ্চিত ভাবেই অন্য মানুষ হতাম। অন্য কেউ হতাম ।


অথচ আজকে তার মৃত্যু দিবস সেটা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম । অবশ্য এই দিনটা ভুলে যাওয়াই ভাল । এই দিনটার কথা আমি মনে রাখতে চাই না ।

প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ, আপনি হয়তো কোন দিন জানবেনও না কোন এক অখ্যাত ছেলের জীবনের আপনার গুরুত্ব কতখানি ! বড় দ্রুত আপনি চলে গেছেন । বড় বেশি দ্রুত আপনি চলে গেছেন আমাদের ছেড়ে !

pic source

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৭

ইসিয়াক বলেছেন: আমি প্রথম হুমায়ুন আহমেদের বই পড়ি ক্লাস ফোরে থাকতে।ছোটবেলা থেকে আম্মা কোন মুভি দেখলে বা বই পড়লে সেটা নিয়ে আমার সাথে আলোচনা করতো।আমিও গল্প জেনে নিতাম সুযোগ মত ।এ কাজটা আমার খুব ভালো লাগতো
একবার আম্মা নিউমার্কেট থেকে হুমায়ুন আহমেদের শঙ্খনীল কারাগার কিনে এনে পড়ার পর আমাকে বললেন আজ চমৎকার একটা বই পড়েছি । আরও কিছু আলোচনায় আমার বইটির প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেলো। আমি সুযোগ মত লুকিয়ে বইটা পড়ে ফেললাম। অত কিছু না বুঝলেও অদ্ভুত একটা মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেল আমার মন জুড়ে।
স্কুলে পড়াকালীন সময়ে হুমায়ুন আহমেদের সাথে আমার কয়েকবার দেখা হয়েছে একুশে বইমেলায়। মেলার সময় উনার অটোগ্রাফ সহ বেশ কিছু বই সংগ্রহে ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই বইগুলো আমার এক প্রিয় বান্ধবী পড়তে নিয়ে আর ফেরত দেয়নি। কেমন লাগে বলেন।
ভাবতে এখন বেশ রোমাঞ্চ লাগে হুমায়ুন আহমেদে আমার কেনা বই হাতে নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলছেন, কি নাম তোমার?
আমি বললাম, অপূর্ব।
উনি দ্রুত হাতে লিখলেন, অপূর্ব তুমি আমার শুভেচ্ছা নাও।
ইশ তখন যদি মোবাইলের যুগ হতো, উনার সাথে অবশ্যই একটা ছবি তুলতাম।

২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:১৯

অপু তানভীর বলেছেন: তখন মোবাইল যুগ হয় নি ভাল হয়েছে বেশি । আপনার মনে তার সাথে দেখা হওয়ার স্মৃতি স্বপ্নের মত করে জড়িয়ে আছে । ছবি তুললে এই জিনিসটা হত না মোটেও । সত্যিই হত না ।

যাক আপনার দেখা হয়েছে তার সাথে । আমি যদিও খুব একটা চেষ্টা করি নি কখনই । এখনও আমার প্রিয় কোন লেখকদের সাথে দেখা করতে ইচ্ছে করে না খুব একটা । আমার কেবল তাদের বই পড়াতেই আনন্দ ।

২| ১৯ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:০৩

রানার ব্লগ বলেছেন: হিমু আর মিসির আলি কে প্রায় বিষণ্য মনে রমনা পার্কে হাটতে দেখি । বিশেষ করে সন্ধ্যা বেলা হিমু এক গাদা কুকুরের সাথে লেকের ধারে বসে থাকে আর মাঝে মধ্যে লেকের পানিতে ঢিল ছোড়ে । কুকুর গুলো হিমু কে ঘিরে গোল হয়ে বসে থাকে । টুপুস করে একটা করে ঢিল পরে পুকুরে কুকুর গুলো মাথা নেরে তার হিশাব রাখে ।

দুরে কোন এক বেঞ্চিতে বসে মিসির আলি ঢিল ছোড়া দেখে আর বাদাম ভাজা খায় । দুই আংগুলের ফাঁকে চেপে বাদামের খোসা ফাটিয়ে দু আঙ্গুলের কারসাজিতে মুখে চালান করে দিচ্ছে । দুজনেই অপেক্ষায় থাকে একে অপরের মুখমুখি হবার !!!

হিমু মিসির আলী কে দেখে হাসে । মিসির আলী হিমু কে দেখে হাসে । কুকুর গুলা সিংক্রনাজিং পদ্ধতিতে লেজ নাড়ে ।

২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:২১

অপু তানভীর বলেছেন: যখন প্রথম আমি হিমুর বইটা পড়েছিলাম সত্যি বলতে কী তীব্র একটা অনুভূতি জেগেছিল সেটা বলার ভাষা নেই । যে কয়টা বই আমার জীবনকে প্রবল ভাবে নাড়া দিয়েছিলো তার ভেতরে হিমু একটা । লেখকরা যে তাদের লেখা দিয়ে কত কঠিন কাজ করে ফেলতে পারে সেটা উদাহরণ আমাদের হুমায়ূন আহমেদ ।

৩| ১৯ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:০৬

নতুন বলেছেন: উনার মৃত্যুর খবর শুনে মনে হয়েছে কাছের কাউকে হারিয়েছি।

একজন মানুষ হিসেবে হুমায়ুন আহমেদের এটা অনেক বড় অর্জন। বাংলাভাষার কয়েক প্রজন্মের মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি।

একটা সতাব্দীতে খুবই কম মানুষই এমন ভাবে মানুষের কাছের মানুষ হতে পারে...

২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:২৪

অপু তানভীর বলেছেন: সত্যিই ঠিক বলেছেন । একজন হুমায়ূন আহমেদ না থাকলে আমাদের দেশে আজকের যে কত শত লেখক তাদের কত শতাংশ তৈরি হত সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে । হ্যা অনেকের লেখা হয়তো ভাল না তবে বর্তমানে অনেকেই চমৎকার লিখছেন । লেখেন । আর অন্য একটা বড় অবদান হচ্ছে তার কারণেই ভারতীয় লেখকদের আধিপত্য কমেছে আমাদের বাংলাদেশে । নয়তো এখনও হয়তো আমরা কলকাতা কেন্দ্রিক সাহিত্য নিয়েই পড়ে থাকতাম ।

৪| ১৯ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:১৩

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: বেঁচে থাকলে বাংলা সাহিত্য আরো সমৃদ্ধ হতো।

২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:২৪

অপু তানভীর বলেছেন: এই বিষয়ে আসলে কোন সন্দেহ নেই ।

৫| ১৯ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:১৬

প্রামানিক বলেছেন: এখনই জাতি ভুলে গিয়েছে কয়েক বছর পরে কারো মনেই থাকবে না।

২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:২৬

অপু তানভীর বলেছেন: নাহ যারা বই পড়ে তাদের কাছে থেকে এই নাম কখনই হারিয়ে যাবে না । হ্যা তার জন্ম মৃত্যু দিনের কথা হয়তো মনে নাও থাকতে পারে কিন্তু তার লেখা কখনই হারিয়ে যাবে না।

৬| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:১৩

কামাল১৮ বলেছেন: মানুষ মনে রাখবে তার কর্ম কে।

২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:২৭

অপু তানভীর বলেছেন: হ্যা তার কর্মকেই মনে রাখবে।

৭| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৫৩

কাছের-মানুষ বলেছেন: তাঁর বই এখনো মেলায় প্রচুর বিক্রি হচ্ছে! তিনি মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন গল্প বেশ হাস্যরসাত্মকভাবে তুলে ধরেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সাইন্সফিকশন লেখক তিনি, খুব সাধারণ প্লটকেও বুদ্ধিদৃপ্তভাবে অসাধারণ করেছেন। বাংলা সাহিত্যে প্যারানরমাল একটিভিটি, মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আগে কেউ এত বুদ্ধিদৃপ্তভাবে লেখেনি, তাঁর বিষয়ছিল বিজ্ঞান, সেই জ্ঞান তিনি লেখায় যথাযথভাবে ব্যাবহার করেছেন যেটা আমার পর্যবেক্ষন !

২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:৩১

অপু তানভীর বলেছেন: হ্যা, এখনও মেলাতে অন্য যে কোন লেখকের বই থেকে তার বই বেশি বিক্রি হয় । আমরা যারা টুকটাক বই কিনি পড়ি তার বই সবই পড়া । নতুন করে আর কেনা হয় না আমাদের । কিন্তু বই মেলাতে বেশির ভাগই যায় মৌসুমী পাঠক কিংবা শখের বই ক্রেতা । এদের কাছে বই মানেই হুমায়ূন জাফরইকবাল । নতুন কারো বই এরা কেনে না কখনই । সেই হিসাবে এখনও প্রচুর বই বিক্রি হয় তার !

৮| ২৭ শে জুলাই, ২০২৩ ভোর ৪:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: বাংলাদেশের তরুণ-যুবাদেরকে একটি দীর্ঘ সময় ধরে বইমুখী করা এবং রাখায় ওনার অবদান অনস্বীকার্য, এবং তা এ দেশের সাহিত্যের ক্রমবিকাশের ইতিহাসে স্বর্ণক্ষরে লেখা থাকবে। কালক্রমে ওনার জনপ্রিয়তা সীমান্ত অতিক্রম করে ওপার বাংলায়ও প্রসারিত হয়।

ইসিয়াক এবং কাছের-মানুষ এর মন্তব্যদুটো ভালো লেগেছে।

২৭ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:০০

অপু তানভীর বলেছেন: আমার কাছে এখনও মনে হয় যে হুমায়ূন আহমেদ যদি না থাকতেন এখনও আমাদের দেশের কলকাতার সাহিত্যিকেরাই রাজত্ব করতো । আমরা তাদের বই পড়েই বড় হতাম । এই একটা মানুষের জন্য আমরা নিজেদেশের লেখকদের বই পড়তে শুরু করেছি এবং তরুনরা লেখালেখি শুরু করেছে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.