নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ডেভিস ফলসের পানির মূল উৎস ফেওয়া হ্রদ যা পাথর বেষ্টিত পথে প্রচন্ড গতিতে এসে জলপ্রপাতের দিকে ধাবিত হয় । ৫ কিলোমিটার পথে অতিক্রমন করে অবশেষে জল অদৃশ্যহয় । এই জলপ্রপাত নিয়ে নানান গল্প প্রলচিত আছে । আবার অনেক গল্প হারিয়েও গেছে । সব থেকে প্রচলিত গল্প গুলোর একটা হচ্ছে ডেভিস নামের একজন পর্বত আরোহী বা হাইকার পর্বতে উঠতে গিয়ে হঠাৎ করে জলে ভেসে যায় এবং ভূগর্ভস্থ প্যাসেজে চিরোতরে হারিয়ে যায় । আরেকটি গল্প হচ্ছে নেপালে ঘুরতে আসা মিসেস ভেডিস একদিন ফেওয়া হ্রদে গোসল করছিলেন । হঠাৎ বড় পানির ঢেউ এসে তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় । তিন দিন পরে তার লাশ পাওয়া যায় । যদিও এই সব গল্পের কোন সঠিক ভিত্তি নেই ।
ডেভি'স ফলস (ভ্রমণ কাহিনী)
-শেরজা তপন
বর্তমান সময়ে ভ্রমণে মানুষ অন্যকে দেখানোর ব্যাপারেই বেশি আগ্রহী । ক্ষণে ক্ষনে আপডেট দাও, ছবি দাও, কোথায় যাচ্ছো, কী খাচ্ছ, সব সোস্যাল মিডিয়াতে দিয়ে দুনিয়ার মানুষকে জানাও । আগে এই সব ছিল না কিছুই । তখন ভ্রমণ মানে কেবল ভ্রমণই ছিল । নিজের মনকে শান্তি দেওয়ার জন্য ছিল । এখন অবশ্য সে সব কিছু নেই । এই ভ্রমণ গল্পে সেই ইন্টারনেট যুগের আগের ভ্রমণ । সালটা ২০০৩ । আমাদের ব্লগার শেরজা তপন সেই সময়ে গিয়েছিলেন পাশের দেশ ভারত ও নেপাল ভ্রমণে । ঈদের দুদিন আগে প্রথমে গিয়া হাজির হলেন দার্জিলিং । তারপর সেখান থেকে কাঠমান্ডু হয়ে পোখরা । মোট পনের দিনের বড় একটা ভ্রমণ । সেই এখনকার মত ইন্টারনেট ছিল না । ভ্রমনের জন্য এতো লিংক কিংবা রিভিয়ের সিস্টেম ছিল না । কোন জায়গাটা কেমন হবে আর সেখানকার সার্ভিসই বা কেমন এসব হবে এসব আগে থেকে জানার কোন উপায়ও ছিল না । অনেকটা ভাগ্যের উপর এবং যদি কেউ আগে গিয়ে থাকে তবে তাদের কাছ শুনে টুনে যত দুর যাওয়া যায় ।
২০০৩ সালের ঈদের সময় । চারিদিকে ঈদের আমেজ । এই সময়ে ভ্রমণ শুরু হল । শুরুতে অনেকেই যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও শেষ পর্যন্ত দেখা গেল নেপাল ভ্রমণে যাওয়ার জন্য হাজির হয়েছে মাত্র দুইজন । অবশ্য যাত্রাতে সব সময় যে সঙ্গীর দরকার হয় সেটাও না । একা একাও যাওয়া যায় । সেখানে দুইজন তো অনেক
ঢাকা থেকে বাস যোগে বুড়িমারি হয়ে ভারতে প্রবেশ । তারপর সেখান থেকে ট্যাক্সিতে করে শিরিগুড়ি হয়ে দার্জিলিং। দার্জিলিংয়ে থাকা কালীন সময়ে সেই সময়ে বলিউড সুপারস্টার শাহরুন খানে এসে হাজির । ঈদের জামাত তার জন্যই খানিকটা দেরিতে শুরু হয়ে যদিও সেখানে তার দেখা আমাদের ব্লগার সাহেব পান নি । এমন কি পরদিন সকালের মনমুগ্ধকর সূর্যোদয় দেখানোর সময়ও মানুষের আগ্রহ সূর্যোদয় দেখার চেয়ে শাহরুকখানকে দেখার প্রতিই বেশি ছিল ।
নেপাল যাওয়ার পথে কিশোরী সুন্দরী কন্যার সাথে চোখাচোখী তারপর আলাপ । শেষে ইমেল আদান প্রদান । তখন আর এখনকার মত মোবাইলফোনের এতো ছড়াছড়ি ছিল না । ইমেইল ছিল ভরশা । আমার অবশ্য খুব জানতে ইচ্ছে করছিলো যে দুই মাস পরে সেই কন্যা হোস্টেলে গিয়ে কি ইমেইল দিয়েছিল?
হোটেল ম্যানেজারকে সাথে বাত চিৎ অথবা রাজু সিংয়ের আন্তির ব্যবহার ব্যবহার আর বড় বড় হোটেল রেস্টুরেন্ট গুলো খোদ্দেরের অভাবে খাঁ খাঁ করাটারও ব্যাপারটাও আছে ।
কাঠমান্ডুর সাইট সিইং সাথে রাত ক্যাসিনোতে নিজের ভাগ্য পরীক্ষা । অথবা মন্দির দেখতে গিয়ে বিভৎস মরা পোড়ানোর দৃশ্য দেখে ভ্রমনের মজাটাই উবে যাওয়া থেকে শুরু করে, পোখরাতে বানরের সাথে মারামারি হতে হতে রক্ষা পাওয়া, সব কিছুর বর্ণনা রয়েছে বইতে । তারপর আবারও দেশে ফেরৎ আসা । সব মিলিয়ে দুজনে মোট খরচ হয়েছে চারশ ডলারের মত । জনপ্রতি ২০০ ডলার । এতো কম টাকায় এতো লম্বা একটা ভ্রমন দেওয়াটা এই সময়ে সম্ভব হত না কোন ভাবেই ।
ভ্রমন কাহিনী অনেক টা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর অবস্থা । প্রকৃত ভাবে আসল ভ্রমনের স্বাদ নিতে সেখানে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই তবে আমাদের সবার পক্ষে তো সব সময় সব জায়গাতে যাওয়ার উপায় থাকে না । সেই জন্য এই ভ্রমন কাহিনী । এই ডেভি'স ফলস ভ্রমণ কাহিনী ব্লগার শেরজা তপন মোটামুটি তার ভ্রমণ শুরু থেকে একেবারে শেষ পর্যন্ত সব টুকু লিখেছেন । পথে কোন দালালের খপ্পড়ে পড়েছেন কিভাবে পার হয়েছে এমন কোন হোটেলে শাওয়ারের পানি গরম ছিল কিনা সেটাও পর্যন্ত লিখেছেন বইতে । প্রশ্ন আসতে পারে যে এতো লম্বা সময় পরেও এতো কিছু কিভাবে মনে আছে । বইয়ের শুরুতেই অবশ্য এটা বলে দেওয়া আছে । ডায়রী আকারে সব কিছু লিখে রেখেছিলেন সেই সময়ে । তবুও এতো লম্বা সময় ধরে যে সেই লেখা টিকে আছে এটাই কিন্তু অনেক ব্যাপার । বর্ণনাতে কোন জড়তা নেই । আপনারা যারা তার ব্লগ পড়েন তার লেখা সম্পর্কে ধারণা আছে তাদের । যেহেতু ভ্রমন কাহিনী এবং অনেকটা বিস্তারিত ভাবে লেখা তাই আপনি যদি একটানা বইটা পড়তে যান তাহলে হয়তো আপনার মনে খানিকটা বিরক্তি আসতে পারে । আমি নিয়ম করে প্রতিদিন বইটা থেকে কয়েকটা চ্যাপ্টার পড়তাম । বিশেষ করে প্রতিদিন রাতে শোয়ার আগে এই পড়া হত ।
তবে বইয়ের ব্যাপারে যেটা বলতেই হবে সেটা হচ্ছে বইতে প্রচুর বানান ভুল । এটা নিশ্চিত যে বইটার প্রুফ দেখে নি কেউ । দেখলেও খুবই যাচ্ছেতাই ভাবে প্রুফটা দেখেছে । একটা বইয়ের প্রুফ ভাবে না দেখা হলে বই যত ভাল হোক না কেন তার আবেদন কমে যায় একেবারে । এছাড়া বেশ কয়েকটা লাইনে একটু অসংলগ্নতা দেখতে পেয়েছি। কয়েক স্থানে ''না'' বসে নি । এছাড়া বিরাম চিহ্নের ব্যাপারে বেশ গোলমাল দেখা দিয়েছে । পরের সংস্করণে অবশ্যই এই বইটার প্রুফ রিডিং আরো ভাল ভাবে দেখার অনুরোধ রইলো ।
বইটা কিনতে পারবেন রকমারি থেকেই । এখানে লিংক রইলো । কিছুটা অংশ পড়েও আসতে পারবেন ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:২৬
অপু তানভীর বলেছেন: উপরের লাইনে কি একটা না বসবে? কারণ পরের লাইনের সাথে কমেন যেন মিল দেখা যাচ্ছে না ।
আমাদের দেশে আসলেই আসলে নিজের বইয়ের নিজে না করতে পারলে ব্যাপার অন্য রকম মনে হয় । আরেকজন লেখক আছেন উনিও নিজের বইয়ের খুব একটা প্রচারণা করে না !
এখন পরিবেশটাই এমন হয়ে গেছে যে নিজের বইয়ের প্রচার নিজেকেই করতে হবে । এটা ছাড়া আসলে উপায় নেই ।
আমার এগুলো ঠিক বই রিভিউ না । আমার নিজের পাঠ প্রতিক্রিয়া বলতে পারেন । একান্তই নিজের ভাবনা !
২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আরে!প্রথমেই ভেবেছিলাম আপনি সত্যিই বুঝি নিজে অভিজ্ঞতার কথা লিখছেন। বেশকিছুটা পড়ার পর বুঝলাম দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো। বর্ননা খুবই ভালো হয়েছে। একদম খাঁটি মধু যাকে বলে।++
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:২৮
অপু তানভীর বলেছেন: আমি আসলে বই পড়তে পড়তে নেপাল ভ্রমনই দিয়ে এলাম বলা যায় । হ্যা খানিকটা ঘোলে মেটানোর মতই তবুও । কবে যে নিজে যাবো ঠিক নাই ।
লেখা ভাল লেগেচে জেনে ভাল লাগলো ।
৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৬
শেরজা তপন বলেছেন: ওই একটা সমস্যা আমকে ভীষণ পীড়া দিয়েছে- সেটা হচ্ছে বানান আর ব্যাকারণে ভুল।
বাংলা ভাষা আমার দখল ভীষন কম সেটা কেউ বলুক আর না বলুক আমি ভাল করে জানি। যেটুকু দখল আছে সেটা একজন লেখক হবার জন্য নিশ্চিত ভাবে যথেষ্ট নয়। কিন্তু যাকে প্রুফ দেখার জন্য কিংবা সম্পাদনা করার জন্য পয়সা দেয়া হচ্ছে সে যদি এভাবে গোঁজামিল দেয় তবে কষ্টটা লাগাই স্বাভাবিক। সেই ভদ্রলোকদের কাজই এইটা- সম্ভবত তাদের রুটিরুজি এতেই চলে। তারা কেন এমন ভুল করবে। এ বিষয় নিয়ে আমি প্রকাশকের উপরে একটু গোস্যা করেছি।
এটা আমার একেবারে প্রথম দিককার লেখা। সম্ভবত ২০০৪ সালে আমি পুরো ভ্রমণ কাহিনী লিখে রেখেছিলাম( রাফলি)। বই প্রকাশে কিছু অযত্ন ও তাড়াহুড়োর ছাপ স্পষ্ট! আমার মনে হয় যে কোন বই আরো গুছিয়ে প্রকাশ করা উচিৎ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় অপু তানভীর আপনার চমৎকার রিভিউয়ের জন্য।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩২
অপু তানভীর বলেছেন: লেখকের লেখা এবং পরে সেগুলো টাইপের ক্ষেত্রে বানান ভুল এবং ব্যাবকরণের ভুল থাকাটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার । এটা থাকবেই । আগে লেখকরা কাগজে লিখতেন । সেগুলো আগে টাইপ হত । সেই টাইপে ভুল থাকবেই । তাই জন্য প্রুফ ! এবং কারো কারো বই এক দুই তিনবার করে প্রুফ দেখা হয় । আপনার বইয়ের যে প্রুফ দেখেছে সে নিশ্চিত ভাবেই কাজটা করেই নি বলা যায় । একেবারে যাচ্ছেতাই ভাবে করেছে । বেটার কাছ থেকে জরিমানা নিয়ে নিবেন ।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ । আামকে ঋণী করে রাখলেন ! বিশেষ করে মানিব্যাগটার আমি তো অতিযত্ন করে রেখেছি এখনও ।
৪| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:১৫
অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:
বইটি সংগ্রহের চেষ্টা করব। ভ্রমণ কাহিনী পড়তে আমার দারূণ লাগে। যেতে না পারলেও জায়গা সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়।
আপনার পাঠ প্রতিক্রিয়াও দারূন। আপনার বই পড়া আমাকে মাঝে মাঝে অনেক বেশি মুগ্ধ করে। আপনার মত পড়তে পারলে জীবন ধন্য হয়ে যেত।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৫৮
অপু তানভীর বলেছেন: বইটা অবশ্যই পড়বেন । কেবল বানানের ব্যাপারটা যদি এড়িয়ে যান তাহলে বইয়ের বর্ণনা পড়ে বেশ ভাল লাগবে । যদিও ঘোলে মেটানো হবে তবুও আমাদের মত ছাপোষা মানুষ যাদের সব জায়গাতে যাওয়ার সুযোগ হয় না তাদের জন্য এই রকম বই গুলোর কোন তুলনা হয় না ।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ । ভাল থাকবে সব সময় ।
৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:২৯
ডার্ক ম্যান বলেছেন: শেরজা নামটা কি ঐখান থেকে এসেছে ।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫১
অপু তানভীর বলেছেন: আমি ঠিক জানি না অবশ্য । ব্যাপারে বইতে আসলে কিছু লেখা নেই । তাকে জিজ্ঞেস করতে হবে ।
৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৫৩
করুণাধারা বলেছেন: জানতাম না নেপাল ভ্রমণ নিয়ে শেরজা তপনের বই আছে! বইটি সম্পর্কে জানানোর জন্য ধন্যবাদ।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:১০
অপু তানভীর বলেছেন: দেরি না করে পড়ে ফেলুন । আশা করি ভাল লাগবে যদি বানানের ব্যাপারটা এড়িয়ে যেতে পারেন ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৫৭
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম ওনার বই নিয়ে বেশি আহ্লাদ করতে দেখি । নিজের বই নিয়ে খুব একটা প্রচারণা উনি করেন না । এই দেশে এখন খুব নিন্দনীয় বিষয় । আমি অবশ্য ওনার এই কাজকে সমর্থন করি । এইটা ভালো কাজ , বুদ্ধিভিত্তিক সম্পদের ক্ষেত্রেও যদি স্রষ্টাকে কাজে নামতে হয় তবে এর মূল্য আসলেই কমে যায় !! এমনকি শিল্পী তার সত্ত্বাও হারায় !!
আপনার লিখাটা দারুণ হয়েছে । আপনার রিভিউ দেয়াটা অন্যরকম !!!!