নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

রাফখাতা- অপু তানভীর

আমাকে আপনেরা চিনেন

রাফখাতা- অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

টেক কোম্পানী গুলোর কাছে আমরা চারিদিক থেকে বন্দী হচ্ছি দিনের পর দিন !

০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:১০

আমি কোন কালেই টেক/ইলেক্ট্রনিক ডিভাইজ এক্সপার্ট ছিলাম না । এখনও নেই । ডিভাইস গুলো চালাতে যে নির্দিষ্ট পরিমান জ্ঞান থাকার দরকার আমার কেবল সেই রকম জ্ঞান টুকু আছে । ঠিক ঠাক মত স্মার্ট ফোন চালাতে পারি, উইনডোজ চালাতে পারি । মাঝে মধ্য কম্পিউটার খুলে পরিস্কার করতে পারি । দুইবার আমার পিসির পাওয়ার সাপলাই নস্ট হয়ে ছিল সেগুলো খুলে নিজেই আবার নতুন টা লাগিয়েছিলাম । এছাড়া ওয়েব সম্পর্কে কম জ্ঞান রয়েছে । মানে যতটুকু জ্ঞান থাকলে মোটামুটি ঝামেলা ছাড়াই এগুলো ব্যবহার করা যায় ।

যে কথা বলতে এলাম সেটা হচ্ছে, এই টেক কোম্পানি গুলো আমাদের নিজের অজান্তে আমাদের জীবনটা কে কিভাবে নিয়ন্ত্রন করে নিচ্ছে সেটা কি আমরা বুঝতে পারি?
কয়েকটা উদাহরন দেই তাহলে হয়তো বুঝতে পারবেন । ঘটনা গুলো আমার নিজের সাথেই ঘটেছে । বেশ অনেক আগের কথা । বই মেলার সময় । আমার এক স্টুডেন্ট সেদিন বই মেলাতে গিয়েছে । গিয়ে সে জিমি হেইডান নামের একজন লেখিকার বই খুজে পেয়েছে কিন্তু কোন কারণে সেটা সে কিনতে পারে নি । পড়ানোর সময় আমার সাথে গল্প করছে । লেখিকা নাকি বেশ ভাল লেখে । আমাদের দেশেরই লেখিকা । আমি তখন তার নামই শুনি নি । স্টুডেন্টের কথা শুনে আমি গুগলে সার্চ দিলাম তার নাম লিখে । খুজে পেলাম । বয়ো দেখলাম । সব কিছু জানলাম । এরপরই ঘটলো আসল ঘটনা । আমি গুগল থেকে বের হয়ে এলাম । কিছু সময়ে স্টুডেন্টকে লিখতে গিয়ে আমি যখন আমার ফেসবুকে ঢুকলাম তখন অবাক হয়ে দেখলাম যে আমার ফেসবুক হোম পেইজে রকমারী বুক শপের এড এসেছে । এবং গেস হোয়াট, সেখানে যার বইয়ের এড দেখাচ্ছে সেই লেখিকার নাম হচ্ছে জিমি হেইডান ।
ব্যাপার টা আমার ঠিক হজম হল না । সত্যি বলতে কী তখনও আমি এই ব্যাপারটা মোটেও খেয়াল করি নি । এড সব সময়ই এড়িয়ে যেতাম আমি ।

এরপরই ব্যাপারটা আরও ভাল করে খেয়াল করতে শুরু করলাম । আমি ইনবক্সে ব্যাপারে গল্প করলে সেটার এড আসে, কিছু সার্চ করলে সেটার এড আছে । লাইক আমি ল্যাপটপ কেনার জন্য সাইট খুজছিলাম আমার ফেসবুক ভরে গেল ল্যাপটপ বিক্রির এড দিয়ে ।
এটা তো গেল বিক্রি বাট্টার ব্যাপার ।

সব চেয়ে ভয়ংকর ব্যাপারটা হচ্ছে সিকিউরিটি ! গুগল কিভাবে আমার ফোনের সব কিছু জানে ! নতুন ফোন কিনেছি । আগের ফোনটা তখনও টিকে আছে । ফোনটা সব সময় বাসায় থাকতো সেই কারণে ফোনে লক দেওয়া ছিল না । কেবল সোয়াপ করার সিস্টেম ছিল । একদিন আমার জিমেইলে একটা সিকিউরিটি আপডেটের মেইল এল । আমি সেটা ওপেন করলাম । সেখানে আমাকে জানানো হল যে আমার আসলে জিমেইলের সুরক্ষা বাড়ানোর জন্য কি কি করতে হবে । মোবাইল নম্বর এড/আপডেট করা, রিকোভারি মেইল এড করা এইসব । একটা পয়েন্টে এসে আমার ভুরু কুচকে উঠলো । সেখানে পয়েন্ট টা এমন ছিল যে আমি আমার গুগল একাউন্ট এমন একটা ফোনে লগিন করা আছে যেই ফোনের স্ক্রিনে কোন লক দেওয়া নেই ।
ব্যাপারটা কেবল একটু ভাবার চেষ্টা করেন । আমি আমার ফোনে স্ক্রিন লক করি নি সেই খবর গুগল জানে ! তার মানে আমার ফোনের ভেতরে কি কি আছে কি ছবি আমি তুলেছি কোন ম্যাসেজ আমি কাকে পাঠিয়েছি সেই সব কিছুই সে জানে ! খুবই স্বাভাবিক !
এই রকম আরেকটা উদাহরন দেই । মোহাম্মাদপুরের আমার একজন স্টুডেন্ট থাকতো । তাকে পড়াতে যাওয়ার পরপরই খেয়াল করলাম যে আমার গুগল ম্যাপে নোটিফিকেশন আসছে । ওদের বাসার পাশেই একটা ছাত্রী হোস্টেল ছিল । আমি স্টুডেন্টের বাসায় বসে একদিন সেলফি তুলেছি । ওর রুমে বসে । দুদিন পরে আমার কাছে নোটিফিকেশন এসেছে যে ওমুক ছাত্রী হোস্টেলে বসে তোলা আমার ছবিটি গুগল ম্যাপে খুব হিট করেছে । ছয় হাজার ভিউ পেয়েছে । আমি দ্রুত গুগল ম্যাপে ঢুকলাম । দেখি সত্যিই সত্যিই আপনা আপনি সেই ছবি আপলোড হয়ে গেছে অথচ আমি কোন দিন নিজ থেকে এমন কোন আপশন চালু করি নি । পেছনে ঘুরে দেখলাম আমি আগে যে যে রেস্টুরেস্টে জায়গাতে গিয়ে ছবি তুলেছি সেসবের কিছু ছবি গুগল নিজ থেকে পাবলিক্যালি আপলোড করে দিয়েছে । এছাড়া আমি কোথায় কোথায় গিয়েছি সেই সবের একটা রেকর্ড রয়েছে ।

আমার ফোনের ভেতরে কি আছে তা তারা জানে, আমি কোথায় যাচ্ছি তারা জানে, আমি কি খুজছি তা তারা জানে, কি কিনতে চাচ্ছি তা তারা জানে কি খাবো তাও তারা জানে ! তাহলে আমাদের জীবনের কি তারা জানে না ? আর আপনি যখন একজনের জীবনের এই তথ্য গুলো জানবেন তখন আপনি তার জীবন নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন খুব সহজেই ।

এই কথা টা কোথায় জানি আমি পড়েছিলাম । যদি কোন সার্ভিসের জন্য তুমি টাকা দাও তাহলে সেই পন্যটা তুমি পাচ্ছো কিন্তু কোন সার্ভিস যদি তোমাকে ফ্রিতে দেওয়া হয় তার মানে হচ্ছে তুমি নিজেই হচ্ছে সেই সার্ভিসের কাছে পন্য । গুগল ফেসবুকের মত এই টেক কোম্পানীর কাছে আমরা এবং আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য গুলো হচ্ছে পন্য । এগুলো বিক্রি করে তারা বড়লোক হচ্ছে । এবং আস্তে আমাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নিচ্ছে । আর বেশি না ৫০ বছরের ভেতরে দেখা যাবে এই বড় বড় টেক কোম্পানি গুলো পুরো বিশ্বকে নিজেদের জালে একেবারে জড়িয়ে ফেলবে । এমন ভাবে আটকে ফেলবে যে কোন ভাবেই সেগুলো থেকে আমরা বের হতে পারবো না । সামনের বিশ্বের নিয়ন্ত্রন কোন বড় দেশের কাছে থাকবে না বরং থাকবে এই কোম্পানি গুলোর হাতে ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:০৫

নতুন বলেছেন: মানুষ যতবেশি এই সব কম্পানির পন্য ব্যবহার করবে তাদের ততবেশি আয় বাড়বে।

বাঙ্গালী ফ্রী পাইলে আলকাতরাও খায় আর ফ্রী ফেসবুক ব্যবহার করবেনা তা কি হয়।

আমারা নিজের অজান্তেই এইসব কম্পানীর পন্যের ভোক্তা হচ্ছি এবং তাদের জন্য টাকা বানাচ্ছি এটা মানুষ বোঝে না।

২৮ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ৮:৩৪

রাফখাতা- অপু তানভীর বলেছেন: কেবল তো বাঙালি না, তামাম বিশ্বের সবাই এই কাজটা করছে এবং ধীরে ধীরে আমরা তাদের হাতে বন্দী হচ্ছি । এক সময় এমন একটা পরিস্থিতি এসে দাড়াবে যে আমরা কোন ভাবেই এই টেক কোম্পানির হাত থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করতে পারবো না ।

২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:০০

বিটপি বলেছেন: কোন কিছুই ফ্রি নয়। সয়াবিন তেলের দাম যে ডাবল বেড়ে গেল অথবা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যে হাইক করে, এর মূল কারণ হল বিজ্ঞাপনে ব্যয়। একটি এফএমসিজি কোম্পানি তার বিক্রির ৫-৬% ব্যয় করে বিজ্ঞাপনে। সেই বিজ্ঞাপনের টাকা কি তারা পকেট থেকে দেয়? কস্মিনকালেও না। তীর সয়াবিন তেলের বিজ্ঞাপন দেখা যায় ফেসবুকে, ইউটিউবে। এসব চ্যানেলে আমরা ফাও ফাও কনটেন্ট দেখি, আর ১০০ টাকার সয়াবিন তেল বাজার থেকে ১৪৫ টাকায় কিনি।

২৮ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ৮:৩৫

রাফখাতা- অপু তানভীর বলেছেন: জগতে কোন কিছুই ফ্রি না এবং কেউ এসব ফ্রির জন্য করেো না ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.