![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইরানের শিয়া রেজিম ও তুরস্কের এরদোগান রেজিমের ভবিষ্যত পরিকল্পনা হলো মক্কা-মদীনা দখল করা ও খিলাফত ঘোষণা করা। এই এজেন্ডাকে বাস্তব রুপ দান করার জন্য রাষ্ট্রদ্বয় সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের ক্ষমতা বিস্তৃত করতে ও মুসলিম বিশ্বে নিজেদের উত্তম ভাবমূর্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে। ভূয়া উসমানী খিলাফতের মতো করে আরেকবার আরবদেরকে শাসন করতে হলে তুরস্কের এরদোগানকে আসতে হবে সিরিয়ার উপর দিয়ে। কিন্তু সিরিয়ার বর্তমান শাসক বাসার আল আসাদের সাথে তার আবার সাপে-নেউলে সম্পর্ক। জন্মগতভাবে বাসার আল আসাদ রাশিয়া সুপারপাওয়ার জোটের মিত্র হওয়ায় আমেরিকা-ইজরায়েলও তার প্রতি ব্যাপক খ্যাপা। তাই মধ্যপ্রাচ্যের এই 'বিষফোড়া' টাকে সরানোর জন্য পশ্চিমারা ২০১১ সাল থেকে হাতে নিয়েছে আইএস কার্ড। মিডিয়ায় তাকে পরিচিত করানো হয়েছে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ 'স্বৈরশাসক' হিসেবে, গাদ্দাফির মতন। সৌদি আরব কাতারসহ পয়সাওয়ালা মিত্ররা নিয়েছে জঙ্গীদের আর্থিক যোগানের দ্বায়দায়িত্ব। NATO এর একমাত্র মুসলিম সদস্য রাষ্ট্র তুরস্কের এরদোগানকে বানানো হয়েছে আইএসের খলিফা। বহির্বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে আগত জিহাদীদের সিরিয়ায় ঢোকার একটাই সেইফ রাস্তা, সেইটা হলো তুরস্কের বর্ডার। পৃথিবীর কোণা কাঞ্চি থেকে রপ্তানিকৃত মুজাহিদদের এরদোগান শেল্টার দিলেন, প্রশিক্ষণ দিলেন, আমেরিকান অস্ত্র হাতে ধরিয়ে বর্ডার পার করে জিহাদে পাঠালেন। এ জন্যই আমরা দেখতে পাই মুজাহিদদের শক্ত ঘাটিগুলান সিরিয়ার উত্তরেই অবস্থিত, তুরস্কের বর্ডারের কাছে। আর এই অকামগুলান করার পথে কেউ যেনো বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায় সে জন্য তাকে ভূয়া ক্যু এর নাটক করতে হয়েছে, বিরোধীদের হত্যা ও পাইকারী হারে জেলবন্দী করেছে।
এরদোগানের পরিকল্পনা হলো আইএসকে দিয়ে প্রথমে বাসারকে নাকানী চুবানী খাওয়াবে, তারপর ইরাক দখল করে মক্কা মদীনার দিকে পা বাড়াবে। কিন্তু মাঝখান থেকে পুতিন আইসা গন্ডগোলটা বাধায়া দিলো। সিরিয়ান আর্মি ও রাশিয়ান আর্মির যৌথ থাবায় জঙ্গীকার্ড যখন অচল হবার দ্বারপ্রান্তে, তখন আমেরিকা-ইজরায়েল-তুরস্ক এই তিন মহাশক্তি নিজেদের ভন্ডামীর মুখোশ খুলে প্রকাশ্যে সিরিয়ায় হামলা করা শুরু করলো। তুরস্ক ন্যাটোর অন্যতম সদস্য হওয়ায় আবার আমেরিকার প্রচন্ড সুবিধা হয়েছে। সিরিয়ায় হামলা করার ক্ষেত্রে তুর্কী বেইস ব্যবহার করে ব্যাপক সুফল পাচ্ছে।
ইরান মক্কা মদীনা দখলের পায়তারা করছে ইয়েমেন রুট দিয়ে। সে হুথী বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরঞ্জাম দিচ্ছে। সৌদি আরব আবার ইরানের ষড়যন্ত্র নস্যাত করার জন্য আমেরিকা ইজরায়েলের নিকট ধর্না দিচ্ছে। ফলশ্রুতিতে ইয়েমেনের উপর আমেরিকান-ইজরায়েলী বোমা পড়ছে। ঝাঁঝরা হচ্ছে নারী-শিশু-যুবক-বৃদ্ধ। রমযান মাসটাতেও ছাড় নাই। কিছুদিন আগে আমেরিকার সঙ্গে সৌদির যে ১১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি হলো, সেগুলা তো আর মুখ দেখার কাজে ব্যবহার করা হবে না, সৌদি মশায় ওগুলা দিয়ে ইয়েমেনীদের বিরুদ্ধেই জিহাদ করবে।
মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রথম মিত্র হলো ইরাকের মালিকি সরকার। সাদ্দামকে হটিয়ে সেখানকার পুতুল সরকার ইরানকে গিফ্ট হিসেবে দিয়েছে আমেরিকা। এরপর মিত্র হিসেবে গ্রহণ করেছে সিরিয়ার বাসার আল আসাদকে। যদিও বন্ধুর এই দুর্দিনে চোখে পড়ার মতো সহযোগীতা ইরানের দেখা যায় নাই। আমেরিকার চাপেই হয়তোবা।
সম্প্রতি সউদি-কাতার দ্বন্দ্বে কাতারকে মিত্র হিসেবে পেয়ে তুরস্ক ও ইরান যেনো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি পেলো। খিলাফতকে বৈধতা দিতে গেলে বন্ধু দরকার। সৌদি জোটে যত ভাঙ্গন ধরবে ততই এই দুই সুযোগ সন্ধানীর লাভ। সৌদি থেকে কাতার বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর এই দুই শক্তি কিভাবে কাতারকে আদর আপ্যায়নে মনোনিবেশ করেছে তা পাঠকবর্গ দৈনন্দিন খবরের মাধ্যমে অবগত আছেন।
তবে এদের খিলাফতি স্বপ্নে পানি ঢালার জন্য ইজরায়েল ওঁত পেতে আছে। ইজরায়েলের মহাপরিকল্পনা হলো মিশরের নীলনদ থেকে ইরানের সীমানা পর্যন্ত অঞ্চল দখল করা। ইহুদী খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা। মক্কা মদীনা অবশ্য পরিকল্পনার বাইরের অঞ্চল। গ্রেটার ইজরায়েলে মক্কা মদীনার দরকার নাই। ইজরায়েলের এই পরিকল্পনার পথে তুরস্ক কোনো বাধা নয়। কারণ গ্রেটার ইজরায়েলে তুরস্ক নাই। তবে নিজ বর্ডারের কাছে ইজরায়েলের অস্তিত্বকে সহ্য করতে না পারলেও এরদোগানের কিছু করার থাকবে না। ন্যাটো ছাড়া সে পঙ্গু, এবং ন্যাটো হলো ইজরায়েলের প্রোটেক্টর। তুরস্কে যে নিউক মজুদ আছে তাও আমেরিকান নিউক, ন্যাটোর কন্ট্রোলেই আছে।
কিন্তু ইরানকে নিয়ে ইজরায়েলের শঙ্কা আছে। একে তো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র, তার উপরে নিজস্ব নিউক আছে। ইজরায়েলের বর্ডার ইরানের সীমান্তে গেলে ইরানের বিপুল ইজরায়েল'বিরোধী জনগণ ঝাঁটা মিছিলে বের হবে। তাই গ্রেটার ইজরায়েল বানাবার আগে ইজরায়েলকে ইরানের নিউক্লিয়ার শক্তির ধ্বংস নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে পাকিস্তানেরও। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে নিউক থাকা মানে ইজরায়েলের গলায় মাছের কাঁটা আটকে থাকার মতন।
অনেকে বলতে পারেন, ইজরায়েল মশা থেকে হাত্তি হবে, আর জাতিসংঘ কি বইসা বইসা আঙ্গুল চুষবে? তাদেরকে স্মরণ করায়ে দিতে চাই, ইজরায়েল ব্যাক্টেরিয়া থেকে মশায় পরিণত হইছে, জাতিসংঘ কিন্তু চুপই আছে। আর তাছাড়া গ্রেটার ইজরায়েল যখন এস্টাব্লিশড হবে তখন জাতিসংঘের অস্তিত্ব থাকবে না। নিউক খাইয়া ধুলা হয়ে পড়ে থাকবে।
©somewhere in net ltd.