![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যারা নিজেরা কোনোদিন গেষ্টরুম ফেস করেন নাই কিংবা দেখেন নাই তারা গেষ্টরুম নিয়া ভালো-মন্দ যাই বলুক তা কখনোই গ্রহনযোগ্য হতে পারেনা। আপনি নিজে যে ব্যাপারটা ফেস করেন নাই সেটা নিয়া আপনি মন্তব্য করার আগে নিশ্চয়ই ভালভালো ভাবে খোঁজখবর নেয়া দরকার। আর যদি তা না করে হুট করে একটা মন্তব্য করে বসেন তাহলে আপনি স্রেফ একটা যুক্তি বিবর্জিত লোক। এই খোঁজখবর নেয়ার জন্য সবথেকে ভালো সোর্স কে হতে পারে? যে কখনো হলেই থাকেনি সেই শিক্ষার্থী নাকি সেই শিক্ষার্থী যে প্রথমবর্ষে হলে থেকে অন্তত ৬ টা মাস গেষ্টরুম ফেস করছে?
বলে রাখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিন্তু প্রথম বর্ষের কাউকে হলে জায়গা দেয়না। এইবার বুদ্ধিমানেরা বলেন যে শিক্ষার্থীদের বাহিরে মেসে ভাড়া দিয়ে থাকার সামর্থ্য নাই সেই শিক্ষার্থী কে যদি কেউ গেষ্ট রুমের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় এর হলে ফ্লোরিং করার সুযোগ দেয় সেটা কি অপরাধ? তাছাড়া কোনো শিক্ষার্থী কেই তো জোর করে হলে তোলা হয়না। শিক্ষার্থীরা তো নিজেদের ইচ্ছাতেই সিনিয়র সহযোগিতায় গেষ্টরুমের মাধ্যমে হলে ওঠে। হলে ওঠার পর যদি তাদের খারাপই লাগে তাহলে তাদের চলে যেতেও তো কেউ বাধা দেয়না। তবুও তারা হলে ক্যান থাকে? উত্তর আছে আপনার কাছে? আমি বলি শোনেন যারা হলে থাকে তারা হয় অভাবের কারনে থাকে কিংবা ভালো লাগা থেকেই থাকে। কাউকেই জোর করে হলে রাখা হয়না। এবার একটু অন্যভাবে বলি। আচ্ছা ধরুন গেষ্টরুম থেকে রাজনৈতিক ভাবে কাউকে হলে তোলা হল না। তাহলে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে চান্সপ্রাপ্ত ঢাকার বাইরে থেকে আসা অন্তত ৪০০০ শিক্ষার্থী কে মেস কিংবা বাসা ভাড়া করে থাকতে হবে। ধরলাম তাদের ১০০০ জন বিভিন্ন ভাবে মেসে কিংবা আত্নীয়র বাসায় থাকলো। বাকি ৩০০০ শিক্ষার্থী যাদের পরিবারের সাধ্য নাই বাহিরে থাকার খরচ যোগানো। তাদের দায়িত্ব কে নেবে? আপনারা কে কে আছেন যারা এই শিক্ষার্থীদের অন্তত একজনকে হলেও এক বছরের জন্য আপনার বাসায় শুধু ফ্লোরিং করতে দেবেন? তারপর ধরেন এই মুহুর্তে আপনার বোনের অপারেশন এর জন্য রক্ত লাগবে ৫ ব্যাগ। আপনার পক্ষে এই রক্ত ম্যানেজ করা কি খুব সহজ কাজ? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর আশেপাশের সহ ঢাকার অন্যান্য হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোতে খোজ নিন। তাদের জিজ্ঞাস করুন প্রয়োজনীয় রক্তের সিংগভাগ কই দিয়া আসে? দানকরা লক্ষ লক্ষ ব্যাগ রক্তের মূল ডোনার কিন্তু এই গেষ্টরুম করা শিক্ষার্থীরা। বড়লোকের আদরের দুলাল দুলালীরা আপনারা লাইফে কে কয়বার রক্ত দিয়েছেন? প্লিজ উত্তর দিবেন। যে টাকা আপনি একদিনে খরচ করেন, সেই টাকায় হলে গেষ্টরুম করা ছেলেটা অন্তত একসপ্তাহ চলে। আপনার অনেক টাকা, বেশ ভালো খাওয়া দাওয়া করেন, ভালো বিছানায় ঘুমান তবু আপনার শরীরের রক্ত দেয়ার কথা বললে আপনারা অনেকেই শিউরে ওঠেন। আর এই গেষ্টরুম করা যে শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে ফ্লোরে ঘুমায়, হলের ক্যান্টিন এর ডাইল খায় তাদের অন্তত ৮০% শিক্ষার্থী লাইফে অন্তত পাঁচবার রক্ত দিয়েছে। আমি এ যাবত ১৭ বার রক্তদান করেছি। আর হ্যা ওই যে ওরা এক রুমে গাদাগাদি করে থাকেনা ওইখান থেকে যে সহমর্মিতা আর আত্নার বন্ধনটা সৃষ্টি হয় সেটা আপনারা কখনোই বুঝবেন না। পকেটে ১০০ টাকা থাকলে সেই টাকার অর্ধেকটা তার বন্ধুর জন্য বরাদ্দ রাখে এরা। আচ্ছা হলের গেষ্টরুম থেকে যদি একজন অসহায় মানুষের চিকিৎসার জন্য টাকা তুলে দেয়া হয় কিংবা অসুস্থ রোগির জন্য প্রয়োজনীয় রক্তের ডোনার সংগ্রহ করে দেয়া হয় সেগুলো কি অপরাধ?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের প্রায় প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারাবাহিকতায় সিনিয়ররা তাদের জুনিয়রদের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন বুঝিয়ে দিয়ে থাকেন। নিজ নিজ ছাত্র সংগঠনের নীতি, আদর্শ ইত্যাদি ছাড়াও সাংস্কৃতিক আচরণ ও আদর্শবোধ উঠে আসে গেষ্টরুমে পারস্পরিক আলোচনায়। প্রায়ই অসুস্থ রোগির জন্য গেষ্টরুম থেকে প্রয়োজনীয় রক্তের ডোনার সংগ্রহ করে দেয়া হয়। অসহায় মানুষের সহযোগিতার জন্য চেষ্টা করা হয়। কনিষ্ঠ কারও কোনো সমস্যা থাকলে জ্যেষ্ঠরা তা শুনে সমাধান করার চেষ্টা করেন। মুক্তবুদ্ধির চর্চা, পারস্পরিক যোগাযোগ, কুশল বিনিময় ও ভাবের আদান-প্রদানও হয়ে থাকে গেস্টরুমের আড্ডাগুলোতে। আড্ডার মধ্য দিয়ে হলের সিনিয়রদের সঙ্গে জুনিয়রদের একটা ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এখান থেকে। ভালো খারাপ সব জায়গায়ই থাকে। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি জুনিয়রদের সাথে নেগেটিভ আচরন করে এমন বড় ভাইয়ের সংখ্যা পুরো ক্যাম্পাসেই খুব নগণ্য। তেমনি গেস্ট রুমের অধিকাংশ বড় ভাইয়েরাই হেল্পফুল ও আন্তরিক। ৪ বছরের গেষ্টরুম লাইফে যে উপকার আমি পেয়েছি সে হিসেবে ওই সামান্য দুই একজনের নেগেটিভ আচরণ মোটেই বলার মতো কিছুনা। আমার বিপদে এই গেষ্টরুম করা ছেলেগুলো যেভাবে পাশে এসে দাড়িয়েছে সেটা আমি ভুলিনি। আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন আরো সুন্দর ও সহজ হয়েছে গেষ্টরুম থেকে পাওয়া বড় ভাইদের পরামর্শে। অনেক বন্ধু পেয়েছি এখান থেকে। এক কথায় বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সামাজিকীকরণে গেস্টরুম সংস্কৃতি নবীন শিক্ষার্থীর জন্য সহায়ক।
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৭
মোঃ মাজহারুল ইসলাম মিরাজ বলেছেন: ভালো খারাপ সব জায়গায়ই থাকে। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি জুনিয়রদের সাথে নেগেটিভ আচরন করে এমন বড় ভাইয়ের সংখ্যা পুরো ক্যাম্পাসেই খুব নগণ্য। তেমনি গেস্ট রুমের অধিকাংশ বড় ভাইয়েরাই হেল্পফুল ও আন্তরিক। ৪ বছরের গেষ্টরুম লাইফে যে উপকার আমি পেয়েছি সে হিসেবে ওই সামান্য দুই একজনের নেগেটিভ আচরণ মোটেই বলার মতো কিছুনা। আমার বিপদে এই গেষ্টরুম করা ছেলেগুলো যেভাবে পাশে এসে দাড়িয়েছে সেটা আমি ভুলিনি।
২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২২
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: গেস্টরুমের অজানা অধ্যায় জেনে কষ্ট পেলাম। অসহায় ছেলেদের প্রতি সহমর্মিতা জানাই।
৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৭
আখেনাটেন বলেছেন: ''বড়লোকের আদরের দুলাল দুলালীরা আপনারা লাইফে কে কয়বার রক্ত দিয়েছেন? প্লিজ উত্তর দিবেন। যে টাকা আপনি একদিনে খরচ করেন, সেই টাকায় হলে গেষ্টরুম করা ছেলেটা অন্তত একসপ্তাহ চলে।'' ভালো বলেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৪
শূণ্য পুরাণ বলেছেন: অাপনার কথা ঠিক অাছে,গেস্ট রুম থেকে অনেক কিছু জানার অাছে,তবে এর উল্টো পিঠও অাছে সেটাও সমান গুরুত্ববহ, লেখাটা একপেশে না হলে ভাল হত।