![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[link|http://অসুখ ১ম পর্ব
2য় পর্ব
৯ই মে ২০১৪
সকাল ৮ টা । হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
এতো তারাহুরা কেনো ? কোথায় যচ্ছিস রাইফা? তোর বাবা কে তো বলে যা...........
নাহ্ মা.......... বাবা যেতে দেবে না ,বাবা কে তুমি সামলিও। আমি আসছি একটা কাজ আছে, অপরিপূর্ণ একটা কাজ.............
ওফ্ এতো জ্যাম ঢাকায়.........কবে যে জ্যাম মুক্ত ঢাকা পাবো....ধ্যাত!
৯ই মে, শুক্রবার,সকাল ১১ টা
টিং টিং টিং......
আরেহ্ রাইফা !!!??? তুমি? বেচেঁ আ............... মানে কেমন আছ?
হুম..... ভালো, তুমি কেমন আছ তাসমিয়া? তুমি এখানে? বেড়াতে আসছো? রানা কোথায়?
ইয়ে মানে আমি........ হু... রানা ভেতরে আছে। তুমি বসো আমি ডেকে দিচ্ছি।
ঠিকআছে ।
রাইফা....................!!! তুই ???!! তুই বেচে আছিস? কিন্তু আমরা যে শুনেছিলাম তুই আর নেই!!
মানে? কি বলছিস? তোকে তো জানিয়েছিলাম যে আমার অপারেশন সাকসেসফুল........তোকে তো ফেন করা হয়েছিল। বাবা করেছিরেন নিজে। তোর বাবা ধরেছিলেন তোর ফোন টা ,তুই তখন নাকি বাহিরে গিয়েছিলি ফোনটা রেখে!!!!
আমার বাবা ই তো বললেন যে, তুই নাকি আর নেই!!!
কি বলছিস আঙ্কেল এমন করবেন কেনো!??????
দাড়া বাবাকে জিজ্ঞেস করছি এখুনি।...তাসমিয়া আমার ফোনটা দাওতো......................
এই নাও। রাইফা চা খাবে? চা দেবো?
নাহ্ তাসমিয়া আমাকে এক গ্লাস পানি দাও পারলে।
দিচ্ছি।
হ্যালো......... বাবা !
হ্যালো............ রানা বল । কেমন আছিস? তাসমিয়া কেমন আছে?
আচ্ছা বাবা রাইফার বাবা তোমাকে ফোন করে সেদিন কি বলেছিল?
এতোদিন পর আবার এই প্রশ্ন? তোকে তো বলেছিই।
আবার বলো কি বলেছিল?
বলেছিল যে, ওনার মেয়ে আর বেচেঁ নেই।
বাবা সত্যিই আঙ্কেল এইটাই বলেছিল?
কেন তুই কি আমাকে মিথ্যাবাদী বলছিস (রাগান্বিত স্বরে)
বাবা তুমি যদি সত্যি কথাই বলে থাকো তাহলে কি আমার সামনে এখন রাইফার ভুত দাড়ায় আছে? বলো বাবা.......
(ফোনের ঐ পাশে নিরবতা)..........
বলো বাবা চুপ করে আছো কেনো? কেনো বাবা কেনো? কেনো এতোবড় ক্ষতি করলে তুমি আমার? কি দোষ করেছিলাম আমি যে আমাকে এতোবড় শাস্তি দিলে? বলো..................
দোষ তোর না...............তুই আমার একমাত্র ছেলে। কি করে তোকে ঐ অসুস্থ মেয়ের হাতে তুলে দিতাম আমি? আমার বংশ আমি নষ্ট করতে পারতাম না আমি।
ছিঃ ........তুমি তো আমার সাথে যা করেছো তা কোন শত্রূ ও করে নাহ্ ।তোমাকে বাবা বলতে আমার ...............(ফোন কেটে দিয়ে)
রাইফা.....................আই এম সরি............সরি রাইফা..........আমাকে তুই মাফ করে দে...........আমি তোর যোগ্য নই........(কান্না করতে করতে)
হুম.........রানা.......তুই তাসমিয়াকে বিয়ে করেছিস?........(জানালার দিকে যেতে যেতে.....চোখের পানি আড়াল করতে) ।ভাল হয়েছে কতদিনই বা আমার জন্য অপেক্ষা করতি আর।
রাইফা এভাবে বলিস না....... বাবার কাছ থেকে তোর মৃত্যুর খবর পেয়ে অনেক ভেঙ্গে পড়েছিলাম আমি। ৬টা মাস ধরে আমি পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিলাম। তাসমিয়া তখন আমার পাশে এসে দাড়িয়েছিল। তুই তো এর মঝেও একবারো ফোন করে কিছু জানালিনা..........।কেনো রাইফা??
কি হবে এখন এসব বলে? থাক্ বাদ দে..........
নাহ্ বল তুই............বলতেই হবে ,পরবর্তীতে কেনো যোগাযোগ করলিনা?
অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছিল ঠিকই.....তবে, আমি দীর্ঘ ৭ মাস কোমাতে ছিলাম। তোকে যে জানানো হয়েছে সেটা তো বাবা জানতেনই তাই আর তোকে নতুন করে কিছু জানায়নি। তছাড়া বাবা আমাকে নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকতো............. যাক্ যা আমার ভাগ্যে ছিল না তা তো আর পাবো না.....................
রাইফা আমাকে মাফ করে দিও.......আমি তোমাদের মাঝে চলে এসেছি এর জন্য। কিভাবে কি হয়ে গেল!
নাহ্ তাসমিয়া তোমার তো কোন দোষ নেই। সব আমার ভাগ্যের দোষ। যাইহোক......দোয়া করি তোমরা ভালো থাকো। আমি আসি এখন........
আসি রানা..............তাসমিয়াকে কখনো কষ্ট দিওনা আমার কারওণ, তাহলে নিজেকে আমি মাফ করতে পারবো না। বাই।
রাইফা...........আমাকে মাফ করে দিও। জানি এর যোগ্য নই আমি তবুও..............
১৫ ই মে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
আসি মা.......(মা কে জরিয়ে ধরে)...
আসি বাবা .............(বাবা কে জরিয়ে ধরে)
তোকে আর বাধা দেবো না মা, আমেরিকায় তোর চাচ্চুর বাসায় থেকে তোর পড়াশুনা টা শেষ কর। নিজের খেয়াল রাখিস। আর ঔষধগুলো ঠিকমতো খাস।
আচ্ছা মা.........চিন্তা করো না। বাবার খেয়াল রেখো্।
বাই বাবা...........টেইক কেয়ার।
ভালো থাকিস মা ,পারলে সব ভুলে নতুন করে জীবন শুরু করিস। তোকে আল্লাহ্ নতুন জীবন দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন। জীবনটা কে হেলাফেলায় নস্ট করিস না। সময় সবকিছু শীতল করে দেয় মা............
হুম বাবা......তোমরা চিন্তা করো না তো........তোমাদের মেয়ে আবার আগের মতো হয়ে যাবে.............দেখো। সবাই পারলে আমিও পারবো..........(দীর্ঘশ্বাস)
©somewhere in net ltd.