নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসঙ্গ রাত্রি

ওভীক আহমেদ

হাই আমি অভিক আহমেদ । আমি ঢাকা তে থাকি । মাঝে মাঝে নেট এ বিভিন্ন লিখা লিখি । বস্তুত আমি কোনও লেখক নই বাট মাঝে সাঝে লিখার ট্রাই করি । ০১৯১৯৮৪২২১৪ এটা হল আমার সেল ফোন নাম্বার । তো আজ এই পর্যন্ত থাকুক । বাই ।

ওভীক আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয়, অরুন্ধতী

০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩৫

প্রিয়,
অরুন্ধতী। ভালো আছিস তো? আজকাল তোকে খুব মনে পড়ে জানিস?
শেষবার যখন দেখা হয়েছিলো— বলেছিলি আবার দেখা হবে।
জানি কথার কথা, কিংবা কে জানে, হয়তো হয়েও যেতে পারে। কত দিন তোর মুখটা দেখিনা। তুই তো জানিস তোর ওই মুখখানা কত প্রিয় আমার।
দ্বাদশীর চাঁদের মতন তোর সেই কপাল, ধনুকের ছিলার মতন সেই জোড়া ভ্রু, বাঁশীর মতন সেই নাক, সেই একজোড়া বিষণ্ণ ডাগর চোখ, সেই ভাঁটফুল রঙা গাল, সেই কাঞ্চন রঙা ঠোঁট... খুব মিস করছি জানিস? কতদিন দেখি না তোকে, কতদিন! এখন আর ব্যানার্জী বাড়ী যাওয়া হয় না জানিস? খুব ইচ্ছা করে যেতে কিন্তু যাই না। গিয়ে কি লাভ বল? ওখানে তো আর তুই থাকিস না। সেই কবে শহুরে মানুষ হয়ে গেছিস! আমার কথা কি আর মনে আছে তোর? মাঝেমাঝে কি মনে হয় জানিস? আমার কথা তুই ঠিকই মনে রেখেছিস। আমিই হয়তো জানি না।
ভালোবাসা কী গোপন থাকে বল? হৃদয় কী দেয় না হৃদয়ের গোপন আভাস? কী জানি, সময় যে বড় বে-রহম!
.
অরুন্ধতী, জানিস? ঠিক এই চিঠিটার মতোই রোজ রাতে তোকে একটি করে চিঠি লিখি, রোজ সেই চিঠি ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করি। কি করবো বল? তোকে যে পাঠাবো সে সাহস তো হয় না!
.
সঙ্গীতা, প্রিয় অরুন্ধতী!
কত দিনের ইচ্ছে তোকে একটি চিঠি লিখি। সঙ্গীতা বলেই সম্বোধন থাকবে সে চিঠিতে। অরুন্ধতী বললে যদি রাগ করিস! সে অধিকার তো দিসনি আমায়। সে চিঠি একদিন অবশ্যই তোর হাতে পৌঁছুবে, ছিঁড়ে কুটিকুটি হবে না। চিঠি যদি সর্বহারার আকুতি হয়, ব্যাকুল প্রেমের মিনতি হয়, তবে তো তাকে অবশ্যই পৌঁছাতে হবে।
.
আজকাল খুব সাধ হয় তোর আঁচল ধরে তোরই চারপাশে ঘুরঘুর করি। তুই বিরক্ত হবি, কপট রাগে ঝাড়ি দিবি, কিংবা ভ্রু কুঁচকে চোখ পাকিয়ে ভয় দেখাবি— কিন্তু আঁচল ছাড়িয়ে নিবি না। খুব ইচ্ছে করে তোর খোলা-অবাধ্য চুলের একগোছা টেনে নিয়ে চেপে ধরি নাকের সাথে। চুলের গন্ধে উন্মাতাল হয়ে ডুব দেই তোর মাঝে। নিয়তি কষে চড় লাগায় জানিস? এসব ভাবনা ভাববার অধিকারও তো আমার নেই। এসব তো পাগলের ভাবনা।
হয়তো পাগল হতে আর বেশি দেরি নেইরে...।
.
বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেলাম তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে।
ব্যানার্জী বাড়ির বড় মেয়েটির বিয়ে। আমার অরুন্ধতীর বিয়ে। শুনে খুব আনন্দ হলো জানিস? খুশিতে চোখে পানিই চলে এসেছে একেবারে। তোর জন্য খুব প্রার্থনা— অনেক সুখী হ' জীবনে। আলোয় আলোয় ভরে উঠুক তোর সাধের গৃহস্থালি। একশ' ওয়াটের প্রাচীন বৈদ্যুতিক বাতির ক্যাটকেটে হলুদ আলো নয়, ঝুম জোছনার থৈ থৈ নীল আলো।
.
শেষবার কি কথা দিয়েছিলি মনে আছে? বলেছিলি আবার দেখা হবে। আমিও জানি, আবার দেখা হবে, হবেই...। সেদিন কিন্তু তোর ডাগর চোখ দুটোয় খুশির ঝিলিক দেখতে চাই। বিষন্ন দৃষ্টি তোকে একদম মানায় না। কালো শাড়ীতে তোকে কী যে সুন্দর লাগে। কি রঙের শাড়ী পরবি বিয়েতে? দাওয়াত দিবি তো? না দিলেও আসবো কিন্তু...। খুব খাওয়া দাওয়া করবো তোর বিয়েতে। একাই দু'তিন বাটি মাংস সাবাড় করে দেবো। খুব ভালো হতো রান্নাটা যদি তুই করতি। কিন্তু কি আর করা? বিয়ের কনে তো আর রান্না করে না। একদিন তোর বাসায় গিয়ে তোর হাতের রান্না খেয়ে আসবো। ভালো কথা, আগের মতো রাঁধতে পারিস তো? নাকি শহরে গিয়ে সব ভুলে গেছিস?
.
একটা কথা কি জানিস সঙ্গীতা? প্রতিটি মানুষের জীবনেই একটা শেষ ইচ্ছে থাকে। আমার জীবনের শেষ ইচ্ছে কি জানিস? একটিবার তোকে কনের সাজে দেখবো।
একটিবার তোর চোখে চোখ রেখে মিলিয়ে নেবো জীবনের শেষ হিসেব নিকেশ। সে ভাগ্য হবে কিনা জানি না। তবু তোর সৌভাগ্যের তারারা চির উজ্জ্বল হোক সেই শুভকামনা থাকবে সারাজীবন। ভালো থাকিস। খুব ভালো থাকিস।
.
ইতি—
তোর হুতুম পেঁচা।
.
পুনশ্চ:
তোর মনে আছে কি না জানি না, রেগে গিয়ে মুখ গোঁজ করে রাখতাম বলে, ছোটবেলা থেকেই তুই আমাকে হুতুম পেঁচা বলে ডাকতি। হয়তো ভাবতি— হুতুম পেঁচা ডাকলে আমি বুঝি রাগ করতাম। তুই যাই ভাবিস, আমার কিন্তু নামটা ভালোই লাগতো। হা হা হা...। ভালো কথা, তোর বরটা কেমন হয় জানাবি কিন্তু? আমার মতো গরিব স্কুল মাস্টার বিয়ে করিস না যেন আবার! অনেক পয়সাওয়ালা দেখে একটা বর খুঁজে নিবি। যাতে কোনদিন অর্থকষ্ট পোহাতে না হয়। এই পৃথিবীতে টাকার কষ্ট অনেক বড় কষ্টরে পাগলি। কথাটা মনে রাখিস। মাঝেমাঝে সামান্য কয়টা টাকার জন্যে মানুষকে যা হারাতে হয়, পৃথিবীর সব টাকা দিয়েও তার ক্ষতিপূরণ হয় না। ভালো থাকিস।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৪৯

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: মাঝেমাঝে সামান্য কয়টা টাকার জন্যে মানুষকে যা হারাতে হয়, পৃথিবীর সব টাকা দিয়েও তার ক্ষতিপূরণ হয় না। চরম বাস্তব একটা কথা।
খুবই ভাল লাগল।।

২| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০৮

বর্ণিল হিমু বলেছেন: ভাই চোখে পানি এসে গেলো......!

৩| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:১৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অরুন্ধতীরা আসেই বুঝী হারিয়ে যাবার জণ্যে। মাঝখানে শুধু স্বপ্নের বিশাল সরোবর গড়ে দিয়ে যায়..
হাবুডুব খায় শুধূ হুতুম পেচারা :)

+++++++++++++++++=

৪| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:২৯

মারুফ তারেক বলেছেন: ভালো লাগল-
হারানো শান্তি, হারানো স্মৃতি
অথবা আজকের বেদনা।
++

৫| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:০৭

বিজন রয় বলেছেন: টাচি লেখা।
++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.