নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
- শুনতাছো বাবা ?
- কিরে মা ?
- ঐ যে মাইকে কি জানি কইতাছে ।
- দাঁড়া, একটু শুইনালই।
সীতেশ সরকার কান দুটি খাড়া করে মাইকের কথা শুনার চেষ্টা করছেন। অনেক দূর থেকে আওয়াজটা তাদের বাড়ীর দিকে ভেসে আসছে। গভীর হাওরের মধ্য থেকে বিকেলের শীতল বাতাস পাল তোলা নৌকাকে যেভাবে তীরে ভীড়ায় সেভাবে।
- দেখছ বাবা, আজ মহেশ এর নামটা কীভাবে মাইকে কইতাছে। আচ্ছা বাবা, তুমিও তো একদিন ভাল ঢোল বাজাইতা, তোমার নাম তো কখনও মাইকে এমন কইরা কইতে শুনি নাই।
- শুনবে কী কইরারে মা। আমি তো আর মহেশের মতো বাজাইতে পারি না। ভগবান সবাইকে সব কিছু দেয়না রে মা। আর দিলেও সবাই ঠিক মত কাজে লাগাইতে পারে না। মহেশ কাজে লাগাইছে সেজন্য তার নাম আজ মাইকে বাজতাছে।
তোরা বাপ-মাইয়া দুজনে কী কথা কইতাছস মায়া ?
- মা, আজ রাইতে দূর্গা মন্দিরে মহেশ ঢোল বাজাইব। মাইকে তাঁর নাম লইয়া এলাকা ফাটাই দিতাছে। আমার যে কী ভাল লাগতাছে মা।
- মহেশ ঢোল বাজাইব তাতে তর কী মায়া। এই আনন্দ তো মহেশের মা-বাবার, ভাই-বোনের। তাতে তর কী ?
লজ্জ্বায় মায়ার মুখে বিকেলের অস্তিম সূর্যের আভা ছোঁয়ে গেছে যেন।
আসলেই তো, তাতে তাঁর এত ভাল লাগার কারণ কি। মহেশের সাথে তাঁর একদিনই কথা হয়েছে। তাও কিছু সময়ের জন্য। সেইবার যখন জমিদার বাড়িতে মহেশের ঢোল বাজানোর আয়োজন করা হয় তখন মায়া মহেশের আঙ্গুলের কারসাজি খুবই যত্ন নিয়ে খেয়াল করছিল। আসরের মানুষ যখন মহেশের ঢোল বাজানোর ছন্দে মাতাল, তখন মায়া নিরিবিলি মহেশের হাতের আঙ্গুলের যাদু দেখছে। মহেশ যেন একমাত্র তাকেই এই মনোমুগ্ধকর যাদু দেখাচ্ছে।
আসর ভাঙ্গার পর মানুষ যখন বাড়ী ফিরে ফিরবে তখনই মায়া মহেশের গা ঘেসে দাঁড়ায়। মহেশ তাকিয়ে থাকে তাঁর দিকে। মায়া মহেশকে কানের কাছে গিয়ে বলে, এত সুন্দর কীভাবে বাজাও মহেশ ? তুমি কী আমাকে একটু শিখাইবা ?
মাথা নিচু করে মহেশ হাসে। এ হাসি লজ্জ্বার না অপমানের তা বুঝেনা মায়া। বুঝার চেষ্টাও করেনা। লাজুক স্বরে মহেশকে বলে, তোমার আঙ্গুলগুলো একটু স্পর্শ করি। মহেশের কথার অপেক্ষা না করেই তাঁর আঙ্গুলগুলো টেনে নেয় মায়া।
পাশে দাঁড়ানো সীতেশ সরকার মায়ার কনুই ধরে বলেন, চল মায়া, অনেক রাইত হইছে।
পুরানো কথা মনে করতেই মায়ার গা শিহরন দিয়ে উঠল। মাইকের আওয়াজটা এখন তাদের বাড়ীর পাশ দিয়েই যাচ্ছে। ‘ভাইসব, বিরাট এক ঢোল বাজনার আয়োজন করা হইয়াছে... ...
আজ দূর্গা মন্দিরের চারদিকে বিভিন্ন রং এর বাতি লাগানো হয়েছে। লাল, সবুজ, হলুদ, আরোও বিভিন্ন আইটেমের। মায়া তাঁর মায়ের শরীর ঘেষে নিরিবিলি বসে আছে নিরীহ খরগোশের বাচ্চার মতো। তাঁর অপেক্ষার প্রহর কাটছেনা কিছুতেই। এখন আসরের মধ্যে বিভিন্ন শিল্পীর গান পরিশেন হচ্ছে। মায়াদের পাশের বাড়ীর ছোট্ট মিথিলা কী মিষ্টি গলায় গান ধরেছে ! অঞ্জলী লহ মোর সঙ্গীতে.... । আহ্ ! কত মিষ্টি গান।
মাইক থেকে কিছুক্ষণ পরপর ঘোষনা আসছে, ‘একটু পরই শুরু হবে আমাদের আসল প্রোগ্রাম। আমাদের গ্রামের সুসন্তান, আমাদের গৌরব, মহেশের ঢোল বাজনা।’
মাইকের ঘোষনার সাথে সাথে মায়া এদিক ওদিক তাকায়। মহেশকে সে নিরবে,গোপনে খুঁজে। না, এখনও আসছে না সে। মায়া ভাবে, ‘মহেশ কী পড়বে আজ ? সাদা ধুতির সাথে সোনালী পাঞ্জবীটা কি পড়বে সে ? কোন্ গানগুলো বাজিয়ে আজ রাতটাতে দর্শককে মাতিয়ে রাখবে।’
হঠাৎ মায়া তাঁর মোবাইলের শব্দটা কানে আসতেই কেঁপে উঠে। হাতের মুঠে রাখা মোবাইলটায় চোখ রেখে খেয়াল করে অজানা এক নম্বর থেকে কল আসছে। কিছু না ভেবেই সবুজ বাটনে চাপ দেয় মায়া। মিটিমিটি আলোর মাঝে মোবাইলটা কানের কাছে নিয়ে যায় সে। ওপাশের কথা শুনেই চিৎকার দিয়ে উঠে মায়া। তাঁর শরীরে কাপন ধরে। মাকে ফেলেই দৌড়ায় আলোকজ্জ্বল মন্দির পেছনে ফেলে গভীর অন্ধকারের দিকে।
বাঁকা পথের এক কিনারায় তরতাজা সবুজ ঘাসের উপর নিথর ভাবে পড়ে থাকা রক্তে মাখা মহেশের মাথাটা পরম মমতায় কুলে নেয় মায়া। ডান হাতের দুটি আঙ্গুল মাটিতে রাখা কচু পাতার উপর কে যেন যতন করে রেখে দিয়েছে। ঢোলটা গড়িয়ে গিয়ে পানিতে ভাসছে মনের কষ্টে।
হঠাৎ কেউ একজন বলে উঠল- ওরে, ওর প্রাণ বায়ু এখনও বের হয়নি রে !
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:০৩
পার্থ তালুকদার বলেছেন: কারনটা গোপনই খাক । লিখলে আবার উপন্যাস হয়ে যাবে !!
ভাল থাকবেন ভাই।
২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪৪
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
কারণটা যদি উল্লেখ না করতে চান তবে ইঙ্গিত থাকলে ভাল হতো ৷ অণুগল্প হলে কিছু বর্ণনা কমাতে পারেন ৷
পুরোটাই লেখকের স্বাধীনতা ৷
মঙ্গলার্থে.....
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২২
পার্থ তালুকদার বলেছেন: শুভকামনা রইল প্রিয় ব্লগার।
মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫০
মামুন রশিদ বলেছেন: খুব চমৎকার ভাবে প্রান্তিক মানুষদের স্বপ্ন আর জীবনের খন্ডাংশ তুলে ধরেছেন । নৃশংসতার কারণটা সামান্য ইঙ্গিত দিলে গল্পে আরো অভিগাত তৈরি হতে পারতো ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩২
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই, অনেক ধন্যবাদ ।
মহেশের এমন পরিনতি জানার আগ্রহটা আমি ভালই এনজয় করছি । বলতে পারেন আমি যা চেয়েছিলাম তাই পেয়েছি। হা হা .....।
শুভকামনায় .....।
৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৪
জুন বলেছেন: এটা কি কোন হিংসার ফসল ছিল ?
ভালোলাগলো অনু গল্প ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৬
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ ব্লগার জুন .....।
গল্পে যেহেতু কারনটা উল্লেখ করিনি তাহলে গোপনই থাকনা ..... হা হা
৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৫
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
মহেশকে জানার আগ্রহ থেকে গেলো,পার্থ তালুকদার।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪২
পার্থ তালুকদার বলেছেন: চমৎকার বলেছেন ভাই ।
জানেন, আমার দেখা অনেক মহেশ আছে যারা তাদের হাতের আঙ্গুলের এমন জাদু দেখায় কিন্তু দিন শেষে কী থাকে তাদের ?
সে অনেক কথা, ভাল থাকবেন ভাই।
৬| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৫
আলম দীপ্র বলেছেন: আগের সবার মন্তব্যের সাথে একমত হয়ে বলছি নৃশংসতার কারণটা সামান্য ইঙ্গিত দিলে লেখাটা আরও সুখপাঠ্য হত । এখনও ভালো লাগল ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৭
পার্থ তালুকদার বলেছেন: আলম দীপ্র, জানিনা আপনার বয়স কত। তবে ছবিতে খুবই কিউট লাগছে ভাই । ছোট বেলায় মনেহয় আমিও এমন ছিলাম । হা হা
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৭| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৭
কলমের কালি শেষ বলেছেন: ভালো লাগলো । শেষের ধাঁধাটা ভলো হয়েছে । সবাই তাদের নিজ নিজ উপসংহার টানতে পারবে ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫০
পার্থ তালুকদার বলেছেন: সহমত !!!
আমি এমনটাই চেয়েছিলাম ।
শুভকামনা রইল ভাই।
৮| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৪
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: দারুন একটি লেখা ---ফাটাফাটি
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫২
পার্থ তালুকদার বলেছেন: দারুন মন্তব্য !!!!
ফাটিয়ে দিয়েছেন। হা হা .....
শুভকামনায় ......
৯| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১৩
সুমন কর বলেছেন: মনে হচ্ছে হিংসার কারণে এমনটি ঘটেছে। যা হোক, একটু ইঙ্গিত দেয়া যেত। গল্প ভালো হয়েছে।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৫
পার্থ তালুকদার বলেছেন: সুমনদা, আপনি ও ?
কারনটা গোপন থাকনা ভাই ।।
ভাল থাকবেন কিন্তু ।
১০| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০৯
বাংলার পাই বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। অনেক অনেক ভালো লাগলো। ++++
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৮
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার।
এই + টা অনেক পছন্দ আমার ।
১১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪২
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
পুনঃপাঠে বুঝলাম ৷ চমৎকার ৷
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:০৫
পার্থ তালুকদার বলেছেন: পুনঃমন্তব্যে অনেক ভাললাগা ।
১২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৬
ডি মুন বলেছেন: দুইবার করে অনেক বড়ো একটা কমেন্ট লিখে নেটের সমস্যার কারণে আপলোড করতে না ভীষণ বিরক্ত লাগছে। ধুর!!!! সামুর এই সমস্যা ঠিক হবে কবে?????
যাহোক, এগিয়ে চলুক আপনার লেখনী। কথাগুলো না বলাই রয়ে গেল। অন্য এক পোস্টে একদিন বলবো, আশাকরি।
শুভকামনা।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩০
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।
আপনার সুচিন্তিত এবং এত্ত বড় এক কমেন্টের আশায় রইলাম ।
শুভকামনা আপনার এই পথচলায় .......।
১৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৫
হানিফ রাশেদীন বলেছেন: ভালো লেগেছে। শেষে মৃত্যুর কারণ বা ইঙ্গিত বুঝলান না। না বুঝেলও জমাট রহস্য মনে হতো। তা-ও না। মৃত্যু ঘটনাটা
ভাষা, গল্পের উপস্থাপনা অনেক ভালো লেগেছে।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১২
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার, সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।
কেন জানি গল্পের রহস্যটা গোপনই রাখতে ইচ্ছে করছিল। তাই রাখলাম।
শুভকামনায়----------------
ভাল থাকবেন।
১৪| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মায়ার বাবারে এতটাই নিষ্ঠুর বানাইলেন???
প্রতিশোধ আর হিংসার আগুন এত কঠিন হয়ে জ্বলছিল ....
নাকি মায়ার অপ্রকাশ্য প্রেমকে বুঝৈ ফেলার পরিণতি!!!!!!
কি জানি
তবে যেভাবে আতকা ট্রইস্ট দিছেন- সত্যই চমকাইছি
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৭
পার্থ তালুকদার বলেছেন: গল্পের রহস্যটা গোপনই রাখতে ইচ্ছে করছিল ভাই। এটা হয়তো কারো হিংসার প্রতিফলন।
আসলে অনেক হত্যারই কোন রহস্য উদঘাটিত হয় না , এটি এমনই একটা ।
মনেমনে ভাবলাম, প্রিয় ব্লগারদের একটু ভাবনার জগতে ফেলে দেই। তাই হলো।
গল্পের মানদন্ড যাই হোক,আমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলাম মনে হচ্ছে !! হা হা ------
অনেক শুভকামনা আপনার জন্য----------
১৫| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ২:৪১
দ্য ইলিউশনিস্ট বলেছেন: অনেক ভালো লিখেছেন।
১২ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৫০
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকবেন ।
১৬| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৭
দীপংকর চন্দ বলেছেন: সাবলীল। সুন্দর বর্ণনা।
অনেক ভালো লাগা ভাই।
আমার শুভকামনা জানবেন। অনিঃশেষ।
ভালো থাকবেন। সবসময়।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৪
পার্থ তালুকদার বলেছেন: আমার ব্লগে স্বাগতম ভাই -------
ভাল থাকবেন আপনিও ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৫
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এরকম নৃশংসতার পেছনে কারণ কি? ইন্টারেস্টিং লেখা।