নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আমার নিরক্ষর কিন্তু বুদ্ধিমতী মায়ের কাছ থেকে এই শিক্ষাই পেয়েছিলাম,যথাযথ কর্তব্য পালন করেই উপযুক্ত অধিকার আদায় করা সম্ভব। - মহাত্মা গান্ধী

পদাতিক চৌধুরি

হাই,আমি পদাতিক চৌধুরী।পথেঘাটে ঘুরে বেড়াই।আগডুম বাগডুম লিখি। এমনই আগডুম বাগডুমের পরিচয় পেতে হলে আমার ব্লগে আপনাদেরকে স্বাগত।

পদাতিক চৌধুরি › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমন্বিতা

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:২০



সাহেবকে বলে আজ একটু তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বার হলাম। নাহ আজ আর অন্য কোথাও যাব না, তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরতে হবে। দ্রুত পা চালিয়ে স্টেশনে গেলাম। বেশিক্ষণ দাঁড়াতে হয়নি, ট্রেন পেয়ে গেলাম। ট্রেন থেকে নেমে কিছু রজনীগন্ধার স্টিক নেওয়ার উদ্দেশ্যে আবার একটু বাজারে ঢুকলাম। সকালে দেওয়াল থেকে শ্বেতার ফটোটা নামিয়ে ভালো করে মুছে টেবিলে রেখে এসেছিলাম। হ্যাঁ আমার স্ত্রী শ্বেতা আজ তিন বছর হল আমাকে ছেড়ে অমৃতলোকে চলে গেছে। গত দু'বছর এই দিনটিতে ছুটি মিললেও এবার অফিসে কাজের চাপ অত্যধিক বেশি হওয়ায় সাহেবকে বলতে সাহস পেলাম না। তবে একটু আগেভাগে সাহেব ছেড়ে দেওয়াতে ওর প্রয়াণ দিবস পালন করার মতো যথেষ্ট সময় পেয়ে বিষন্নতার মধ্যেও কিঞ্চিৎ আলোকচ্ছটায় খুশি হলাম।

মেন রাস্তা থেকে নেমে নাক বরাবর পাঁচ মিনিট হেঁটে গান দিকের প্রথম গলির ঠিক দুটি বাড়ির পরেই আমার বাড়ি। এই এলাকার সারমেয়দের বেশ উৎপাত আছে। রাস্তার মোড়ে মাঝে মাঝে বেশ কিছু সারমেয়কে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।দিনের বেলা খাবারের সন্ধানে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ালেও রাতে গলি ছেড়ে ওরা অন্য কোথাও যায় না। ওদের দায়িত্বশীলতার পরিচয়ে আমরা খুশি। কিন্তু মাঝে মাঝে গভীর রাতে ওদের অতি সক্রিয়তার ফলে পাড়ার সায়ন, অয়নদের মতো আমাকেও মাঝে মাঝে লাঠিসোটা নিয়ে পথে নামতে হয়। রাত দুপুরে পাঁচিলের গায়ে বা রাস্তার কোথাও জোরে জোরে লাঠি ঠুকলে ওরা বুঝতে পারে ওদের অপরাধের মাত্রা। আর তখন করুন সুরে কেউমেউ করতে করতে যে যেদিকে পারে পালিয়ে যায়। সেদিন সন্ধ্যে হতে যথেষ্ট বাকি ছিল। কাঁধে অফিসের ব্যাগ হাতে রজনীগন্ধার স্টিক নিয়ে পাড়ার গলিতে ঢুকতেই সারমেয়কুলের চিৎকার তীব্র থেকে তীব্রতর হলো। আরও একটু এগিয়ে এসে দেখলাম ওদের অত্যাচারে এক ব্যক্তি আমার বাড়ির গেটে লেপ্টে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি জোরে জোরে ধমক দিতেই সারমেয়গুলো সরে গেল। ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। কয়েক সেকেন্ড লাগলো চিনতে।আসলে এরকম আলুথালু বেশে বার্ধক্যের গোড়ায় পৌঁছে আমার গ্রামের মাস্টার মশাইকে এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবো- এটা কল্পনাও করতে পারেনি। আমি ওনার পায়ের ধুলো মাথায় নিতেই,
-থাক থাক বাবা থাক। দীর্ঘজীবী হও, বলে আমার মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করলেন।
-আপনি কখন এসেছেন কাকাবাবু?
-সঠিক সময়টা মনে নেই, তবে আনুমানিক বিকাল সাড়ে চারটা/পাঁচটা নাগাদ তো হবেই..
আমি হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললাম,
-এখন তো পৌনে ছয়টা বাজে। তাহলে আপনি এতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছেন?
-তাতে কি হয়েছে বাবা! আমি তো জানি তুমি কোন না কোন সময় ফিরবে।আর সে পর্যন্ত তো আমাকে একটু অপেক্ষা করতেই হত।
-বাড়ি চিনতে অসুবিধা হয়নি আপনার?
-একটু অসুবিধা যে হয়নি তা নয়। তবে তোমার চেহারার বর্ণনা দিতেই মোড়ের মাথায় চায়ের দোকানে বসা এক ভদ্রলোক সঙ্গে এসে বাড়ি দেখিয়ে দিলেন।
-বাড়ি থেকে কখন বেরিয়েছেন কাকাবাবু?
-ওসব থাক বাবা। আসলে আমি একটা দরকারে এসেছিলাম।
-আপনার দরকারি কথা আমি অবশ্যই শুনব কাকাবাবু।তার আগে হাতে মুখে জল দিয়ে নিন। আমি ততক্ষনে একটু খাওয়ার ব্যবস্থা করি।

কাকাবাবুকে নিয়ে আমি ঘরের ভিতরে নিয়ে গেলাম। সারমেয়কুলের অত্যাচার সহ্য করেও এতক্ষণ আমার জন্য অপেক্ষা করছেন বলে দুঃখ প্রকাশ করলাম। শহরের যান্ত্রিক জীবনে আমার আত্মীয়-স্বজন একেবারেই নেই বললেই চলে।শ্বেতা থাকাকালীন ওর বাপের বাড়ির লোকজন যা একটু আধটু আসতো কিন্তু ও চলে যেতেই সে সব পর্ব একেবারে চুকে গেছে। এরকম নিঃসঙ্গতার মাঝে কাকাবাবুকে পেয়ে শরীরী ভাষাতে কৃতজ্ঞতার জানান দিলাম। মুখের এক কোণে কিঞ্চিৎ হাসি এনে কাকাবাবু বললেন,
-আমাদের মত বুড়োদের জন্য পৃথিবীটা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে বাবা।শুধু পরিচিত আপনজন নয়, অবলা জন্তু কুকুরগুলোও পর্যন্ত বুঝতে পেরেছে আমরা সমাজের কতটা অপাংক্তেয়। ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই, কোথাও ঠাঁই নাই আমাদের।
-আপনি কি সব বলছেন কাকাবাবু? আমার তো কিছু মাথায় আসছে না? নিজেকে এতটা অপাঙ্ক্তেয় কেন ভাবছেন?
অদ্ভূত রহস্যময় হাসি এনে,
- না বাবা। এমনি এমনি বললাম। তুমি অবশ্য এসব কিছু নিয়ে চিন্তা করোনা।

আমি কাকাবাবুকে বৈঠকখানায় বসিয়ে খুব কম সময়ে শ্বেতার ফটোর সামনে ধুপ জ্বালিয়ে, ভাসে রজনীগন্ধার স্টিক দিয়ে চলে এলাম। লক্ষ্য ছিল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওনাকে একটু খাওয়ার ব্যবস্থা করা। খেতে খেতে উনি বলতে লাগলেন,
-আমার মা জননীকে তো দেখছি না... উনি কি বাপের বাড়ি গেছেন?
আমি ওনাকে এই মুহূর্তে আমার কিছু বলা সঙ্গত হবেনা ভেবে পাল্টা জানতে চাইলাম, ও
-তো কাকাবাবু আপনারা কেমন আছেন?
- এই রকম দিন কাটছে এই যা।নিখিলেশ যে কথাটা বলতে আজ তোমার কাছে এলাম।
-হ্যাঁ বলুন কাকাবাবু।
-আমি এবার পুজোয় আমার বউমা অর্থাৎ সপ্তর্ষির বউয়ের জন্য একটি শাড়ি কিনেছিলাম। কিন্তু বৌমা শাড়িটি নিতে অস্বীকার করায় একটু বেকায়দায় পড়ে তোমার কাছে আসা।
- বৌদি কেন নিতে অস্বীকার করেছে কাকাবাবু আমি কি জানতে পারি?
-সে অনেক কথা বাবা। বাড়ির কথা আবার তোমাকে বলবো?
-ঠিক আছে। আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলবো না। আমি আর জানতে চাইবো না। তবে আমাকে কি করতে হবে সেটা যদি বলেন..
কাকাবাবু কিছুটা আমতা আমতা করে আবার বলতে লাগলেন,
-তুমি জানো কিনা জানি না, সপ্তর্ষি কলকাতার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে।
-না জানতাম না । আসলে আমি তো বহুদিন আগে গ্রাম ছেড়ে চলে এসেছি।
-হ্যাঁ তা তো বটেই। তাহলে তো তোমার অজানারি কথা।
-ওর বেতন তেমন ভালো নয়।আকার ইঙ্গিতে বোঝায় যেন আমি আমার পেনশনের গোটা টাকাটা ওর হাতে তুলে দিই।
-ইস সে কি! সারা জীবন দুই ভাই-বোনকে কষ্ট করে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। অথচ শেষ জীবনে এই কটা টাকার প্রতিও ওদের এতোটা লোভ! আমি ঠিক কল্পনা করতে পারছিনা কাকাবাবু।মানুষ এতটা নিচ কি করে হয়!
-তবে ছেলে কোন দিন মুখের উপর কিছু বলেনি। বৌমাই বরাবরই সে দায়িত্ব পালন করে।একার আয়ে এতগুলো পেট চালানো সমস্যার হচ্ছে বলে প্রায়ই হতাশা প্রকাশ করে। আমি তো বুঝি বৌমা কিসের ইঙ্গিত করছে। কিন্তু ধরা দেয়নি কোনদিন।
-সপ্তর্ষি দা জানে না সে কথা?
-না বৌমা ওর সামনে আবার খুব ভালো আচরণ করে।
-আপনি বলেন নি সপ্তর্ষিদাকে এ কথা?
-ভেবেছিলাম বৌমা মেয়ে তো! সে হয়তো একদিন ভুল বুঝতে পেরে শুধরে যাবে। কিন্তু মন্দ আচরণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়াতে কয়েকদিন আগে সপ্তর্ষিকে বলি সে কথা। এটা বলাতে একেবারে রুদ্র মূর্তি ধারণ করে বৌমা। সে কি বিশ্রী অঙ্গভঙ্গিতে বিলাপ করতে থাকে।আমি ওর মিথ্যাচার প্রমাণ করতে চেয়েছি বা মিথ্যাবাদী বলে সংসার ভাঙতে চেয়েছি বলে কান্নাকাটি জুরে দেয়।সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমার খাওয়া পরার চিন্তা করতে গিয়ে সংসারের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম ঠিকমত পালন করতে পারে না, সেই আমিই কিনা ছেলের সামনে বউমাকে অপদস্ত করার পরিকল্পনা করেছি বলে রাগে, ক্ষোভে আমাকে অভিসম্পাত করতে থাকে।
-কি আশ্চর্য কাকাবাবু! আপনার মতো নিপাট একজন মানুষের কপালেও এমন দুর্ভোগ?
কাকাবাবু আবারো বলতে লাগলেন,
-এই অবস্থাতেও কোন ক্রমে চলে যাচ্ছিল। আগে আগে খাবার দাবার দেরিতে হলেও সামনে এনে দিত। কিন্তু ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ওসব বন্ধ করে দেয়। আমি কিছু বললে বৌমা আমার কোন কথার উত্তর দিত না। আমি বাধ্য হয়ে বেশ কিছুদিন নিজের খাবার নিজে নিতাম। কিন্তু সেটাও বৌমা সহ্য করতে পারলো না। এবার বাড়িতে রান্না করাই ছেড়ে দিল। আমি আর ভাতের অপেক্ষায় না থেকে আশপাশের দোকান থেকে শুকনো খাবার, বিস্কুট খেয়ে বেশ কিছুদিন কাটিয়ে দিলাম। ভাবতাম উপরওয়ালা যদি বুড়োটাকে তুলে নিত তাহলে চলমান নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতাম। কিন্তু উপরওয়ালাও আমাকে ভুলে গেছে। চোখের সামনে এত লোকের ডাক আসছে কিন্তু আমার কথা ওনার মনে পড়ছে না।
কিছুক্ষণ পিন পতন নিরাবতার পর কাকাবাবু আবার বলতে লাগলেন,
- জানো বাবা ভিতরে ভিতরে আমিও অস্থির হয়ে উঠেছিলাম ওদের সঙ্গে যেনতেন প্রকারে আপস করার জন্য। ইতিমধ্যে এক মাসে পেনশনের গোটা টাকাটা সপ্তর্ষির হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ও হাসতে হাসতে ফিরিয়ে দিল। নিজের ওপর চাপ অত্যধিক বেড়ে গেল। কি করব, কোথায় যাব ভেবে ভেবে দিশা পেতাম না। দেখতে দেখতে পুজো চলে এলো। পুজোকে উদ্দেশ্য করে বহু বছর ধরে চলে আসা পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনের জন্য কিছু কেনাকাটা থাকে। এই উদ্দেশ্যে বৌমার জন্য এই শাড়িটি কিনেছিলাম। কিন্তু সে পরিষ্কার জানিয়ে দেয় আমার দেওয়া কোন জিনিস গ্রহণ করবে না। দোকানে গিয়েছিলাম ফেরত দেওয়ার জন্য। কিন্তু দোকানিও না করে দিয়েছে। এমতাবস্থায় তোমার কাছে এলাম; কিছু মনে না করে এই বুড়ো বাপের শাড়িটি যদি আমার মা জননীকে দাও এই আশায়।

আমার দুই চোখ আদ্রতায় ভরে গেল। মুখে কোন শব্দ করতে পারলাম না। অনবরত ঠোঁট কাঁপতে লাগলো। আমি শাড়ি বিশারদ নয়। শ্বেতা বেঁচে থাকাকালীন ওর সঙ্গে মাঝে মাঝে কেনাকাটায় যেতে হতো। আমাকে সে যে শাড়িটাকেই দেখাতো সবগুলোই ভীষণ ভালো লাগতো। ও বিরক্ত হয়ে বলতো, এত বছরেও এখনো শাড়ি চিনতে শিখলাম না। বাস্তবে সুন্দর সুন্দর শাড়ি গুলির মন্দ বলে কিছু আমার চোখে পড়তো না। আজও কাকাবাবুর আনা শাড়িটিও একই রকম মনে হল। ভারী চমৎকার শাড়িটি।হাতে নিয়ে বুকে জড়িয়ে চোখের জল ঠেকাবার আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম। চোখের জল বাঁধ মানলো না। বাধ্য হয়ে মুহূর্তে পিছন ফিরে দাঁড়ালাম। মনের মধ্যে কান্না গুমড়ে গুমড়ে উঠতে লাগল। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করে সেটাকে বাঁধা দিলাম।তবে জোরে জোরে বারকয়েক হাঁচিকে আর বন্ধ করতে পারলাম না। কাকাবাবু আমার অস্বাভাবিকত্ব বুঝতে পারলেন। জানতে চাইলেন,
-বাবা তুমি ওরকম করছ কেন? তবে কি শাড়িটি তোমারও পছন্দ হয়নি?
আমি ভেজা কণ্ঠে কোনক্রমে উত্তর দিলাম,
- না কাকা বাবু না। আসলে বিষয়টি পছন্দ অপছন্দের নয়, বলে আবার চুপ হয়ে গেলাম।
কাকাবাবু বিস্ময়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলাম। ভাবলাম কাকাবাবুকে এবার বিষয়টি শেয়ার করি। যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। কাকাবাবুর হাত ধরে শ্বেতার ফটোর সামনে নিয়ে এলাম। তখনো প্রজ্বলিত ধুপ থেকে সাদা ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকাতে পাকাতে মৃদুমন্দ গতিতে বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছিল। সঙ্গে রজনীগন্ধার মিষ্টি সুবাস গোটা ঘরের পরিবেশকে এক আবেশে ভরিয়ে তুলেছিল। শ্বেতা কোথায় আছে কেমন আছে জানিনা। তবে ঘরের স্নিগ্ধতা যে তার আত্মাকে শান্তি দিয়েছে, এমনটি ভেবে কিছুটা বিহ্বল হয়ে পড়েছিলাম। আমি নতমস্তকে ফটোর সামনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। কিছুক্ষণ পরে আমিই আগে মুখ খুললাম,
-আজ ওর তৃতীয় প্রয়াণ দিবস কাকাবাবু। আমাদের বিয়ের বেশ কয়েক বছর পর শ্বেতা কনসিভ করেছিল। কিন্তু সাত মাসের মাথায় বাথরুমে পড়ে গিয়ে মিস্কারেজ হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিল। খবর পেয়ে আমি বাড়ি এসে সাথে সাথে ওকে হসপিটালাইজড করি। কর্তব্যরত ডাক্তারবাবুর হাতে-পায়ে ধরেছিলাম। ওনি চেষ্টার ত্রুটি করেননি। যদিও এত কিছু করেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হই। আমি শ্বেতাকে আর ধরে রাখতে পারিনি। আমার কথা শেষ না হতেই হঠাৎ একটা শব্দে তাকিয়ে দেখি কাকাবাবু মেঝেতে পড়ে আছেন। ছুটে গিয়ে চোখে জলের ঝাপটা দিলাম। নাহ তাতে কিছু হলো না। অগত্য দেরি না করে বাইরে কে কোথায় আছে বলে চিৎকার করাতে আশপাশের বাড়ি থেকে কয়েকজন মহিলা শিশু বেরিয়ে এলো।উপস্থিত কয়েকজনকে কাকাবাবুর চোখে-মুখে জলের ঝাপটা মারতে বলে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটলাম বাজারের দিকে অটোর সন্ধানে। সঙ্গে সঙ্গে একটা অটো পেয়েও গেলাম। কাকাবাবুকে চাপিয়ে দ্রুত নিয়ে গেলাম হসপিটালে। ইমারজেন্সিতে কর্মরত ডাক্তারবাবু কাকাবাবুর হাত ধরে অনেকক্ষণ পরীক্ষা করলেন। অবশেষে ঠোঁট বেঁকিয়ে অস্ফুটে বলে উঠলেন,
-আরেকটু আগে আনলে কতদূর কি করা যেতো।
-ডাক্তারবাবু আমি একদম দেরি করিনি। বড়জোর আধ ঘণ্টা আগে ঘটনাটি ঘটেছে।
-আপনি পেশেন্টের কি হন?
-আজ্ঞে উনি আমার কাকাবাবু হন।
-আপনার কাকাবাবু হার্ট ফেল করেছেন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:-
১-উপরের ছবিটি আমার ছাত্র শ্রীমান সুজিত কুমার দাসের আঁকা।
২- মূল গল্পটি একটু বড় হওয়ায় পর্বাকারে দিতে বাধ্য হলাম। শেষ অংশটি দুই-একদিনের মধ্যেই দেওয়ার ইচ্ছা আছে। মূলতঃ মরীচিকার একঘেঁয়েমি কাটানোর জন্যই গল্পটির আগমন।

মন্তব্য ৩৮ টি রেটিং +১৭/-০

মন্তব্য (৩৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:৪৫

আনমোনা বলেছেন: ভালো লাগলো।

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১২:৫১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম ;কৃতজ্ঞতা জানবেন।

শুভকামনা রইল।

২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:৫৭

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: কাকাবাবু চাপ নিতে পারেন নি। ছেলে, ছেলের বউ... ইত্যাদি টেনশনে আগে থেকেই হার্ট দুর্বল হয়ে গিয়েছিলো। আপনার (নিখিলেশ) ট্রাজেডি কোনভাবেই নিতে পারেন নি।

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১২:৫২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: অল্প কথায় খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন প্রিয় জুনায়েদ ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।
পরের পর্ব পড়ার আমন্ত্রণ রইল।
শুভকামনা জানবেন।

৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:৫৪

আরোগ্য বলেছেন: ভাইটি,
দীর্ঘদিন পর তোমার পোস্ট পেলাম। অবশ্য জানি তোমার এখন ব্যস্ততা যাচ্ছে। তবে এতো ব্যস্ততার ফাকেও পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ।

প্রথম প্রশ্ন, মরীচিকা একঘেয়ে লাগে কে অভিযোগ করেছে?

দ্বিতীয় প্রশ্ন, সারমেয় কি?

তৃতীয় প্রশ্ন, কাকাবাবু কি শ্বেতার কোন আত্মীয়?

গল্প বাস্তব মনে হচ্ছে। অধিকাংশ ছেলের বৌগুলো এমনই হয়। স্বামীর সামনে শশুর শাশুড়ির সেবায় মগ্ন থাকে আর স্বামী চলে গেলেই বিরক্তি ভাব চোখেমুখে।

আশা করি পরের পর্ব কথামত দু এক দিনই পোস্ট করবে। শুভ কামনা।

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:০১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: হ্যাঁ ঠিকই ধরেছ প্রিয় আরোগ্য। ব্যস্ততার কারণে আর সেভাবে ব্লগে সময় দিতে পারিনা। এতটা গ্যাপে পোস্ট দিতে না পারার জন্য আমি নিজেই একটু চাপে ছিলাম। তোমার আগমনে আনন্দ পেলাম।
আর হাহাহা, মরীচিকা নিয়ে কোন অভিযোগের কি ব্যাপার নয়। দীর্ঘদিন ধরে একটা সিরিজ চলায় আমার অন্যান্য গল্পগুলো হাপিত্যেশ করতে থাকে, কবে একটু সুযোগ পাবে। তারই একটি রূপায়ণ আজকের এই গল্পটি। আশা করি আমি তোমাকে বোঝাতে পেরেছি। হাহাহা
দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর কুকুর। ‌
তৃতীয় প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য পরবর্তী পর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।
হাহাহা তোমার কথা অনুযায়ী শেষ অংশটি আগামীকালের মধ্যে পোস্ট করার ইচ্ছে আছে।
অফুরান শুভকামনা রইল।

৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ ভোর ৬:২৭

বলেছেন: কাকাবাবুর এহেন পরিণতিতে আহত নয়ন।।।।।।।।


চলুক।। +++

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:০৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ আপনাকে। কাকাবাবু সমাজের বরিষ্ঠ নাগরিকের প্রতীক। খুব কম মানুষই জীবন সায়াহ্নে সুখ-সমৃদ্ধি ভোগ করতে পারে। বেশিরভাগ মানুষেরই পরিণতি হয় কাকাবাবুর মতই। আমরা যেন তাদের প্রতি আরও একটু মানবিক হতে পারি।
পোস্টটিতে লাইক করায় ও সঙ্গে এতগুলো প্লাসে অনুপ্রেরণা পেলাম; কৃতজ্ঞতা জানবেন।
অফুরান শুভেচ্ছা প্রিয় লতিফ ভাইকে।

৫| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: ট্রেনে করে বাড়ি ফিরতে হব এ কেন? বাস নাই??
শ্বেতার জন্য ভীষন মন খারাপ হয়েছে।
বাকি টুকু অতি দ্রুতই দিবেন আশা করি।
আর মরীচিকা আমার কাছে সব সময়ই খুব ভালো লেগেছে।

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:১৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ট্রেন জার্নিটা আমরা খুব কমফোর্ট ফিল করি। যেখানে ট্রেনে যাওয়ার অপশন থাকে আমরা সেখানে বাসে যাওয়ার কথা ভাবি না। অধিকতর আরামদায়ক ট্রেন জার্নি সময় এবং অর্থ দুটির সাশ্রয় হয়। আর মেট্রোতে আসা-যাওয়ার সুযোগ থাকলে, স্কুল-কলেজ,অফিস যাত্রা ষোল কলা পূর্ণ হয়।
গল্পের শেষাংশ টি আগামীকালই দেওয়ার ইচ্ছা আছে। পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য ভাইকে আমন্ত্রণ জানালাম।
আর মরীচিকা যে একঘেঁয়েমি লাগেনি জেনে প্রীত হলাম। ধন্যবাদ ভাইকে।

ভালোবাসা সতত।

৬| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৯:১৪

ইসিয়াক বলেছেন: অনেক ভালো লেগেছে

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:১৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুধু 'অনেক ভালো লেগেছে' বললে কিন্তু পড়া ধরবো। হাহাহাহাহা....

৭| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:০১

মুক্তা নীল বলেছেন:
দাদা ,
গল্পটা কিছুক্ষণ আগে পড়ে মন্তব্য করেছি। এখন সেটা দেখতে গিয়ে দেখি নাই। মানে মন্তব্য যায়নি।
মরীচিকার প্রতি আলাদা টান ও ভালোলাগা ছিল এবং তা থাকবে
আর আজকের এই গল্প টা খুবই প্যাথেটিক। পড়ে খারাপ লাগলো সেই কাকাবাবুর জন্য।
সপ্তর্ষি উনার বিষয়ে জানার আগ্রহ রইলো । দাদার জন্য শুভকামনা ও ভালো লাগা রইলো ।

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:২৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ছোট বোনের প্রথম মন্তব্যটি প্রকাশিত না হওয়ায় আমি দুঃখিত। বহু ক্ষেত্রে আমার নিজেরও এমন হয়। অর্থাৎ লগইন না করে পড়ে বেখেয়ালে মন্তব্য লিখে প্রকাশিত করতে গিয়ে দেখি লগইন নাই। নিজেকে তখন খুব অসহায় লাগে ।দ্বিতীয়বার আর তেমন গুছিয়ে মন্তব্য করা হয় না। দুর্ভাগ্য আমার যে বোনের সুন্দর মন্তব্য থেকে বঞ্চিত হলাম।
মরীচিকার প্রতি একঘেঁয়েমি আসেনি জেনে প্রীত হলাম। কি জানি মাঝে মাঝে আমার পাঠকদের ম্রিয়মান হওয়া দেখে তেমন মনে হয়।
গল্পের প্রথম অংশটি প্যাথেটিক পরবর্তী পর্বটিতে আশা করি অন্য স্বাদ পাওয়া যাবে। আগাম দাওয়াত রইলো। বোনের যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর আশা রাখি আগামী পর্বে মিলবে।
পোষ্টটিতে লাইক রাতের প্রেরণা পেলাম ,কৃতজ্ঞতা জানাই।

নিরন্তর শুভকামনা রইল।

৮| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:১৯

ইসিয়াক বলেছেন: লেখক বলেছেন: শুধু 'অনেক ভালো লেগেছে' বললে কিন্তু পড়া ধরবো। হাহাহাহাহা....
আসলেই ফাঁকি দিয়েছি । এখন পড়ছি।

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৩৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: এইরে! আপনাকে বুঝি লজ্জা ফেলে দিলাম।হাহাহা...
আপনি ফাঁকি দিয়েছেন!!! আবার পড়ে মন্তব্য করেছেন। খুব খুশি হয়েছি। ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালোবাসা জানবেন।

৯| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:২৬

ইসিয়াক বলেছেন: পড়া শেষ। আসলে মানুষের জীবনটাই এরকম।
সত্যি ভালো লেগেছে।

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৪২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: অবশেষে পড়লেন এবং গল্পটি ভাল লেগেছে জেনে আমোদিত হলাম। আবারো ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম; কৃতজ্ঞতা জানবেন।

শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।

১০| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: দাদা, আসলে ঢাকা শহর ছোট। ট্রেন নাই। সবাই বাসেই যাতায়াত করে। ট্রেনে করে কমপলাপুর থেকে এয়ারপোর্ট, নারায়ণগঞ্জ যাওয়া যায়। ট্রেন সঠিক সময়ে কোনো দিনই ছাড়ে না। বসার জন্য সিট পাওয়া যায় না। ট্রেনের চেয়ে বরং বাস আছে প্রচুর।

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৫৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ছোট ভাই,
আমার মন্তব্যে আসাতে আনন্দ পেলাম। হ্যাঁ আমি আগেও শুনেছি ওখানে বাস সার্ভিস অত্যন্ত ভালো। তবে আমাদের এখানে কলকাতা এবং শহরতলীতে ট্রেনের মাধ্যমে অফিস কাছারি করার সুযোগ আছে। আমি নিজেও ট্রেন জার্নিকে বেশি পছন্দ করি। বাস জার্নি আমার একদম ভালো লাগে না।

ঢাকার কমলাপুর সম্পর্কে আমার একটা পারিবারিক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।কমলাপুরে আমার বাবা চাকরি করতেন ,স্বাধীনতার আগে। বসন্ত রোগ হওয়াতে বারাক থেকে বাবাকে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল। খোলা আকাশের নিচে আট-দশ দিন থাকার পর কিছুটা সুস্থ হলে বাবা বাড়ি চলে আসেন।পরে আমার দাদি বাবাকে আর ওখানে চাকরি করতে পাঠায়নি ।

১১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:২৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: দীর্ঘশ্বাস উঠলো গল্প পড়ে। সন্তানদের কাছে মা বাবা অসহায় কেনো , আর বউমারা এমন কেনো হয় । এত কঠিন উফ

সুন্দর হয়েছে গল্প

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:০৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপু আপনার পাঠ ও মন্তব্যে আনন্দ পেলাম। আমরা কেউ জানিনা আমাদের জীবনের অপরাহ্নে কি দূর্ভোগ আমাদের কপালে আছে।আর ভালো মানুষের মুখোশ পরা এই ছেলে বৌ গুলো দিব্যি সমাজে বহাল তবিয়তে বেঁচে থাকে। অন্যদের হা-হুতাশ করা ছাড়া তেমন কিছু করার থাকে না।
পোস্ট সুন্দর হওয়াতে আনন্দ পেলাম; ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।
লাইক করার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল।
শুভকামনা প্রিয় আপুকে।

১২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম
নিয়তির এ অলঙ্গনীয় নিয়তিই বুঝি!
খূব ভয় হয় ভাবলে-!!

শাড়িটি বুকে জড়িয়ে চোখের জল “ ঠেকাবার’’ হবে মনে হয়! ;) পড়তে গিয়ে ঠেকলোতো তাই :)

এটি কি সিরিজ হবে?

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:১৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শ্রদ্ধেয় কবি ভাই,

সম্পূর্ণ সহমত আপনার সঙ্গে,
'নিয়তির এ অলঙ্ঘনীয় নিয়তিই বুঝি!!
খুব ভয় হয় ভাবলে।'
বাস্তবতা এটাই। এমন ভাবনা আমাদেরকে শীতল স্রোত প্রবাহিত করে।
টাইপোটি বলার জন্য ধন্যবাদ। এখনই ঠিক করে দিচ্ছি।
মরীচিকার একঘেয়েমি কাটাতে, বিকল্প হিসেবে গল্পটি নিয়ে এসেছিলাম। একটু বড় হওয়াতে পর্বাকারে দিয়েছি। শেষ অংশটি আগামীকাল দেওয়ার ইচ্ছা আছে।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম; কৃতজ্ঞতা জানবেন।

শুভকামনা জানবেন।


১৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৫

মাহের ইসলাম বলেছেন: অনেক দিন পরে রাস্তায় সারমেয়র কথা শুনলাম। প্রায় ভুলেই যেতে বসেছিলাম, এদের নাম।

শাড়ি কেনার এই বিড়ম্বনা মনে হয় সব পুরুষের কমন অভিজ্ঞতা।
একমাত্র নারিরাই বলতে পারবে, কেন তারা এমন করে?

ভালো থাকবেন।
শুভ কামনা রইল।

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপনাকে দেখে ভাল লাগল। হাহাহা অনেকদিন পর শুনলেন তো সারমেয়কুলের কথা। তবে যেহেতু আপনি ভুলতে চাইছেন। স্ত্রীর সঙ্গে শাড়ি কেনা সত্যিই এক বিরম্বনার। পোস্টটির পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ধন্যবাদ।

আপনার শুভকামনা গ্রহণ করলাম। আপনার জন্য রইল অফুরান শুভেচ্ছা ভালোবাসা।

১৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৪২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



সারাদিন নেটে না থাকায় আপনার চমৎকার গল্পটি মিস করেছিলাম। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের চিত্রনাট্য পড়লাম। সুখ দুঃখ আর টানপোড়ন এসব পরিবারের নিত্যদিনের বাস্তবতা। আচ্ছা, গুরুজি......... মরিচীকা কী শেষ!!

২২ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৮:৪৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুভ সকাল প্রিয় গুরুদেব,

বুঝতে পারছি ছুটির আনন্দ এখনো আপনার ভিতরে-বাহিরে মেখে আছে। বেশ তো থাকুন না এমন পরিবেশে আর আরো কয়েকদিন। কোন দরকার নাই নেটের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার। হাহাহা


পোস্ট সম্পর্কে মধ্যবিত্ত পরিবারের চিত্রনাট্যে দুঃখ টানাপোড়েন এসব প্রত্যাহিক জীবনের বাস্তবতা। সহমত আপনার সঙ্গে।
মরীচিকা এখনো শেষ হয়নি। তবে অনেকদিন মরীচিকা সিরিজ চলায় আমার অন্য গল্প দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকেই এই গল্পটি পোস্ট করা।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম; কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি।
অফুরান শুভেচ্ছা জানবেন।

১৫| ২২ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:১৯

আখেনাটেন বলেছেন: জীবনের কঠিন কিছু বাস্তবতা তুলে ধরেছেন।

বুড়ো বয়সে পরিবার থেকে অবহেলা অনাদর একটি মানুষকে কতটা অসহায় করে তুলতে পারে তা এমনতর ঘটনাগুলো মাঝে মাঝেই আমরা দেখি।

২২ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:১৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় আখেনাটেনভাই,

বয়স্কদের প্রতি পরিবারের অবহেলা এখন আকছার ঘটছে। আমাদের সুক্ষ্ম অনুভুতিগুলো দিনকে দিন হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমরা পৌঁছে যাচ্ছি আধুনিকতা দোরগোড়ায়। আপনার সুন্দর কমেন্টে ভালোলাগা, ধন্যবাদ আপনাকে।
পোস্টে লাইক করায় প্রেরণা পেলাম, কৃতজ্ঞতা জানবেন।

অফুরান শুভেচ্ছা রইলো।

১৬| ২২ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:১৪

রাকু হাসান বলেছেন:


নতুন গল্পে স্বাগতম ভাইয়া । পাঠকের কথা চিন্তা করে নতুন গল্প ভালো হয়েছে । সামাজিক গল্পে ভালো লাগা। এমন কাকাবাবুর অভাব নেই । এক টানেই পড়লাম। ছবিটি কার আঁকা ? লিখিলেশ নামটি জানাতে ভালোই অপেক্ষা করালে । এটা ভালো টেকনিক । আগ্রহ ছিল কে ,কার সাথে কথা হচ্ছে । মরীচিকা আমার কখনও খারাপ লাগেনি । তবে সব পাঠক তো সমান না । সবার কথা বিবেচনায় নতুন পর্বে শুভকামনা তো থাকছেই। কাকাবাবুর সংলাপ খুব ভালো লাগছে । অবশ্যই এই গল্প সামাজিক জীবনের চিত্রায়ন । গেলাম আজ...............হুম ভালো থাক,ভালো রাখ।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:০২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ছোটভাই,

হ্যাঁ তোমাদের জন্য একটু নতুন গল্প দেওয়ার ইচ্ছাতেই এমন অপকর্ম করা। হাহাহাহা...
গল্পটি একটানে পড়ে ফেলাতে আনন্দ পেলাম। পাঠকের এমন অভিব্যাক্তি আমাদের মতো ক্ষুদ্র লেখকের কাছে পাথেয়।
লেখাটি আমার ছাত্র শ্রীমান সুজিত কুমার দাসের আঁকা। তুমি এর আগেও দেখেছো তবুও জ্ঞাতার্থে আর একবার বলিএখনো পর্যন্ত আমার ব্যবহৃত সমস্ত ছবিগুলো আমার ওই ছাত্রের আঁকা।
মরীচিকা তোমার একঘেয়েমি লাগেনি বা ভালো লাগে জেনে খুশি হলাম। তবে আমার একটু একঘেয়েমি লাগছিল বলেই নতুন পোস্টের আগমন ঘটালাম। আগামীকাল সমন্বিতার শেষ অংশটি দিয়ে পরবর্তীতে আবার মরীচিকার পোস্ট করার প্লান আছে।

তোমার শুভেচ্ছা গ্রহণ করলাম। তোমার জন্যও রইল অফুরন্ত শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।



১৭| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:২৪

নীল আকাশ বলেছেন: প্রায় অনেকদিন পরে ব্লগে শুধু লগইন করলাম আপনার গল্পের জন্য। ২য় পর্ব দিয়েছেন দেখে আগে ১মটা পড়ে নিলাম।
শুধু একঘিয়েমি নয় নিজের লেখার ভারিয়েশন আনার জন্য হলেও বিভিন্ন টপিকে লেলহা উচিৎ।
২ পর্ব মিলিয়ে একবারে মন্তব্য করব। ২য় পর্বে চলে গেলাম।
শুভ রাত্রী।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:০৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় নীল আকাশ ভাই বিলম্বিত উত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত। শুধু আমার জন্য লগ ইন করেছেন বা ব্লগে ইন করেছেন- এটা আমার পরম সৌভাগ্যের বিষয়। কোন ধন্যবাদই যথেষ্ট নয়।হ্যাঁ ইতিমধ্যে আমি আপনার দ্বিতীয় পর্বের মন্তব্যটি পেয়েছি এবং প্রতিমন্তব্যও দিয়েছি। খুব ভালো মন্তব্য করেছেন আপনি।
আর বৈচিত্র্যময় লেখনি নিয়ে আপনার সুন্দর মতামতেরষ প্রীত হলাম। আবারো ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।
শুভকামনা জানবেন।

১৮| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৫৭

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: প্রিয় কোন লেখকের গল্প চোখের সামনে ভাসছে কিন্তু পড়তে পারছিলাম না সময়ের অভাবে। যেখানে কাজ করি এখন কাজের একটু চাপ বেড়ে গেছে ওদের গ্রীষ্মের ছুট্টি প্রায় শেষ, আগামী সপ্তাহে স্কুল, কলেজ- ভার্সিটি খোলা হবে। তারপরেও লগইন করে দ্বীতিয় পর্ব দেখে সময় করে প্রথম পর্ব পড়ে নিলাম। অনেক ভাল লেগেছে। মূল চরিত্র এখনো ধরতে পারিনি। তবে উত্তম পুরুষে যখন তখন ভাবছি গল্পে আরো গল্প রয়ে গেছে। পরের পর্ব পাঠে হয়তো গল্পের ভেতর ঢুকতে পারবো। ভাল থাকুন।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১২:১৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় সুজন ভাই,

মন্তব্য থেকে বুঝলাম আপনি সম্ভবত প্রবাসে থাকেন। কাজের চাপ যথেষ্ট।তার মধ্য থেকেও সময় করে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপ্লুত বোধ করছি, ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রথম পর্বটি ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। লক্ষ্য করে থাকবেন দ্বিতীয় পর্বটিও ইতিমধ্যে প্রকাশ করেছি। যদি সময় পান তাহলে দ্বিতীয় পর্বটিও পড়ার অনুরোধ রাখলাম।
আজ অথবা কাল গল্পের শেষ অংশটি পোস্ট করার ইচ্ছে আছে। তার জন্য আপনার আগাম দাওয়াত থাকলো।

শুভেচ্ছা নিয়েন।

১৯| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার ছাত্র শ্রীমান সুজিত কুমার দাসের আঁকা ছবিটা চমৎকার, অর্থপূর্ণ। উত্তম পুরুষে বলা গল্প এবং ছবি, দুটোই ভাল লেগেছে।
গল্পে কাকাবাবু'র আবির্ভাব এবং তিরোভাব, দুটোই আকস্মিক এবং স্বল্প সময়ের জন্য হলেও, তিনিই এ পর্বের কেন্দ্রীয় চরিত্র বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। গল্পে তার উপস্থিতি ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ।
আরোগ্য এর মত আমার মনেও প্রথম যে প্রশ্নটি উদয় হয়েছে, তা হলো, মরীচিকা একঘেঁয়ে লাগে কে অভিযোগ করেছে? (আরোগ্য তার সমস্যাসংকুল পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছেন কিনা, এবং এখন কেমন আছেন তা আপনার জানা আছে কি?)
খুব কম মানুষই জীবন সায়াহ্নে সুখ-সমৃদ্ধি ভোগ করতে পারে (৪ নং প্রতিমন্তব্য) - একথা শুনলে বা পড়লে শংকিত হই।

আপনার শরীর এখন কেমন? মনে হয়, দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে কিছুটা সময় নেবে। সাবধানে থাকবেন। স্বাস্থ্যই সম্পদ। এ সম্পদ সংরক্ষণে হেলা করবেন না। সম্পূর্ণ সুস্থ হবার আগে কাজে যাবেন না, ব্লগিং থেকেও কিছুদিন দূরে থাকতে পারেন, যদি এটাকে কষ্টকর মনে হয়।
গল্পে ভাল লাগা + +।

১৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৪৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: রেস্পেক্টেড স্যার,

জ্বি স্যার আমরা প্রতিদিন একটু একটু করে শারীরিকভাবে সুস্থ হচ্ছি। তবে জিভের স্বাদ ও দুর্বলতা এখনো কাটেনি। 22 তারিখে আমাদের 14 দিনের আইসোলেশন পর্ব শেষ হতে চলেছে। এই মুহূর্তে শারীরিক অসুস্থতার চেয়ে গৃহবন্দীত্ব মনের উপর অনেকটা চেপে বসেছে।
ভিটামিন সি যুক্ত খাবার ও ফলমূল প্রচুর খাচ্ছি। আশা করি আপনাদের দোয়ায় অল্প দিনের মধ্যে শারীরিক সক্ষমতা ফিরে পাবো।ঠিকই বলেছেন স্যার 'স্বাস্থ্যই সম্পদ'। সেই সম্পদকে রক্ষা করার দায়িত্ব প্রতিটি সচেতন নাগরিকেরই। চেষ্টা করছি তাকে মেনটেইন করতে।বাকিটা উপরওয়ালার উপর নির্ভরশীল।
পোস্ট সম্পর্কে:- সুজিত অত্যন্ত মেধাবী স্টুডেন্ট। ও কেমিস্ট্রি অনার্সে গতবছর বারাসাত স্টেট ইউনিভার্সিটি টপ স্কোরার হয়েছে। বিদেশে রিসার্চ করার স্বপ্ন দেখে।
আর কাকাবাবু যে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তা এক হিসেবে ঠিকই ধরেছেন।কাকাবাবু তিরোধান হলেও তিনি গল্প বুনুনের পরিবেশ তৈরি করে গেছেন। পরবর্তী পর্বগুলোতে আশা করি তার পরিচয় পাবেন।

মরীচিকার একঘেয়েমি সম্পর্কে একজন শ্রদ্ধেয়া আপুর কথা মাথায় রেখে স্বাদবদল করতেই এই গল্পটি দেওয়া। কাজেই এটা ঠিক অভিযোগের মতো নয় বরং ভালেবাসার স্মারক বলতে পারেন। যাইহোক এ বিষয়ে আরোগ্যের সাথে আপনার মনের মিল দেখে আমি আনন্দিত। আবারো ধন্যবাদ স্যার আপনাকে।

দিন দশবারো আগে আমার শেষ মেইলের উত্তরে আরোগ্য জানিয়েছিল যে এখন অনেকটাই ভালো আছে। আর একটু সুস্থ হলে ভার্চুয়াল জগতে ও ব্লগে ফিরবে।

সবশেষে পোস্টটিকে লাইক করাতে ও ডাবল প্লাসে দারুণ অনুপ্রেরনা পেলাম। কৃতজ্ঞতা জানাই আপনাকে।
বিনম্র শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা জানবেন।



আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.