নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আমার নিরক্ষর কিন্তু বুদ্ধিমতী মায়ের কাছ থেকে এই শিক্ষাই পেয়েছিলাম,যথাযথ কর্তব্য পালন করেই উপযুক্ত অধিকার আদায় করা সম্ভব। - মহাত্মা গান্ধী

পদাতিক চৌধুরি

হাই,আমি পদাতিক চৌধুরী।পথেঘাটে ঘুরে বেড়াই।আগডুম বাগডুম লিখি। এমনই আগডুম বাগডুমের পরিচয় পেতে হলে আমার ব্লগে আপনাদেরকে স্বাগত।

পদাতিক চৌধুরি › বিস্তারিত পোস্টঃ

তমোময়ী(পর্ব-৩)

১৩ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:১৪



রমিসা বুবুকে খুব শীঘ্রই আবার দেখা করতে যাওয়ার আশ্বাস দিয়ে আসি ঠিকই কিন্তু বুবুর জীবনে অজানা রহস্য জানার তীব্র বাসনা মনের মধ্যে উথাল পাথাল করতে থাকে। তাই শ্রেয়সীকে নিয়ে ফেরার পথে মনে মনে স্থির করি সম্ভব হলে পরদিনই আবার বুবুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেব। পরিকল্পনা মাফিক পরদিন সক্কালে হাজির হই বুবুর বাড়িতে। যথাযথ নির্দেশনা অনুসরণ করায় বাড়ি খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়নি। সাতসকালে দরজার সামনে আমাকে দেখে বুবু যেন চাঁদ হাতে পায়। মাত্র একরাতের ব্যবধানে আমাকে পাবে, ভাবতেও পারেনি। এমন অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তিতে বুবুর চোখে মুখে খুশির ঝলকানি বয়ে যায়। উল্লেখ্য বুবুর এমন আন্তরিকতা ভিতরে ভিতরে আমাকে মুগ্ধ করে। আমিও আমার শৈশবে হারানো বুবুকে ফিরে পেয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি।

কথা বলতে বলতে চোখ পড়ে ওর ঘরের অন্দরমহলে। ঘর না বলে ঘুমটি বলাই ভালো। চারদিকে বাঁশের দরমা দিয়ে ঘেরা, মাথার ওপর ত্রিপলের ছাউনী। তারি একপ্রান্তে রান্নার জিনিসপত্র থরেথরে সাজানো। আপাতদৃষ্টিতে দারিদ্রতার ছাপ থাকলেও পরিপাটি করে সাজানো-গোছানো ঘুমটিকে দেখে যথার্থই 'শান্তি কুটির' বলেই মনে হলো। এরইমধ্যে আমাকে কোথায় বসতে দেবে তা ভেবে বুবু শশব্যস্ত হয়ে পড়ে।বুবুর উদ্বিগ্নতা দেখে আমি বেশ লজ্জায় পড়ি। মুখ দিয়ে বলেও ফেলি সে কথা,
-এত ব্যস্ত হওয়ার কি আছে রে? আমি কি বিরাট কিছু হনু হয়ে গেছি যে তোকে এতটা ব্যস্ত হতে হবে?
কিন্তু কে শোনে কার কথা। বুঝলাম কথায় কোনো কাজ হবে না। যথারীতি সে ইতিউতি খুঁজতে লাগলো। এবার নিরুপায় হয়ে তার দুই হাত ধরে দরজার মুখে দাঁড় করিয়ে গলা বাড়িয়ে সামান্য ভিতরে উঁকি দিতেই হাতের কাছে একটা চেয়ার পেয়ে যাই।ওটাকে বাইরে টেনে বসে পড়ি।চেয়ারটির মধ্যেও ছিল দারিদ্রতার ছাপ। একটা পা ভাঙ্গা থাকায় সরু একটা কাঠ দিয়ে জায়গাটা শক্ত করে বাঁধা ছিল। একবার দেখেই বিষয়টি নজরে আসে। এমন চেয়ারে পড়ে যেতে পারি ভেবে বুবু ওটিকে কেড়ে নিতে এগিয়ে আসে। আমি কিছুটা বিরক্ত হয়ে শাসনের সুরে বলি,
-তুই এত ব্যস্ত হোস না তো। সাবধানে বসছি আমি। পড়বো নাকো, বলে ঘাড় ঘুরিয়ে আবার চেয়ারটিকে খুঁটিয়ে দেখে নিই। সত্যিই একটা গোটা পা-ই ভাঙ্গা। ভাঙ্গা জায়গাটা অবশ্য কাঠ দিয়ে বাঁধা ছিল। তবে ঐ অংশটা বাদ দিলে বাকি চেয়ারটিকে বেশ শক্তপোক্ত বলেই মনে হলো। কাজেই চেয়ার ভাঙ্গার বিষয়টিকে পাত্তা না দিয়ে আসল কথায় আসি,
-আচ্ছা বুবু গতকাল থেকে একটা প্রশ্ন সারাক্ষণ মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। আমাকে বিষয়টি বোঝাত তো দেখি।মুজাহিদের সঙ্গে তোর বিয়ে হল। তারপর দীর্ঘ দিন ধরে থাকলি নিরুদ্দেশ হয়ে। আজ এতো বছর পর এমন একটি অচেনা জায়গায় তুই এলি কীভাবে? আর সেই মুজাহিদই বা গেল কোথায়?
বুবু আমার কথা শুনতে পেল বলে মনে হলো না। অথচ আমি বেশ জোরে জোরেই কথাগুলো বলেছিলাম। অবশ্য শুনতে পেলেও হয়তো বা প্রসঙ্গ এড়াতে চাইছে। সম্ভবত একারণেই নিজে থেকেই অন্য প্রসঙ্গ উত্থাপন করে। স্নেহের সুরে বলল,
-এই মনা একটা ভুল হয়ে গেছে রে।
আমি মুখ তুলে তাকালাম।ঘরের আবছা অন্ধকারের দিকে আঙ্গুল নির্দেশ করে আবারো বলল,
- এ মনা ও হল রেহেনার আব্বা।
বুঝলাম বুবুর মেয়ের নাম রেহেনা।বুবুর কথা মতো কুশল বিনিময় করতে ভদ্রলোকের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেও ওনার আমাদের দিকে সামান্যতম আগ্রহ আছে বলে মনে হলো না। নিজের মতো শুয়ে আছেন ঠিকই কিন্তু মাঝে মাঝে তীব্র কাশি ওনাকে তিন/চার ইঞ্চি উপরে তুলে ছুড়ে ফেলছিলো। বুঝতে অসুবিধা হলো না যে উনি ভয়ানক অসুখে ভুগছেন।
আমি সারল্যতার সঙ্গে জিজ্ঞেস করি,
-বুবু উনার কি হয়েছে?
-ওর ফুসফুসে একটা ঘা হয়েছে। কতো বড় বড় ডাক্তার দেখিয়েছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। আগে তবু একটু হাঁটাচলা করতে পারতো কিন্তু এই মাসখানেক হলো আর উঠতে বা দাঁড়াতে পারেনা। একটুতেই ভয়ানক হাঁপাতে থাকে। সঙ্গে কাশি তো আছেই। মাঝে মাঝে কাশিতে রক্ত আসে। একবার শুরু হলে যেন থামতেই চায় না। রাতের বেলা ঘুম ওর হারাম হয়ে গেছে মনা। সারাক্ষণই কেবল কেশেই চলে। ভোরের দিকে যদিওবা একটু ঘুমায় তবে তা বেশিক্ষনের জন্য নয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে আবার যা তাই। আজও যেমন সারারাত কেশে কেশে নিস্তেজ হয়ে ভোরবেলা থেকে একটু ঘুমাচ্ছে। সারাদিন এক প্রকার শুয়েই থাকে। মাঝে মাঝে ধরে বসিয়ে দেই।
-কি আশ্চর্য! একজন জলজ্যান্ত মানুষ চোখের সামনে শেষ হয়ে যাচ্ছে অথচ সেই অর্থে কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা হলো না? আমার কথা শেষ হতেই, বুব নীরবে কিছুক্ষণ আমার দিকে চেয়ে থাকে।পরে ধীর স্থিরভাবে বলল,
-ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা যে করিনি তা নয়, তবে টানতে পারিনি।আর টানবোই বা কেমনে? সামান্য উপার্জন করে যে কটা টাকা জমিয়েছিলাম সব খরচ হয়ে গেছে। আগে ও সাগরে যেত মাছ ধরতে।ঘাট থেকে শয়ে শয়ে ট্রলার ছাড়তো। দেড়/দুমাস ট্রলারে কাটিয়ে অনেক অনেক মাছ নিয়ে ওরা বাড়ি ফিরত। ওরা ফিরলে গোটাপাড়ায় উৎসব লেগে যেত।আর উৎসব লাগবে নাই বা কেন, ওদের ফেরার জন্য পাড়া শুদ্ধ সবাই যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকতাম। মরশুমে জেলেপাড়ার কোনো বাড়িতে পুরুষ থাকতো না। সে একদিন গেছেরে মনা।
শেষ কথাগুলো বলতে গিয়ে রীতিমতো বুবুর গলা ধরে আসে। শাড়ির আঁচলটা মুখে পুরে বেশ কিছুক্ষণ নীরব রইলো।
বেশ কিছুক্ষণ পরে আবারো বলতে লাগলো,
-এই সময়ে সংসারে যথেষ্ট সুদিন এসেছিল। কিছু পয়সা জমিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল মেয়েটাকে একটা ভালো জায়গায় বিয়ে দেব।পরে যা হাতে থাকবে তা দিয়ে দু কামরার একটি ইঁটের বাড়ি করার কথাও ভেবেছিলাম। কিন্তু আমার সে স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। মেয়ের মন মজে ছিল পাড়ারই এক ছেলের সাথে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও অমত করিনি। একমাত্র মেয়ে পাশেই থাকবে বলে মেনে নিয়েছিলাম।আজ মেয়েটাও যদি থাকতো সব কষ্ট লাঘব হয়ে যেতো। সাধ্যমত খরচ করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম।কিন্তু ওর কপালে সুখ লেখা ছিল না। প্রথম থেকেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন ওকে খুব জ্বালা যন্ত্রণা দিত।প্রায়ই বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিতো। প্রথম প্রথম বেশ কয়েকবার সামান্য হলেও সে আবদার মিটিয়েছি। কিন্তু একসময় সে চাপ অত্যধিক বেড়ে যায়। আচ্ছা তুই বল দেখি মনি কাহাতক এইভাবে দিয়ে দিয়ে পারা যায়? এই নিয়ে রাতদিন লেগেই থাকতো অশান্তি। বিয়ের মাস পাঁচেক পর একদিন বৈকালে খবর আসে মেয়ে নাকি ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।

কিছুক্ষণ দম নিয়ে বুবু আবারো বলতে লাগল,
-খবর পেয়ে ছুটে গেছিলাম তক্ষুনি। কিন্তু গিয়ে দেখি সব শেষ! চোখের সামনে মেয়ের নিথর দেহ নিয়ে লোকটা পাগলের মত আচরণ করতে থাকে। নিজের বুক চাপড়াতে থাকে।মেয়ে হারানোর শোক ওর বাপ নিতে পারেনি। হাসিখুশি লোকটা এরপর একদম বদলে গেল। বাইরে বের হতো না। সারাক্ষণ ঘর আর ঘরের মধ্যে কাটিয়ে দিত। একদম চুপসে গেছিল লোকটা। পাঁচটা কথা বললে একবার উত্তর দিত, কখনোবা দিতোই না। এ সময় থেকেই একটু একটু করে কাঁশতে থাকে। প্রথমে বিষয়টিকে পাত্তা দেইনি। পরের দিকে কাশি বাড়লে ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। কিন্তু ততদিনে বড্ড দেরী হয়ে গেছে। পরে আরও বড় ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। ফুসফুসের ইনফেকশন অনেকটাই ছড়িয়ে গেছে। ডাক্তার বাবু ওষুধ দিয়েছিলেন। কিন্তু ঔষধে কাজ না হলে আর কিছু করার নেই বলে জানায়। অন্য আরেকজনের কাছেও গেছিলাম। তিনিও একই কথা বলে দিয়েছেন। এদিকে দিনকে দিন ওর স্বাস্থ্য ক্রমশ ভাঙতে থাকে। এখন এই ভাবেই যে কটা দিন যায়।

এসেছিলাম বুবুর পূর্ববর্তী জীবন সম্পর্কে জানতে। শিশুকালের সেই প্রাণোচ্ছল মেয়েটার বর্তমান জীবন যে এতোটা বেদনার; এতোটা যন্ত্রণাক্লিষ্ট শুনে তার পরবর্তী জীবন সম্পর্কে নতুন করে আর কিছু জিজ্ঞেস করতে মন সায় দিলো না। চুপচাপ বসে রইলাম। আর সামান্য দূরে রেহেনার বাপের ঘনঘন কাশির শব্দ ছাড়া এক প্রকার নিঃশব্দেই সময় অতিবাহিত হতে থাকে। আমার মন পড়ে ছিল তার ফেলে আসা জীবনের উপর। পরিবেশ অনুকূলে না থাকা সত্ত্বেও একসময় একপ্রকার নির্বোধের মতো জিজ্ঞেস করি,
- আচ্ছা বুবু তোর এই অবস্থা হল কীভাবে?
একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে,
- একদম ভালো না লাগে না রে মনা পিছনে ফিরে তাকাতে। জীবনে যে টুকু সুখ শান্তি পেয়েছি তা রেহেনার বাপের জন্য। কিন্তু উপরওয়ালা সেটুকুও এখন কেড়ে নিতে চলেছে। তাই এসব নিয়ে আর ভাবতে ভালো লাগে না। কপালে যা আছে তাই হবে।
খানিক বাদে বুবু আবার মুখ খোলে,
-ছোট থেকে তোর বড় বুবুর সঙ্গে আমার খুব ভাব ছিল। সেই কোন ছোটবেলায় ওকে সই বলেছিলাম। সারাক্ষণ তো তোদের বাড়িতেই পড়ে থাকতাম। এক ক্লাসে পড়লেও প্রাইমারির গন্ডি টপকালে আব্বা আর স্কুলে যেতে দেয়নি। মুসলমানের মেয়ে সেয়ানা হচ্ছি, ফ্রক পড়ে ড্যাংড্যাং করে স্কুলে গেলে বেআব্রু হয়ে যাবে। উল্টে আব্বা এখন থেকে আরো বেশি করে বাড়ির ভেতরে পর্দানশীন হয়ে থাকতে বলতো।আব্বার কথা অমান্য করিনি। তবে তোর বুবুকে স্কুলে যাওয়া দেখে আমারও একবার খুব সাধ জেগেছিল অমন করে বই খাতা নিয়ে স্কুলে ভর্তি হই।দাদিকে একথা বলতেই এমন করে বুড়ি হম্বিতম্বি শুরু করে যে না জানি আমি মহা কোনো অপরাধ করে ফেলেছি। সাথে জানালো, তোর বুবুই নাকি আমার মাথা খেয়ে ফেলছে।আব্বাকে বলে তোদের বাড়ি যাওয়া বন্ধ করার হুমকি দিলে আমি সেদিন খুব ভয় পেয়ে যাই। ছোট মনে তোদের বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ নষ্ট হবে ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তাই আর কখনো মুখে স্কুলে যাওয়ার কথা আনবো না বলাতে সে যাত্রায় দাদির হাত থেকে রেহাই পাই। তবে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হলেও বাড়িতে কোরআন শিক্ষা চলতে থাকে।বেশ কয়েকবার এই সময়ে কোরআন শরীফ শেষ করি। আমার গলার সুরেলা কোরআন তেলাওয়াত দাদি খুব পছন্দ করত।প্রায়ই বুড়ি বায়না করতো যাতে একটু কোরান পড়ে শোনাই। ঠাট্টা করে বলতো একমাত্র হাফেজ জামাই নাকি আমাকে যথাযথ মূল্য দেবে। আমি লজ্জায় অন্যদিকে পালিয়ে যেতাম।

বুবু আরও বলতে লাগলো,
-আমার এক খালাতো ভাই রফিক, উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে হেফজো পড়তো। মাঝে মাঝে বাড়িতে এসে আমগাছে বালির বস্তা বেঁধে ঘুষি মারত। আমরা হাসতাম ওর কান্ডকারখানা দেখে।ওর কাছ থেকেই প্রথম শুনি এটা নাকি ক্যারাটে শেখার কৌশল। খালি হাতে শত্রুকে ঘায়েল করতে হলে ক্যারাটে জানা দরকার।মাদ্রাসায় হেফজো পড়ার পাশাপাশি নাকি ওদের ওসব কিছুরও শিক্ষা দেওয়া হতো। রফিক ভাই যখনই বাড়িতে আসে আমাদের বাড়িতেও দেখা করতে আসত। একবার রাতে আসে সঙ্গে বিরাট লম্বা আলখাল্লা পরিহিত এক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে। নাম ওনার মুজাহিদ।বাড়ি বাংলাদেশের কালীগঞ্জে হলেও অত্যধিক ধর্মপ্রাণ মানুষটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে সুদূর আফগানিস্থানে লড়াইয়ে ব্যস্ত।এমন একজন‌ লোকের বিবি হতে পারা মানে আখেরাতে বিরাট নেকি হাসিল করার সুযোগ পাওয়া। বাড়ির লোক পারলে প্রথম দিনেই ওনার সঙ্গে আমার বিয়ে দিয়ে দেয়। আমার মতামতের কোনো দাম ছিল না। যদিও আমার দিক থেকে এমন লোককে বিয়ে তো দূরের কথা প্রথম দেখাতেই আমি ভয় পেয়ে যাই।পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা এত লম্বা একজনকে বিয়ে করতে রাজি নই বলাতে দাদি আমাকে এমন ধমক দিল এবং সাথে জানালো, বিয়ের কথা মেয়েদের মুখে আনা মানে চূড়ান্ত বেশরম নির্লজ্জের কাজ। সেদিন দাদির কাছে ধমক খেয়ে আমি আর টুঁশব্দটি করার সাহস করিনি।


মুজাহিদ দুদিন থেকে চলে যায় নিজের দেশে।ফেরে এক সপ্তাহ পরে। সঙ্গে প্রচুর গয়নাগাটি নিয়ে আসে। যা দেখে বাড়ির সকলের মত আমারও মাথা ঘুরে যায়। সাক্ষাৎ রানী হওয়ার স্বপ্নে তখন থেকে বিভোর হয়ে উঠি। শুধু গয়নাগাটি নয় বিয়ের যাবতীয় খরচপাতিও মুজাহিদ বহন করে‌।আব্বাকে নাকি সে আরও অনেক টাকা দিয়েছিল। খুব প্রশংসা করত আব্বা মুজাহিদের। এমন একজন ভালো ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেওয়ায় আব্বা রীতিমতো গর্বিত ছিল। যাইহোক মুজাহিদ বিয়ের পর কিছুদিন আমাকে শ্বশুর বাড়িতে রাখার কথা বলে। পরে সুযোগ সুবিধামতো আফগানিস্তানে নিয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেয়। আব্বাকে জিজ্ঞেস করে একাকী কালীগঞ্জে রাখতে আপত্তি আছে কিনা। কিন্তু বিয়ের পর মেয়েদের যাবতীয় দায়দায়িত্ব স্বামীর উপর পড়ায় আব্বা, ও তোমার নিজস্ব ব্যাপার; এতদিন মেয়েকে নিয়ে অনেক ভেবেছি এখন ভাবনা তোমার বলে সাফ জানিয়ে দেয়। পরে আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমিও জানিয়েছিলাম, তুমি যেখানে নিয়ে তুলবে সেখানেই যাবো। তবে একাকী থাকতে রাজি নই। আসলে মুজাহিদের অমায়িক ব্যবহারে এত অল্প সময়ের মধ্যে বাড়িসুদ্ধ আমরা সকলেই এতটাই ভক্ত হয়ে উঠেছিলাম যে ওর কোনো কথা কখনোই সন্দেহের বলে মনে হয়নি।

কালীগঞ্জে যেতে বলেছিল ঠিকই কিন্তু ও চাইছিল আমি যেন ওর সঙ্গেই থাকি।তাই সে যেখানেই থাকুক।ফলে ওকে ছাড়তে রাজি না হওয়ায় ও খুব খুশি হয় এবং আমাকে নিয়ে আফগানিস্তানের পথে রওনা দেয়।আর এখান থেকেই শুরু হয় আমার জীবনের বিভীষিকাময় পর্ব। অসম্ভব ঠান্ডা মাথার লোক ছিলো মুজাহিদ। মেপে মেপে খুব ছোট ছোট করে ধীর স্থির ভাবে কথা বলতো। আমি মুগ্ধ হয়ে ওর কথা শুনতাম। ওর কথা বলার গুনে বাড়ির সকলকে ও বশ করে ফেলেছিল। জানিয়েছিল ওর নাম যেমন মুজাহিদ তেমনি ওরা যুদ্ধও করছে মুজাহিদ নামে। আরো জানিয়েছিল, কেন ওরা নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে সুদূর আফগানিস্তানে যুদ্ধ করছে? বিদেশি শক্তির অত্যাচারে ওদেশের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত; বিপন্ন ইসলাম।আর তাই ওরা মরণপণ সংগ্রাম করছে। যে করেই হোক বিদেশী শক্তির উৎখাত ওরা করবেই।
বুবুকে একটু থামিয়ে দিয়ে বলি,
-বুবু মুজাহিদ তোকে এমন বোঝালেও ওটা সবটা বিদেশী শক্তি ছিল না।১৯৭৮-৭৯ সালে ওদেশে ক্ষমতায় আসে 'পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ আফগানিস্থান' নামে একটি কমিউনিস্ট দল। যাকে সংক্ষিপ্তভাবে পি ডি পি এ বলা হতো। এরা ছিল আমাদের রাজ্যের বামফ্রন্টের মতই একটি কমিউনিস্ট দল। এখন কমিউনিস্টরা ধর্ম মানে না বা তাদের অনুদার নীতি যে কারণেই হোক এই সরকারের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে জনগণ বিদ্রোহ করে। শুরুতে বিদ্রোহ দমন করতে সরকার যথেষ্ট বেগ পায়। নিরুপায় সরকার একসময় প্রতিবেশী কম্যুনিস্ট রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের সাহায্যপ্রার্থী হয়। মূলতঃ কম্যুনিস্ট সরকারকে সাহায্য করতেই ও দেশে সোভিয়েত সৈন্যের প্রবেশ ঘটে। আর এই সোভিয়েত সৈন্যের অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতেই ওদের সরকার বিরোধীদের সঙ্গে বিদেশি ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা মুজাহিদের তালিকায় নাম লেখায় ও গেরিলা যুদ্ধে নেমে পড়ে। এখানে একটা বিষয় উল্লেখ্য আফগানিস্তানে তৎকালীন সরকার বিরোধী এই মুজাহিদের অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছিল কিন্তু তৎকালীন বিশ্বের আরেক শক্তিধর দেশ আমেরিকা।
বুবু বিরক্ত হয়ে,
- আরে ধুর! আমি অত লেখাপড়া শিখিনি।এসব জটিল বিষয় আমার মাথায় ঢুকবে না। জেনেও আমার কোন কাজ নেই।
সাময়িক থেমে বুবু আমার বলতে লাগলো,
- মুজাহিদ আমাকে আরো বলেছিল,প্রতিটি মুসলমানের উচিত এই যুদ্ধে অংশ নেওয়া। তবে সবাইকে যে বন্দুক হাতে লড়াই করতে হবে তা নয়।কেউ অর্থ দিয়ে কেউবা সময় দিয়ে নিজেদেরকে যুদ্ধে শামিল করতেই পারে। এমনকি নারীরাও মুজাহিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে যুদ্ধে অংশ নিতে পারে। মনে মনে আমি শিহরিত ছিলাম যদি কোনভাবে নিজেকে এই যুদ্ধে অংশ নিতে পারি তা ভেবে। ও জানিয়েছিল তাড়াহুড়ার দরকার নাই। পরিস্থিতিই একজনকে ঠিক করে দেবে কখন তাকে যুদ্ধে নামতে হবে। আমাকে সতর্ক করে বলে, বিধর্মীদের শাসন চলায় ওদেশে গিয়ে খুব ঘেরাটোপের মধ্যে থাকতে হবে। ইচ্ছামত বাইরে বের হওয়া যাবেনা। যদিও ওর মুখে এসব কথা শুনে মনে মনে প্রচন্ড ভয় পাই।এ আল্লাহ কোথায় যাচ্ছি! বাস্তবে একসময় আমরা শুষ্ক রুক্ষ বালুর দেশে পৌঁছায়। বুঝতেই পারি আবহাওয়া আমূল বদলে গেছে। বাতাসে যেন গা পুড়ে যাওয়ার মত অবস্থা। সঙ্গে কানে আসতে থাকে ঘনঘন ভারী কিছুর শব্দ। মুজাহিদ জানায়, ওগুলো গোলাগুলির আওয়াজ। ওসবে কান না দিতে। জিজ্ঞেস করতেই বুঝি,হ্যাঁ আমরা আফগানিস্তানে ঢুকে গেছি। একটা সময় ও আমার যাবতীয় গয়নাগাটি নিয়ে নেয়। বিদেশে মেয়েলোকের কাছে গয়নাগাটি রাখা নিরাপদ নয় বলাতে এক কথায় ওর কাছে জমা দেই।এর মধ্যে আমার মা ও দাদির দেওয়া সামান্য গয়নাও ছিল। অবশেষে এক সন্ধ্যারাতে আমরা একটা পুরানো বাড়িতে হাজির হই। মুজাহিদ টর্চ ফেলে আমাকে পথ দেখাতে থাকে। উল্টো দিক থেকে আরেকটি টর্চের আলো পড়ে আমার মুখে। শুরুতে অন্ধকার ঘরটিতে ঢুকতেই আমার গা ছমছম করে ওঠে। গোটা বাড়িতে আর কোন জনপ্রাণী আছে বলে মনে হলো না। আর থাকলেও তাদের কোন টুঁ-শব্দ আমার কানে এলো না।

তো




মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:৫৯

শেরজা তপন বলেছেন: আগের দু'পর্বের মত এপর্ব ও ভাল লাগল!
প্রথমে ভেবেছিলাম নিটোল প্রেমের গল্প- এখনতো গল্পের বিষয়বস্তু একদম পেল্টে গেল।
আরো দু' চার পর্ব হলেও সমস্যা নেই- বাংলাদেশী যুবকের আফগানিস্থানে সেই গেরিলা যুদ্ধের গল্প জানতে হবে

১৩ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৫২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রথম মন্তব্য মানে আলাদা ভালোলাগা। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় ভাইকে।

"আগের দু'পর্বের মত এপর্ব ও ভাল লাগল!"- আগের দুই পর্বের মতো এ পর্বটিও ভালো লাগাতে খুশি হলাম। আবারো ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।
"প্রথমে ভেবেছিলাম নিটোল প্রেমের গল্প- এখনতো গল্পের বিষয়বস্তু একদম পেল্টে গেল।"-হ্যাঁ ভাই একদম ঠিকই ধরেছেন। প্রথম দুই পর্বকে যেভাবে দেখিয়েছিলাম পরবর্তী পর্বে উদ্দেশ্য গল্পটাকে সম্পূর্ণ বিপরীত পথে সুইং করানো। প্রায়শ ক্ষেত্রে আমরা যুদ্ধকে দেখি বা নিজেদের অনুকূলে যোদ্ধাদেরকে বাহবা দিই। কিন্তু এর নেপথ্যে যে মানবেতর জীবন থাকে সেগুলো চিরকালই চাপা পড়ে যায়। পরবর্তী পর্বে আশাকরি তার কিছুটা তুলে ধরার চেষ্টা করব। আমন্ত্রণ রইলো আপনাকে।
পোষ্টটিতে লাইক দেওয়াতে অনুপ্রেরণা পেলাম; কৃতজ্ঞতা জানাই।,

নিরন্তর শুভেচ্ছা প্রিয় ভাইকে।

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



পশ্চিম বংগে, এবং আপনি যেই এলাকায় থাকেন, সেখানে করোনার কেমন অবস্হায় আছে?

১৩ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৫৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুধু পশ্চিমবঙ্গ বলে নয় ভারতে করোনা পরিস্থিতি এই মুহূর্তে যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা একেবারেই তলানীতে। এমতাবস্তায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্কুল-কলেজ খোলার জন্য রীতিমতো দাবি উঠছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোর পরে স্কুল খোলার একটা আশ্বাস দিয়েছেন। পরীক্ষা সিস্টেম বদলের একটা ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয়ে গেছে।
তবে যে বিষয়টি আমার দেখে খারাপ লাগছে, জনগণের মধ্যে মাস্ক ব্যবহার না করার টেন্ডেন্সি আবার চোখে পড়ছে।

প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভেচ্ছা জানবেন।

৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



করোনার ফলে পশ্চিম বংগ ও ভারতের অর্থনীতির কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে?

১৩ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:২৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: অর্থনীতির ক্ষতির বিষয়টা প্রকাশ্যে স্বীকার করাটা একটা শাসক দলের পক্ষে যথেষ্ট লজ্জার। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার অতিমারির সত্বেও নিজেদের সাফল্যের বিজ্ঞাপন তুলে ধরতে ব্যস্ত। আবার রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের বিপুল ভোটে জয়লাভ রাজ্য সরকারের সাফল্যের পরিচায়ক। কাজেই আপাত দৃষ্টিতে দুই সরকারই করোনা পরিস্থিতি যে অর্থনীতিকে বেসামাল করেনি তা তুলে ধরতেই আগ্রহী। কিন্তু চিত্র অন্য কথা বলে-
১-ভারতে তেলের দাম এই দুই বছর সর্বাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে।
২-পাঁচ পাঁচটি ব্যঙ্ক মোদিজী বেসরকারিকরণ করে দিয়েছেন।বলা ভালো বেঁচে দিয়েছেন।
৩-LICর ৬০শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন।
৪-পরিকাঠামোর উন্নয়নের গল্প দিয়ে রেলে বেসরকারি বিনিয়োগকে প্রমোট করেছেন।
৫-রেল স্টেশনে সামান্য ওয়াইফাই পরিসেবা দিয়ে আসছিল। এখন সেটুকুও ফ্রিতে দিতে পারবে না বলছে।
৬-কেন্দ্র বা রাজ্যে শেষ দু'বছর কোনো রিক্রুটমেন্ট নেই।
৭-বেসরকারী সংস্থায় নুতন কোনো বিজ্ঞাপন নেই।
৮-উল্টে আপৎকালীন অজুহাতে বহু মানুষের চাকরি গেছে।

আমি মাঝে মাঝে ফল নিতে স্টেশনে যাই। এক ভদ্রলোক ফল বিক্রি করেন। কিন্তু দেখে ঠিক পেশাদারি বলে মনে হয় না।বেশ কিছু দিন নেওয়ার পর জিজ্ঞেস করি,আপনি কি অন্য পেশার সঙ্গে ছিলেন? হঠাৎ উনি গম্ভীর হয়ে যান। হ্যাঁ বলেন। তবে আপাতত ফল বিক্রেতাই আমার পরিচয়। আমি আর কিছু জিজ্ঞেস না করে বুঝে যাই। এখন অবশ্য ওনার কাছ থেকেই নিয়মিত ফল কিনি।


অথচ দুই সরকার নিজেদের সাফল্যের ক্ষতিয়ান তুলে ধরতে।



৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: গল্পের মোড় কিভের ঘুরে গেলো!!!
সাথেই আছে।

১৩ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আশাকরি আগামীতেও এভাবে পাশে পাবো।‌

নিরন্তর শুভেচ্ছা আপনাকে।

৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: একটা পর্ব পড়া হয় নাই। এই পর্ব পড়তে ভালো লাগলো। পরের পর্ব পড়ার ইচ্ছা আছে। এবার মনে হয় আফগানিস্তানের গল্প শোনা যাবে। ভালো থাকবেন পদাতিক ভাই।

১৩ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:৪৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় সাচু ভাই,
আপনি বলেছেন,
"একটা পর্ব পড়া হয় নাই।"- যদি সময় হয় তাহলে আশাকরি অপঠিত পর্বটি পড়বেন। সাথে সাথে জানাই আপনি ঠিকই অনুমান করেছেন। আগামীতে বিষয়টিতে আলোকপাত করবো। আপনাকে আমন্ত্রণ রইলো।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
শুভকামনা আপনাকে।

৬| ১৩ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৭

দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: পদাতিক চৌধুরী,



প্রথমে রোমান্টিক গল্প দেখে ভেবেছিলাম গল্পের শেষটা হয়তো ট্রাজেডি কিংবা হ্যাপি এন্ডিং হবে। কিন্তু তৃতীয় পর্বটি পড়ে মনে হচ্ছে গল্পটি একটি ইন্টারেস্টিং দিকে মোড় নিল। প্রথম দুটি পর্বের চেয়ে এই তৃতীয় পর্বটি পড়ে এখন গল্পটি শেষ অবধি জানার আগ্রহ যেন আরো বেড়ে গেল!
আরো বেশি অবাক হলাম গল্পটির শেষে বিশেষ দ্রষ্টব্য দেখে। সেখানে তিন নম্বর পয়েন্টে বলেছেন পোস্টটি আপনি আমাকে উৎসর্গ করেছেন ! সত্যিকার অর্থে এটি অনেক আনন্দের বিষয় আমার জন্য!

পুর্বে আপনার কোন একটি পোস্টে করা মন্তব্যের প্রতি মন্তব্যে আমাকে বলেছেন সামু ব্লগ অসংখ্য রত্নে ভরপুর। যথার্থই বলেছেন। সেই অসংখ্য রত্ন গুলোর মধ্যে আপনিও একজন। কেননা, যখন আপনার লেখাগুলো পড়ি তখন মনে হয় না যেন নেহাতই একজন সহ ব্লগারের লেখা পড়ছি। মনে হয় যেন একজন দক্ষ লেখকের লেখনী পড়ছি!

তমোময়ীর প্রথম দুটি পর্ব পড়ে মনে হচ্ছিল যেন আপনার বাসস্থান ভারতে কিন্তু আজকের পোস্টে সম্মানিত ব্লগার ' চাঁদগাজী'র করা মন্তব্য এবং আপনার প্রতি মন্তব্য থেকে বুঝতে পারলাম আমার ধারণাটি সঠিক। আমার মনে হয় এটিই সামহোয়্যারইন ব্লগের একটি বিশেষত্ব যে, বিশ্বের সকল বাংলা ভাষাভাষীদেরকে একই নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত করে তাদের লেখা এবং চিন্তাভাবনাকে সমৃদ্ধ করা।

সব শেষে কিছু কথা বলে যেতে চাই, আপনি উল্লেখ করেছেন আমার লেখনি আপনার ভালো লেগেছে। এটি অনেক বড় কমপ্লিমেন্ট আমার জন্য! যদি আদর্শ মানের সঙ্গে বিবেচনা করা হয় তাহলে আমি মনে করি না আমি এখনো এতটা যোগ্য লেখক হতে পেরেছি। কিন্তু ব্লগে এসে কিছু সম্মানিত ব্লগারের অনুপ্রেরণায় (যেমন আপনি , 'আহমেদ জী এস' ) এখন মনে হচ্ছে যেন আমার চিন্তা ভাবনার কাগজে-কলমে রূপটি ব্যর্থ যায়নি! ধন্যবাদ বলে আপনাদের প্রেরণাকে অসম্মান করতে চাই না। তবে আশা রাখি এভাবে অনুপ্রেরণা দিয়ে সাথে থাকবেন।

অনেক অনেক শুভকামনা জানবেন ।

- দেয়ালিকা বিপাশা

১৩ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:১৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ব্লগার,

কমেন্টের প্রথম দিকে আপনার আগমনে আনন্দ পেলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি বলেছেন,
"প্রথমে রোমান্টিক গল্প দেখে ভেবেছিলাম গল্পের শেষটা হয়তো ট্রাজেডি কিংবা হ্যাপি এন্ডিং হবে। কিন্তু তৃতীয় পর্বটি পড়ে মনে হচ্ছে গল্পটি একটি ইন্টারেস্টিং দিকে মোড় নিল। প্রথম দুটি পর্বের চেয়ে এই তৃতীয় পর্বটি পড়ে এখন গল্পটি শেষ অবধি জানার আগ্রহ যেন আরো বেড়ে গেল!"- আপনার ভাবনা সঠিক ছিল যেহেতু প্রথম দুটি পর্বকে সেই ভাবে পরিবেশন করা হয়েছে। আবার কাকতালীয় ভাবে বুবুর সাক্ষাৎলাভের পর ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেওয়া স্বাভাবিক।আজ কিছুটা উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তী পর্বে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। আপনাকে আমন্ত্রণ রইলো।

"আরো বেশি অবাক হলাম গল্পটির শেষে বিশেষ দ্রষ্টব্য দেখে। সেখানে তিন নম্বর পয়েন্টে বলেছেন পোস্টটি আপনি আমাকে উৎসর্গ করেছেন ! সত্যিকার অর্থে এটি অনেক আনন্দের বিষয় আমার জন্য!"- আপনাকে একটা কথা বলি। আপনার পোস্ট পড়ে ভালো লেগেছিল জানিয়েছিলাম সে কথা। কিন্তু তার পরে বেশ কয়েকবার আপনার ব্লগে গিয়ে নুতন পোস্ট না দেখে একটু চিন্তিত হই ভেবে যে প্রথম পাতায় সুযোগ না পাওয়ায় বোধহয় লেখেলেখিতে একটু আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এখানে আমার মনে হয়েছে একদিকে আপনাকে নিয়মিত লেখালেখি উৎসাহ প্রদান করা। পাশাপাশি যারা এখনো আপনার পোস্টে যাননি তারা যদি একবার ঘুরে আসেন কিম্বা কমেন্ট করেন তাহলে হয়তো দ্রুত আপনার স্ট্যাটাসের বদল ঘটতে পারে।আর সবকিছুর মূলে ব্লগিং মিথোস্ক্রিয়া।ব্লগকে যে আমরা সবসময়ই গরমাগরম দেখতে চাই।


"তমোময়ীর প্রথম দুটি পর্ব পড়ে মনে হচ্ছিল যেন আপনার বাসস্থান ভারতে কিন্তু আজকের পোস্টে সম্মানিত ব্লগার ' চাঁদগাজী'র করা মন্তব্য এবং আপনার প্রতি মন্তব্য থেকে বুঝতে পারলাম আমার ধারণাটি সঠিক। আমার মনে হয় এটিই সামহোয়্যারইন ব্লগের একটি বিশেষত্ব যে, বিশ্বের সকল বাংলা ভাষাভাষীদেরকে একই নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত করে তাদের লেখা এবং চিন্তাভাবনাকে সমৃদ্ধ করা।"- আপনার ধারণার সাথে বাস্তবতা মিলে যাওয়ায় খুশি হলাম।অতিমারি কেটে গেলে কলকাতায় আসার আমন্ত্রণ রইলো আপনাকে।


"সব শেষে কিছু কথা বলে যেতে চাই, আপনি উল্লেখ করেছেন আমার লেখনি আপনার ভালো লেগেছে। এটি অনেক বড় কমপ্লিমেন্ট আমার জন্য! যদি আদর্শ মানের সঙ্গে বিবেচনা করা হয় তাহলে আমি মনে করি না আমি এখনো এতটা যোগ্য লেখক হতে পেরেছি।"-লেখালেখিতে আপনি একা নন আমরা সবাই আনকোড়া‌ নুতন বৈকি। কাজেই নিজের মতো করে লিখুন অন্যের পোস্ট পড়ুন। লেখালেখি করার এত ভালো জায়গা আর দ্বিতীয়টি নেই বলে আমার বিশ্বাস। তবে আপনার নুতন পোস্ট না পেয়ে আমি চিন্তিত। আশাকরি তাড়াতাড়ি পোস্ট দিবেন।

আর সম্মানিত ব্লগারদের আপনি কিছুদিনের মধ্যেই ঠিক পেয়ে যাবেন। আহমেদ জী এস ভাই ওনাদের মধ্যে একজন। কিন্তু দোহাই আমাকে ওনাদের মধ্যে জড়াবেন না। লজ্জায় পালানোর রাস্তা খুঁজে পাবো না।

পোস্টটিতে like'করাতে প্রেরণা পেলাম অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

অফুরান শুভেচ্ছা জানবেন।

৭| ১৩ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৫৮

দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: পদাতিক চৌধুরী ,




প্রতিমন্তব্যে জানিয়েছেন বেশ কয়েকবার আমার ব্লগে গিয়ে ঘুরে এসেছেন এবং নতুন পোস্ট না দেখায় কিছুটা চিন্তিত হয়েছেন। নিজে থেকে আপনার এমন আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ যে জানাতেই হয়! সাম্প্রতিক একটি নতুন গল্প লিখছি এখনো শেষ হয়নি। আশা করি গল্পটি লেখা শেষ করে শীঘ্রই পোস্ট করব। আপনাকে চিন্তিত হবার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। 'আহমেদ জী এস' আজ আমার ব্লগে এসেছিলেন, তিনি মন্তব্য করে জানালেন আমার নতুন লেখা নেই কেন? আপনাদের এমন আগ্রহের জন্য আমি বেশ অনুপ্রাণিত হলাম।

আপনি বলেছেন অতিমারি কেটে গেলে কলকাতায় আসার আমন্ত্রণ রইল। জানিনা আদৌ কি কলকাতা যাওয়া হবে কিনা কিন্তু যদি ঢাকায় আসেন তাহলে আপনাকেও আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

আপনার শুভেচ্ছা গ্রহণ করলাম।

- দেয়ালিকা বিপাশা

১৪ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:০৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ব্লগার,
আবার কমেন্টে আসায় খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
"সাম্প্রতিক একটি নতুন গল্প লিখছি এখনো শেষ হয়নি। আশা করি গল্পটি লেখা শেষ করে শীঘ্রই পোস্ট করব।"- আপনার নুতন গল্পের অপেক্ষায় রইলাম। সাথে একথাও বলার যে সেভ স্ট্যাটাস দিয়ে একটা পোষ্ট ইমিডিয়েট দেওয়া দরকার ছিল। যেখানে শুধু সেভ হয়েছেন এটুকুই উল্লেখ থাকবে। উল্লেখ্য এই পোস্টের মাধ্যমে আপনার পরিচিতি সকলেই জানতে পারতো। বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর।

৮| ১৪ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:৪৯

ইসিয়াক বলেছেন: গল্প ভালো এগুচ্ছে। বেশ ভালো প্লট তবে একটু তাড়াতাড়ি শেষ করবার প্রবণতা লক্ষ করলাম। কাহিনি বিন্যাসে আরেকটু সর্তক হোন। কত পর্বে শেষ হবে সেটা মুখ্য বিষয় নয়। কতটা মনোগ্রাহীভাবে গল্পটাকে উপস্থাপন করা যাবে সেদিকে লক্ষ থাকা উচিত। এটা অবশ্যই আমার ব্যক্তিগত মতামত।
এই পর্বে এসেন গল্পটির নামকরণের সার্থকতাও খুঁজে পেলাম।

শুভেচ্ছা সহ শুভ কামনা রইলো প্রিয় দাদা।

১৪ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৩৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন:
প্রিয় ইসিয়াক ভাই,
আশাকরি ভাল আছেন। আপনি বলেছেন,
"গল্প ভালো এগুচ্ছে। বেশ ভালো প্লট তবে একটু তাড়াতাড়ি শেষ করবার প্রবণতা।" অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। এমন আন্তরিক কমেন্ট করার জন্য। তবে এটাকে বেশি দীর্ঘায়িত করবো না। সাতক্ষীরা টু বেলগাছিয়া সিরিজের জন্য আপাতত একে ছোট পরিসরে রাখছি।সময় পেলে তখন এই বিষয়টিতে আবার আলোকপাত করবো।
পোস্টটিতে like'করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
গল্পের নামকরণের সার্থকতা খুঁজে পেয়েছেন জেনে খুশি হলাম আবারো ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার শুভেচ্ছা গ্রহণ করলাম। আপনার জন্যও রইলো নিরন্তর শুভকামনা।




৯| ১৪ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৫৩

ইসিয়াক বলেছেন: যাক অবশেষে আমার কমেন্টটি লাইক পেল।একটু দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। অবশ্য নিজেও একটু দুষ্টুমি করেছি পোস্ট দেখেছি আর আশেপাশে অন্য পোস্টে ঘুরে চলে গেছি।হা হা হা...

১৪ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৪২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আবার কমেন্টে আসায় আনন্দ পেলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় ইসিয়াক ভাইকে।

.""যাক অবশেষে আমার কমেন্টটি লাইক পেল।একটু দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। অবশ্য নিজেও একটু দুষ্টুমি করেছি পোস্ট দেখেছি আর আশেপাশে অন্য পোস্টে ঘুরে চলে গেছি।হা হা হা....."- হেহেহে,।।।।।।।।। দেখলেন তো দুষ্টামি করেও ধরে রাখতে পারলেন না। তবুও বলবো নিরাশ হবেন না। চেষ্টা চালিয়ে যান।

অফুরান শুভেচ্ছা প্রিয় ইসিয়াক ভাইকে।

১০| ১৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: চাঁদগাজীর দুটা গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন এবং আপনার মন্তব্য ভালো লেগেছে।

১৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:৪৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ছোট ভাই,

প্রায় দেড় হাজার শব্দের একটি পোস্টে একজন ব্লগারের সে বিষয়ে কোনো কমেন্ট না থেকে থাকে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের।হতে পারে সেটা কোনো একটা এলাকার সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু পোস্ট ছেড়ে এসব বিষয়ে সরাসরি জিজ্ঞাসা আমার কাছে অপ্রাসঙ্গিক কিছুটা অবাঞ্চিত বৈকি। তবুও বয়সে কথা মাথায় রেখে ভদ্রতা বজায় রেখে উত্তর দিয়ে গেছি। কিন্তু আপনিও পোস্টের বিষয় ছেড়ে কমেন্ট পড়ে মতামত দেওয়ায় ব্লগে আর কষ্ট করে পোস্ট দেওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা সংশয়ে পড়লাম। হয়তো ব্লগ চরিত্র বদল করেছে অথচ আমি ব্যাকডেটেড হয়ে আছি- বিষয়টি আমার কাছে রীতিমতো ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।




১১| ১৫ ই আগস্ট, ২০২১ ভোর ৬:৪৯

সোহানী বলেছেন: এইটা কি করলেন...!! কি গভীর প্রেমের গল্প রে কোন দিকে মোড় ঘুড়ালেন!!

এবারের পর্বটা একটু বড় মনে হয়েছে। ব্লগে দীর্ঘ লিখা পড়তে একটু সমস্যা হয়, পুরোপুরি মনোযোগ রাখতে পারি না। বইতে এ সমস্যা হয় না।

বরাবরের মতই ভালো লাগলো।

১৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৩৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপু এইটা পরিবর্তন করার জন্য লেখকের কোন হাত নেই।রমিসা বুবুর দুঃখের সাগরে কি করে বক্তা নিজের প্রেমকে সামনে আনবেন।আর পর্ব ছোট করলে বা বেশি পর্ব করলে জুনাপু বা ভূয়া ভাইয়েরা আর এ মুখে আসবে না।তাই পর্ব বড় করে তাড়াতাড়ি শেষ করার ইচ্ছা।
যাহোক বড় পর্ব বিরক্তি করানোয় দুঃখিত ।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
শুভেচ্ছা জানবেন আপু।

১২| ১৫ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ৭:৪০

বিজন রয় বলেছেন: নতুন কিছু লিখবেন? আনকোরা নতুন!!

আমি লিকতে পারিনা বলে বললাম।

১৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৩৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: অনেক দিন পর আপনাকে পেয়ে আনন্দ পেলাম। ধন্যবাদ দাদা আপনাকে।
হ্যাঁ দাদা চেষ্টা করি নুতন বিষয়ের উপর লিখতে।এমনই চেষ্টার ফসল এই গল্পটা।যদিও গল্পটা সত্য ঘটনার আলোকে রচিত।

আপনি ভালো কবিতা লেখেন।যেটা আবার আমার আসেনা। কাজেই আপনার কলম যেখানে মসৃণ আমি সেখানে অসহায়।
ভালো থাকবেন দাদা সবসময়।

১৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:৫০

দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: পদাতিক চৌধুরী,

তমোময়ীর পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছি। আশা করি শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব পড়ার সুযোগ হবে।
অনেক শুভকামনা জানবেন।


- দেয়ালিকা বিপাশা

২০ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:০১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ব্লগার,

একটু ব্যস্ত ছিলাম। ভেবেছিলাম সামনের সপ্তাহে পোস্ট দিবো। কিন্তু তা আর সম্ভব নয়। সামনের সপ্তাহে আরও কাজের চাপে পড়তে চলেছি। কাজেই আর দেরি নয়।কাল পরশুর মধ্যে পোস্ট দেওয়ার চেষ্টা করবো। খোঁজ নিতে আসার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভেচ্ছা জানবেন।

১৪| ২৩ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:১৮

ফয়সাল রকি বলেছেন: চতুর্থ পর্বে যাই।
দেয়ালিকা বিপাশার কয়েকটা লেখা পড়েছি, ভালো লেগেছে।

২৩ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:১৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: পরপর দুদিনে দুটি পোস্ট পড়ে ফেলায় ও আপনার আগমন আনন্দ পেলাম প্রিয় রকি ভাই।

সহমত আপনার সঙ্গে যে @ দেয়ালিকা বিপাশা নুতন হলেও সাবলীল লেখেন। আমার বেশ ভালো লেগেছিল ওনার কয়েকটি পোস্ট । আশা করি উনি আগামীতে আরো উৎসাহিত হয়ে নতুন পোস্ট দেবেন।
পোস্টটিতে like'করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
শুভকামনা আপনাকে।

১৫| ২৩ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: পদাতিক চৌধুরি,




ছিলেন শ্রেয়সীতে , টেনে আনলেন বুবু মুজাহিদকে। এটা বেশী তমোময় হয়ে যাচ্ছে। ;)

২৩ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:২৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শ্রদ্ধেয় জী এস ভাই,

ছোট্ট মন্তব্য অথচ সুন্দরভাবে যেন পোস্টটির অভিমুখ তুলে ধরেছেন। পরবর্তীতে সেই অন্ধকারের আরও কিছু ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আশাকরি এভাবেই পাশে থাকবেন।
নিরন্তর শুভেচ্ছা আপনাকে।

১৬| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১:১২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



রমিসা বুবুর মেয়ের করুন জীবনগাথা মনকে বিষাদময় করে তুলেছে । পন প্রথা সমাজে
এখন বড় ব্যধি । রেহানার বাপের ক্ষয়রোগ হয়তবা সেরে সাবে প্রপার চিকিতসায় । কিন্তু
পণের ব্যধি এই কলুসিত সমাজ হতে কিভাবে ও কতদিনে দুর হবে তা ভবিতব্যই জানে ।

আইনে আছে বিয়ের অল্প কিছু দিনের মধ্যে অথবা ৭ বছরের মধ্যে বধূ আত্মহত্যা করলে
অথবা তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে যদি প্রমাণিত হয় যে মৃতার স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির অন্য‌ন্য‌
আত্মীয় স্বজনের দুর্ব্য‌বহার, শারীরিক নির্যাতন ইত্যাদি তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা জুগিয়েছে
বা তারা হত্যা করেছে তা হলে ধরে নেওয়া যেতে পারে এর মূলে পণ আদায়ের অভিসন্ধি
রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অপরাধ যে এলাকায় হয়েছে সেখানকার থানায় অভিযোগ দায়ের
করতে হবে। কিন্তু কথা হলো এ অভিযোগ করবেটাকে ? কোথায় সে শক্তি?
সতিদাহ প্রথা রোধ ও বিধবা বিবাহ প্রথা চালু হয়েছিল কবি সাহিত্যিক লেখকদের
হাত ধরে । স্বনামধন্য লেখক ঈশ্বরচন্দ্রের হাত ধরেই তার লেখনীর মাধ্যমেই এদেশে
সতিদাহ প্রথা রোধ আর পায় বিবধা বিবাহ পায় গতি। তেমনি পনপ্রথা রোধের জন্যন্য
গল্প কবিতায় এমনিভাবে জাগিয়ে তুলতে গনসচেতনতা । রমিসা বুবুদের মত করুন
গাথা আন্দোলনের পালে গতি ।

মুজাহেদী প্রথাও যা জন্ম দিয়েছে ও এখনো দিচ্ছে পারিবারিক , সামাজিক, রাজনৈতিক ও
বিশ্বশান্তিরবিঘ্নের জন্য বিবিধ ধরনের হুমকি তাকেও রুখথে হবে ক্ষুরদার লেখনীর মাধ্যমে ।

পরের পর্ব দেখতে চললাম ।

প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে আরেক বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানতে চাই পশ্চিম বঙ্গের
নাম পরিবর্তন এবং সতুন করে পশ্চিমবঙ্গ বঙ্গের তোরজুরের কারণ বা পরিনতি কি হতে
পারে ।

শুভেচ্ছা রইল




২৬ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৩০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শ্রদ্ধেয় আলী ভাই,

আপনার অত্যন্ত আন্তরিক মন্তব্যে প্রীত হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

"রমিসা বুবুর মেয়ের করুন জীবনগাথা মনকে বিষাদময় করে তুলেছে । পন প্রথা সমাজে
এখন বড় ব্যধি । রেহানার বাপের ক্ষয়রোগ হয়তবা সেরে সাবে প্রপার চিকিতসায় । কিন্তু
পণের ব্যধি এই কলুসিত সমাজ হতে কিভাবে ও কতদিনে দুর হবে তা ভবিতব্যই জানে।"- রমিসা বুবুর মেয়ে বা রেহেনার জীবনের করুণ জীবনগাথা আপনাকে বিষণ্ণ করে তুলেছে জেনে আমিও বিষণ্ণ হলাম। তবে রেহেনার জীবনগাথার প্রথম দিকের ঘটনা এখনও সামনে আসেনি।সেই ইতিহাসটিও সমান দুঃখজনক। আগামীতে কোনো না কোনো পর্বে বিষয়টি উল্লেখিত হবে। আপনাকে আগামীতেও এভাবে পাশে পাবো আশা রাখি।

"আইনে আছে বিয়ের অল্প কিছু দিনের মধ্যে অথবা ৭ বছরের মধ্যে বধূ আত্মহত্যা করলে
অথবা তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে যদি প্রমাণিত হয় যে মৃতার স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির অন্য‌ন্য‌
আত্মীয় স্বজনের দুর্ব্য‌বহার, শারীরিক নির্যাতন ইত্যাদি তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা জুগিয়েছে
বা তারা হত্যা করেছে তা হলে ধরে নেওয়া যেতে পারে এর মূলে পণ আদায়ের অভিসন্ধি
রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অপরাধ যে এলাকায় হয়েছে সেখানকার থানায় অভিযোগ দায়ের
করতে হবে। কিন্তু কথা হলো এ অভিযোগ করবেটাকে ? কোথায় সে শক্তি?
সতিদাহ প্রথা রোধ ও বিধবা বিবাহ প্রথা চালু হয়েছিল কবি সাহিত্যিক লেখকদের
হাত ধরে । স্বনামধন্য লেখক ঈশ্বরচন্দ্রের হাত ধরেই তার লেখনীর মাধ্যমেই এদেশে
সতিদাহ প্রথা রোধ আর পায় বিবধা বিবাহ পায় গতি। তেমনি পনপ্রথা রোধের জন্যন্য
গল্প কবিতায় এমনিভাবে জাগিয়ে তুলতে গনসচেতনতা । রমিসা বুবুদের মত করুন
গাথা আন্দোলনের পালে গতি।"- পোস্টটি মন দিয়ে পড়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় তুলে ধরেছেন। আইন‌ আছে ঠিকই। কিন্তু কজন তার সুফল পায়। লড়াই করতেও গেলেও যে দম লাগে।রমিসা বুবুর মতো অন্তজ শ্রেণীর মানুষদের যে সে লড়াই করার মতো আর্থিক ও মানসিক শক্তির বড়োই অভাব।তাই রামমোহন রায় বা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের শত চেষ্টার পরেও তারা কোনো দিশা খুঁজে পায়না। সবকিছু ভাগ্যের লিখন বলে মেনে নেয়। ফলতো নিয়তিকে তারা দোষারোপ করতে থাকে।

"মুজাহেদী প্রথাও যা জন্ম দিয়েছে ও এখনো দিচ্ছে পারিবারিক , সামাজিক, রাজনৈতিক ও
বিশ্বশান্তিরবিঘ্নের জন্য বিবিধ ধরনের হুমকি তাকেও রুখথে হবে ক্ষুরদার লেখনীর মাধ্যমে ।"-কমেন্টে চমৎকার একটি বিষয় তুলে ধরেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। তবে আপনি যেটা অনুমান করেছেন। আমার এই গল্পটি বাস্তবে এক রমিসা বুবুকে কেন্দ্র কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে।স্রেফ আবেগের বশীভূত হয়ে চেনাজানা আত্মীয়-স্বজন কাউকে এমন মুজাহিদের হাতে তুলে দেওয়ার ভয়ঙ্কর পরিনাম কি হতে পারে রমিসা বুবু তারই প্রমান।

ইতিপূর্বে আমি আপনার পরের পর্বের কমেন্ট পড়েছি। কিছুটা প্রতিমন্তব্য দিয়েছি।


"প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে আরেক বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানতে চাই পশ্চিম বঙ্গের
নাম পরিবর্তন এবং সতুন করে পশ্চিমবঙ্গ বঙ্গের তোরজুরের কারণ বা পরিনতি কি হতে
পারে ।"-খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করে বাংলা বা এরকম কিছু রাখা যায় কিনা বছর দুয়েক আগে খুব আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের নামকরণের বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টে অনুমোদিত হতে হয়। যেহেতু রাজ্যের তৃণমূল সরকার সঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সম্পর্ক সাপে নেউলের। কাজেই বিষয়টি সেসময়ই স্পষ্ট হয় কেন্দ্র অনুমোদন দেবে না। পরের দিকে এই আলোচনা স্তিমিত হয়ে যায়। অপেক্ষায় আছি 2024 সালে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার যদি উল্টে যায় সে ক্ষেত্রে এরকম কিছু হতে পারে।
পোস্টটিতে like' করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
আপনার শুভেচ্ছা গ্রহণ করলাম। আপনার জন্যেও রইলো আমার হার্দিক শুভেচ্ছা।


১৭| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:২৯

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভালো লাগলো এ পর্বও
ভাইয়া সময়ের জন্য পড়তে লেট হচ্ছে সরি
ধন্যবাদ

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৩৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
পোস্টটিতে like'করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
নিরন্তর শুভেচ্ছা আপনাকে।

১৮| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩২

অপু তানভীর বলেছেন: আমি তো প্রেমের গল্প ভেবেছিলাম কিন্তু দেখা যাচ্ছে গল্পের মোড় অন্য দিকে ঘুরে গেছে ।

সামনের পর্বে কি হয় দেখা যাক !

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: একসঙ্গে পরপর তিনটি পর্ব পড়ে ফেলায় পুলকিত বোধ করছি। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। জ্বী ভাই গল্পের মোড় একটু ঘুরিয়ে ‌গেছে। আশাকরি আগামীতেও এভাবে পাশে পাবো।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
শুভকামনা আপনাকে।‌

১৯| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:০৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: এই পর্বে এসে গল্পটি একটি নতুন মোড় নিয়ে কিছুটা ঘুড়ে গেল। রমিসা বুবু এবং মুজাহিদ দুলাভাই এর পরবর্তী কার্যক্রম কী হয়, তা দেখার জন্য শীঘ্রই চতুর্থ পর্বে যাওয়ার আশা ব্যক্ত করছি। তবে সে পর্বে মারাত্মক কিছু ঘটবে বলে শঙ্কা বোধ করছি।

পোস্টে একাদশতম ভালো লাগা। + +



০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুভ সন্ধ্যা স্যার।
আশাকরি ভাল আছেন।জ্বী এই পর্ব থেকেই আসল গল্পে প্রবেশের চেষ্টা করছি। খুবই মানবেতর জীবন।কতটা ফুটিয়ে তুলতে পারবো জানি না। তবুও চেষ্টা করবো।
পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
পোস্টটিতে like'করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন
শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা স্যার আপনাকে।

২০| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:৫৯

শায়মা বলেছেন: মুজাহিদের ঘটনা পড়ে হিম হয়ে গেলাম তো! :(

১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:২৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে।জ্বী আপু হার হিম হবার ঘটনা।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
নিরন্তর শুভেচ্ছা আপনাকে।

২১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:২০

মুক্তা নীল বলেছেন:

দাদা ,
বুবুর মেয়ের আত্মহত্যার বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক ।
মুজাহিদ ভাই ও বুবুর আফগানিস্তানের গেরিলা যুদ্ধের কিছু
ঘটনা পড়তে পারবো ধারণা করতে পারছি । এখন বুঝতে
পারছি গল্পের লিড চরিত্র রমিসা বুবু ।
ভালো লাগলো দাদা গল্পের এ পর্বটিও পড়তে ।

১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:৩৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: দাদা ,
বুবুর মেয়ের আত্মহত্যার বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক"-ঠিক তাই। যেকোনো আত্মহত্যাই যেকোনো অবস্থাতেই অনাকাঙ্ক্ষিত মর্মান্তিক দুঃখজনক বটে।রমিসা বুবুর মেয়ের আরো অনেক ঘটনা আগামীতে সামনে আসবে।

"মুজাহিদ ভাই ও বুবুর আফগানিস্তানের গেরিলা যুদ্ধের কিছু
ঘটনা পড়তে পারবো ধারণা করতে পারছি"-হ্যাঁ ঠিক তাই। গেরিলা যুদ্ধের আড়ালে তাদের অন্য আকর্ষণের লোমহর্ষক কাহিনীর পাশে অন্ধ আবেগ ও মানবেতর জীবন এই কাহিনীর মূল বিষয়। আগামীতে সেসব ধীরে ধীরে উন্মোচিত হবে।

পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
নিরন্তর শুভেচ্ছা প্রিয় ছোট বোনকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.