নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আমার নিরক্ষর কিন্তু বুদ্ধিমতী মায়ের কাছ থেকে এই শিক্ষাই পেয়েছিলাম,যথাযথ কর্তব্য পালন করেই উপযুক্ত অধিকার আদায় করা সম্ভব। - মহাত্মা গান্ধী

পদাতিক চৌধুরি

হাই,আমি পদাতিক চৌধুরী।পথেঘাটে ঘুরে বেড়াই।আগডুম বাগডুম লিখি। এমনই আগডুম বাগডুমের পরিচয় পেতে হলে আমার ব্লগে আপনাদেরকে স্বাগত।

পদাতিক চৌধুরি › বিস্তারিত পোস্টঃ

তমোময়ী (পর্ব-১০)

২৮ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:১৩


দিল্লি স্টেশনে পানি আনতে যাওয়ার নাম করে রফিক ভাই সেই যে গেল আর এলো না। অথচ আমি ওর ফেরার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে গেছি। একসময় হতাশ হয়ে আশা ছেড়ে দেই। খুব কষ্ট হচ্ছিল ওর এমন উধাও হয়ে যাওয়াতে। শুরুতে অবশ্য মনে হচ্ছিল ওর কোন বিপদ হয়নি তো? জলজ্যান্ত একটা মানুষ, এমন নিরুদ্দেশ হওয়ায় মনে কু-ডাক ডাকতে থাকে। একেতো মনের মধ্যে খচখচ করছিলো দেশে ফিরলেও বাড়ি ফিরতে না পারার যাতনা। এমন অচেনা-অজানা পরিবেশে একটা মেয়ে হয়ে কোথায় থাকবো কীভাবে থাকবো তার নানান দুশ্চিন্তা তো ছিলই সঙ্গে নতুন করে যোগ হলো রফিক ভাইয়ের এমন অদৃশ্য হয়ে যাওয়া। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা যেতেই মনে হয়, না তেমন কিছু ওর হয়নি। আসলেই ও চলে গেছে আমাকে না জানিয়ে। আসতে আসতে বেশ কয়েকবার বলেছিল যে ওকে চট করে ফিরে যেতে হবে।আর এই কারণেই অনেক সময় পার হলেও ও না ফেরায় ধরে নেই ও সত্যিই আফগানিস্তানে ফিরে গেছে।কত ট্রেনের খবর হচ্ছে;কত লোক আসা-যাওয়া করছে।এরই মধ্যে কোনো একটা ট্রেনে করে হয়তো চলে গেছে। যখন ধরেই নিই ও আর ফিরবে না, মনে হচ্ছিল দুনিয়ার শেষ আপনজন যেন আমায় ছেড়ে চলে গেল। অথচ এই মানুষটাই পাকিস্তানের বর্ডারে আমাকে ওর স্ত্রীর পরিচয় দিয়েছিল।ওর মুখে স্ত্রীর কথা শুনে, পাশে দাঁড়িয়ে হাসি চেপে রাখাতে পারিনি, বোরখার মধ্য থেকে খিক করে হেসে উঠতেই এমন কটমট করে তাকিয়ে ছিল যে আমি আচমকা বোবা হয়ে গিয়েছিলাম।পরে সেই অফিসারের সামনে আবার আমার হাত ধরে এগিয়ে চলার ইশারা করে।যেন কত অধিকার আমার উপরে ওর। আমিও বাধ্য স্ত্রীর মতো ওর পিছুপিছু এগোতে থাকি। নাইবা হোক স্বামী কিন্তু এখন সেই মানুষটি এমন করে চলে যাবে ভেবেই কষ্ট হচ্ছিল।

সেদিন রমিসা বুবুর কথার মধ্যে ধরা গলায় বারে বারে এক হতাশা বেরিয়ে আসছিল। ঘনঘন দীর্ঘশ্বাস ফেলছিল।বেশ কয়েকবার দলা পাকানো সাদা থুতু মুখ বাড়িয়ে দুরে ছুড়ে ছুড়ে ফেলছিল। বুঝতে পারছিলাম, সেদিনের সেই ঘটনার স্মৃতিচারণা এখনও বুবুর হৃদয়ে জ্বলজ্বল করছিল। এতো বছর পরও মনে হচ্ছিল রফিক ভাইয়ের চলে যাওয়া যেন শেষ প্রিয়জন বা শেষ সম্বলটুকু এইমাত্র হারিয়ে ফেলার ক্ষত মনে বয়ে বেড়াচ্ছে।তাই মুখে যতই বলুক তাকে আটকে রাখেনি কিন্তু কথাবার্তায় বারেবারেই আপনজনের ছেড়ে চলে যাওয়ার বেদনাই ঝড়ে পড়ছিল। ওর কথায়,
-জানতাম সে এক সময় ফিরে যাবে।আর ফিরবে নাই বা কেন, ওকে যে আটকে রাখার অধিকার আমার ছিল না। শুধুমাত্র খালাতো ভাইয়ের সম্পর্ককে আঁকড়ে ধরে আটকে রাখা তো আর সম্ভব নয়। কিন্তু পানি আনতে যাওয়ার নাম করে যেভাবে মিথ্যা ছলনার আশ্রয় করে গা ঢাকা দেয় তা একপ্রকার পালিয়ে যাওয়ারই মতো। মনে নানান প্রশ্ন উঁকি দেয়। আফগানিস্তান থেকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তৈরি হওয়া কৃতজ্ঞতাবোধ এক্ষণে ফিকে হয়ে যায়। কেন জানি মনে হয়, এমন একজন পলাতক লোকের সব কথা সত্য হতে নাও পারে। ফলে ওর কথাকে গুরুত্ব না দিয়ে একবার বাড়িতে যাওয়া যেতেই পারে। তাছাড়া মরণ যদি কপালে থাকে আর তা যদি নিজের বাপের হাত দিয়ে হয় তবে তা মন্দের কি।উল্টে এমনও তো হতে পারে নিজের অপকর্ম ঢাকতে রফিক ভাই মুজাহিদের নামে গল্প ফেঁদে আমাকে বাপের বাড়ি যাওয়ার রাস্তা চিরতরে বন্ধ করতে চাইছে। তবে সে যাইহোক ভয়ঙ্কর এক আতঙ্ক, একাকীত্বের শূন্যতা যে একই সঙ্গে আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে তা অস্বীকার করতে পারি না। চোখের সামনে কত ট্রেন আসছে যাচ্ছে; হাজার হাজার লোক ছুটে চলেছে; কতই না ব্যস্ততা হুড়োহুড়ি গোটা স্টেশনময় লোকজনের মধ্যে। অথচ এসবের মধ্যে আমি যেন এক ভিন গ্রহের জীব। আমার কোনো ব্যস্ততা নেই; নেই কোথাও যাওয়ার তাড়া বা জায়গা। আমি যেন আত্মীয়-পরিজন বিচ্ছিন্না এক চির-অভাগিনী। স্টেশনের অপেক্ষাকৃত এক নির্জন স্থানে বসে ভাবতে থাকি এখন আমার করণীয় কি কিংবা কোথায় বা যাবো আমি এখন?

শত দোলাচলের মধ্যেও বারবার মনে হতে থাকে একবার গ্রামে ফিরে যাই। আব্বা-মাকে আসল ঘটনা খুলে বলার চেষ্টা করি। হাজার হোক উনারাও তো মানুষ; তখন আমার উপর রাগ হলে এখন তো রাগ নাও থাকতে পারে।আর তাতে যদি বিপদ আসে তা নয় হয় আসবে। মনে মনে সাহস সঞ্চয় করি ঠিকই তো মুজাহিদ স্বামী আব্বাকে যাই বোঝাক না কেন, আমি তো আব্বার মেয়ে, আমি যদি সব ঘটনা খুলে বলি তাহলে তো তাদের ধারণা পাল্টাতেই পারে। এসব কথা ভাবতে ভাবতেই কখন যে ঝিমুনি চলে আসে তার খেয়াল ছিল না। হঠাৎ মনে হলো কে যেন ডাকছে আমাকে। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি, ফোকলা দাঁতের এক বয়স্ক লোক মাথা নিচু করে হাসিমুখে কি একটা জিজ্ঞেস করছে। আমি অ্যা অ্যা করে... কি বলছেন বলতেই,
-মাইজি! তুম কাহা যায়ে গি?
ভাষাটার সঙ্গে ইতিমধ্যে পরিচিত হয়ে গেছি। সেই প্রথম দিন হাওড়া স্টেশন থেকে শুনে আসছি হিন্দি ভাষায় কথা বলা। বলার ধরনে হিন্দির সঙ্গে পাখতুন কিংবা উর্দু ভাষার অনেকটাই মিল আছে। মুজাহিদ আমাকে জানিয়েছিল লেখাটা আলাদা হলেও এই তিন ভাষার লোকেরা একে অপরের কথা বুঝতে পারে। আমিও এতো দিনে মুখে বলতে না পারলেও বুঝতে পারি অনেকটাই। যাইহোক পরিষ্কার বাংলাতেই জবাব দেই,
-জানিনা কোথায় যাব।
লোকটা উদাসীন ভঙ্গিতে বলে ওঠে,
-হায়রে মাইজি! হাম তোমহারা বাপকা ওমার কা হু; মেরে সাথ মজাক কররাহহে?
বুঝতে পারি আমার উত্তরে উনি খুশি হতে পারেননি। অথচ ওনাকে কেমন করে বলি যে আমি মিথ্যা কথা বলছি না। কিছুক্ষণ নীরব থেকে আবার বলি,
-সত্যিই বলছি আমি জানিনা আমি কোথায় যাব।
এবার উনি বেশ গম্ভীর হয়ে বললেন,
-সামঝা তুম মুঝে সাচ নেহি বাতাও গে। ঘরসে ঝগড় কর আইহো। আগর তুমে কোহি ধীক্কাত না হত তুম এই বুড্ডে বাপ কে সাথ আসকতি হো।
উনার কথা শেষ হতেই কি জানি হঠাৎ করে কিভাবে মুখে চলে আসে,
-আপনি অকারণে আমাকে নিয়ে ভাববেন না। আমি বরং ওনার কথাতেই উত্তর ধরে ওনাকেই উত্তর দেই,
- আপনি ঠিকই আন্দাজ করেছেন। বাড়িতে একটু ঝগড়া হয়েছে।রাগের মাথায় বেরিয়ে এসেছি। আমার স্বামী ভালো লোক। আশাকরি শীঘ্রই আমাকে খুঁজতে বের হবে এবং কোনো না কোনো সময় এখানে এসে পড়বে।
আমার কথা শুনে ভদ্রলোক আর দাঁড়ালেন না।
-বহুৎ জরুর হ্যায় বহুত জরুর হ্যায়, বলতে বলতে ভিড়ের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেলেন।

উনি চলে যেতেই মনে হল এ যেন কুড়িয়ে পাওয়া চৌদ্দ আনার মতোই হঠাৎ করে সামনে আসা একটি সুযোগকে নষ্ট করে ফেলেছি। একবার মনে হলো ভিড়ের মধ্যে ছুটে গিয়ে ওনাকে খোঁজার চেষ্টা করি। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। জায়গা ছেড়ে উঠেও দাঁড়ালাম। কিন্তু কিছুটা এগিয়ে গেলেও যতদূর চোখ যায় ওনার কোনো হদিস না পেয়ে প্রচন্ড হতাশ হয়ে পড়ি। লোকটা উপযাচক হয়ে ওনার বাড়িতে যাওয়ার কথা বললেন অথচ আমি সুযোগটাকে কাজে লাগাতে পারলাম না! আমার মতো অপদার্থ কি আর দুটো আছে? এই না পারার ব্যর্থতা বারেবারে মনের মধ্যে যেন হাতুড়ি পিটতে থাকে। যাক কি আর করার, যা হওয়ার তা তো হয়ে গেছে। ফলে এখন আর ওসব না ভেবে বরং হাওড়া ট্রেনের খোঁজ নেওয়া দরকার বলে মনে মনে ভাবতে থাকি। দিল্লিতে নামা থেকে একটার পর একটা ঘটনা এতটাই ব্যস্ততার মধ্যে রেখেছিল যে খাওয়া-দাওয়ার কথা একেবারেই ভুলে গিয়েছিলাম। অবশ্য দীর্ঘক্ষন না খেয়ে থাকার কারণে কিনা জানিনা খাবারের প্রতি এসময় বিন্দুমাত্র চাহিদা ছিল না। কিন্তু এক্ষুনি পেটে একটা মোচড় দিয়ে উঠতেই বুঝতে পারি বড্ড খিদে পেয়ে গেছে।




মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:৪৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: যাক অনেক দিন পর পড়তে পারলাম। অনেক ভালো লাগলো।

২৮ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রথম মন্তব্য মানে আলাদা ভালোলাগা; অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে। বাকি পর্বগুলো তাড়াতাড়ি দেওয়ার ইচ্ছা আছে দেখি কতটা বাস্তবে রূপদান করতে পারি।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম। কৃতজ্ঞতা জানবেন। নিরন্তর শুভেচ্ছা আপনাকে।

২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৩:০৭

জুল ভার্ন বলেছেন: ধারাবাহিক গল্প উপন্যাসে দীর্ঘ বিরতিতে স্বাভাবিক ভাবেই পাঠকের মনোযোগ বিঘ্নিত হয়। এমনিতেই আমি মনভুলা মানুষ, তাই আবারও এই সিরিজের আগের পর্বটা পড়ে ধারাবাহিকতা খুঁজে নিয়েছি।

এই পর্বে এসে উপন্যাসের কয়েকটি চরিত্রের ধারাবাহিকতায় কিছুটা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলেই আমার পাঠপ্রতিক্রিয়া। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকতে হবে লেখক কিভাবে এই অবস্থা থেকে পাঠকদের গতিশীলতা ফিরিয়ে নিবেন। শুভ কামনা। +

২৮ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: "ধারাবাহিক গল্প উপন্যাসে দীর্ঘ বিরতিতে স্বাভাবিক ভাবেই পাঠকের মনোযোগ বিঘ্নিত হয়। এমনিতেই আমি মনভুলা মানুষ, তাই আবারও এই সিরিজের আগের পর্বটা পড়ে ধারাবাহিকতা খুঁজে নিয়েছি।"- প্রথমেই ক্ষমাপ্রার্থী ধারাবাহিকে এত প্রলম্বিত সময় নেওয়ার জন্যে। বিরতির কারণ অবশ্য আছে কিন্তু তাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করব না। আর একটু সিরিয়াস হলে হয়তো আরো আগে পোস্ট দিতে পারতাম। যাইহোক যেকোনোভাবেই ক্ষমাপ্রার্থী আপনার মতো পাঠকদের কাছে ভাইজান।

"এই পর্বে এসে উপন্যাসের কয়েকটি চরিত্রের ধারাবাহিকতায় কিছুটা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলেই আমার পাঠপ্রতিক্রিয়া। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকতে হবে লেখক কিভাবে এই অবস্থা থেকে পাঠকদের গতিশীলতা ফিরিয়ে নিবেন। "- জি আপনার প্রতিক্রিয়া একেবারেই সঠিক। দীর্ঘবিরতির কারণে এমন ধারাবাহিকতায় বিঘ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। চেষ্টা করবো আগামী পোস্টগুলো নিয়মিত দিয়ে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার...
পোস্টটিতে like' করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
আপনার শুভেচ্ছা বিমুগ্ধ চিত্রে গ্রহণ করলাম। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা আপনি ও আপনার পরিবারবর্গকে।

৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৩:২৯

ইসিয়াক বলেছেন: এই সিরিজটি কি এখানেই শেষ। বেশ কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। যদি আরও পর্ব থাকে তো লেখার নীচে চলবে লিখে দিন প্রিয় দাদা।

#আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। সিটি স্ক্যান রির্পোট কি পেয়েছেন? একহাতে কিভাবে লিখেছেন?
ভালো থাকুন সবসময়।
শুভকামনা রইলো।

২৮ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:০৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় ভাই আপনাকে।
না এখানে শেষ হবে কেন, এখানে কি শেষ পর্ব বলে উল্লেখ আছে? মাঝে প্রায় দুই মাস অতিক্রান্ত হওয়াতে বুঝতেই পারছি গল্পের ধারাবাহিকতায় পাঠকদের মধ্যে চিত্তে বিঘ্ন ঘটেছে। ক্ষমাপ্রার্থী এই অনাকাঙ্ক্ষিত বিঘ্ন ঘটানোর জন্য। চেষ্টা করবো আগামীতে পরবর্তী পর্বগুলোকে আরো নিয়মিত দেওয়ার।
পায়ের সিটি স্ক্যান রিপোর্ট আজ বিকালে হোয়াটসঅ্যাপে পেলাম। চিপ ফ্রাকচার বলে একটা টার্ম আছে। মনে হয় না যে বড় ধরনের কোন কিছু ঘটেছে কারণ আমি পায়ে একটু বল পারছি। আগামীকাল বিকাল 4 টার সময় ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট নিয়েছি। দেখি উনি কি পরামর্শ দিবেন। এবারের ঈদটা যে মাটি হয়ে গেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু কি আর করার ঘরে বসে-শুয়েই এখন আমার দিন কাটছে।

পোস্টটিতে like' করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা প্রিয় ইসিয়াক ভাইকে।


৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫১

জটিল ভাই বলেছেন:
যাক্ তবে পর্ব এলো। আমি সেদিন জিজ্ঞাস করতে চাইছিলাম। কিন্তু ব্যস্ত জেনে আর জানতে চাইনি। এগিয়ে চলুন অবিরাম।

২৮ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:০৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: এইযে মিয়া ভাই! আজকে কিন্তু বুঝতে পেরেছি আপনি পড়াশোনা করেননি। দুমাস পরে পোস্ট দিয়েছি ভেবেছিলাম পড়াশোনা করবেন তা না করে শুধু উপস্থিতি জানান দিয়েন খুব মান করেছি‌ হেহেহে...

৫| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ৮:১০

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া

এক সাথে অনেকগুলো পর্ব পড়েছিলাম এই গল্পের।

এমন করে একা একা কোথাও অসহায় একটা মেয়ের বসে থাকাটা চোখের সামনেই দেখতে পেলাম।

কিন্তু কমেন্টে কি বললে?

কি হয়েছে তোমার পায়ে?

পা ভেঙ্গেছে? নাকি অন্য কিছু? :(

২৯ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১০:১৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুভ সকাল আপু।জ্বী বাইক অ্যাক্সিডেন্ট করে ডান পা ও বাম হাতের কব্জি ভেঙে গেছে। হাতের প্লাস্টার হলেও পায়ের ব্যবস্থা হয়নি। আজকে দুপুরে একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে। দেখি ডাক্তার কি পরামর্শ দেন। পায়ের সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট থেকে যেটা বুঝলাম চিপ ফ্রাকচার হয়েছে। যাইহোক আপাতত প্রচুর সময় হাতে। সারাদিন ধরে ব্লগিং করতে পারবো।

কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানবেন।

৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১০:১৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: অনেক দিন পরে নতুন পর্ব পড়লাম। ভালো লেগেছে।

বৃদ্ধের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবটা হয়তো ভালোই ছিল। রফিক ভাইয়ের না বলে যাওয়া ঠিক হয়নি। যদিও সে ফিরে আসবে কি না সেটা বোঝা যাচ্ছে না। হয়ত সে চলে যায়নি। অন্য কোন সমস্যায় পড়েছে।

২৯ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:০২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আশাকরি ভাল আছেন প্রিয় সাচু ভাই।জ্বী দীর্ঘ বিরতির পর পোস্ট দেওয়ার জন্য আমি লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। ব্যস্ততা ছিল ঠিকই কিন্তু হয়ত আর একটু সিরিয়াস হলে পোস্ট দিতে এতটা সময় নাও লাগতে পারতো। তবে এখন থেকে বাকি পর্বগুলোকে নিয়মিত দেওয়ার চেষ্টা করবো। হাতে এখন প্রচুর সময়। আপাতত বা হাত-পা ভেঙে বেডে শুয়ে বসে ব্লগিং করছি।
পোস্টটি পড়ে যুক্তিনিষ্ঠ কমেন্ট করার জন্য আনন্দ পেলাম অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার সম্ভাবনা গুলির মধ্যেই পরবর্তী পর্বের কাহিনী লুকিয়ে আছে। আশাকরি পরবর্তী পর্বে নিজেই নিজের উত্তর মিলিয়ে নিতে পারবেন। আর ততদিনে একটু অপেক্ষা করতে অনুরোধ রইল।
পোস্টটিতে like' করাতে প্রেরণা পেলাম। কৃতজ্ঞতা জানবেন।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা আপনাকে।

৭| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৩:৪০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: অনেকগুলি পর্ব মিস করে গেছি।

২৯ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৯:১০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৮| ০২ রা মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: দিল্লী স্টেশনে রমিসা বুবুকে একেলা ফেলে রেখে রফিকের অন্তর্হিত হওয়াটা বেশ টেনশন এনে দিচ্ছিল। দিল্লীর মত একটা অতি ব্যস্ত রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে বসে একজন একেলা (পরিত্যাক্ত) নারীর মানসিক অবস্থাটা কেমন হতে পারে, তা ভাবতে গেলেও ভয় লাগে। আশা করছি, আগামী পর্বেই এ রহস্যের জট খুলবে।

শেষ পর্যন্ত ডাক্তার মশাই কী বললেন? কতদিন ঘরে বসে থাকতে হবে? এতে কি চাকুরীর কোন ক্ষতি হবার সম্ভাবনা আছে?

আপনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। ঈদ কি আজ পালন করেছেন, নাকি আগামীকাল করবেন?

পোস্টে নবম ভাললাগা। + +


০২ রা মে, ২০২২ রাত ১০:৩৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: "দিল্লী স্টেশনে রমিসা বুবুকে একেলা ফেলে রেখে রফিকের অন্তর্হিত হওয়াটা বেশ টেনশন এনে দিচ্ছিল। দিল্লীর মত একটা অতি ব্যস্ত রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে বসে একজন একেলা (পরিত্যাক্ত) নারীর মানসিক অবস্থাটা কেমন হতে পারে, তা ভাবতে গেলেও ভয় লাগে।"-স্যার আমার বিশেষ উপলব্ধি স্টেশন যেকোনো নির্জন স্থানের চেয়ে নিরাপদ জায়গা। একবার কোনো বিপদগ্রস্ত যদি চিৎকার করে তাহলে পাশে দাঁড়ানোর লোকের অভাব হয়না।আর দিল্লীর মতো বড় বড় স্টেশনের এমনিতেই ওয়েটিংরুম থাকে। কাজেই বহু মানুষ গভীর রাতেও স্টেশনে থাকেন।
স্যার একটা প্রবাদ আছে, 'আপন চেয়ে পর ভাল; পরের চেয়ে বোন ভালো।' রমিসা বুবু হয়তো রফিক ভাইয়ের মতো এমন কাউকে আর পাশে পাবেনা। কিন্তু তবুও সে বেঁচে থাকবে।নিজেকে হারানোর আর কিছু অবশিষ্ট নেই ঠিকই তবুও একটা অনিশ্চিত যাত্রা কীভাবে তার পরবর্তী জীবনে তমোময়ী বা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে থাকবে তা জানতে পরবর্তী পর্বগুলো অবশ্যই পাঠ করার আমন্ত্রণ রইলো।
হাতের ও পায়ের জন্য দুজন আলাদা ডাক্তার নিতে বাধ্য হয়েছি। সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট একসঙ্গে না আসার জন্যই আমার এই বিপত্তি। আপাতত 42 দিন পায়ে ব্যান্ডেজ দিয়ে থাকতেই হবে। দু তারিখ থেকে গ্রীষ্মের ছুটি পড়াতে নিজের মেডিকেলে হাত পড়ছে না। অসুবিধা যেটা হলো ঈদের নামাজ‌ আর ময়দানে গিয়ে আদায় করা হচ্ছে না।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা আপনাকে।

৯| ০৩ রা মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২২

বিজন রয় বলেছেন: ঈদ মোবারক।

০৪ ঠা মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। শুভেচ্ছা আপনাকেও।

১০| ০৪ ঠা মে, ২০২২ রাত ১২:৩৫

মুক্তা নীল বলেছেন:
দাদা ,
মন্তব্যে পরে আসছি কারণ উপরের প্রতিমন্তব্য পড়ে বুঝতে পারলাম আপনি অসুস্থ । দাদা পা ভাঙ্গার যে কি যন্ত্রণা তা আমার চেয়ে ভালো আর কেউ জানেনা । এই সময়টা অনেক কষ্টের ভিতর দিয়ে যায় ।
ইনশাআল্লাহ সুস্থ হবেন চিন্তার কোন কারণ নেই । এখনতো ইন্টারনেট হাতের নাগালেই তাই হয়তো বোরিং কিছুটা কম লাগবে ।

দাদা, পোস্ট এর প্রসঙ্গত কথা বললে একটা কথা বলতেই হয় , একজন
রমিসা বুবুর প্রতি ধাপে ধাপে সংগ্রাম করে বেঁচে ফেরা নিশ্চয়ই বিফলে যাবেনা । আমি শুধু ভাবছি , শেষ পর্যন্ত তিনি কি করে এই অবস্থায় এসে আবার দাঁড়ালেন ? যাইহোক ,
এই গল্পটি নিশ্চয়ই অনুপ্রেরণাদায়ক
হবে ।
পরিবারের সবাইকে ঈদ মোবারক।

০৪ ঠা মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: অনেক দিন পর প্রিয় ছোট বোনের কমেন্ট পেয়ে আনন্দিত হলাম।জ্বী বাইক অ্যাক্সিডেন্ট করে ডান পা ও বাম হাত ভেঙে গেছে।গত ২৬ তারিখে ঘটনাটা ঘটেছে। আপাতত যন্ত্রণা নেই ঠিকই তবে বিশাল একটা প্লাস্টার সর্বক্ষণ ক্যারি করা যে কতোটা যন্ত্রণার তা বলে বোঝানো যাবে না। পায়ের আঘাতটা তুলনায় কম। , হ্যাঁ বোনের অনুমান সঠিক। কিছুটা সময় যেমন নেট ঘেটে কাটছে। ছেলের পড়াশুনার মধ্যেও অনেকটা সময় কাটাচ্ছে। বাকি সময়টা আর কিছুই করতে ভালো লাগেনা, শুয়ে বসেই কাটাতে হচ্ছে।


"একজন
রমিসা বুবুর প্রতি ধাপে ধাপে সংগ্রাম করে বেঁচে ফেরা নিশ্চয়ই বিফলে যাবেনা ।"-বোনের এই অনুমান সঠিক হতেও পারে। আগামী পর্বে কিছুটা মিলতে পারে বলে এটুকু বলতে পারি। বাকিটা পোস্ট পড়লে বোঝা যাবে।আর ততদিনে একটু অপেক্ষা করতে অনুরোধ রইলো।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানাই।
নিরন্তর শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক প্রিয় ছোট বোনকে।

১১| ২৮ শে মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনে যতোই এক্সিডেন্টের ধুয়া তোলেন না কেন, সত্য ঢাকতে পারবেন না। ভবিষ্যতে হস্ত-পদযুগলকে সামলে চলবেন আশা করি। আজকে মা.হাসান ব্লগে থাকলে আপনে এইসব আংসাং কথা বলে পার পাইতে পারতেন না। =p~

আপনের এই উপন্যাস ইহ-জীবনে শেষ হবে বলে মনে হয় না। শুধু লাইক দিয়েই যাবো, পড়া আর হবে না।

বাই দ্য ওয়ে, আপনার দ্রুত শতভাগ আরোগ্য কামনা করছি!!! :P

২৮ শে মে, ২০২২ রাত ৮:১৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপনার অর্ধেক ডিমে্র আপ্যায়ন ভুলি কেমনে? আপনি ঠিকই বলেছেন মা. হাসান ভাই গত সপ্তাহে এসেছিলেন সত্যিই আমার হাত পা ভেঙেছে কিনা খোঁজ নিতে।উনি সরেজমিনে দেখে বলে গেছেন ভূয়া ভাইয়ের জন্য চাপ না নিতে। কাজেই হাত পা খোঁড়া মানুষের যদি একটু সম লাগে পোস্ট দিতে লাগুক।
বাই দ্যা ওয়ে আমি মা হাসান ভাইকে ভারতীয়দের আপ্যায়নের রীতি অনুযায়ী অর্ধেক ডিম দিয়েছিলাম কিন্তু উনি তারো অর্ধেক খেয়ে আমার বাসা থেকে রওনা দিয়েছেন। এতোটুকু মিথ্যা বলছি না।

আগামী ছয় তারিখের পর প্লাস্টার কাটাব। যদিও যেটুকু খোঁজখবর নিয়েছি সম্পূর্ণ ঠিক হতে আরও সময় লাগবে।
উপন্যাসের আপনার না পড়ার জন্য ইচ্ছা আছে মলাট বদ্ধ করে ঢাকাতে পৌঁছে যদি আপনাকে পাই জোর করে হাতে ধরিয়ে দিয়ে পড়িয়েই ছাড়বো।হেহে হে....
শুভকামনা আপনাকে।

১২| ২৩ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:৩৫

শেরজা তপন বলেছেন: প্রিয় পদাতিক ভাই। শারিরিক অবস্থা এখন কেমন? সুস্থ তো?

২৩ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৯:৪৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপনাদের দোয়ায় ও উপরওয়ালার আশীর্বাদে তারপর অনেকটাই ভালো আছি।যদিও পায়ের কাটলেস ছেড়া জায়গাটা ও হাতের ভাঙ্গা অংশটা নিয়ে দুশ্চিন্তে এখনো রয়ে গেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.