নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাকা পেঁপে

পাকা পেঁপে

পাকা পেঁপে › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফেইসবুকে নোটটি পড়ে ভালো লাগল তাই শেয়ার করলাম।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:৪৭



বাংলাদেশে যেমন দিনাজপুর বলে একটা জেলা আছে, একই নামে জেলা আছে ভারতেও। আসলে একটা দিনাজপুরই ভাগ হয়ে গেছে। একটা অংশ পড়েছে এই বাংলায়, আরেকটা অংশ ওই বাংলায়। আমার নিজের জন্ম দিনাজপুরে। দিনাজপুরের ঘাসিপাড়ায়। হুট করে মনে হলো, আচ্ছা, একটু ওদিক ওদিক হয়ে আর মাইলখানে ওপাশে জন্মালেই তো আমি ভারতের নাগরিক হয়ে যেতাম। এই যে ফেসবুকে আমার এত এত বাংলাদেশি বন্ধু, এতজন আমাকে ভালোবাসেন; তখন এরাই আমাকে ঘৃণা করতেন। আমার অপরাধ হতো আমি ভারতীয়!

জাতীয়তাবাদ খুবই ভালো একটা ধারণা। কিন্তু অতিজাতীয়তাবাদের কুফল হিটলার আমাদের দেখিয়েছেন। আমরা বাঙালি (কিংবা বাংলাদেশিরা) কখনোই চরমপন্থা অনুসরণ করিনি। মুসলিম দেশ হয়েও বাংলাদেশে জামাতে ইসলামি সুবিধা করতে পারে না একটি কারণেই, আমরা মুসলিম, কিন্তু গোঁড়া নই। একইভাবে আমাদের মধ্যে তীব্র দেশপ্রেম আছে। কিন্তু আমরা নাৎসীদের মতো অন্ধ জাতীয়তাবাদেও বিশ্বাস করি না।

কিন্তু ফেসবুকে অনেকের স্ট্যাটাস দেখে আমার কেন জানি ভয় লাগে। আমাদের একটা প্রজন্ম কি তীব্র ভারত কিংবা পাকিস্তান বিদ্বেষ পুষে রেখে বড় হচ্ছে? এই প্রশ্ন মাথার মধ্যে যখন ঘুরপাক খাচ্ছিল, তখনই আমি পড়ছিলাম পায়ের তলায় সর্ষে। সুনীলের ভ্রমণ সমগ্র। যেখানে সুনীল অনেকবারই একটা কথা বলেছেন, দেশ একটা ভৌত ধারণামাত্র। কিছু স্বার্থান্বেষি সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদের কারণেই ভাগ হয় দেশের সীমারেখা। কংগ্রেস-মুসলিম লিগের অহংয়ের লড়াইয়ে ভাগ হয়ে যায় বাংলা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্রবাহিনীর ভাগ-বাটোয়ারার কারণে একই বার্লিন শহরের মাঝখানে ওঠে দেয়াল। একই ভাষা আর সংস্কৃতি, এমনকি অভিন্ন ধর্মের পরেও জার্মানি হয়ে যায় দুটো।

মানুষ হিসেবে আপনি কোনো দেশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ পুষে রাখতে পারেন না। কোনো ভাষার প্রতি আপনার বিদ্বেষ থাকা উচিত নয়। উর্দূর কি দোষ? উর্দূ কি বলেছিল, বাংলা ভাষাকে ধব্ংস করে দাও? নাকি সেটা করেছিল কিছু রাজনীতিবিদ? উর্দূকে তীব্র ঘৃণা করে আমরা কি আমির খসরু কিংবা মির্জা গালিবের কবিতা পড়ব না? অচ্ছুৎ মনে করে কখনোই ছুঁয়ে দেখব না কৃষাণ চন্দরের উপন্যাস? ভুলে যাবেন না, পাকিস্তানেরই অনেক মানুষ একাত্তরের গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল। আমরা কি কেবল পাকিস্তানি বলে ফয়েজ আহমদ ফয়েজকে ঘৃণা করব, যিনি তার লেখনী দিয়ে রক্তাক্ত বাংলার ছবি পৌঁছে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের মানুষদের কাছে?

দেশটাকে নয়, ভাষাটাকে নয়; দেশটার সেই সব ঘৃণ্য রাজনীতিবিদদের ঘৃণা করুন। উর্দূতে গান গাওয়া ভীষণ কোনো অপরাধ নয়। বিপিএলে দামাদাম মাস্ত কালেন্দার গেয়ে রুনা লায়লা কোনো অপরাধ করেননি। বাংলা গানটাও তিনি ভালো জানেন। এই দেশ এক সময় ব্রিটিশ শোষণের স্বীকার হয়েছে বলে আমরা ইংলিশ গায়ক জন লেননকে ঘৃণা করতে পারি না, যিনি এই গান গেয়ে গেছেন: Imagine there's no countries/ It isn't hard to do।

ফেসবুকে কেবল লাইক পাওয়ার আশায় ভারত বা পাকিস্তানকে গালি দিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়া খারাপ। সত্যি সত্যি মনে বিদ্বেষ পুষে রেখে রেখে স্ট্যাটাস দেওয়া আরও খারাপ। একটুর জন্য যে আমি ভারতীয় নাগরিক হয়ে যাইনি, বিশ্বাস করুন, এর জন্য আমার নিজের কোনো হাত নেই!

ইউ মে সে আ'ম আ ড্রিমার। ইউ মে সে... আমি নিবোর্ধ-পাগল। ভারত কিংবা পাকিস্তানের দালাল। কিন্তু জন লেনন আমার কানে কানে বলে গেছেন, I'm not the only one/ I hope some day you'll join us/ And the world will be as one!



View this link

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:৫৬

আহসান২০২০ বলেছেন: ভালো লিখেছেন। জাতীয়তাবাদ সুপ্রতিষ্ঠিত হউক। কিন্তু আপনি দিনাজপুরে জন্মেও আগে জানতেন না যে ভারতে আর একটা জেলা আছে দিনাজপুর নামে!! আমি ময়মনসিংহে থেকেও সেটা জানতাম দক্ষিন দিনাজপুর নামে একটা জেলা আছে আমাদের দিনাজপুরের পাশেই।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:০৭

পাকা পেঁপে বলেছেন: ঠিক বুঝলাম না।

২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:২৭

সবখানে সবাই আছে বলেছেন: সুতীব্র দেশপ্রেম এক ধরনের অসুখ। এটা তীব্র প্রতিক্রিয়া থেকে আগত। আমরা জাতি হিশাবে তীব্র প্রতিক্রিয়াশীল। মৌল্বাদীদের প্রতিক্রিয়াশীলতার রাজনীতিকে কিন্তু আমরা ঢেকে দিচ্ছি জাতীয়তাবাদের আবরনে অথবা দেশপ্রেমের আবরনে। কিন্তু শিক্ষার আলো দিয়ে ঢাকতে পারছি না। এটাই আমাদের ব্যার্থতা। জাতি হিশাবে আমরা আসলেই মানসিকতার দিক থেকে পেছনে।
উদাহরন দেই, সাকিবের বিয়ে নিয়ে। সে দেশ সেরা খেলোয়াড়। নিজের পচ্ছন্দে বিয়ে করতে গেলেও বাংলাদেশের আপামর হরিদাশ পালের গালি খেতে হয় তাকে। ছেলেটা ইনজুরিতে, সেই কথা বিশ্বাস না করে তাকে আখ্যা দেয়া হয় দেশদ্রোহী যে কিনা বিয়ের কারনে ছুটি নিসে ইচ্ছা করে। অথচ কেউ এটা ভাবতে পারি না, যেহেতু সে ইনজুরিতে পড়েছে এ কারনেই সে মনে করসে এরকম ছুটিতো আর পাব না, তার থেকে এখন বিয়ে করে ফেলা ভাল। এই যে সুন্দর চিন্তা , সুস্থ চিন্তা এটা আমাদের মধ্যে থেকে হারিয়ে গেসে। আমরা এখন কথায় কথায় মানুষকে ছোট করে খুব মজা পাই। কান খুজতে চিলের পেছন দৌড়াই। এটা এক ধরনের অসুস্থতা। পুরো জাতি এই মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে। এটার জন্য রাজনীতিবিদদের দায় অনেক।
ভাল পোস্ট।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:১২

পাকা পেঁপে বলেছেন: একদম ঠিক, এটার জন্য আমাদের রাজনীতিবিদদের দায় অনেক। একদিকে আওমীলীগ বিএনপিকে দোষারুপ করার জন্য পাকিস্তান টেনে আনছে আবার আরেকদিকে বিএনপি আওমীলীগকে দোষারুপ করার জন্য ভারতকে টেনে আনছে। যেটা আমাদের প্রতিক্রিয়াশীলতাকে উসকে দিচ্ছে।

সুন্দর সুস্থ চিন্তা সকলের মধ্যে আবার ফিরে আসুক এই প্রত্যাশা করি। চমৎকার মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৩৮

রোলেন বলেছেন: Vala pailam pilas

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:১২

পাকা পেঁপে বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৪৫

মনসুর-উল-হাকিম বলেছেন: মাশাআল্লাহ, খুব সুন্দর লিখেছেন।

আমরা বাংগালী মুসলমান - আমার দেশ বাংলাদেশ আর আমার ধর্ম ইসলাম। এখানে আমার অমুসলমান প্রতিবেশীও আছে। তার ধর্ম তার কাছে, আমার ধর্ম আমার কাছে - এটাই বাস্তবতা।

অতিজাতীয়তাবাদ ও ধর্মান্ধতা উভয়ই ইসলামে পরিত্যাজ্য। আমাদের নাবী রাসুল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সময় মদিনায় মুসলিম ও অমুসলিম উভয় জনগোষ্ঠিই সহবস্থান ছিলো।

আমাদের সমাজে প্রচলিত অতিজাতীয়তাবাদ ও ধর্মান্ধতার উৎস - কুশিক্ষা, অনৈতিক লোভ, দুর্নীতিপ্রিয়তা। আর এই অবস্থার পৃষ্টপোষক সন্ত্রাসপ্রিয় নষ্ট রাজনীতিবিদ আর দুর্নীতিবাজ বদ আমলারা। তারা নিজেদের অসৎ স্বার্থ রক্ষার্থে সমাজে অতিজাতীয়তাবাদ ও ধর্মান্ধতার লালন করে।

মহান আল্লাহ-তায়ালা আমাদেরকে হেদায়েত দিয়ে উম্মতে মুহাম্মাদী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হিসাবে কবুল করে দুনিয়া ও আখেরাতে সকল নেক কামিয়াবী দান করুন -আমীন।

শুভেচ্ছান্তে ধন্যবাদ।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:২১

পাকা পেঁপে বলেছেন: প্রতিটি ধর্মেরই প্রধান উদ্দেশ্য থাকে একটি সুন্দর সুশৃঙ্খল জীবন ব্যবস্থা গড়ে তোলা। কোন ধর্মই অন্যকে ঘৃণা করতে শেখায় না। ধর্ম তখনই খারাপ হিসেবে চিহ্নিত হয় যখন ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীগত স্বার্থ, ক্ষমতা এবং সম্পদের লোভে মানুষ ধর্মকে তাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।

আমাদের সমাজে প্রচলিত অতিজাতীয়তাবাদ ও ধর্মান্ধতার উৎস - কুশিক্ষা, অনৈতিক লোভ, দুর্নীতিপ্রিয়তা।

আপনাকেও ধন্যবাদ।

৫| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:০৫

েশখসাদী বলেছেন: সুন্দর লেখা । ইসলামে কোন জাতীয়তাবাদ নেই । সকল মুসলমান ভাই ভাই । মহানবী (সাঃ) আনসার ও মুহাজির বলে সাহাবীদের দন্দ্বকে প্রচন্ড ঘৃণা করতেন এবং এজন্য তিরস্কার করেছেন ।

আমাদের জীবনটা ক্ষণস্হায়ী । এই স্বল্প সময়ের জীবনে যারা দলাদলি করবে , তারা ক্ষতিগ্রস্হ হবে ।

কিছু মানুষের দুস্কর্মের কারণে আম জনসাধারণ দুর্ভোগে পড়ে আবার উল্টোটাও হয় । উদার মনোভাব এবং অপরকে শ্রদ্ধার কোন বিকল্প নাই । তবে খারাপকেও খারাপ বলতে হবে ।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:২৯

পাকা পেঁপে বলেছেন: উদার মনোভাব এবং অপরকে শ্রদ্ধার কোন বিকল্প নাই।


ধন্যবাদ।

৬| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৩৫

বিপদেআছি বলেছেন: বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদের দরকার আছে, আশার কথা এটা ধীরে ধীরে বাড়ছে।
নিজের পরিচয় না জানলে কেউ পাত্তা দিবনা।আপনি perfect world এর কথা বলছেন , কিন্তু দুনিয়া perfect , জীবনও না।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৫৪

পাকা পেঁপে বলেছেন: জাতীয়তাবাদ অবশ্যই দরকার আছে। তাই বলে উগ্র জাতীয়তাবাদ কি আমাদের কাম্য? রাষ্ট্রের স্বার্থে অন্য একটি দেশের সাথে আমাদের কখনও ভালো কিংবা কখনও বৈরী সম্পর্ক থাকতেই পারে কিন্তু তাই বলে একটি জাতিকে বা একটি রাষ্ট্রকে সর্বান্তকরণে এবং সার্বিকভাবে ঘৃণা করা কি যৌক্তিক? কোন কিছুই পারফেক্ট হয়না এবং আমরা এও জানি যে শতভাগ পারফেকশন একটি তাত্ত্বিক ধারণা কিন্তু তারপরও এই তাত্ত্বিক ধারণাকে সামনে যতদূর সম্ভব পারফেকশনের দিকেই আমাদের এগিয়ে যাওয়াই কি আমাদের কাম্য নয়? আবার উদারতা সহনশীলতার মানে কিন্তু এই নয় তাদের অন্যায়কেও নীরবে সহ্য করে যাওয়া।

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

৭| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫০

বিল্লা বাবা বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.