নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি স্বাধীন দেশের পরাধিন মানব । স্বাধিন ভাবে বলতে চাই ,জানাতে চাই ,শিখতে চাই ,চাই বাক স্বধিনতা ।

সীমান্তের ঈগল(পরাজিত বীর)

আমি স্বাধীন দেশের পরাধিন মানব ।

সীমান্তের ঈগল(পরাজিত বীর) › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেডিকেল শিক্ষার্থী বিউটির আত্মহত্যা এবং গণমাধ্যমের মিথ্যাচার ও মিডিয়ার তথ্য সন্ত্রাসীর আগ্রাসন ।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৫






পুরো ঘটনা আর কীটগুলোর খবর এখানেঃ


আদর করে ভাইবোনেরা তাকে গোলাপ ডাকতো। ছয় ভাই বোনের মাঝে সবার ছোট মেয়েটি ডাক্তারি পড়ছিল। ক্লাসের আর দশটা ছেলে মেয়ের চেয়ে একটু আলাদা ছিল। সবার সাথে সবার মত মিশতে পারত না, পড়াশোনার চাপ নিতে পারত না, ছোটখাটো ব্যাপারে আশাপাশের মানুষদের উপর অভিমান করতো, পরক্ষণে সব ভুলে হাসিখুশি। শিশুর মত সরল কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত আবেগ প্রবণ, ছাত্রী হিসেবে ভালো হলেও পরীক্ষা ভীতি প্রচণ্ড। কেউ বোকামির জন্যে সামান্য বকা দিলে মাথা ঘুরে পরে যাওয়া আবার একেওকে সন্দেহ করা সবগুলো যোগ করলে হয়ত তাঁর ডাক্তারি বিদ্যারই কোন একটা অসুখের নাম বের হয়ে আসবে। মানসিক রোগী নয়, অন্য সবার মতই মেডিকেলের সকল কঠিন পরীক্ষা পাশ করে এসে ফাইনাল পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো সে। এধরনের মানুষগুলো যেমন হয়, অনেক একগুঁয়ে, হতাশার জন্য নিজে নিজেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খেত অনিয়মিতভাবে, দুয়েকবার যে আত্মহত্যার চেষ্টা করেনি তাও না, তবে ব্যাচমেট, পরিবারের সবার সহযোগিতায় পড়াশোনা প্রায় শেষ করেই এনেছিল।
নাহ, জীবনটাই শেষ হয়ে গেল এবং সেটা আত্মহত্যা। কিন্তু জীবিত বিউটিকে যে পাপ স্পর্শ করতে পারেনি, মৃত বিউটিকে সেই অপবাদ দিচ্ছে এই নষ্ট সমাজের নষ্ট মিডিয়া। মানব জমিনের শিরোনামঃ “জীবন দিলো মেডিকেল ছাত্রী বিউটি, শিক্ষকের প্রেমের ফাঁদ”। আমার দেশ অনলাইনের শিরোনামঃ “প্রতারণাঃ খুমেকে শিক্ষকের প্রেমের ফাঁদে প্রাণ গেল ছাত্রীর”। জাগো নিউজের শিরোনামঃ “রহস্যে ঘেরা মেডিকেল ছাত্রী বিউটির আত্মহত্যা”। ভেতরের খবর পরে লিখছি। আত্মহত্যার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠেনি তখনো তাঁর সহপাঠী, শিক্ষকেরা। পরিবার মুঠোফোনে খবর পেয়ে রওনা হয়েছে লাশ নিতে তাঁদের বাড়ি চট্টগ্রাম থেকে। ততক্ষণে এ সমাজের কিছু নষ্ট মানুষ শুরু করলো তাঁদের নোংরা খেলা, মিথ্যার ব্যবসা, সংবাদের কাটতি। তাতে মৃত মানুষটার সম্ভ্রম, পরিবারের অসহ্য যন্ত্রণার উপর লজ্জা, আশেপাশের মানুষগুলোকে ভিলেন বানানো কিছুই যায় আসে না। একজন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মানুষের মৃত্যু সংবাদ এই বাংলাদেশে কোন খবর নয়, কিন্তু তাঁর মৃত্যুর সাথে মুখরোচক কিছু জুড়ে দিলেই ব্যবসা...হ্যা ব্যাবসা...ওই কুকুরগুলোর বোন মারা গেলে এমনটা করতে পারত?
মেয়ে মানুষের চরিত্র নিয়ে কানকথা, কেউ বিশ্বাস করুক না করুক, মজা নিয়ে শুনবে-এমন সমাজেই বাস করি আমরা। তাও যদি হয় মৃত/আত্মহত্যা করা মেয়ে মানুষ, তাও যদি হয় মেডিকেল স্টুডেন্ট তাহলে এক ঢিলে অনেক অনেক পাখি মরবে। বোনের লাশ নিতে আসা বড় দুই ভাই ময়নাতদন্ত চায়নি, সহপাঠীরা চায়নি, শিক্ষকেরা চায়নি, প্রশাসন ও চায়নি, পুলিশ ও লাশ হস্তান্তর করতে তৈরি ছিল। কিন্তু ঐ কুকুরদের মানুষ বেচা-লাশ বেচা ব্যবসা সংবাদে রটে গেল মেয়েটা নাকি অন্তঃসত্বা ছিল, কার কার সাথে নাকি বহুভুজ সম্পর্কের জটিলতা ছিল। বেঁচে থাকতে যে স্পেশাল মানুষটার পাশে তারা দাঁড়ায়নি মরে যাবার পর তাঁর নূন্যতম সম্মানটা খুবলে খেতে ঝাঁপিয়ে পড়লো। মিথ্যা রিপোর্টগুলোর জন্য সবার অনিচ্ছায়, ক্ষোভের মুখেও পোস্টমর্টেম হলো।
আচ্ছা ওরা কেন এমন করলো? যে শিক্ষকের নামে মিথ্যাটা ছড়ালো গেল বছর এই গণমাধ্যমকর্মীদের উপর চড়াও হয়েছিল। একজন রোগীকে কেন্দ্র করে ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং কতিপয় গণমাধ্যম কর্মীর সাময়িক উত্তেজনার মাঝে তিনি চিকিৎসকের পক্ষ নিয়েছিলেন, কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী কে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিলেন। তার ফলাফল হারে হারে টের পেয়ে গেলেন। শুধু এই একটা ঘটনা না, যেখানেই বাংলাদেশে কোন মেয়ে/মহিলা হত্যা, আত্মহত্যা
বা রেপ এর ঘটনা ঘটে তার পরিচয় তো বটেই তার বাবা-মা পরিবারের কেউ বাদ যায় না পত্রিকার পাতায় নাম আসতে। এর মাঝে প্রেম, ব্যর্থ প্রেম আর অন্য কোন সম্পর্ক ঢোকাতে পারলে তো কথাই নেই। কেন এমনটা কেন এই সভ্য সমাজে??? কিছুদিন আগে দুনিয়া তোলপাড় করা ইন্ডিয়ান প্যারামেডিকেল স্টুডেন্ট রেপ এর ঘটনায় ঘুণাক্ষরেও তো কেউ তার আসল নাম জানে নি? আমাদের দেশে কেন? যার নামে যা ইচ্ছে লিখে দিল? বিউটি মরে গিয়ে বেঁচে গেছে, কিন্তু তার বাবা মা, ভাই, সেই ইন্টার্ন যে কিনা তাকে পড়া দেখিয়ে দিত, সেই শিক্ষক যে কোনভাবেই জড়িত না তাঁদের সামাজিক পারিবারিক জীবন যে ধ্বংস করে দিয়ে গেল তার দায় শোধ করবে কে?
ব্যক্তিগতভাবে আমি সম্ভব প্রত্যেক মেডিকেল স্টুডেন্টের আত্মহত্যার খবর রাখি। এবার লিখছি সে প্রসঙ্গে। স্যার সলিমুল্লাহ, চট্টগ্রাম, সিলেট এম এ জি, খুলনা মেডিকেল কলেজে মেডিকেল শিক্ষার্থী আত্মহত্যা এখন একটি রুটিন ঘটনা। পড়াশোনার চাপ, বাসা থেকে বাইরে থাকাসহ হাজারটা কারনে এরকম প্রতিবছরই ঘটছে। কিন্তু তাঁদের রক্ষা করতে কেউ নূন্যতম উদ্যোগ কি নিয়েছে? প্রতিটা মেডিকেল কলেজেই তো সাইকিয়াট্রি বিভাগ আছে, এবং যখন ঐ বিভাগে আমাদের ডিউটি বা পোস্টিং থাকে সেখানেও কোন সক্রিয় উদ্যোগ দেখিনি। লুকিয়ে অনেকে আসে, কিন্তু সেটা কি এই জীবনগুলো বাঁচাতে পারে? আর বিউটিতো কোন লুকানো হতাশাগ্রস্ত মেয়ে ছিল না, সে মানসিক রোগী না বরং একজন স্পেশাল মানুষ ছিল যে অন্য সবার মত না। প্রত্যেক ক্যাম্পাসেই এরকম ছেলে মেয়ে থাকে, যারা সবার সাথে মিশতে পারে না, কথা বলতে গেলে তোতলামি হয়, বুক কাপে,কোই শিক্ষক সহপাঠীদের কাছ থেকে তার প্রতি সমব্যাথীতা না হোক করুণাও তো দেখিনি কখনো। পারলে ওদের পচানি দিয়ে মজা লোটা ছাড়া? আমার যে দুই ব্যাচমেট আত্মহত্যা করেছিল চট্টগ্রামে, স্যার সলিমুল্লাহ, সিলেটে প্রত্যেকেই এই স্পেশাল মানুষ ছিল যাঁদের দিকে আমরা কেউ সহানূভূতি নিয়ে তাকাই নি।
সব কুড়িতে ফল হয় না, সব কলি ফুল হয়ে ফোটে না। বিউটি না হয় সেই গোলাপ যা পুরোপুরি প্রস্ফুটিত হয় নি, কিন্তু এই একটা আধফোটা গোলাপ সমাজের যে কীটগুলো দেখিয়ে দিয়ে গেল সেগুলোর কী হবে?



সংগৃহীত মুহিব নীরব

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৩

আহলান বলেছেন: বুঝলাম উনি ভালো , খুব ভালো ...কিন্তু আত্মহত্যার কারণ টা কি? এটা কি আসলেই ভালো ?

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৬

সীমান্তের ঈগল(পরাজিত বীর) বলেছেন: জনাব আসলে এখানে বলা উদ্দেস্য হল মিডিয়া মিথ্যাচার আসলে উনি ভাল না খারাপ সেটা পরের বিষয় ।

২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:২১

আহলান বলেছেন: আমার আন্তরিক ইচ্ছা জানার যে উনি এই সময়ে কেন সুইসাইড করলেন? একজন ডাক্তার তৈরী করতে সরকারের কত টাকা খরচ হয়? তাছাড়া ওনার জায়গায় অন্য কেউ ডাক্তারি পড়ার চান্সটা পেতো .... উনি দেশের একজন সম্পদ ..সেটা উনি কিভাবে নষ্ট করলো। এমন কি দুঃখ সে পেলো যার জন্য তাকে আত্মাহুতি দিতে হলো? এর পেছনে কেউ থাকলে অবশ্যই তার বিচার হওয়া উচিৎ

৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৭

আগুনে পাখি বলেছেন: লেখককে বলছিঃ আমি আপনার মেডিকেলেরই শিক্ষার্থী।

আমি এসব ঘটনার কারণে যারযাপরনাই বিষণ্ণ। তার ওপর কিছু মানুষের এরকম অদ্ভুত মন্তব্য দেখে বিস্মিত।
একটা মানুষের মৃত্যুর পর তার দ্বারা লাভ ক্ষতির হিসেবটা কি কারো কাছে চাওয়া হয়েছে ?

মৃত্যুর সাথে কেউ জড়িত কেউ থাকলে আইন তার যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিচার করবে। কিন্তু নিরপরাধ মানুষকে জড়িত করলে আমরা চুপ থাকব না।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৭

সীমান্তের ঈগল(পরাজিত বীর) বলেছেন: দেখেন জনাব এখানে আমার পোস্টের উদ্দেস্য হল এই মিডিয়ার মিথ্যাচার তুলে ধরা । অন্য কিছু না ।ধন্যবাদ ।

৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৩

কলাবাগান১ বলেছেন: one of the main side effects of anti-depressant drugs is to develop suicidal tendency in the user. She was taking that medicine.

৫| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫২

আগুনে পাখি বলেছেন: লেখক...আমি পোস্ট নিয়ে কিছু বলিনি, পোস্টে কিছু আজব লোকের মন্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করেছি

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৪

সীমান্তের ঈগল(পরাজিত বীর) বলেছেন: জি জনাব কিছু লোক আছে তারা সত্য জানে তবে স্বীকার করতে চায় না ।

৬| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৪

সীমান্তের ঈগল(পরাজিত বীর) বলেছেন: নষ্ট সমাজের নষ্ট মিডিয়া আর তার কর্মী। অন্যের মান সম্মান ইজ্জ্বতের তাদের পরোয়া নাই। ধিক্কার জানাই এসব সাংবাদিকদের।

৭| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৫৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: বিউটির সাথে যার সাথে সম্পর্ক ছিল সে বিয়ে করাতে বিউটি মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিল। আর পারিবারিক চাপ তো ছিলই। বিউটির কাছের একজনের সাথে আমার পরিচয় আছে। এখনই ঐ ডাক্তারের পক্ষে সাফাই গেয়ে লাভ নেই। আমরা কেউ সাধু না। তদন্ত করে বের করা হোক।

৮| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:০৮

বিপরীত বাক বলেছেন: যেখানে একাডেমিক ব্যর্থতা নেই,,
পারিবারিক ঝামেলা নেই,,,,
আর্থিক ঝামেলা নেই,,,,,

সেখানে আত্মহত্যার কারণ কি হতে পারে???

Crime Patrol কে ডাকেন।। সব বেরিয়ে আসবে।।

৯| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:০৮

বিপরীত বাক বলেছেন: যেখানে একাডেমিক ব্যর্থতা নেই,,
পারিবারিক ঝামেলা নেই,,,,
আর্থিক ঝামেলা নেই,,,,,

সেখানে আত্মহত্যার কারণ কি হতে পারে???

Crime Patrol কে ডাকেন।। সব বেরিয়ে আসবে।।

১০| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৪

সালাহউদ্দীন আহমদ বলেছেন:
মিডিয়ার কিছু হাম্বাদিকের পার্ফর্মেন্স দেখানোর চেষ্টায় এসব জঘন্য রটনা হয়। বিউটির পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইলো।

১১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি যেহেতু মেডিক্যালের ছাত্রদের আত্মহত্যার খবর রাখেন, এদের সাহায্য করার চেস্টা করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.